রানি হাটশেপসুটের মমি – ১৩

১৩

আবার চলতে লাগলাম আমরা৷ সুড়ঙ্গ কখনো নীচের দিকে নেমেছে, আবার কখনো উপর দিকে উঠেছে৷ কখনো এগিয়েছে একদম সোজা, কখনো বা এগিয়েছে সাপের মতো এঁকেবেঁকে৷ মাঝে মাঝে পথের দু-পাশ থেকে বেরিয়েছে আরও নানা সুড়ঙ্গ৷ হয়তো সেগুলো গিয়ে শেষ হয়েছে মরুভূমির কোনো প্রত্যন্ত অঞ্চলে, অথবা চলে গিয়েছে কোনো অনাবিস্কৃত সমাধিতে৷ যেখানে হয়তো যুগ যুগ ধরে চির নিদ্রায় শায়িত আছেন ইতিহাসের পাতা থেকে হারিয়ে যাওয়া কোনো ফ্যারাও বা তাঁর রানি৷ হয়তো তাঁরা আরও অনেক বছর একইভাবে শায়িত থাকবেন, যত দিন না কোনো প্রত্নবিদ-গবেষক বা সমাধিচোরের দল গিয়ে হাজির হয় সেখানে৷ সুড়ঙ্গের মধ্যে মাঝে মাঝে ছাদ থেকে পাথর খসে গিয়ে রাস্তা প্রায় বন্ধ হয়ে গিয়েছে৷ পাথর সরিয়ে বা হামাগুড়ি দিয়ে চলতে হচ্ছে আমাদের৷ মাঝে মাঝে একটু প্রশস্ত জায়গা পেলে মিনিট দশেকের জন্য বিশ্রাম৷ কখনো তার সঙ্গে কয়েক ফোঁটা জল খাওয়া৷ মৃত যাযাবর সর্দারের কাছে একটা জলের বোতল ছিল৷ দয়া করে আলতুনিয়া সেটা দিয়েছে ডা. নাসেরের হাতে৷ এবং তার সঙ্গে এও বলে দিয়েছে যে, ওই এক বোতল জলেই আমাদের তিন জনকে চালিয়ে নিতে হবে৷ তারা আর এক বিন্দু বাড়তি জল দেবে না আমাদের৷ কারণ, জল এখানে সোনার চেয়েও দামি৷

আমি ডা. নাসেরকে জিজ্ঞেস করলাম, ‘আমরা এখন কোথায় যাচ্ছি?’

ডা. নাসের বললেন, ‘ঠিক কোথায় যাব তা বলা যাবে না৷ তবে আলতুনিয়া আমাদের প্রথমে নিয়ে যাবে হাটশেপসুটের মরচুয়ারির কাছাকাছি৷’

চলতে চলতে বুঝতে পারলাম সাপের কামড়ে যাযাবর সর্দারের মৃত্যুর পর আলতুনিয়ার সঙ্গীরা কেমন যেন ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে উঠেছে৷ একটু খসখস শব্দ শুনলেই তারা থমকে দাঁড়িয়ে পড়ছে৷ হাতের মশাল মাথার উপর তুলে দেখবার চেষ্টা করছে, শব্দের উৎসটা কী? সাপ নয় তো! ব্যতিক্রম একমাত্র আলতুনিয়া৷ তার কোনো ভয় বা বিকার নেই৷ খোশমেজাজে চলছে সে, মাঝে মাঝে সঙ্গীদের দরকারি নির্দেশ দিচ্ছে৷ আর আমরা কোনো চালাকি করলে যে আমাদের তিন জনের ভয়ংকর বিপদ ঘটবে, তা মনে করিয়ে দিচ্ছে ডা. নাসেরকে৷ এমনকী, দু-একবার তাকে শিস দিতেও শুনলাম৷ আলতুনিয়া যে ঠান্ডা মাথার কত বড়ো শয়তান তা বুঝতে অসুবিধে হচ্ছিল না৷

