পুবের চাতক

পুবের চাতক

          সকাল-সাঁঝে চেয়ে থাকি পুব-গগনের পানে
          কেন যে তা তার আঁখি আর আমার আঁখিই জানে।
নদীপারের দেশে থাকি           এমনি তারও আঁখি-পাখি
          দিগ্‌বালিকার পুব-কপোলে চাওয়ার পাখা হানে।
          চাওয়ায় চাওয়ায় চুমোচুমি রোজ মোদের ওইখানে।
  
          মোদের চোখের চুমুর মিলন ভোরের তারার পুবে,
          সেই মিলনের ভরাট পুলক অস্তঘাটে ডুবে।
হারা সে চোখ নতুন করে          ভোরের আলোয় উঠে ভরে
          নিশি-জাগা আঁখির লালি লাগে ঊষার প্রাণে।
          দূরের দেখা দুইটি চাওয়ায় করুণ রেখা টানে।
  
          উদয়ঘাটে হাসে যখন পোড়ারমুখি শশী
          শশীর মুখে চেয়ে ভাবি শশী তো নয় দোষী।
তার চোখে ওই কাজল-রাগই          রুচির চাঁদে করলে দাগি
          কলঙ্কী চাঁদ কাজল-আঁখির সজল চাওয়ার বাণে।
          দোষী শশীর কলঙ্ক তার আঁখির স্মৃতি আনে।
  
          পুবের দেশের চাতক আমি চাই নাকো আন্ পানে,
          তাই তো সে-ও তার চাহনি পুব গগনেই হানে।
সে থাকে মোর উদয়-দেশে          তাই সে দেশে ভালোবেসে
          তাকাই না গো পিছন পানের অস্তমরূদ্যানে,
          পাছে তাহার বাজে ব্যথা কোমল অভিমানে।
  
          যেদিন আমি বিদায় নেব শেষের খেয়া বেয়ে
          জানি না তার আঁখি সেদিন থাকবে কোথায় চেয়ে।
তাই তো এমন মিটিয়ে ক্ষুধা          চোখ ভরে পিই চোখের সুধা
          দূরের বেদন ভুলায় মোর ওই চাউনি-তরঙ গানে।
          এবার এ চোখ হারিয়ে গেলাম পুবের পরিস্থানে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *