১৫
কত সময় কেটে গেল জানি না৷ হঠাৎ ডা. নাসেরের গলার আওয়াজ পেলাম, ‘মি. সেন, উঠে পড়ুন! উঠে পড়ুন!’
সেই সঙ্গে আমার কানে এল আরও একটা শব্দ! ধড়মড় করে উঠে বসলাম৷ ঠিক সেই সময় মশালটা জ্বালিয়ে দিলেন ডা. নাসের৷ বুঝতে পারলাম, অন্য শব্দটা হল অংশুর গোঙানির৷ বুক চেপে ধরে যন্ত্রণায় ছটফট করছে৷ চোখ তার বন্ধ৷ মুখের দু-পাশের কশ বেয়ে ফেনা গড়িয়ে পড়ছে৷ কয়েক মুহূর্ত পরপর তার শরীরটা মোচড় দিয়ে উঠছে৷ গোঙাতে গোঙাতে মাঝে মাঝে ও যেন কী বলছে৷
আমি ভয় পেয়ে ডা. নাসেরকে বললাম, ‘ও কি এবার সত্যি মারা যাচ্ছে?’
ডা. নাসের আমার কথার কোনো উত্তর না দিয়ে অংশুর মুখের সামনে ঝুঁকে পড়ে কান পেতে ও কী বলছে শোনার চেষ্টা করতে লাগলেন৷ কয়েক মুহূর্ত পর ডা. নাসের আমার দিকে মুখ করে বললেন, ‘ওর একটা কথা আমি বুঝতে পেরেছি৷ ও বলছে, বা, আমি ফিরে এসেছি৷’
আমি প্রশ্ন করলাম, ‘বা কে?’
ডা. নাসের আমার প্রশ্নের উত্তর দিতে যাচ্ছিলেন কিন্তু তার আগেই অংশুর গলা দিয়ে একটা প্রচণ্ড চিৎকার বের হল এবং তারপর অংশু উঠে বসে চোখ মেলল৷ দেখলাম, তার চোখের সেই ঘোলাটে ভাবটা কেটে গিয়ে ফুটে উঠেছে একটা অন্যরকম ভাব৷ যে ভাবটার কোনো ব্যাখ্যা হয় না৷ উঠে বসার পর সে ঘরের চারপাশে একবার তাকাল ঠিকই, কিন্তু আমাদের যেন দেখতেই পেল না৷ পাথরের বেদি থেকে নীচে নেমে দাঁড়াল অংশু৷ তারপর ধীরে ধীরে সামনের দিকে হাঁটতে শুরু করল৷ আমি ওকে ধরতে যাচ্ছিলাম, কিন্তু ডা. নাসের আমাকে থামিয়ে দিলেন, ইশারায় চুপ থাকতে বললেন৷ অংশুর পিছন পিছন আমরাও হাঁটতে শুরু করলাম৷ অংশু গিয়ে দাঁড়াল দুটো সুড়ঙ্গের ঠিক মাঝখানে দেওয়ালের সামনে৷ তারপর দু-হাত দিয়ে দেওয়ালটা ঠেলতে লাগল৷ ডা. নাসের আমার হাতে মশালটা দিয়ে অংশুর দেখাদেখি ঠেলতে লাগলেন দেওয়ালটা৷ কয়েক মুহূর্তের মধ্যেই দেওয়ালের একটা অংশ কিছুটা যেন ভিতরের দিকে ঢুকে গেল৷ ঠিক তার নীচ থেকে বেরিয়ে পড়ল অন্ধকার একটা গহ্বর৷ মশালের আলোয় দেখলাম, ধাপে ধাপে সিঁড়ি নেমে গিয়েছে৷ কোনোরকমে একটা মানুষ ঢুকতে পারে তার মধ্যে৷
অংশু ধীরে ধীরে ঢুকল তার মধ্যে, আমরা তার পিছন পিছন৷ বেশ কিছুটা নীচে নামার পর চোখে পড়ল একটা ছোট্ট কুঠুরি৷ তার চারদিক দিয়ে চারটে সুড়ঙ্গ বেরিয়ে গিয়েছে৷ সেখানে এসে কয়েক মুহূর্তের জন্য দাঁড়াল অংশু৷ তারপর ঢুকল একটা সুড়ঙ্গের মধ্যে৷ সুড়ঙ্গটা ঢালু হয়ে নেমে গিয়েছে নীচের দিকে৷ দু-পাশের মসৃণ দেওয়ালে নানাধরনের ছবি আঁকা৷ মাথার ছাদও খুব নীচুতে, হাত দিয়ে ছোঁয়া যায়৷ সুড়ঙ্গটা বেশ লম্বা, মিনিট পাঁচেক চলার পর হঠাৎ থমকে দাঁড়িয়ে পড়ল অংশু৷ দাঁড়িয়ে পড়লাম আমরাও৷ দেখলাম, দূরে অন্ধকারের মধ্যে দুটো জ্বলজ্বলে চোখ যেন আমাদের দিকে তাকিয়ে আছে৷ সেটা দেখেই থমকে দাঁড়িয়ে পড়েছে অংশু৷ ডা. নাসের আমার হাত থেকে মশালটা নিয়ে অংশুকে ছাড়িয়ে সেদিকে এগিয়ে গেলেন৷ তারপরেই স্পষ্ট হয়ে গেল ব্যাপারটা৷ সুড়ঙ্গের ভিতর আমাদের পথ আগলে বসে আছেন মৃত্যুর দেবতা আনুবিস৷ কালো পাথরের তৈরি মূর্তিটার সোনার চোখ দুটো মশালের আলোয় জ্বলছে৷ মূর্তিটা বেশি বড়ো নয়৷ ডা. নাসের মূর্তিটাকে ঠেলে সরিয়ে দিলেন এক পাশে৷
অংশু আবার চলতে শুরু করল৷ মূর্তিটা ছাড়িয়ে কিছু দূর যাওয়ার পর সুড়ঙ্গ ডান দিকে বাঁক নিয়েছে৷ আরও কিছুটা এগোবার পর বেশ কয়েকটা ছোটো ছোটো কুঠুরি৷ কুঠুরির দেওয়ালের গায়ে আনুবিসের বিভিন্ন মূর্তি খোদাই করা৷ অংশুর পিছন পিছন স্লেটপাথরের কুঠুরিগুলো একে একে পেরিয়ে আমরা এসে দাঁড়ালাম বিশাল একটা হলঘরের ভিতর৷ সেখানে প্রায় পাশাপাশি রয়েছেন দণ্ডায়মান আনুবিস আর হোরাসের বিশাল দুটো মূর্তি৷ তাঁদের দু-পায়ের ফাঁকের মধ্যে দাঁড়িয়ে রয়েছে একটা করে ফ্যারাও মূর্তি৷ সেই ফ্যারাও মূর্তি দুটো দেখিয়ে ডা. নাসের ফিসফিস করে বললেন, ‘ওগুলো হল হাটশেপসুটের মূর্তি৷ হোরাস আর আনুবিসের মূর্তির মাঝে রয়েছে একটা গহ্বর৷ ধাপে ধাপে সিঁড়ি নেমেছে সেই গহ্বরের ভিতর৷
সেখান দিয়ে নীচে নেমে আমরা পৌঁছোলাম অদ্ভুত এক জায়গায়৷ কালো পাথরের তৈরি বেশ কয়েকটা ত্রিভুজ আকৃতির ঘর৷ প্রত্যেক ঘরের দেওয়ালের মধ্যে একটা করে কুলুঙ্গি৷ তার মধ্যে রাখা আছে একটা করে ছোটো আনুবিসের মূর্তি আর মুখ বন্ধ ফুলদানির মতো পাত্র৷ যার মধ্যে মমি তৈরির আগে মৃতদেহের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ ভরে রাখা হত৷ প্রথমে ঘরে ঢোকার পর অংশু এগিয়ে গিয়ে কুলুঙ্গি থেকে পাত্রটা তুলে নিল৷ তারপর পরম মমতায় একবার পাত্রটার গায়ে হাত বুলিয়ে আমার দিকে তাকিয়ে পাত্রটা আমার হাতে তুলে দিল৷ পরপর পাঁচটা ঘর থেকে পাত্র সংগ্রহ করল অংশু৷ আর সবকটাই পরম যত্নে আমার কাছে রাখল৷ ঘরগুলো পেরিয়ে অংশু এসে দাঁড়াল একটা বিরাট ঘরে৷ সে ঘরের দেওয়াল জুড়ে অদ্ভুত সব ছবি আঁকা৷ ঘরের ঠিক মাঝ থেকে ছাদ বরাবর উঠে গিয়েছে গোল পাথরের একটা স্তম্ভ৷ অংশু সেখানে এগিয়ে গিয়ে এমনভাবে সেটাকে ধাক্কা দিতে লাগল, যেন সে সেটাকে ঘোরাতে চেষ্টা করছে৷
মশালটা দেওয়ালে গুঁজে রেখে ডা. নাসেরও অংশুর দেখাদেখি হাত লাগালেন তাতে৷ একটু চেষ্টা করতেই স্তম্ভটা সত্যিই একটা পাক ঘুরে গেল৷ সঙ্গে সঙ্গে ঘরের নিরেট দেওয়ালের একটা অংশ ফাঁক হয়ে গেল৷ আমরা ঢুকলাম তার মধ্যে৷ মশালটা প্রায় নিভে এসেছে৷ তার ক্ষীণ আলোয় আমরা আর একটা সুড়ঙ্গের মধ্যে দিয়ে হাঁটতে শুরু করলাম৷ সুড়ঙ্গটা বেশ চওড়া, কিন্তু শ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছিল আমার৷ পায়ের নীচে পুরু ধুলোর আস্তরণ৷ হাজার বছরের পুরোনো ভারী বাতাস জমে আছে তার মধ্যে৷ সেই সুড়ঙ্গ পেরিয়ে আমরা এসে দাঁড়ালাম একটা বন্ধ দরজার সামনে৷ দরজার গায়ে পুরু ধুলোর আস্তরণ জমে থাকলেও কাছে গিয়ে বুঝতে পারলাম, সেটা সোনার পাতের তৈরি৷ দরজার দু-পাশে দাঁড়িয়ে আছে প্রহরারত আনুবিসের বিশাল দুটো মূর্তি৷ অংশু গিয়ে দরজার গায়ে কান পেতে কী যেন শোনার চেষ্টা করল৷ তারপর অজানা ভাষায় কী যেন বলতে লাগল৷ মনে হল, সে যেন ঘরের ভিতরে কারোর উদ্দেশে কিছু বলছে৷ তারপর সে দরজায় ধাক্কা দিতে শুরু করল! ডা. নাসেরও ধাক্কা দিলেন দরজায়৷ কিন্তু দরজার নীচে ধুলোবালি জমে থাকায় আটকে গিয়েছে সেটা৷ ডা. নাসের চটপট নীচের ধুলোবালি সরিয়ে আবার ধাক্কা দিতেই পাল্লাটা খুলে গেল৷ আমরা ঢুকলাম আর একটা ঘরের ভিতর৷ সেখানে পা রাখতেই মশালটা দপ করে জ্বলে উঠেই নিভে গেল৷
একটা মৃদু আলো ছড়িয়ে রয়েছে ঘর জুড়ে৷ মাথার অনেক উপরে একটা গোল ছিদ্র দিয়ে চাঁদের আলো এসে পড়েছে ঘরের মধ্যে৷ সেই আলোয় দেখলাম, ঘরের মাঝখানে একটা ছোটো বেদির সামনে থাবা ছড়িয়ে বসে আছেন বিশাল একটা আনুবিস৷ চাঁদের আলোয় তার চোখ দুটো জীবন্ত হয়ে উঠেছে৷ ঘরে ঢোকার পর অংশু আবার কী বলতে শুরু করল৷ তারপর এগিয়ে গিয়ে দাঁড়াল সেই ছোট্ট বেদিটার সামনে৷ আমরাও গিয়ে দাঁড়ালাম সেখানে৷ কাছে দাঁড়াবার পর বুঝতে পারলাম, যেটাকে আমরা বেদি ভাবছিলাম সেটা আসলে একটা সারকোফ্যাগাস বা শবাধার৷ হাজার হাজার বছরের ধুলো জমে আছে তার চারপাশে৷ আমরা সেখানে গিয়ে দাঁড়াতেই অংশু আমার দিকে তাকাল৷ তারপর সারকোফ্যাগাসের গায়ে ধাক্কা দিতে শুরু করল৷
হঠাৎ শব্দ করে সারকোফ্যাগাসের চারদিকের আবরণ খসে পড়ল৷ আমাদের চোখের সামনে বেরিয়ে পড়ল ভিতরে শুয়ে থাকা একটা মমি৷ সেটা যে কোনো পূর্ণবয়স্ক মানুষের নয় তার আকৃতি দেখে বুঝতে অসুবিধে হল না৷ সম্ভবত অংশুর বয়সি কারও মরদেহ হবে সেটা৷ ভালো করে দেখলাম, তার বুকের বাঁ দিকে একটা তীক্ষ্ণ শলাকা পোঁতা৷ মমিটা দেখতে পেয়েই অংশু কেমন পাগলের মতো আচরণ করতে শুরু করল৷ তার কানের কাছে মুখ নিয়ে গিয়ে কী যেন বলে যেতে লাগল মিনিটখানেক ধরে৷ আমি আর ডা. নাসের স্থাণুর মতো দাঁড়িয়ে দেখতে লাগলাম তাকে৷ চাঁদের আলোটা ঠিক তার মুখের উপর এসে পড়েছে৷ আমি স্পষ্ট দেখতে পেলাম, তার দু-চোখ জলে ভেসে যাচ্ছে৷
এরপর হঠাৎ সে ঘুরে দাঁড়াল আনুবিসের মূর্তিটার দিকে৷ চিৎকার করে তার উদ্দেশে কী যেন বলল৷ তারপর তার দিকে পিছন ফিরে কাঁপতে কাঁপতে দু-হাত দিয়ে মমির বুকে বিদ্ধ শলাকাটা টান দিয়ে খুলে দূরে ছুড়ে ফেলে দিল৷ শলাকাটা খুলে নেওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই ঝুরঝুর করে মাটির মতো ভেঙে গেল হাজার বছরের প্রাচীন সেই মমি৷ একটা প্রচণ্ড চিৎকার করে ধুলো হয়ে যাওয়া সেই মমির উপর লুটিয়ে পড়ল অংশু৷ চাঁদটা ঠিক সেই সময় মাথার উপর থেকে সরে গেল৷ মুহূর্তের মধ্যে গাঢ় অন্ধকারে হারিয়ে গেল সব কিছু৷ আমি চিৎকার করে উঠলাম, ‘অংশু!’ আমার হাত থেকে ফুলদানির মতো পাত্রগুলো পড়ে গিয়ে ভেঙে চুরমার হয়ে গেল৷ আমি ধীরে ধীরে তলিয়ে গেলাম অন্ধকারের মধ্যে৷
নিখোঁজ হওয়ার তিন দিন পর অর্ধমৃত অবস্থায় আমাদের তিন জনকে উদ্ধার করলেন ড. হান্স৷ সৌভাগ্যক্রমে তিন জনই আবার প্রাণ ফিরে পেলাম৷ পুরোপুরি সুস্থ হয়ে উঠতে আরও দিন তিনেক সময় লাগল৷
সুস্থ হয়ে ওঠার পর ড. হান্স আর ডা. ঘটকের মুখ থেকে শুনলাম আমাদের উদ্ধারের ব্যাপারটা৷ আমরা নিখোঁজ হওয়ার পর সুড়ঙ্গের নীচে বেশ কিছুক্ষণ আমাদের খোঁজাখুঁজি করে সেদিন উদবিগ্ন অবস্থায় উপরে উঠে আসেন ড. হান্স আর ডা. ঘটক৷ পরদিন ভোর বেলা আবার দুটো দলে ভাগ হয়ে তাঁরা মরচুয়ারি মন্দিরের নীচে ঢোকেন৷ একটা দলের নেতৃত্ব দেন ড. হান্স নিজে৷ অন্য দলের নেতৃত্ব দেন তাঁর সহকারী কার্ল৷ ডা. ঘটককে তাঁরা রেখে যান পাউল আর ঘালির তত্ত্বাবধানে৷ আমরা নিখোঁজ হওয়ার পরদিন থেকে প্রায় পাগলের মতো হয়ে গিয়েছিলেন ডা. ঘটক৷ আমাদের এখানে নিয়ে আসার জন্য শুধু নিজেকে দোষারোপ করছিলেন৷ ওই তিন দিন অন্যদের অনেক অনুরোধ সত্ত্বেও একদানা খাবারও মুখে তোলেননি তিনি৷
যাই হোক, যে দুটো অনুসন্ধানকারী দল সুড়ঙ্গের নীচে নেমেছিল, তার মধ্যে কার্লের নেতৃত্বে যে দলটা ছিল তারা দ্বিতীয় দিনের মাথায় সুড়ঙ্গের মধ্যে একটা গুহায় খুঁজে পায় আলতুনিয়া আর তার সঙ্গীদের মৃতদেহ৷ একটা বিরাট পাথরের নীচে চাপা পড়েছিল আলতুনিয়ার থেঁতলে যাওয়া মৃতদেহ৷ কার্লের সঙ্গে সুড়ঙ্গে ঢুকেছিল স্থানীয় এক মোটবাহক৷ সোনার দাঁত দেখে আলতুনিয়াকে সে শনাক্ত করে৷ কিন্তু তারা আমাদের সন্ধান পায়নি৷
ড. হান্সের নেতৃত্বে যে দল নীচে নেমে ছিল, তারা সুড়ঙ্গে এক জায়গায় বালির উপর খুঁজে পেয়েছিল আমাদের তিন জনের পায়ের ছাপ৷ কিন্তু কিছু পরেই পাথুরে মাটিতে হারিয়ে গিয়েছিল ছাপগুলো৷ অনেক খোঁজাখুঁজি করেও ড. হান্স আমাদের সন্ধান পাননি৷ দ্বিতীয় দিন সন্ধ্যের পর দুটো দলই হতাশ হয়ে উপরে উঠে আসে৷ তারা ধরেই নিয়েছিল আমরা আর ফিরব না৷ তৃতীয় দিন খুব ভোর বেলা কী একটা কারণে ঘালি গিয়েছিল সেই পাথরের আড়ালে খাদের ধারে ঝোপের কাছে, যেখানে আনুবিসের মূর্তি দেখে ভয় পেয়েছিল অংশু৷ হঠাৎ সে লক্ষ করল, আনুবিসের মুখটা যেন অন্য দিকে ফেরানো আছে৷ কাছে গিয়ে সে মূর্তিটা পরীক্ষা করতেই বুঝতে পারল, সেটা আসলে মাটির নীচে নেমে যাওয়া একটা স্তম্ভের উপরিভাগ, এবং সেটা ঘোরানো যায়৷ তক্ষুনি সে ফিরে এসে খবর দেয় ড. হান্সকে৷
ড. হান্স এসে আনুবিসের মূর্তিটা যেখানে বসানো ছিল তার নীচে আবিষ্কার করেন এক সুড়ঙ্গপথ৷ দলবল নিয়ে তিনি ঢুকলেন তার ভিতর এবং গিয়ে পৌঁছোলেন মাটির নীচে গোলাকার স্তম্ভওলা সেই ঘরটায়৷ আসলে অংশু আর ডা. নাসের যখন সেই গোলাকার স্তম্ভটা ঘুরিয়ে দেওয়াল ফাঁক করেছিলেন তখন স্তম্ভের মাথার উপর বসানো আনুবিসের মূর্তিটাও ঘুরে গিয়েছিল৷ যাই হোক, সেখানে ঢোকার পর ধুলোর উপর আমাদের পায়ের ছাপ দেখে কাছেই আমাদের উপস্থিতি সম্বন্ধে নিশ্চিত হয়ে যান ড. হান্স৷ তারপর দুপুর নাগাদ সমাধিকক্ষের মধ্যে অচৈতন্য অবস্থায় আমাদের খুঁজে পান তিনি৷