প্রথমাধ্যায়—দ্বিতীয়াহ্নিক : কার্য্যকারণভাব বিচার

প্রথমাধ্যায়ে—দ্বিতীয়াহ্নিকম্

কারণাভাবাৎ কার্য্যাভাবঃ।। ১।।

অনুবাদ

কারণ না থাকিলে কাৰ্য্য হয় না।

ব্যাখ্যা

কারণ মানিতে হয়, কেননা, নানা উপকরণসত্ত্বেও এক একটী বিশেষবস্তুর অভাবে কাৰ্য্য হয় না, সেই যে এক একটী বিশেষবস্তু তাহারাই সেই কার্য্যের কারণ। মনে কর, তন্তুবায় আছে, সূত্র আছে, তাঁতের কাটি আছে, কিন্তু তাঁত নাই, কখনই বস্ত্র হইবে না। পক্ষান্তরে, তাঁত আছে আর সকলই আছে কেবল তন্তুবায় নাই, বা সূত্র নাই, বা তাঁতকাটি নাই—কখনই বস্ত্র হইবে না; অপরাপর সকল উপকরণ থাকিলেও যাহার অভাবে বস্ত্র উৎপন্ন হইতে পারে না, তাহাই বস্ত্রের কারণ। অন্যান্য কাৰ্য্যসম্বন্ধেও এই নিয়ম। কারণ না মানিয়া উৎপত্তি মানিতে হইলে, কোথায় কোন্ কাৰ্য্য হইবে এ বিষয়ে কোন নিশ্চয় থাকে না। আম্রবৃক্ষেও খরফল বা বস্ত্র ফলিতে পারে, সূত্র হইতেও তৈল হইতে পারে। সুতরাং বস্ত্রার্থী তন্তুবায় সূত্র আহরণ করিবে কি আম্রবৃক্ষ রোপণ করিবে? তৈলার্থী তৈলিক, তিল সর্ষপ সংগ্রহ করিবে, কি সূত্র আনিবে, এ বিষয়ে শৃঙ্খলা থাকে না। এই সব দেখিয়া শুনিয়া কার্য্যকারণ ভাব অবশ্যই মানিতে হয়।

বৰ্ত্তমান সময়ে এ বিষয় অবশ্য লোকের ভাল লাগিবে না। কিন্তু এই ভারতে এমন সময় গিয়াছে,—যখন নাস্তিকগণ প্রবল প্রতাপে লোকায়ত বাদপ্রচারে ব্রতী—তখন এই কার্য্যকারণভাব বিচার অনেকের একমাত্র লক্ষ্য হইয়াছিল। সেই সময়ের বিচার চিত্র এই সূত্রে নিহিত আছে।

কার্য্যকারণভাব অসিদ্ধ হইলে পূর্ব্বোক্ত কার্য্যকারণঘটিত সাধর্ম্মও অসিদ্ধ হয়। সুতরাং পূর্ব্বোক্ত সাধর্ম্মসিদ্ধির জন্য কার্য্যকারণ ভাবের সাধন আবশ্যক। অতএব এ বিষয় অপ্রাসঙ্গিক নহে।। ১।।

উপস্কারঃ

নন্বনেন প্রঘট্টকেন দ্রব্যাদীনাং ত্রয়াণাং পদার্থানাং কাৰ্য্যৈকত্বঘটিতং কারণৈকত্বঘটিতঞ্চ সাধর্ম্ম্যমুক্তং তচ্চানুপপন্নং কার্য্যকারণভাবস্যৈবাসিদ্ধেরিত্যত আহ।

দৃশ্যতে হি মৃচ্চক্রসলিলকুলালসূত্রাদৌ সমবহিতেঽপি দণ্ডাভাবাদ্ ঘটাভাবঃ ভূসলিলাদৌ সমবহিতেঽপি বীজাভাবাদঙ্কুরাভাবঃ স চ দণ্ডঘটয়োবীর্জাঙ্কুরয়োবা কার্য্যকারণভাবমন্তরেণানুপপন্নঃ। অন্যথা বেমাদ্যভাবেঽপি ঘটাভাবঃ, শিলাশকলাদ্যভাবেঽপ্যঙ্কুরাভাবঃ স্যাৎ। কিঞ্চ ঘটপটাদীনাং কাদাচিৎকত্বমনুভূয়তে তদপি হেতুফলভাবমন্তরেণানুপপন্নং, ন হি কিঞ্চিৎকালাসত্ত্বে সতি কিঞ্চিৎকালসত্ত্বরূপং কাদাচিৎকত্বং ভাবানাং কারণাপেক্ষানন্তরেণ সম্ভবতি, তদা হি স্যাদেব ন স্যাদেব বা ন তু কদাচিৎ স্যাৎ ন হি ভাবো ন ভবত্যের নাপ্যহেতোর্ভবতি নাপ্যকস্মাদেব ভবতি ন বা নিরুপাখ্যাদেব শশবিষাণাদের্ভবতি কিন্তু দণ্ডবেমাদেঃ সোপাখ্যস্যাবধেঘটপটাদৌ কাৰ্য্যে দর্শনাদবধি দর্শনাদবধি কারণমেব। এবং কার্য্যকারণভাবাভাবে প্ৰবৃত্তিনিবৃত্তী স্যাতাং, তথাচ নিরীহং জগজ্জায়েত, নহীষ্টসাধনতাজ্ঞানমন্তরেণ প্রবৃত্তিরনিষ্টসাধনতাজ্ঞানমন্তরেণ নিবৃত্তিঃ।।১।।

.

ন তু কার্য্যাভাবাৎ কারণাভাবঃ।।২।।

অনুবাদ

কিন্তু কার্য্যের অভাবে কারণের অভাব হয় না।।২।।

ব্যাখ্যা

কারণ মানিতে বাধক আছে। যে কারণ হইবে, সে থাকিলেই তো কাৰ্য্য হইবে। তাঁত যদি বস্ত্রের কারণ হয় তো তাঁত থাকিলেই বস্ত্র হয় না কেন? সুতরাং কারণ মানিলেও কাৰ্য্য কোন কোন সময়ে হয় এবং কোন কোন সময়ে হয় না—কারণ না মানিলেও কাৰ্য্য কখনও কোথাও হয়, কখন বা হয় না—এইরূপ বলিলে হানি কি? এই পূর্ব্বপক্ষের উত্তর এই সূত্রে আছে—একটী কারণ থাকিলে কার্য্য হয় না দেখিয়া যে কারণ নাই বলিবে তাহা হইবে না। সকল কারণ উপস্থিত হইলে কাৰ্য্য হইবে ইহাই নিয়ম। যেখানে দেখিবে একটী দুইটী বা তদধিক কারণ আছে, অথচ কাৰ্য্য হইতেছে না, সেখানে অনুসন্ধান করিয়া দেখিবে, অন্ততঃ অপর একটী কারণেরও অভাব আছে, তাই কাৰ্য্য হইতেছে না। কারণ না মানিলে কোন নিয়মই করিতে পারিবে না।। ২।।

উপস্কারঃ

ননু সদেবোৎপদ্যতে নাসৎ “সদেব সৌম্যেদমগ্র আসীৎ” ইত্যাদিশ্রুতি প্রামাণ্যাৎ অন্যথাহসত্ত্বাবিশেষে তন্তুভ্য এব পটো ন কপালেভ্য ইতি নিয়মো ন স্যাদিতি চেৎ পরিণামবাদিভিরপি স্বীকৃতকারণকৈরয়ং নিয়মোহভ্যুপগম্ভব এর অন্যথা ঘটাভিব্যক্তিঃ কপালেম্বেব ন তন্তুন্বিতি কথং স্যাৎ, কিঞ্চ যদ্যভিব্যক্তিরপি পূর্ব্বমাসীদেব তদা তস্যা অপি নিত্যত্বে আবির্ভাবতিরোভাবাবেবোৎপাদবিনাশাবিতিরিক্তং বচঃ। অথাবিভাবতিরোভাবৌ কারণাপেক্ষৌ তদা ঘটপটাদীনামপি কারণাপেক্ষয়ৈবাসতামপ্যুৎপত্তিরিত্যায়াতং যত্ত্ব কারণ প্রতি নিয়মানুপপত্তিরিত্যুক্তং তত্র স্বভাবনিয়মেনৈবোত্তরং স চ স্বভাবনিয়মোহন্বয়- ব্যতিরেকাবগম্যো ভবতি, ভবতি হি দণ্ডমন্তরেণ ন ঘটো দণ্ডে সতি ঘট ইতি সৰ্ব্বসাক্ষিকোহনুভবঃ, এবঞ্চানন্যথাসিদ্ধনিয়তপূৰ্ব্ববৰ্ত্তিজাতীয়ত্বং সহকারিবৈকল্য প্রযুক্ত- কার্য্যাভাববত্ত্বং বা কারণত্বম্। যদ্যপি “যবৈর্যজেত ব্রীহিভির্বা” ইত্যাদৌ নিয়তপূৰ্ব্ববৰ্ত্তিত্বং নাস্তি, নহি যবকরণকযাগনিষ্পাদ্যে ফলে ব্রীহিকরণকযাগস্য পূর্ব্ববর্ত্তিত্বং, তথাপি বিকল্পিতং বিহিতকারণং কারণমেব ফলৈকজাত্যেঽপি দ্বয়োঃ কারণত্বোপপত্তেঃ, তথাচ সহকারিবৈকল্য প্রযুক্তকার্য্যাভাববত্ত্বং লোকবেদসাধারণী কারণতা নিয়তপূর্ব্ববৰ্ত্তিত্বত্ত অন্বয়ব্যতিরেকগম্যা কারণতা . লৌকিকী। নহি “স্বৰ্গকামো লৌকিকী। নহি “স্বৰ্গকামো যজেত” ইত্যাদৌ ব্যতিরেকভাগোঽপি বিষয়ঃ প্রবৃত্তের ন্বয়মাত্রজ্ঞানাদেবোপপত্তেঃ, অতএব “বিকল্পে উভয়মশাস্ত্রার্থঃ” ইত্যপি ঘটতে তজ্জাতীয়স্য ফলস্য একেনৈবোপপত্তের পরানুষ্ঠানবৈয়র্থ্যাৎ। অতএব “শ্রৌতাৎ সাঙ্গাৎ কৰ্ম্মণঃ ফলাবশ্যম্ভাবনিয়মঃ” ইত্যপ্যুচিতম্ “আগমমূলত্বাচ্চাস্যার্থস্য ব্যভিচারো ন দোযায়” ইত্যাচাৰ্য্যাভিধানমৃজ্বর্থতাৎপর্য্যকমেব তৃণারণিমণিস্থলে তু কাৰ্য্যবৈজাত্যমাবশ্যক তত্রান্বয়ব্যতিরেকগম্যত্বাৎ কারণতায়া ব্যতিরেকা- দ্ব্যতিরেকস্যাবশ্যকত্বাৎ বিকল্পস্থলে তু ফলবৈজাত্যকল্পনে রাজসূয়বাজপেয়াদাবপি বৈকল্পিকী কারণতা স্যাদিতি কার্য্যকারণভাবনিয়মমেবোপপাদয়ন্নাহ।

যদি কার্য্যকারণভাবনিয়মো ন ভবতি তদা কার্য্যাভাবাদপি কারণাভাবঃ স্যাৎ, কার্য্যাভাবঃ কারণাভাবং প্রত্যতন্ত্রং কারণভাবস্তু কার্য্যাভাবং প্রতিতন্ত্রং তেন দুঃখাভাবার্থং জন্মাভাবে, জন্মাভাবার্থ প্ৰবৃত্ত্যভাবে, তদর্থঞ্চ দোষাভাবে, তদর্থং মিথ্যাজ্ঞাননিবৃত্তয়ে, প্রয়োজনমৌপোদ্‌ঘাতিকস্যাপ্যস্য তদর্থঞ্চাত্মসাক্ষাৎকারণায় মুমুক্ষুণা প্রবৃত্তিঃ দ্বিসূত্রকপ্রকরণস্য।।২।।

.

সামান্যং বিশেষ ইতি বুদ্ধ্যপেক্ষম্।। ৩।।

অনুবাদ

সামান্য এবং বিশেষ এই দুইটীতেই জ্ঞানবিশেষের অপেক্ষা আছে।। ৩।।

ব্যাখ্যা

সামান্য অর্থে জাতি— জাতি দুই প্রকার; সামান্য জাতি এবং বিশেষ জাতি। একমাত্র সত্তাই সামান্য জাতি এবং তদ্ভিন্ন সকল জাতিই বিশেষজাতি হইলেও অপেক্ষাকৃত সামান্য বিশেষ উভয় ভাবই দ্রব্যত্ব প্রভৃতি জাতিতে আছে। এই যে সামান্য বিশেষ ভাব, ইহাতে জ্ঞানবিশেষের অপেক্ষা আছে;–দ্রব্য, গুণ এবং কর্ম্ম এই তিন পদার্থে জাতি থাকে, অন্য পদার্থে জাতি নাই। এই তিন পদার্থে যে একটী জাতি থাকে তাহার নাম সত্তা,—তাহা অন্য সকল জাতি অপেক্ষা অধিক আশ্রয়ে থাকে, এই জন্য তাহাকে ‘পর’ বা সামান্য জাতি বলা হয়। দ্রব্যে দ্রব্যত্ব, গুণে গুণত্ব এবং কর্ম্মে কৰ্ম্মত্ব থাকে। এই জাতিত্রয় ও অন্যান্য সকল জাতি সত্তা হইতে ভিন্ন এই কারণে ইহাদিগকে বিভাগ স্থলে ‘অপর’ বা বিশেষজাতি বলা হয়। পরন্তু দ্রব্যত্ব প্রভৃতি জাতি পৃথিবীত্ব প্রভৃতি জাতি অপেক্ষা ‘পর’ বা সামান্য জাতি। সত্তা অপেক্ষা অল্পদেশবৃত্তি সুতরাং ‘অপর’ জাতি বলিয়া ব্যবহৃত হয়; এক দ্রব্যত্বই কোন জাতি অপেক্ষায় ‘পর’ কোন জাতি অপেক্ষায় ‘অপর’—এই যে পরাপর ভাব বা সামান্য বিশেষভাব ব্যবহার, তাহা অন্য জাতিবিশেষের সহিত ব্যাপ্যব্যাপকভাবজ্ঞানসাপেক্ষ। সত্তা, ব্যাপক দ্রব্যত্ব অপেক্ষা অধিক আশ্রয়ে থাকে— পৃথিবীত্ব ব্যাপ্য—দ্রব্যত্ব অপেক্ষা অল্প স্থানে থাকে। এই যে জ্ঞান ইহা জাতি-বিশেষের সহিত ব্যাপ্য-ব্যাপক ভাবজ্ঞান। ফলতঃ ইহা যেন মনে থাকে; অপেক্ষাকৃত সামান্য বিশেষভাব লইয়া জাতিবিভাগ নহে, সৰ্ব্বজাতিব্যাপকত্ব এবং তদ্ভিন্ন জাতিত্বরূপেই জাতিবিভাগ। এ বিভাগে একমাত্র সত্তাই সৰ্ব্বজাতিব্যাপক বা পর, তদ্ভিন্ন সকলই অপর।।৩।।