অংশু কোনো কথা বলছিল না৷ আমার আর ডা. নাসেরের মাঝে হাঁটছিল৷ আলতুনিয়ার সঙ্গে সকলের প্রথমে যে হাঁটছিল, অনেক সময় সে বাঁক নিলে তার পিছনের দিক অর্থাৎ আমাদের অংশটা কয়েক মুহূর্তের জন্য জমাটবাঁধা অন্ধকারে ঢাকা পড়ে যাচ্ছিল৷ এমনই সে অন্ধকার, নিজের হাত-পা পর্যন্ত চোখের সামনে থেকে মুছে যাচ্ছে৷ অংশু যাতে আগের দিনের মতো পথের দু-পাশের কোনো অন্ধকার সুড়ঙ্গে আচমকা ঢুকে না পড়ে, তাই অন্ধকার হলেই আমি তার কাঁধ ধরছিলাম৷ বার কয়েক তার কাঁধ ধরার পর অংশু মনে হয় ব্যাপারটা আঁচ করতে পারল৷ তাই সে চলতে চলতে মৃদু প্রশ্ন করল, ‘তুমি আমার কাঁধ চেপে ধরছ কেন?’

আমি বললাম, ‘পাছে তুমি হারিয়ে যাও তাই৷’

আমার কথা শুনে অংশু বলল, ‘আমি এখানে হারাব না, আমি সব চিনতে পারছি, আমার শুধু ভয় করে আনুবিসকে৷ কিন্তু আমি জানি, ও এখানে নেই৷ ও আছে মরচুয়ারি মন্দিরে৷’

অংশুর কথাগুলো শুনে আমার খুব আশ্চর্য লাগল৷ আমি আবার তাকে প্রশ্ন করলাম, ‘কাল বিকেলে মরচুয়ারি মন্দিরের নীচে হঠাৎ তুমি সুড়ঙ্গের মধ্যে ঢুকলে কেন? সে সুড়ঙ্গটা কি তুমি চিনতে পেরেছিলে?’

অংশু বলল, ‘না৷ আমার মনে হচ্ছিল কেউ যেন আমাকে ডাকছে ওর ভিতর থেকে৷ তাই আমি ঢুকে পড়লাম ভিতরে৷ কিন্তু ওর ভিতরে ঢোকার পর ডাকটা শুধু দূরে সরে যাচ্ছিল৷ আমিও তাই সুড়ঙ্গের ভিতরে এগিয়ে যাচ্ছিলাম৷ তারপর কী হল আমার মনে নেই৷’ এই বলে চুপ করে গেল সে৷

সারাদিন কেটে গেল সুড়ঙ্গপথে চলতে চলতে৷ একসময় এসে হাজির হলাম বিশাল এক গুহার মধ্যে৷ অনেক উঁচুতে তার ছাদ৷ কথা বললে প্রতিধ্বনি হচ্ছে৷ দেখে মনে হল গুহাটা কৃত্রিম নয়, প্রাকৃতিক৷ অসংখ্য সুড়ঙ্গ নানা দিকে চলে গিয়েছে সেখান থেকে৷ আলতুনিয়া জানাল, আমরা এখন ভ্যালি অফ কিংসের নীচে অবস্থান করছি৷ হাটশেপসুটের মরচুয়ারি মন্দির আর খুব বেশি দূরে নয়৷ সুড়ঙ্গপথে সেখানে পৌঁছোতে ঘণ্টা চার-পাঁচেক সময় লাগবে৷ এই গুহাতেই রাত কাটাব আমরা৷ তারপর ভোরবেলা যাত্রা করব সেদিকে৷ হঠাৎ আমার হাতঘড়ির দিকে চোখ পড়তেই দেখি, বিকেল পাঁচটা বাজে৷ অর্থাৎ আমরা নিখোঁজ হওয়ার পর প্রায় চব্বিশ ঘণ্টা কেটে গিয়েছে৷ আমার শুধু মনে হচ্ছিল ডা. ঘটকের কথা৷ আমাদের জন্য দুর্ভাবনায় নিশ্চয়ই পাগল হয়ে যাচ্ছেন তিনি৷ ভারি খারাপ লাগছিল তাঁর কথা ভাবতে৷ হয়তো তাঁর সঙ্গে আমাদের তিন জনের আর দেখা হবে না৷সুড়ঙ্গের মধ্যেই আলতুনিয়া আমাদের সমাধি দিয়ে দেবে৷ ডা. নাসেরের মুখও দেখলাম বেশ চিন্তাক্লিষ্ট৷ নিশ্চয়ই তিনি মনে মনে চিন্তা করছেন কীভাবে মুক্তি পাওয়া যায় আলতুনিয়ার হাত থেকে৷

গুহার এক পাশে ছোটো-বড়ো পাথরের চাঁই ছড়িয়ে-ছিটিয়ে পড়ে একটা ছোটো স্তূপের মতো সৃষ্টি হয়েছে৷ পাথুরে দেওয়ালের একটা অংশ ধসে গিয়েছে সেদিকে৷ সেই পাথরের স্তূপের উপর বসলাম আমরা৷ আমরা তিন জন আর যাযাবরটা একজায়গায়৷ কিছু দূরে আলতুনিয়া আর তার তিন সঙ্গী৷ ইচ্ছে করেই তারা আমাদের থেকে একটু দূরে বসল শলাপরামর্শ করার জন্য৷ আলতুনিয়া তার সঙ্গীদের সঙ্গে চাপা গলায় কীসব কথাবার্তা বলতে লাগল৷ সম্ভবত তাদের আগামী কর্মপদ্ধতি নিয়ে৷ অংশু আমার ঠিক পাশে বসে চারদিকে তাকিয়ে দেখতে লাগল৷ মশালটা গোঁজা আছে পাথরের একটা খাঁজে৷ তার থেকে কিছুটা আলো চারপাশে ছড়িয়ে পড়ছে ঠিকরে, কিন্তু গুহার প্রত্যন্ত প্রান্তগুলোতে বিরাজ করছে জমাটবাঁধা অন্ধকার৷ আমাদের পাশে বসা যাযাবরটা তার সর্দারের মৃত্যুর পর থেকেই বেশ ম্রিয়মাণ৷ তারপর সারাটা পথ একবারের জন্যেও তার মুখ থেকে একটাও শব্দ শোনা গেল না৷ আসার সময় যেখানে যেখানে বিশ্রাম নেওয়ার জন্য আমরা থেমেছি, সেখানে আমি প্রত্যেকবারই লক্ষ করেছি, লোকটা ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে তাকিয়ে আছে আলতুনিয়ার দিকে৷ সম্ভবত সেও বুঝতে পেরেছে যে, আলতুনিয়া ইচ্ছে করেই তাঁর সর্দারকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিয়েছে৷ এরপর হয়তো তার পালা!

আলতুনিয়া হঠাৎ ডা. নাসেরকে বলল, ‘কাল মরচুয়ারি মন্দিরের নীচে পৌঁছোবার পর সমাধিকক্ষ খুঁজে বের করার দায়িত্ব কিন্তু আপনার৷ যেভাবেই হোক আপনি খুঁজে বের করবেন সেটা৷’

ডা. নাসের বললেন, ‘চেষ্টা করব৷’

আলতুনিয়া এবার বেশ একটু উত্তেজিত স্বরে বলল, ‘না, না, চেষ্টা নয়৷ আপনাকে খুঁজে বের করতেই হবে৷ আমার দৃঢ় বিশ্বাস আপনি তার সন্ধান পেয়েছেন প্যাপাইরাস থেকে৷’

‘যদি পৌঁছোতে না পারি?’ শান্ত গলায় বললেন ডা. নাসের৷

‘তাহলে আপনাদের তিন জনের কেউই আর পৃথিবীর আলো দেখতে পাবেন না৷ আপনাকে আমি এমন যন্ত্রণা দিয়ে মারব যে, মৃত্যুর পর আপনার আত্মা বলে যদি কিছু থাকে, যুগ যুগ ধরে সে কেঁদে কেঁদে বেড়াবে৷ আপনার আর আমার মধ্যে অনেক পুরোনো একটা দেনাপাওনা বাকি থেকে গিয়েছে৷ সেটা আমি সুদসহ ফিরিয়ে দেব আপনাকে৷’

‘কীসের দেনাপাওনা?’ ডা. নাসেরের গলায় এবার বিস্ময়ের সুর ফুটে উঠল!

‘আজ থেকে পঞ্চাশ বছর আগে গিজাতে আপনি যে খুনটা করেছিলেন, আমি তার পাওনা মেটাবার কথা বলছি৷’ কর্কশ গলায় বলল আলতুনিয়া৷

কথাটা শোনার সঙ্গে সঙ্গে আমি তাকালাম ডা. নাসেরের দিকে৷ তাহলে তিনিও কি সত্যিই একজন খুনি! ডা. নাসেরকে এবার যেন কেমন ম্রিয়মাণ দেখাল৷ তিনি আলতুনিয়াকে প্রশ্ন করলেন, ‘সে ঘটনার সঙ্গে তোমার কী সম্পর্ক?’

আলতুনিয়া তড়াক করে লাফিয়ে উঠে দাঁড়াল৷ মশালের আলোয় দেখতে পেলাম, তার মুখ মুহূর্তের মধ্যে বীভৎস রূপ ধারণ করেছে৷ রাগে কাঁপতে কাঁপতে সে চিৎকার করে বলল, ‘কীসের সম্পর্ক! আপনি যাকে খুন করেছিলেন, সেই আলতাফ হোসেন আমার দাদা ছিল৷’

আলতুনিয়া এত জোরে চিৎকার করল যে, অংশু ভয় পেয়ে আমাকে জড়িয়ে ধরল৷ ডা. নাসের এবার বললেন, ‘না ওটা খুন নয়, ওটা একটা দুর্ঘটনা৷ যদিও তার জন্য আমি আজও আমার ভাগ্যকে দোষারোপ করি৷ আলতাফ বরাবরই ছিল উগ্র প্রকৃতির৷ গিজায় স্ফিংক্সের নাক লক্ষ করে নিশানা-বাজিতে আমাদেরই এক সঙ্গীর কাছে হেরে যায় সে৷ তার পরেই মেজাজ হারিয়ে আমার হাত থেকে বন্দুক ছিনিয়ে নিয়ে সেই সঙ্গীকে গুলি করতে যায়৷ তখনই ধস্তাধস্তির সময় বন্দুকের গুলি ছিটকে দুর্ঘটনা ঘটে যায়৷ সেদিন যারা ঘটনাস্থলে হাজির ছিল আদালতে তারা এ কথাই বলেছিল৷ যে কারণে আদালতও আমাকে মুক্তি দেয়৷’

আলতুনিয়া আবার চিৎকার করে বলল, ‘ওসব আদালত আমি মানি না৷ আমার আদালতে এখনও আপনার বিচার বাকি আছে৷ আমাকে যদি জায়গামতো পৌঁছে দিতে না পারেন তাহলে দেখবেন কী হয়! যে হাতে আপনি বন্দুক ধরতেন, আপনাকে মারবার আগে সে হাতের আঙুলগুলো একটা-একটা করে কেটে নেব৷’

তার কথা শুনে ডা. নাসের কী যেন বলতে যাচ্ছিলেন, কিন্তু তার আগেই আলতুনিয়া কোমরের খাপ থেকে রিভলভার বের করে ডা. নাসেরের দিকে উঁচিয়ে বলল, ‘চুপ করুন৷ আর একটা কথা বললে এখনই আপনাকে সমাধিতে পাঠিয়ে দেব৷’

ডা. নাসের আর কোনো কথা বললেন না৷ চুপচাপ ছাদের দিকে তাকিয়ে রইলেন৷ আলতুনিয়া তার রিভলভারটা কোমরের খাপে রেখে কাঁপতে কাঁপতে আবার বসে পড়ল৷

আরও ঘণ্টাখানেক একইভাবে কেটে গেল৷ মশালের আলোটা ক্রমে কমে আসছে৷ অংশুকে দেখলাম, ঢুলতে শুরু করেছে৷ ঠিক এমন সময় আমাদের পাশে বসা যাযাবরটা হঠাৎ ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদতে শুরু করল৷ হয়তো তার মনে পড়ছে সর্দারের কথা৷ আলতুনিয়া এতক্ষণ গুম হয়ে বসেছিল৷ কান্না শুনে সে লোকটিকে দুর্বোধ ভাষায় কী যেন বলল৷ লোকটি কিন্তু চুপ করল না৷ দু-হাঁটুর ফাঁকে মুখ গুঁজে কেঁদেই চলল৷ বরং তার কাঁদার শব্দ যেন একটু বেড়ে গেল৷ আমি দেখলাম, আলতুনিয়ার চোখ-মুখে ক্রমশ বিরক্তি ফুটে উঠছে৷ সে লোকটিকে কিছু কথা জিজ্ঞেস করল৷ কিন্তু লোকটি তার কথার কোনো উত্তর দিল না৷ একইভাবে বসে রইল৷ আলতুনিয়া তার পাশের সঙ্গীকে এবার একটা ইশারা করল৷ তার সেই সঙ্গী ছোটো একটা পাথর কুড়িয়ে নিল এবং লোকটিকে থামাবার জন্যই মনে হয় পাথরটা ছুড়ে মারল লোকটির দিকে৷ ঠিক সেই সময় লোকটি তার মাথাটা তুলল হাঁটুর ফাঁক থেকে৷ পাথরটা লাগল ঠিক তার নাকের উপর৷ গলগল করে রক্ত পড়তে লাগল৷ যে লোকটি পাথর ছুড়ে মেরেছিল সেও যেন হতভম্ব হয়ে গেল তা দেখে৷

এর পর একটা অদ্ভুত কাণ্ড ঘটল৷ যাযাবরটা পিঠ থেকে তার রাইফেলটা বিদ্যুৎগতিতে খুলে নিয়ে গুলি চালিয়ে দিল আলতুনিয়ার সেই সঙ্গীকে লক্ষ করে৷ গুলিটা সটান গিয়ে লাগল তার পেটে৷ লোকটি বিকট চিৎকার করে পাথরের উপর থেকে গড়িয়ে পড়ে গেল৷ ব্যাপারটা কী হল বুঝে উঠতে মনে হয় কয়েক মুহূর্ত লাগল৷ তার পরেই আলতুনিয়া এবং তার অপর সঙ্গী কোমর থেকে রিভলভার খুলে নিয়ে গুলি চালিয়ে দিল যাযাবরটাকে লক্ষ করে৷ ইতিমধ্যে যাযাবরটা আরও একবার তার ট্রিগার টেনে দিয়েছে৷ একসঙ্গে এত আগ্নেয়াস্ত্রের গর্জনে কানে তালা লেগে গেল৷ ধোঁয়ায় ঢেকে গেল আমাদের সামনেটা৷ তারপর ঘটল সেই ভয়ংকর ঘটনাটা৷ হঠাৎ থরথর করে কেঁপে উঠল চারদিক এবং ঠিক মাথার উপর থেকে একটা বিশাল পাথরের চাঁই ভেঙে পড়ল আমাদের আর আলতুনিয়ারা যেখানে দাঁড়িয়ে ছিল তার মাঝখানে৷ ধুলোর ঝড় উঠল চারদিকে৷ ডা. নাসের মুহূর্তের মধ্যে কী একটা জিনিস মাটি থেকে কুড়িয়ে নিয়ে আমার হাত ধরে বললেন, ‘চলো পালাই!’

আমরা যেখানে বসে ছিলাম তার ডান দিকেই ছিল একটা সুড়ঙ্গ-গহ্বর৷ অংশুকে কোনোরকমে জাপটে ধরে ডা. নাসেরের পিছন পিছন আমি ঢুকে পড়লাম সুড়ঙ্গের মধ্যে৷ ঠিক তখনই আমাদের পিছনে গুহার মধ্যে মশালের আলোটা নিভে গেল৷ কার যেন একটা বীভৎস আর্তনাদও আমার কানে এল৷ তারপর অন্ধকার সুড়ঙ্গের মধ্যে দিয়ে অংশুকে নিয়ে ছুটতে শুরু করলাম আমরা৷

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *