প্রতীক্ষিত মাসীহর আগমন ও হাইকাল পুনঃ নির্মাণ
আমরা প্রথমে ইহুদীদের প্রতীক্ষিত মাসীহ সম্পর্কে আলোচনা করবো। ইহুদীদের প্রতীক্ষিত মাসীহর আগমনের সাথে মসজিদে আকসা ধ্বংস ও সেই স্থানে তৃতীয় হাইকাল তৈরির বিশ্বাস গভীরভাবে জড়িত। তাদের এই ধারণা প্রাচীন। উপযুক্ত সময়ে সেই মাসীহ আসবে। অর্থাৎ হাইকাল তৈরির পর পরিবেশ অনুকূল হলে বহু প্রতীক্ষিত মাসীহ আসবেন এবং তাঁর হাতে ইহুদীরা মুক্তি ও পরিত্রাণ পাবে। তাকে তাদের বাদশাহ হিসেবে রাজমুকুট পরাননা।
হবে। তিনি জেরুসালেম তথা ৩য় হাইকাল থেকে গোটা দুনিয়া শাসন করবেন। এই মাসীহ সর্বপ্রথম দুনিয়ায় আসবেন। কিন্তু খৃস্টানদের মতে, হাইকাল পুনঃ নির্মিত হলে মাসীহ ঈসা বিন মরিয়াম দুনিয়ায় পুনরায় আসবেন এবং সেটা হবে তার ২য় আগমন। কিন্তু ইহুদীদের মাসীহ খৃস্টানদের মাসীহ থেকে সম্পূর্ণ ভিন্ন পুরুষ। ইসলামের দৃষ্টিতে, কেয়ামতের সামান্য আগে হযরত মাসীহ ঈসা আলাইহিস সালাম পুনরায় দুনিয়ায় আসবেন। তিনি মরিয়মের সন্তান হিসেবে হযরত দাউদের বংশধর। তাওরাতও সেই কথা বলেছে। কেউ কেউ তাওরাতে বর্ণিত প্রতীক্ষিত মাসীহ বলতে হযরত মুহাম্মাদ (সাঃ)-এর নবুওতকে বুঝিয়েছেন। সে অনুযায়ী সেই মাসীহ এসে গেছেন এবং ইহুদীরা তার নবুওতকে অস্বীকার করে সেই নেয়ামত থেকে বঞ্চিত হয়েছে। যাই হোক, মুসলিম ও খৃস্টানদের বিশ্বাস মোতাবেক যে মাসীহ ঈসার আগমন ঘটবে, ইহুদীরা তা অস্বীকার করায় তাদের ভাগ্যে সেই বিরাট কল্যাণ ও সৌভাগ্য জুটবে না।
তালমুদের মতে, তাদের প্রতীক্ষিত মাহদী আসার পর তিনি যখন বিজয়ী শাসক হিসেবে গোটা দুনিয়া শাসন করবেন তখন প্রতি ইহুদীর মাথাপিছু ২ হাজার ৩শ’ দাস ভাগে পড়বে। মাসীহর আগমনের আগে যে যুদ্ধ সংঘটিত হবে, তাতে বিশ্বের এক-তৃতীয়াংশ এলাকা ধ্বংস হয়ে যাবে। ডঃ জোশেফ বারকলী তালমুদের উপর গবেষণার পর মন্তব্য করেছেন, ইহুদীদের কাছে প্রতীক্ষিত মাসীহর আগমন একটি বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।” ইহুদীদের প্রতীক্ষিত মাসীহর মর্যাদা লাভ করার জন্য বিভিন্ন সময় বহু ইহুদী নিজেকে মাসীহ বলে দাবী করেছে। ৬৪০ খৃঃ, ৭২০ খৃঃ, ৭৫০ খৃঃ, ১৬৪৮ খৃঃ এবং ১৬৬০ খৃঃ পৃথক ব্যক্তিরা মাসীহ হওয়ার দাবী করে। শেষ পর্যন্ত ইহুদী চিন্তাবিদরা যে প্রটোকল তৈরি করেছে, এর আলোকে তারা গোটা দুনিয়ার গোলযোগ, বিশৃংখলা, অশান্তি ও যুদ্ধ-বিগ্রহ লাগিয়ে তাদের প্রতীক্ষিত মাসীহর আগমনের পরিবেশ সৃষ্টির অঙ্গীকার করেছে। তাদের প্রটোকলের এক জায়গায় বলা হয়েছে, ইহুদীরা সেই মাসীহ ব্যতীত শান্তিতে বাস করতে পারবে না। চারদিক থেকে তাদের উপর অশান্তি নেমে আসবে। মাসীহ এসে তাদেরকে রক্ষা করবে। শেষ পর্যন্ত অন্যান্য লোকেরা মাসীহকে চরম স্বৈরাচারী বলেও অভিহিত করবে।
.