উপস্কারঃ

পদার্থত্রয়োদ্দেশলক্ষণানন্তরমিদানীমুদ্দিষ্টস্য সামান্যপদার্থস্য লক্ষণমাহ।

সামান্যং দ্বিবিধং পরমপরঞ্চ। তত্র পরং সত্তা অপরং সত্তাব্যাপ্যং দ্রব্যত্বাদি, তত্র সামান্যস্য তদ্বিশেষস্য চ লক্ষণং বুদ্ধিরেব। অনুবৃত্তবুদ্ধিঃ সামান্যস্য, ব্যাবৃত্তবুদ্ধিবিশেষস্য। ইতিনা দ্বয়মবচ্ছিদ্য পরামৃশ্যতে তেন বুদ্ধ্যপেক্ষমিতি নপুংসকনির্দেশঃ। বৃত্তিকারস্তু বিশেষান্বয়মাহ পরন্তু “নপুংসকমনুপুংসকেনৈকবচ্চাস্যান্যতরস্যাম্” ইত্যনেনৈকবদ্ভাবো নপুংসকতা চেত্যাহ। বুদ্ধিরপেক্ষা লিঙ্গং লক্ষণং বা যস্য তদ্বদ্ধ্যপেক্ষং তত্র নিত্যমনেকব্যক্তিবৃত্তি সামান্যং নিত্যত্বে সতি স্বাশ্রয়ান্যোন্যাভাবসমানাধিকরণং বা পরমপি সামান্যমপরমপি তথা পরন্তু সামান্য বিশেষসংজ্ঞামপি লভতে, যথা দ্রব্যমিদং দ্রব্যমিদমিত্যনুবৃত্তপ্রত্যয়ে সত্যেব নায়ং গুণো নেদং কৰ্ম্মেতি বিশেষপ্রত্যয়ঃ, তথাচ দ্রব্যত্বাদীনাং সামান্যানামেব বিশেষত্বম্।

ননু বিধিরূপং সামান্যং নাস্ত্যেব অনুগতমতেরতদ্ব্যাবৃত্যৈবোপপত্তেঃ ভবতি হি গৌরয়মিতি প্রতীতেরগোব্যাবৃত্তোহয়মিতি বিষয়ঃ জাতিবাদিনাপি গোত্বাদিবিশিষ্টপ্রত্যয়স্য তদ্বিষয়ত্বাভ্যুপগমাৎ ন হি বৈশিষ্ট্যমতদ্ব্যাবৃত্তেরন্যৎ, গবাদিপদপ্রবৃত্তিনিমিত্তমপ্যগোব্যা- বৃত্ত্যাদিরেব। কিঞ্চ গোত্বং কুত্র বৰ্ত্ততে, ন তাবদগবি গোত্ববৃত্তেঃ পূৰ্ব্বং তস্যাভাবাৎ, নাপ্যগবি বিরোধাৎ। যত্র গোপিণ্ড উৎপদ্যতে তত্র কুত আগত্য গোত্বং বৰ্ত্ততে? ন তাবত্তত্রৈবাসীৎ, দেশস্যাপি তস্য গোত্বাপত্তেঃ, নাপি গোত্বমপি তদানীমেবোৎপন্নং নিত্যত্বাভ্যুপগমাৎ, নাপ্যন্যত আগতং নিষ্ক্রিয়ত্বাভ্যুপগমাৎ, ন চ একস্যৈব নিত্যস্য নানাব্যক্তিবৃত্তিত্বং কাস্নেকদেশ- বিকল্পানুপপত্তেঃ। ন হি কৃৎস্নমেকত্রৈব বৰ্ত্ততে, অন্যত্র তদ্বিশিষ্টপ্রত্যয়ানুদয় প্রসঙ্গাৎ। নাপ্যেকদেশেন, জাতেরেকদেশস্যাভাবাৎ। তদুক্তং “ন যাতি ন চ তত্রাসীন্নচোৎপন্নং নচাংশবৎ। জহাতি পূর্ব্বং নাধারমহোব্যসনসন্ততিঃ” ইতি। সামান্যমস্তি তচ্চ সংস্থানমাত্রব্যঙ্গ্যং গোত্বঘটত্বাদিবৎ ন তু গুণকৰ্ম্মগতমপীতি সগোত্রকলহঃ। অত্রোচ্যতে সামান্যং নিত্যং ব্যাপকঞ্চ, ব্যাপকত্বমপি স্বরূপতঃ সর্ব্বদেশসম্বন্ধত্বং ন দেশানাং গোব্যবহারাপত্তিঃ সমবায়েন তদ্ব্যবহারস্যাভ্যুপগমাৎ কালে রূপাদিমত্ত্বেঽপি কালো রূপবানিত্য প্রতীতিব্যবহারবৎ ন চ কালো নাস্ত্যেব পঞ্চস্কন্ধসংজ্ঞাভেদমাত্রমিত্যভ্যুপগমাদিতি বাচ্যং কালস্য সাধয়িষ্যমাণত্বাৎ। তথাচ যত্র পিণ্ড উৎপদ্যতে তত্রস্থমেব গোত্বং তেন সম্বধ্যতে জাতঃ সম্বদ্ধশ্চেত্যেকঃ কাল ইত্যভ্যুপগমাৎ, এতেন কীদৃশ্যাশ্রয়ে বৰ্ত্ততে ইত্যত্র যত্র প্রতীয়তে ইত্যুত্তরম্। কুত্ৰ প্রতীয়তে ইত্য যত্র বর্ত্ততে ইত্যুত্তরম্, গোত্ববৃত্তে। পূৰ্ব্বংস পিণ্ডঃ কীদ্‌গাসীদিত্যত্র নাসীদিত্যেবোত্তরম্, এবঞ্চ “ন যাতি ন চ তত্রাসীৎ” ইত্যাদিকং পরিদেবনমাত্রম্, অতদ্ব্যাবৃত্তিরেব গোত্বমিত্যত্র গৌরয়মিতি বিধিসুখঃ প্রত্যয় এব বাধকঃ। নহ্যনুভবোঽপি ব্যাখ্যায়তে তদুক্তং “বিধিজঃ প্রত্যয়োহয় ব্যতিরেকা সমর্থকঃ” ইতি ন হি গৌরয়মিতি প্রত্যয়েঽগোব্যাবৃত্তিরপি ভাসতে কাস্নেকদেশবিকল্পস্তদা ভবেৎ যদ্যেকস্য সামান্যস্য কাং ভবেদেকদেশো বা কৃৎস্নতা হ্যনেকাশেষতা সা চৈকস্মিন্নোপপন্না গৌরয়মিত্যাদ্যনুভব এবাসদ্বিষয়ো ন বস্তুব্যবস্থাপনক্ষম ইত্যত্রোত্তরং বক্ষ্যতে। প্রভাকরাস্তু সংস্থানমাত্রব্যঙ্গং সামান্যমাচক্ষতে তদ্যদ্যনুগতপ্রতীতিসাক্ষিকং তদা কিম পরাদ্ধং গুণকৰ্ম্মগতৈঃ সামান্যৈঃ, ভবতি হি রূপরসাদাবনুগতধীঃ সা চজাতিব্যবস্থাপিকৈব বাধকাভাবাৎ রূপত্বাদিজাতিষু ন তাবদ্ব্যক্ত্যভেদো বাধকঃ আকাশত্বাদিবৎ রূপরসাদিব্যক্তীনামনেকত্বাৎ, নাপি বুদ্ধিত্বজ্ঞানত্বাদিবৎ, ঘটত্বকলসত্বাদিবদ্বা তুল্যত্বং বা বাধকং তচ্চান নানতিরিক্তব্যক্তিকত্বং গুণত্বাপেক্ষয়া ন্যূনব্যক্তিকত্বাৎ নীলত্বাদ্যপেক্ষয়া চাধিকব্যক্তিকত্বাৎ। অতএব ন সঙ্করঃ ভূতত্বমূর্ত্তত্ববৎ, পরস্পরাত্যন্তাভাবসামানাধিকরণ্যে সতি জাত্যন্তরেণ সামানাধিকরণ্যাভাবাৎ, নাপ্যনবস্থা রূপত্বাদিগতসামান্যান্তরানভ্যুপগমাৎ, নাপি রূপহানির্বিশেষত্ববৎ, যদি বিশেষঃ দ্রব্যাশ্রিতত্বে সতি জাতিমন্তঃ স্যুঃ গুণাঃ কৰ্ম্মাণি বা স্যুঃ বিভুবৃত্তিত্বে সতি যদি জাতিমন্তঃ স্যুগুণাঃ স্যুরিতি যথা বিশেষ পদার্থস্বরূপহানিস্তথা প্রকৃতেহভাবাৎ নাপি সমবায়ত্ববদসম্বদ্ধঃ সমবায়ে সমবায়াভ্যুপগমেহনবস্থাভয়াত্তথ্যাস্তু, প্রবৃত্তে তু সমবায়স্যৈব সম্বন্ধস্যাভ্যুপগমাৎ। যদ্যপি সমবায়ত্বজাতিবাধকে ব্যক্ত্যভেদ এব তথাপি যন্মতে উৎপাদ-বিনাশশীলাঃ বহবঃ সমবায়াস্তন্মতে দ্রষ্টব্যম্। অভাবত্বাদিজাত্যভ্যুপগমে বা বাধকমেতৎ, বিবাদপদমনুগতবুদ্ধিঃ অনুগতনিমিত্তসাধ্যা অবাধিতানুগতমতিত্বাৎ দামকুসুমবুদ্ধিবৎ ইতি জাতৌ মানমিতি বৃত্তিকারাস্তচ্চিন্ত্যম্।।৩।।

