মসজিদে আকসার বর্তমান প্রয়োজন
সম্প্রতি অধিকৃত আরব এলাকার লাজনাতুল কুদ্স ওয়াদ দেফা আনিল মুকাদ্দাসাত’ (জেরুসালেম ও পবিত্র স্থান প্রতিরক্ষা কমিটি) এক মারাত্মক রিপোর্ট প্রকাশ করে বলেছে, মসজিদে আকসা এবং সাখরা ধ্বংসের চূড়ান্ত পর্যায়ে নিয়ে আসা হয়েছে। তাই মসজিদ আকসাকে রক্ষা করা খুবই জরুরী। কমিটি যে সকল ক্ষেত্রে কাজ করার চেষ্টা করছে সেগুলো হচ্ছে
১. পুরাতন জেরুসালেম শহরের ভূমির প্রতিরক্ষা কেননা, পুরাতন জেরুসালেম শহরকে ইহুদীকরণ এবং সেখানে পরিকল্পিত ইহুদী বসতি স্থাপনের প্রচেষ্টা অব্যাহত আছে। তাই প্রতিদিন পুরাতন শহরের মুসলিম সম্পত্তি ও জায়গার উপর ইহুদী আগ্রাসন চলছে। ইহুদীরা মুসলিম সম্পত্তি দখল করার উদ্দেশ্যে বিরাট তহবিল সৃষ্টি ও পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে এবং আইনের আশ্রয়ে সেগুলোতে নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার চেষ্টা চালাচ্ছে। কোর্টে ইহুদীদের বিরুদ্ধে মামলা ও আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বিরাট অংকের অর্থের প্রয়োজন।
২. পুরাতন শহরের মুসলিম ঘর-বাড়ীর হেফাজত করা। রিপোর্টে বলা হয়েছে, ঐ সকল ঘরগুলোর বয়স শত শত বছর। ঐগুলোর প্রতি কোন গুরুত্ব আরোপ করা হচ্ছে না। অনেক বিল্ডিং-এর ইট খসে যাচ্ছে, দেয়াল ফেটে যাচ্ছে এবং ইহুদীদের ব্যাপক খননকার্যের ফলে ভবনগুলোর ভিত্তি নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। সেই ঘরগুলোকে ঠিক করার জন্য নিম্নোক্ত ব্যবস্থা নেয়া যেতে পারেঃ (ক) কমিটির প্রকৌশলীদের প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে ঘরগুলোর মেরামত করা। এ জন্য বিরাট অংকের অর্থ প্রয়োজন। স্থানীয় জনগণের সেই রকম আর্থিক সামর্থ্য নেই যে, এত টাকা খরচ করে তারা নিজেদের ঘর মেরামত করতে পারে। (খ) ঘরের ফাটল সংস্কারের জন্য মালিকদেরকে নির্মাণসামগ্রীর সাহায্য দেয়া (গ) প্রতিরক্ষামূলক বেষ্টনী দেয়াল, জানালা ও দরজা পুনঃনির্মাণ এবং সেগুলোতে লোহা ব্যবহার করা। (গ) পরিত্যক্ত বাড়ীঘরগুলো আবাদ করা, এই সকল বাড়ী-ঘরের মালিকেরা এগুলো সংস্কার করতে না পেরে পরিত্যক্ত অবস্থায় রেখে দিয়েছে। কমিটি সেই সকল বাড়ী-ঘরের মালিকদের সাথে যোগাযোগ করে মেরামত করছে এবং চুক্তির ভিত্তিতে গরীব-মিসকীনদেরকে তাতে বাস করার সুযোগ দিচ্ছে কিংবা সেগুলো ভাড়া দিচ্ছে। এগুলোর উপর জেরুসালেম ওয়াকফ কমিটির তদারকীর চুক্তির শর্ত রয়েছে। এই কাজের জন্য কমিটির বিরাট অংকের টাকা দরকার। (ঘ) বড় বড় ঐতিহাসিক ভবনগুলোর সংস্কার ও মেরামত করে তা বসবাসের উপযুক্ত করা হচেছ।
৩. পুরাতন শহরের যে সকল জমিন ইহুদী বসতির হুমকির সম্মুখীন, এর মোকাবিলায় কমিটি সে সকল জমিন কিনে তা মুসলমানদের কবজায় রাখার চেষ্টা করছে। এ জন্যও বিরাট তহবিল প্রয়োজন।
৪. পুরাতন শহরে বসবাসরত মুসলিম পরিবারগুলোকে সমাজকল্যাণমূলক সেবা দান করতে হচ্ছে। তাদেরকে শহরে টিকিয়ে রাখার জন্য এই সেবা অত্যন্ত জরুরী।
৫. কমিটি সাংস্কৃতিক কেন্দ্র নির্মাণ করে, পুরাতন শহরের লোকদেরকে জেরুসালেমের বেষ্টনী দেয়ালের ভেতর প্রতিষ্ঠিত রাখার উদ্যোগ নিয়েছে। শহরে এক মিটার জায়গাও এমন নেই, যেখানে হয় ইসরাইলী পুলিশ কিংবা একজন পুনর্বাসিত ইহুদী নেই। কমিটি বর্তমান ভয়াবহ পরিস্থিতির কারণে সাংস্কৃতিক কেন্দ্রকে চিকিৎসা কেন্দ্রে রূপান্তরিত করেছে এবং মুসলিম নাগরিকদেরকে চিকিৎসা প্রদান করছে।
৬. চিকিৎসা সেবাঃ কমিটি পৃথক চিকিৎসা কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করেছে এবং মুসলিম নাগরিকদেরকে বিনামূল্যে কিংবা প্রতীকী মূল্যে চিকিৎসা সেবা দান করছে।
৭. মসজিদে আকসা ও সাখরার রক্ষীদের সাংসারিক প্রয়োজন পূরণের উপযোগী বেতন-ভাতা দেয়া দরকার। সেজন্য কমিটি চেষ্টা করছে তবে এ ব্যাপারে কমিটিকে সহযোগিতা করা দরকার।
.