.

ভাবোঽনুবৃত্তেরেব হেতুত্বাৎ সামান্যমেব।। ৪।।

অনুবাদ

সত্তা সর্ব্বজাতিব্যাপকরূপেই গৃহীত হয় বলিয়া (উহাই) সামান্য অর্থাৎ ‘পর’ জাতি।। ৪।।

ব্যাখ্যা

সত্তার অপেক্ষাকৃত বিশেষভাবও নাই। সুতরাং সত্তাই খাঁটি ‘সামান্য’—অর্থাৎ পরজাতি। এইরূপ একটী খাঁটি সামান্য না থাকিলে ঐরূপ বিভাগ হইত না। যাহা সাধারণধর্ম্ম তদ্বারা বিভাগ হয় না, বিভাগ করিতে হইলে বিভক্তের অসাধারণ ধর্ম্ম আবশ্যক। সত্তা কোন জাতি হইতে যে অল্প স্থানে নাই—অধিক স্থানেই আছে—ইহাই সত্তার অসাধারণ ধর্ম্ম। তদ্ভিন্ন জাতিত্বই অপর জাতির অসাধারণ ধর্ম্ম। মনে কর—মানুষ দুই প্রকার, পণ্ডিত ও মূর্খ—এইরূপ বিভাগ করা যায়, কেন না, পাণ্ডিত্য পণ্ডিতের ধর্ম্ম, কিন্তু মূর্খের ধর্ম্ম নহে, পণ্ডিতের অসাধারণ ধর্ম্ম। সুতরাং মূর্খত্ব মূর্খের ধর্ম্ম, পণ্ডিতের ধৰ্ম্ম নহে; সুতরাং মূর্খের অসাধারণ ধর্ম্ম। এই দুই অসাধারণ ধর্ম্ম লইয়া বিভাগ করা যাইতে পারে। কিন্তু মানুষ দুই প্রকার—মনুষ্য এবং পণ্ডিত এরূপ বিভাগ করা যায় না, কেন না মনুষ্যত্ব পণ্ডিতেরও ধর্ম্ম, সুতরাং ঐ ধর্ম্ম অসাধারণ হইল না; বিভাজক ধর্ম্মান্তরের সহিত এক স্থানে যাহা থাকে, তাহা অসাধারণ হইতে পারে না, যাহা থাকে না, তাহাই অসাধারণ। এই বিভাগ প্রদর্শনের জন্যই চতুর্থ ও পঞ্চম সূত্রের নিৰ্দ্দেশ।। ৪।।

উপস্কারঃ

সামান্যং বিশেষ ইতি দ্বৈবিধ্যং যদুক্তং তদুপপাদয়ন্নাহ।

ভাবঃ সত্তা অনুবৃত্তেরেব হেতুঃ, ন তু ব্যাবৃত্তেরপি হেতুঃ, তথাচ বিশেষসংজ্ঞাং ন লভতে।। ৪।।

.

দ্রব্যত্বং গুণত্বং কৰ্ম্মত্বঞ্চ সামান্যানি বিশেষাশ্চ।। ৫।।

অনুবাদ

দ্রব্যত্ব, গুণত্ব এবং কর্ম্মত্ব প্রভৃতি (জাতি) পর ও অপর (দুই নামে ব্যবহৃত হইতে পারে)।। ৫।।

ব্যাখ্যা

দ্রব্যত্ব প্রভৃতি জাতি ঘটত্ব-পৃথিবীত্ব-অপেক্ষা পরজাতি, সত্তা অপেক্ষা অপর জাতি। এই জন্য ইহাদিগকে পর ও অপর দুই বলা যায়। অনুবাদে যে ‘প্রভৃতি শব্দ প্রয়োগ করা হইয়াছে, তাহা সূত্রস্থ চকারের অর্থ। এই প্রভৃতি শব্দ দ্বারা পৃথিবীত্ব, রূপত্ব, উৎক্ষেপণত্ব ইত্যাদি বিবিধ পরাপর জাতি ধরিয়া লইবে। যে জাতি অপর একটী জাতি হইতেও অধিক আশ্রয়ে থাকিবে, সেই জাতিকেই ‘পর’ অর্থাৎ বড় বুঝিবে। আবার সেটা যদি সত্তা না হয় তাহা হইলে তাহাকে অপর অর্থাৎ ছোটও বুঝিবে।। ৫।।

উপস্কারঃ

কেষাং সামান্যানাং বিশেষসংজ্ঞেত্যপেক্ষায়ামাহ।

চকারঃ পৃথিবীত্বাদীনি দ্রব্যগতজাতীঃ রূপত্বাদীনি গুণগতজাতীঃ উৎক্ষেপণত্বাদীনি কৰ্ম্মগতজাতীঃ সমুচ্চিনোতি, দ্রব্যত্বমিত্যাদাবসমাসঃ পরস্পরং ব্যাপ্যব্যাপকভাবাভাবসূচনার্থঃ সামান্যানি বিশেষাশ্চেত্যত্রাসমাসঃ সামান্যত্বে সত্যেব বিশেষত্বং যথা জ্ঞায়েত তদর্থম্ অন্যথা সামান্যবিশেষা ইতি ষষ্ঠীসমাসভ্রমঃ স্যাৎ, তথাচ সামান্যত্বে সতি বিশেষত্বং ন প্রতীয়েত। ননু দ্রব্যাকারানুগতমতিসাক্ষিকং ন দ্রব্যত্বম্, পৃথিব্যাদৌ কথঞ্চিৎ তৎসত্ত্বেঽপি বায়ুাকাশাদৌ তদসম্ভবাৎ। ন চ গুণত্বাবচ্ছিন্নকার্য্যসমবায়িকারণতাবচ্ছেদকতয়া তৎসিদ্ধিঃ নিত্যানিত্যবৃত্তিতয়া গুণত্বস্য কাৰ্য্যতানবচ্ছেদকত্বাৎ গুণত্বার্থমপি পর্য্যনুযোগস্য তাদবস্থ্যাৎ, মৈবং সংযোগত্বা- বচ্ছিন্নকার্য্যসমবায়িকারণতাবচ্ছেদকতয়া দ্রব্যত্বসিদ্ধেঃ সা হি ন পৃথিবীত্বাদ্যবচ্ছেদ্যা ন্যূনবৃত্তিত্বাৎ নাপি সত্তাবচ্ছেদ্যাধিকবৃত্তিত্বাৎ অবশ্যং হ্যবচ্ছেদকেন ভবিতব্যম্, অন্যথাকস্মিক তাপত্তেঃ তত্র পরমাণুষু দ্ব্যণুকাসমবায়িকারণবওয়া দ্ব্যণুকেষু ত্র্যণুকাসমবায়িকারণবওয়া বিভুচতুষ্টয়স্য সৰ্ব্বমূৰ্ত্তসংযোগিতয়ৈব সিদ্ধেঃ, মনসি ইন্দ্রিয়মনঃসংযোগাধারতয়া বায়ৌ তৃণা- দিনোদনাশ্রয়তয়া প্রত্যক্ষদ্রব্যেষু প্রত্যক্ষতয়ৈব সংযোগাভ্যুপগমস্যাবশ্যকত্বাৎ অজস্তু সংযোগো নাস্ত্যেব যেন সংযোগত্বস্যাপি কাৰ্য্যাকার্য্যবৃত্তিতয়া কাৰ্য্যতাবচ্ছেদকতা ন স্যাৎ, এবং বিভাগসমবায়িকারণতাবচ্ছেদকতয়াঽপি দ্রব্যত্বসিদ্ধেঃ সুপ্রতিপদত্বাৎ। গুণত্বন্তু সংযোগবিভাগ- সমবায়িকারণত্বাসমবায়িকারণত্বশূন্যে সামান্যবতি যৎকারণত্বং তদবচ্ছেদকতয়ৈব সিদ্ধমি- ত্যুক্তত্বাৎ কৰ্ম্মত্বমপি প্রত্যক্ষদ্রব্যেষু চলতীতি প্রত্যয়সাক্ষিকম্, অন্যত্র তু সংযোগবিভাগানুমেয়ং সংযোগবিভাগোভয়াসমবায়িকারণতাবচ্ছেদকতয়াঽপি কৰ্ম্মত্বসিদ্ধেরাবশ্যকত্বাৎ। অতএবা- দিত্যস্য দেশান্তরপ্রাপ্ত্যা গত্যনুমানম্, তত্র চ দেশান্তরস্যাকাশাদেরতীন্দ্রিয়ত্বেঽপি তৎকিরণ- সংযোগবিভাগয়োস্তন্মণ্ডলেন প্রত্যক্ষত্বাৎ তত এব গত্যনুমানং, দেশান্তরপ্রাপ্তিমান্ আদিত্যঃ অবিনাশিত্বে দ্রব্যত্বে চ সতি প্ৰাখোপলব্ধস্য প্রত্যঙ্গুখেন তেনৈবোপলভ্যতয়া প্রত্যভিজ্ঞায়- মানত্বাদিতি দেশান্তরপ্রাপ্ত্যা অনুমিতয়া আদিত্যগত্যনুমানমিত্যুদ্যোতকরাচার্য্যাঃ।।৫।।

.

অন্যত্রান্ত্যেভ্যো বিশেষেভ্যঃ।।৬।।

অনুবাদ

‘অন্ত্য’ বিশেষ সমূহ ব্যতীত (এই সামান্য বিশেষ নিরূপণ জানিবে)।।৬।।

ব্যাখ্যা

প্রথম অধ্যায়ের প্রথম আহ্নিকে ৪র্থ সূত্রে যে বিশেষ পদার্থের উল্লেখ আছে, তাহা ‘অন্ত্য’ অর্থাৎ নিত্য এবং নিত্যদ্রব্য মাত্রে থাকে; অর্থাৎ কেবল একৈক পরমাণুতে তাহা থাকে। পৃথিবী প্রভৃতি চারিটী দ্রব্যের পরমাণু আছে। পরমাণুর অবয়ব নাই, সুতরাং পৃথিবীর যত পরমাণু সবই সমান। জলীয় পরমাণুর সহিত অবশ্য তাহার বৈজাত্য আছে, কেন না গুণভেদহেতু জলের স্বরূপ ও পৃথিবীর স্বরূপের বৈজাত্য আছে। তা হউক, পৃথিবীর পরমাণুসমুহ তো সমান, অথচ এই সমান পরমাণু হইতে বিবিধপ্রকার পার্থিব বস্তু ধান্য, মুদগাদি উৎপন্ন হইতেছে; কিন্তু কেমন করিয়া তাহা হয়, এক পার্থিব পরমাণুই যদি সকলের কারণ হইল তো একজাতীয় বস্তু উৎপন্ন হয় না কেন? এক বৃক্ষের নানা ফল, একপ্রকার পরমাণুসমূহ হইতেই সেই সকল ফলের উৎপত্তি, অথচ সকল ফল ঠিক এক নহে। রূপ, রস, গন্ধ ইত্যাদি বিভিন্ন হইয়া থাকে, ইহার কারণ কি? মহর্ষি কণাদ বলেন, ইহার কারণ ‘বিশেষ’। একৈক পরমাণুতে এক একটা বিশেষ থাকে,—সেই বিশেষ প্রত্যেক পরমাণু হইতে প্রত্যেক পরমাণুর পার্থক্য রাখে। সুতরাং সেই বিশেষের জন্যই এক পার্থিব পরমাণু হইতেই বিবিধ বস্তু উৎপন্ন হয়। যে পরমাণু হইতে একটী ধান্যের আরম্ভ হইয়াছে, সে পরমাণুতে যে বিশেষ আছে, মুদেগর আরম্ভক পরমাণুতে বা ধান্যান্তরের আরম্ভক পরমাণুতে সে বিশেষ নাই। ইহাই এই দর্শনের বিশেষ পদার্থ। এই বিশেষ পদার্থের জন্যই এই দর্শনের নাম বৈশেষিক হইয়াছে। ন্যায় প্রভৃতি দর্শনে এই বিশেষ পদার্থ স্বীকৃত হয় নাই। এই যে বিশেষ ইহা পূৰ্ব্বোক্ত বিশেষ অর্থাৎ অপর জাতি নহে। আমরা বিশেষ শব্দের উল্লেখ করিয়াছি। তাহার দুই প্রকার অর্থ; এক অর্থ একৈক পরমাণু মাত্রবৃত্তি অর্থাৎ দ্বয়াবৃত্তি (দুটী জিনিসেও যাহা থাকে না) গুণ ভিন্ন নিত্য ধৰ্ম্ম; অন্য অর্থ—’অপর’ জাতি; এই দুইয়ের মধ্যে প্রথমটী স্বতন্ত্র পদার্থ; দ্বিতীয়টী সামান্যের অন্তর্গত।। ৬।।

উপস্কারঃ

ননু য এব বিশেষ পদার্থ উদ্দিষ্টঃ স এব কিং সামান্যবিশেষত্বেনাভিধীয়তে ইতি শিষ্যাকাঙ্ক্ষামপনয়ন্নাহ।

অন্ত্যা বিশেষা নিত্যদ্রব্যবৃত্তয়ো যেঽভিহিতাঃ তান্ বর্জয়িত্বা সামান্যবিশেষাভিধানমিত্যর্থঃ। অন্তেহবসানে ভবন্তীত্যন্ত্যা যতো ন ব্যাবর্ত্তকান্তরমস্তীত্যাচার্য্যাঃ। উৎপাদবিনাশয়োরম্ভেহবসানে ভবস্তীত্যত্তা নিত্যদ্রব্যাণি তেষু ভবন্তীত্যত্যা বিশেষা ইতি বৃত্তিকৃতঃ। তে হি বিশেষা এব ব্যাবৃত্তিবুদ্ধিহেতবো ন তু সামান্যরূপা অপীতি।। ৬।।

.

সদিতি যতো দ্রব্যগুণকৰ্ম্মসু সা সত্তা।।৭।।

অনুবাদ

দ্রব্য, গুণ এবং কর্ম্ম যাহার জন্য ‘সৎ’ নামে ব্যবহৃত, তাহাই সত্তা।।৭।।

ব্যাখ্যা

কেহ কেহ সামান্য পদার্থ অন্ততঃ সত্তানামক সামান্য স্বীকার করেন না। তাঁহাদিগের মত-খণ্ডনের জন্য মহর্ষি সত্তানামক সামান্যের অস্তিত্ব প্রমাণ করিতেছেন। দ্রব্যাদি তিন পদার্থের ‘সৎ’ এইরূপে প্রত্যয় ও ব্যবহারই সত্তার অস্তিত্বে প্রামাণ।।৭।।

উপস্কারঃ

সত্তাসামান্যমিত্যত্র বহুনাং বিপ্রতিপত্তিরতস্তত্ৰ প্ৰমাণমাহ।

ইতিকারেণ প্রত্যয়ব্যবহারয়োঃ প্রকারমুপদিশতি। তথাচ দ্রব্যাদিষু ত্রিষু সৎসদিতি- প্রকারকো যতঃ প্রত্যয়ঃ সদিদং সদিদমিত্যাকারকঃ শব্দপ্রয়োগো বা যদধীনঃ সা সত্তা।।৭।।

.

দ্রব্যগুণকৰ্ম্মভ্যোঽর্থান্তরং সত্তা।। ৮।।

অনুবাদ

সত্তা—দ্রব্য, গুণ এবং কর্ম্ম হইতে বিভিন্ন পদার্থ।। ৮।।

ব্যাখ্যা

দ্রব্যাদি পদার্থ ‘সৎ’ সংজ্ঞায় অভিহিত হইয়া থাকে, পরন্তু ‘সৎ’ এবং ‘সত্তা’ একই, বিভিন্ন নহে; কেন না সত্তার স্বতন্ত্র ভাবে অনুভব হয় না; বিভিন্ন হইলে স্বতন্ত্রভাবে অনুভব হইত। দেখ, ঘট পট পরস্পর বিভিন্ন,—ঘট, পটের স্বতন্ত্র ভাবে অনুভব হয়। এই পূৰ্ব্বপক্ষের উত্তরে এই সূত্র কথিত হইয়াছে। ইহার ভাবার্থ এই যে, ‘সৎ’ এবং সত্তা এক হইলে, সত্তাকে দ্রব্য, গুণ এবং কর্ম্মস্বরূপ বলিতে হইত। তাহা হইলে দ্রব্যকে যেমন ‘সৎ’ বলা যায়, সেইরূপ দ্রব্যকে গুণও বলা যাইত, কেন না গুণ তো সত্তা হইতে অতিরিক্ত নহে; যদি বল, দ্রব্য, গুণ ইত্যাদি পরস্পর বিভিন্ন, সুতরাং দ্রব্যকে গুণ বলা যায় না, তাহা হইলে ‘সৎ’ বল কিরূপে? যদি বল ‘সৎ’ সাধারণ সংজ্ঞা, তাহাতে আমরা বলি, যখন ‘সৎ’ এই এক সংজ্ঞা দ্রব্য, গুণ ও কর্ম্ম এই তিনেরই সাধারণ, তখন সত্তাকে একটী সাধারণ ধৰ্ম্ম বলিতে হয়,–’সৎ’ বা দ্রব্যাদি স্বরূপ বলিলে, সত্তাকেও দ্রব্য গুণাদির ন্যায় অনেক বলিতে হয়; অনেক বলিলে এক প্রকার সংজ্ঞা ও একাকার প্রত্যয় হইতে পারে না। অতএব সত্তা দ্রব্যাদি হইতে বিভিন্ন।। ৮।।

উপস্কারঃ

ননু দ্রব্যগুণকৰ্ম্মভ্যঃ পৃথভাবেন সত্তা নানুভূয়তেইতো দ্রব্যাদ্যন্যতমদেব সত্তা, যতো হি যদ্ ভিন্নং ভবতি তত্ততো ভেদেনানুভূয়তে যথা ঘটঃ পটাৎ, ন চ সত্তা তেভ্যো ভেদেনানুভূয়তে ইতি তদাত্মিকৈবেত্যত আহ।

দ্রব্যাদয়োহননুগতাঃ সত্তা চানুগতা। তথাচ অনুগতত্বাননুগতত্বলক্ষণবিরুদ্ধধর্মাধ্যাসেন তেভ্যো ভেদস্য সিদ্ধত্বাৎ, যতু তেভ্যোঽন্যত্র নোপলভ্যতে তদ্যুতসিদ্ধিবলাৎ ঘটপটয়োস্ত যুতসিদ্ধিঃ, ন চ ব্যক্তিস্বরূপমেব সত্তা, ব্যক্তীনামননুগমাৎ স্বরূপত্বং যদ্যনুগতং তদা সৈব সত্তা অননুগতৈরপি স্বরূপৈরনুগতব্যবহারশ্চেত্তদা গোত্বাদিভিরপি গতম্। অতএব যত্র সত্তা সমবৈতি তাদৃশৈরাধারৈরেব তদ্ব্যবহারোপপত্তৌ কিং সত্তয়েত্যপাস্তম্। অতএবার্থক্রিয়াকারিত্বং প্রামাণিকত্বং বা সত্ত্বমিত্যযুক্তং তদননুসন্ধানেঽপি সন্নিতি প্রত্যয়াৎ।।৮।।

.

গুণকৰ্ম্মসু চ ভাবান্ন কৰ্ম্ম ন গুণঃ।।৯।।

অনুবাদ

গুণ এবং কর্ম্মে বর্ত্তমান বলিয়াও (সত্তা—দ্রব্য,) গুণ বা কৰ্ম্ম নহে।। ৯।।

ব্যাখ্যা

সত্তা গুণ ও কর্ম্মে বর্ত্তমান, দ্রব্যাদিত্রয় গুণ ও কর্ম্মে নাই,—সুতরাং সত্তা এবং দ্রব্যাদিত্রয় সমান নহে। অর্থাৎ গুণবৃত্তিত্ব বা কর্ম্ম-বৃত্তিত্ব সত্তার ধর্ম্ম, কিন্তু দ্রব্যাদির ধৰ্ম্ম নহে। এই যে বৈষম্য ইহাও সত্তার সহিত দ্রব্যাদিত্রয়ের ভেদ সিদ্ধ করিতেছে। বস্তু বিভিন্ন না হইলে কি এরূপ ধৰ্ম্মবৈষম্য ঘটিতে পারে?।।৯।।

উপস্কারঃ

ভেদকান্তরমাহ। ন গুণো ন কৰ্ম্মেতি বক্তব্যে ব্যত্যয়েনাভিধানং ন দ্রব্যমিত্যপি সূচয়তি। ন হি কৰ্ম্ম কৰ্ম্মসু বৰ্ত্ততে, ন বা গুণো গুণেষু, ন বা দ্রব্যং গুণে কৰ্ম্মণি বা, সত্তা তু গুণে কৰ্ম্মণি চ বৰ্ত্ততে তেন দ্রব্যগুণকৰ্ম্মবৈধর্ম্মাত্তেভ্যো ভিন্নৈব সত্তা।।৯।।

.

সামান্যবিশেষাভাবেন চ।। ১০।।

অনুবাদ

সামান্য-বিশেষের অভাব আছে বলিয়াও (সত্তাকে দ্রব্যাদি হইতে বিভিন্ন বলিতে হয়)।।১০।।

ব্যাখ্যা

সামান্য বিশেষ অর্থে—পরাপর জাতি। যে জাতি কোন জাতি অপেক্ষা পর এবং কোন জাতি অপেক্ষা অপর—তাহাই পরাপর জাতি। দ্রব্যত্বাদি পরাপর জাতি। সত্তা দ্রব্যাদি স্বরূপ হইলে তাহাতেও দ্রব্যত্বাদি থাকিত। সত্তা দ্রব্য, সত্তা গুণ এইরূপ ব্যবহার হইতে পারিত; পরন্তু তাহা তো হয় না। সুতরাং সত্তা দ্রব্যাদিত্রয় হইতে বিভিন্ন। তবে যে সৎ পদার্থ ও সত্তাকে পৃথভাবে অনুভব করা যায় না, তাহা সৎ এবং সত্তার অভেদ প্রযুক্ত নহে। কিন্তু সমবায় সম্বন্ধ প্ৰযুক্ত।। ১০।।

উপস্কারঃ

ভেদকান্তরমাহ।

যদি সত্তা দ্রব্যং গুণঃ কৰ্ম্ম বা স্যাৎ তদা সামান্যবিশেষবতী স্যাৎ ন চ সত্তায়াং সামান্যবিশেষা দ্রব্যত্বাদয় উপলভ্যন্তে, ন হি ভবতি সত্তা দ্রব্যং গুণঃ কৰ্ম্ম বেতি ক্যোঞ্চিদনুভবঃ।। ১০।।

.

অনেকদ্রব্যবত্ত্বেন দ্রব্যত্বমুক্তম্।।১১।।

অনুবাদ

‘অনেক দ্ৰব্যবৎ’ বলিয়া দ্রব্যত্ব (পৃথক্) কথিত হইয়াছে।। ১১।।

ব্যাখ্যা

যাহা দ্রব্য ভিন্নে থাকে না অথচ সকল দ্রব্যেই থাকে, এখানে তাহাকেই ‘অনেক দ্রব্যবৎ’ বলা হইয়াছে। দ্রব্যত্ব যে পরাপর জাতি ইহা পূৰ্ব্বে কথিত হইয়াছে। কেন না তাহা “অনেক দ্রব্যবৎ’। সত্তা ও দ্রব্যত্ব এক নহে, দ্রব্যত্ব গুণ বা কৰ্ম্মস্বরূপও নহে, কেন না, সত্তা বা গুণাদি ঐরূপ অনেক দ্রব্যবৎ নহে; দ্রব্যত্বও সত্তার ন্যায় অতিরিক্ত ধৰ্ম্ম।। ১১।।

উপস্কারঃ

এবং সত্তায়া দ্রব্যগুণকর্ম্মভ্যো হর্থান্তরত্বমভিধায় দ্রব্যত্বস্য তেভ্যোঽর্থান্তরত্বমাহ।

অনেকং দ্রব্যং সমবায়িতয়া যস্যাস্তি তদনেকদ্রব্যবৎ। অনেকপদমিহ সর্ব্বপরং তেন পৃথিবীত্বাদিভ্যো ভেদঃ, নিত্যত্বন্তু সামান্যলক্ষণপ্রাপ্তমেব তেনাবয়বিভ্যো ভেদঃ, অনেকদ্রব্যবত্ত্বঞ্চ অনেকদ্রব্যমাত্রসমবেতত্বং তেন সত্তায়া ভেদঃ। তেন নিত্যমনেকদ্রব্যমাত্রসমবেতং দ্রব্যত্বম্, অতঃ সংযোগো নেষ্যত ইত্যুক্তং দ্রব্যত্বঞ্চ সাধিতমেব। দ্রব্যত্বমুক্তমিতি দ্রব্যত্বমপি সত্তাবদেব ব্যাখ্যাতমিত্যর্থঃ।।১১।।

.

সামান্যবিশেষাভাবেন চ।। ১২।।

অনুবাদ

সামান্য বিশেষ (দ্রব্যত্বে) নাই ও এই জন্য (দ্রব্যত্ব অতিরিক্ত)।। ১২।।

ব্যাখ্যা

দ্রব্যত্ব সত্তা হইতে অতিরিক্ত হইলেও তাহা অতিরিক্ত ধৰ্ম্ম বা জাতি নহে; দ্রব্যত্ব দ্রব্যেরই স্বরূপ। দ্রব্য ও দ্রব্যত্বের স্বতন্ত্র অনুভব হয় না। ইহা পূৰ্ব্বপক্ষ। ইহার উত্তরে এই সূত্র কথিত হইয়াছে। তাহার ভাবার্থ এই—যে, দ্রব্যত্ব দ্রব্যস্বরূপ হইলে, তাহা পরাপর জাতিমৎ হইত। দ্রব্যে পৃথিবীত্ব প্রভৃতি পরাপর জাতি থাকে; কিন্তু দ্রব্যত্ব স্বয়ং জাতি হইলেও জাতিশূন্য। যখন দ্রব্যত্বে পৃথিবীত্বাদি জাতি নাই অর্থাৎ ‘দ্রব্যত্ব পৃথিবী’ বা ‘পৃথিবী দ্রব্যত্ব’ এরূপ ব্যবহার হয় না, পরন্তু ‘পৃথিবী দ্রব্য’ এরূপ ব্যবহার হয় তখন দ্রব্যত্ব ও দ্রব্য যে এক নহে ইহা স্থির, দ্রব্যত্ব গুণকর্ম্মস্বরূপও নহে। কেন না তাহা হইলে সকল দ্রব্যে সর্ব্বদা এক দ্রব্যত্ব থাকিত না।। ১২।।

উপস্কারঃ

ননু দ্রব্যত্বমপি জাতিঃ স্বাশ্রয়াদভিন্নমেব স্যাৎ কো দোষ ইত্যত আহ।

যদি দ্রব্যত্বং জাতিঃ দ্রব্যাদ্যাত্মিকৈব স্যাৎ তদা তস্যাং পৃথিবীত্বজলত্বতেজস্বাদয়ঃ সামান্য- বিশেষাঃ স্যুরিত্যর্থঃ। ন হি ভবতি দ্রব্যত্বং পৃথিবী জলং তেজো বেতি কেষাঞ্চিৎ প্রত্যয় ইত্যর্থঃ।।১২।।

.

তথা গুণেষু ভাবাদ গুণত্বমুক্তম্।।১৩।।

অনুবাদ

গুণ বৃত্তি বলিয়া গুণও (সত্তাদি হইতে বিভিন্ন ইহা) কথিত হইয়াছে।। ১৩।।

ব্যাখ্যা

‘গুণবৃত্তি’ অর্থে গুণমাত্রবৃত্তি; অর্থাৎ যাহা গুণভিন্নে থাকে না অথচ সকল গুণেই থাকে তাহা; এই জন্যই গুণত্ব পৃথক্ জাতি। গুণত্ব সত্তা নহে; কেন না গুণমাত্র বৃত্তিত্ব সত্তার ধর্ম্ম নহে, দ্রব্যগুণ কর্ম্মেরও ধর্ম্ম নহে, কিন্তু গুণত্বের ধর্ম্ম। এই যে সত্তা ও গুণত্বের বা দ্রব্যাদি ও গুণত্বের বৈষম্য, তাহা হইতেও পরস্পর ভেদ প্রমাণিত হইতেছে।। ১৩।।

উপস্কারঃ

গুণত্বমাহ।

গুণেত্বেব ভাবাৎ সমবায়াৎ গুণত্বং দ্রব্যগুণকৰ্ম্মভ্যো ভিন্নং সত্তাবদেবোক্তমিত্যর্থঃ।।১৩।।

.

সামান্যবিশেষাভাবেন চ।। ১৪।।

অনুবাদ

সামান্য বিশেষ নাই এই হেতুও (গুণত্ব অতিরিক্ত)। ১৪।

ব্যাখ্যা

গুণত্ব ও গুণ, বিভিন্ন প্রকারে অনুভবের বিষয় না হইলেও—এক নহে; কেন না গুণত্বে পরাপর জাতি নাই। গুণত্ব ও গুণ এক হইলে গুণত্বেও পরাপর জাতি থাকিত। কেন না গুণে রূপত্ব প্রভৃতি পরাপর জাতি আছে। গুণত্ব দ্রব্যাদি স্বরূপও নহে, কেন না তাহাতেও পরাপর জাতি আছে।। ১৪।।

উপস্কারঃ

ভেদকান্তরমাহ।

যদি দ্রব্যগুণকৰ্ম্মভ্যো গুণত্বমতিরিক্তং ন ভবেত্তদা দ্রব্যত্বগুণত্বকর্ম্মত্বতদবান্তরজাতিমওয়া উপলভ্যেত্যের্থঃ।।১৪।।

.

কৰ্ম্মসু ভাবাৎ কৰ্ম্মত্বমুক্তম্।। ১৫।।

অনুবাদ

কৰ্ম্মবৃত্তি বলিয়া কৰ্ম্মত্ব (দ্রব্যাদি হইতে বিভিন্ন ইহা) কথিত হইয়াছে।। ১৫।।

ব্যাখ্যা

‘কৰ্ম্মবৃত্তি’ কৰ্ম্মমাত্র বৃত্তি; অর্থাৎ যাহা কৰ্ম্ম ভিন্নে থাকে না অথচ সকল কৰ্ম্মে থাকে, তাহা। এই জন্যই কর্ম্মত্ব অতিরিক্ত। সত্তা, দ্রব্যত্ব প্রভৃতি জাতি, দ্রব্যাদিত্রয় বা সমবায়াদি উক্তরূপ ‘কর্ম্মবৃত্তি’ নহে; সুতরাং কর্ম্মত্ব জাতির সহিত অপর সকলের কৰ্ম্মবৃত্তিত্ব লইয়া বৈষম্য থাকিল; এই বৈষম্যই পরস্পর ভেদের জ্ঞাপক।। ১৫।।

উপস্কারঃ

দ্রব্যগুণকৰ্ম্মভ্যো ভেদকং কৰ্ম্মত্বস্যাহ। কৰ্ম্মস্বেব ভাবাৎ সমবায়াৎ কর্ম্মত্বমপি জাত্যন্তরং দ্রব্যগুণকৰ্ম্মভ্যো ভিন্নমুক্তং সত্তাবদিত্যর্থঃ।। ১৫।।

সামান্যবিশেষাভাবেন চ।।১৬।।

অনুবাদ

সামান্য বিশেষ নাই এই জন্যও (কৰ্ম্মত্ব অতিরিক্ত)।।১৬।।

ব্যাখ্যা

কৰ্ম্মত্ব,–কৰ্ম্ম, গুণ বা দ্রব্যের স্বরূপ হইতে পারে না। এ বিষয়ে আর একটী যুক্তি এই যে, কর্ম্মত্বে পরাপর জাতি নাই, কর্ম্ম প্রভৃতিতে পরাপর জাতি আছে। সে পরাপর জাতি উৎক্ষেপণত্ব ইত্যাদি।। ১৬।।

উপস্কারঃ

ভেদকান্তরমাহ্।

কৰ্ম্মত্বং যদি দ্রব্যাদ্যাত্মকং ভবেত্তদা দ্রব্যত্বাদিসামান্যবিশেষস্তত্র সমবেয়াদিত্যর্থঃ। সেয়মেকাকারা চতুঃসূত্রী সত্তাদ্রব্যত্বগুণত্বকৰ্ম্মত্বানাং চতসৃণাং জাতীনাং দ্রব্যগুণকৰ্ম্মভেদ- প্রতিপাদনায় একপ্রকরণৈনোক্তেত্যবধেয়ম্।। ১৬।।

.

সদিতিলিঙ্গাবিশেষাদ বিশেষলিঙ্গাভাবাচ্চৈকো ভাবঃ।।১৭।।

অনুবাদ

সত্তা এক, কেন না ‘সৎ’ এই প্রকার জ্ঞান বা ব্যবহার (দ্রব্য, গুণ এবং কৰ্ম্ম এই তিনেই) সমান এবং ভেদের সাধকও (কিছু) নাই।। ১৭।।

ব্যাখ্যা

দ্রব্যে সত্তা আছে, গুণে সত্তা আছে, কর্ম্মেও সত্তা আছে। এই যে সত্তা ইহা এক নহে; দ্রব্যত্বাবচ্ছিন্ন সত্তা, গুণত্বাবচ্ছিন্ন সত্তা এবং কর্ম্মত্বাবচ্ছিন্ন সত্তা বিভিন্ন। সুতরাং এই বিভিন্ন সত্তাকে দ্রব্যত্বাদিস্বরূপ বলিতে বাধা নাই, ইহাই পূৰ্ব্বপক্ষ। এই পূর্ব্বপক্ষের উত্তরে এই সূত্র কথিত হইয়াছে। সত্তা বিভিন্ন নহে; কেন না—’ইহা সৎ’ এইরূপ জ্ঞান বা ব্যবহার দ্রব্য, গুণ ও কর্ম্মে তুল্যরূপই হইয়া থাকে। বিষয়ভেদ থাকিলে জ্ঞান এবং ব্যবহারেরও ভেদ হইত। সত্তা অনেক এই মতের ইহা বাধক যুক্তি। সত্তা অনেক এই মতের অনুকূল যুক্তিও নাই যে, তদ্দ্বারা বাধকযুক্তি দুৰ্ব্বল হইবে।। ১৭।।

প্রথম অধ্যায়ে দ্বিতীয় আহ্নিক সমাপ্ত।

উপস্কারঃ

ননু সত্তা দ্রব্যগুণকৰ্ম্মসু বর্ত্তমানা দ্রব্যত্বাদ্যবচ্ছেদভেদেন ভিন্নেব কথং ন স্যাদত আহ। সদিত্যাকারকং জ্ঞানং শব্দপ্রয়োগো বা সত্তায়া লিঙ্গং তচ্চ দ্রব্যগুণকৰ্ম্মসু সমানমবিশিষ্টং তেন ভাবঃ সত্তা একৈব তেষু বৰ্ত্ততে। অন্যথা দ্রব্যত্বাদিভিস্তল্যব্যক্তিকতয়া সত্তা বা ন স্যাৎ তানি বা ন স্যুঃ বিশেষলিঙ্গাভাবাচ্চেতি বিশেষো ভেদস্তত্র যল্লিঙ্গমনুমানং তদভাবাচ্চ ন ভেদ ইত্যর্থঃ। ভবতি হি স এবায়ং দীপ ইত্যনুগমস্ত যথা বিশেষলিঙ্গ দীর্ঘহ্রস্বত্বাদিপরিমাণভেদস্তথাত্র বিশেষলিঙ্গং নাস্তীতি ভাবঃ।।১৭।।

ইতি শ্রীভগবৎকণাদসূত্রোপস্কারে শাঙ্করে প্রথমাধ্যায়স্য দ্বিতীয়াহ্নিকম্।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *