পঞ্চম অধ্যায় – যুদ্ধের ফলাফল
ফলাফল
উভয় পক্ষে নিহতের সংখ্যা
যুদ্ধবন্দী পৌত্তলিকদের সংখ্যা
বদরের যুদ্ধে অংশগ্রহণকারী সাহাবীদের নাম
যুদ্ধের ব্যাপারে কুরআন
.
মুসলমানদের উপর সম্পূর্ণ অপ্রত্যাশিতভাবে চাপিয়ে দেওয়া বদরের যুদ্ধ এভাবেই সমাপ্ত হয় এবং আল্লাহর রহমতে মুসলমানরাই এ যুদ্ধে জয়লাভ করেন। এযুদ্ধে শত্রুরা চরমভাবে পরাজয় বরণ করে। বিশজন নেতাসহ মোট সত্তরজন শত্রু-সেনা নিহত হয় এবং আরো সত্তরজন মুসলমানদের হাতে বন্দী হয়।
উভয় পক্ষে নিহতের সংখ্যা
এই যুদ্ধে মুসলমানদের পক্ষের নিম্নোক্ত চৌদ্দজন লোক নিহত হন; এদের মধ্যে ছ’জন ছিলেন মুহাজিরিন এবং আটজন ছিলেন আনসার : ক. মুহাজিরিনদের মধ্যে থেকে :
১. ওবায়দা বিন আল-হারিস বিন আল-মুত্তালিব[১] বনি আল-মুত্তালিব বিন আব্দ্ মানাফ থেকে আগত একমাত্র যোদ্ধা যার পা কেটে দিয়েছিলেন উৎবাহ্ বিন রাবিয়াহ্ বিন আব্দ্ শামস্ বিন আব্দ্ মানাফ। মুসলমানরা তাকে আহত অবস্থায় সরিয়ে নিয়ে যান। তিনি মদীনার পথে আসাফরা উপত্যকায় মৃত্যু বরণ করেন।
[১. ইনি ছিলেন কুরাইশ বংশের একজন সাহসী যোদ্ধা মক্কায় জন্মগ্রহণকারী এই ব্যক্তি নবীজি কর্তৃক দার আলআরকামকে তার সদর দপ্তর বানানোর আগেই ইসলাম গ্রহণ করেছিলেন। তিনি ছিলেন দ্বিতীয় ব্যক্তি যাকে মহানবী ১ম হিজরীতে ষাট জনের সামরিক অভিযানে পতাকা বহনের দায়িত্ব দিয়েছিলেন। এরা থানিয়াতুন মারায় আবু সুফিয়ানের বাহিনীর সম্মুখীন হয়েছিলেন বলে কথিত আছে।]
২. সা’দ বিন আবি ওয়াকাসের ভাই উমাইর বিন আবি ওয়াক্কাস[২]।
[২. ইনি নিহত হয়েছিলেন আমর বিন আবদুদ আল আমরির হাতে যিনি আবার নিহত হন মোয়াতের যুদ্ধে আলী বিন আবি তালিবের হাতে। বয়স কম হওয়ার জন্য মহানবী উমাইরকে যুদ্ধে অংশ গ্রহণ করতে নিষেধ করে বাড়ী ফিরে যেতে বলেছিলেন। এতে তিনি কান্না শুরু করলে তাকে যুদ্ধ করতে দেওয়া হয়। এই যুদ্ধে তিনি শহীদ হন।]
৩. দু’ল শিমালাইন[১] বিন আব্দ্ আমর বিন নাদ্ল্লাত আল-খুজা-ই (বনি জারার মিত্র)।
৪. বনি সা’দ বিন লাইদ বিন আব্দ্ মানাত বিন কিনানাহ্ থেকে আগত আকিল বিন আল-বুকাইর[২]।
৫. ওমর বিন আল-খাত্তাবের মুক্তি দেওয়া ক্রীতদাস মির্জা[৩]। (এদের দু’জনই বনি আদি বিন কা’ব বিন লুইই গোত্রের মানুষ)
৬. বনি আল-হারিস বিন ফি গোত্রের একমাত্র যোদ্ধা সাফওয়ান বিন বাইদা [৪]।
[[১. দু’ল শিমালাইন ছিলেন আদনানির শাখা-গোত্র খুজা ও হুদাইল গোত্রের লোক। তিনি দু’ল ইয়াদাইন নামেও পরিচিত। একদিন নবীজি যখন চার রাকাতের স্থলে দুই রাকাত নামায আদায় করেন তখন ইনি নবীজির দৃষ্টি আকর্ষণ করে জিজ্ঞেস করেছিলেন, “হে আল্লাহর দূত, আপনি কি নামায সংক্ষিপ্ত করলেন নাকি চার রাকাত পড়তে ভুলে গিয়েছিলেন?”
২. নির্যাতনের সময় মক্কার দার-আল-আরকামে নবীজির কাছে সর্বপ্রথম আনুগত্য স্বীকার করেছিলেন এই আকিল। তিনি ছিলেন ইসলামে বিশ্বাসীদের মধ্যে প্রথম সারির লোক। জাহিলিয়া যুগে তার নাম ছিল গাফিল; পরে মহানবী তার নাম দেন আকিল। জাতিগতভাবে তিনি ছিলেন আব্দ্ মানাত বিন কিনানাহ্ বিন খুজাইমা বিন মুদরাকা পরিবারের লোক।
৩ ইবনু হাজার তার আল-ইযাবাতে বলেছেন, “মিজা আল-আক্কি ছিলেন ওমর বিন আল-খাত্তাবের ছেড়ে দেওয়া ক্রীতদাস।” তিনি প্রথম দিকেই ইসলাম গ্রহণ করেন এবং বদরের যুদ্ধে শহীদ হন। ইবনু আব্বাসের মতে মির্জা সম্পর্কেই কুরআনের এই আয়াতটি নাযেল হয়েছিল :
“হে মুহাম্মদ, যারা দিনে এবং রাতে তাদের প্রভুর কাছে প্রার্থনা করে তাদেরকে তোমার কাছ থেকে তাড়িয়ে দিও না”।
৪ সাফওয়ান বিন ওয়াহব বিন রাবিয়া বিন হিলাল আল-ফিহরি বদরের যুদ্ধে তাইমা বিন আদি আন-নাওফালির হাতে নিহত হন।]
খ. আনসারদের মধ্য থেকে :
বদরের যুদ্ধে নিম্নোক্ত আনসারগণ শহীদ হয়েছিলেন :
১. বনি আমর বিন আউফ (আল-খাজরাজের শাখা) গোত্রের দু’জন- সা’দ বিন খায়সামা[৫] এবং মুবাশ্বির বিন আব্দ আল-মুন্দির বিন জানবার[৬]।
[৫. যারা প্রথম ইসলাম গ্রহণ করেন এবং আকাবার প্রতিশ্রুতির সময় মহানবী যে বারজন শিষ্যকে মনোনীত করেছিলেন সা’দ বিন খায়সামা বিন আল-হারিস বিন মালিক আল-খাজরাজি ছিলেন তাদের মধ্যে একজন। কে যুদ্ধে যাবেন এ নিয়ে বাবার সঙ্গে প্রতিযোগিতায় জিতে তিনি বদরের যুদ্ধে অংশ নিয়েছিলেন বাবা যুদ্ধে যাওয়ার জন্য জেদ করলে তিনি বলেছিলেন, “বাবা, বেহেশত ছাড়া আরকিছুর ব্যাপার হলে আমি যেতে চাইতাম না।” ফলশ্রুতিতে তিনি বদরের যুদ্ধে শাহাদৎ বরণ করেন। সা’দ বিন খায়সামার দৃষ্টান্ত মুসলমান যুবকদের কাছে বিশেষ মনোযোগের দাবি রাখে, কারণ এতে প্রকাশ প্রায় কিভাবে অসভ্য দারিদ্র-পীড়িত বেদুইনদের হাতে বিশ বছরেরও কম সময়ে সেই সময়কার দু’টি শক্তিশালী সাম্রাজ্য ধ্বংস হয়েছিল।
৬. মুবাশ্বির বিন আব্দ আল-মুন্দির বিন জানবার আল-খাজরাজি আল-আনসারী হচ্ছেন, সেই বিখ্যাত সাহাবী আবু লুবাবার ভাই যাকে মহানবী তাঁর ডেপুটি হিসেবে আররাওহা থেকে মদীনায় ফেরত পাঠিয়েছিলেন।]
২. বনি আল-হারিস বিন আল-খাযরাজ (আল-খাযরাজের একটি শাখা) গোত্রের একজন— এজিদ বিন আল-হারিস[১] (ইবনু ফাশাম নামে পরিচিত)।
৩. বনি সালমা (আল-খাযরাজের একটা শাখা) গোত্রের একজন উমাইর বিন আল-হাম্মাম[২]।
৪. বনি হাবিব (আল-খাযরাজের একটা শাখা) গোত্রের একজন -রাফে বিন আল-মুয়ালি[৩]।
৫. বনি নাজ্জার (আউসের একটা গোত্র) গোত্রের একজন— হারিসা বিন সুরাকা বিন আল-হারিস[৪]।
৬. বনি গানাম (আউসের আরেকটি গোত্র) গোত্রের দু’জন –আউফ বিন আল-হারিস বিন রা’ফা এবং তার ভাই মুয়াইদ বিন আল-হারিস[৫]।
[১. ইনি ইবনু ফাশাম নামেই অধিক পরিচিত। মহানবী তার এবং আব্দ্ আমরের (ডাক নাম দু’ল শিমালাইন নামে সুপরিচিত) মধ্যে ভ্রাতৃত্ব প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।
২. ইনিই সেই লোক যিনি বদরের যুদ্ধের সময় আহাররত অবস্থায় থালার খেজুর ফেলে দিয়ে পৌত্তলিকদের উপর ঝাঁপিয়ে পড়েন এবং যুদ্ধরত অবস্থায় শাহাদত বরণ করেন।
৩ ইনি নিহত হন আবু জেহেলের পুত্র আকরামের হাতে।
৪ আল- ইসাবায় উল্লেখিত তার নাম ছাড়া তার সম্পর্কে আর কোন বিস্তারিত তথ্য পাওয়া যায়নি।
৫ আরেকজন আনসারী সাহাবীর হাতে আহত আবু জেহেলকে হত্যা করতে এই ভ্রাতৃদ্বয় যৌথ ভূমিকা রাখেন।]
যুদ্ধে নিহত পৌত্তলিকদের নাম
বদরের যুদ্ধে পৌত্তলিক বাহিনীর সত্তর জন সৈন্য নিহত হয়েছিলেন। তারা ছিল :
ক. বনি আব্দ্ শাম্স্ বিন আব্দ্ মানাফ গোত্রের ১২ জন :
১. উৎবাহ্ বিন রাবিয়া বিন আব্দ্ শাম্স্ (ওবায়দা বিন আব্দুল মুত্তালিব কর্তৃক আহত)।
২. শায়বা বিন রাবিয়া বিন আব্দ্ শাম্স্ (ওবায়দা বিন আল-হারিস কর্তৃক আহত এবং আলী বিন আবু তালিব ও হামযা বিন আব্দুল মুত্তালিব কর্তৃক নিহত।
৩. আল-ওয়ালিদ বিন উবাহ (আলী বিন আবু তালিব কর্তৃক নিহত)।
৪. হানযালা বিন আবি সুফিয়ান বিন হারব (নবীজি কর্তৃক মুক্তি-প্রদত্ত ক্রীতাদাস যাইদ বিন হারিসের হাতে নিহত)।
৫. আল-হারিস বিন আল-হাদরামি (আব্দ্ শামসের একজন মিত্র) আল-নাওমান বিন আসর কর্তৃক নিহত।
৬. আমির বিন আল-আদরামি (আব্দ্ শামসের আরেক মিত্র) নিহত হন আম্মার[১] বিন ইয়াসিরের হাতে।
[১. ইনি ছিলেন বনি মাখজুমের একজন মিত্র এবং তার মা ছিলেন তাদের মুক্তি দেওয়া ক্রীতদাসী। তিনি প্রথম ইসলাম গ্রহণ কারীদের একজন এবং মক্কায় এর জন্য তার বাবার’ সঙ্গে অনেক যাতনা সহ্য করেন। মহানবী তাদের কষ্ট দেখে বলতেন, “ও ইয়াসিবের পরিবার, তোমরা ধৈর্য্য ধর। তোমাদের বাসস্থান হচ্ছে বেহেশ্ত্।” তিনি মদীনায় অভিপ্রয়াণ করে মহানবীর সঙ্গে থেকে সব যুদ্ধে অংশ নেন। তিনি খালিদ বিন আল-ওয়ালিদের সেনাবাহিনীর সঙ্গে আল-ইয়ামামায় গমন করেন এবং সেখানে তার একটা কান হারান। খলিফা ওমর তাকে কুফার গভর্ণর নিয়োগ করেন। ইবনু মাজা মতে তিনি ছিলেন৭ জন মুসলমানের একজন যারা মুক্তভাবে মক্কায় তাদের ধর্মবিশ্বাসের কথা ঘোষণা করেছিলেন। তিনি সিফিনের যুদ্ধে আলী ইবনু আবি তালিবের পাশে যুদ্ধরত অবস্থায় নিহত হন। তিনি খলিফা ওসমানের প্রতিদ্বন্দ্বীদের সাথে যোগ দিয়ে মালিক আল-উশতার আল-নাখির সহযোগিতায় খলিফার বাড়ী আবরোধ করেন এবং তাতে দূর্বৃত্তদের হাতে ওসমান নিহত হন। ফলশ্রুতিতে গোটা মুসলিম বিশ্ব একটা সীমাহীন বিশৃঙ্খলায় পতিত হয়।]
৭. উমাইর বিন আবি উমাইর।
৮. উমাইরের এক পুত্র এবং বনি আব্দ্ শামসের দু’জন মুক্ত ক্রীতদাস।
৯. ওবায়দা বিন সাইদ বিন আল-আস (আয-জুবাইর বিন আল-আওয়াম কর্তৃক নিহত)।
১০. আল-আস বিন সাঈদ বিন আল-আস (আলী বিন আবি তালিব কর্তৃক নিহত)।
১১. উকবাহ্ বিন আবি মুঈত (মুসলমানদের মদীনা প্রত্যাবর্তনের সময় আর্ক আয-যাবিয়া নামক স্থানে আসিম বিন সাবিত বিন আবি আল-আফলার হাতে বন্দী ও নিহত)।
১২. আমির বিন আব্দুল্লাহ্ আল-নামিরি (তাদের মিত্র) আলী বিন আবি তালিবের হাতে নিহত
খ. বনি নাওফল বিন আব্দ্ মানাফ গোত্রের দু’জন :
১. আল-হারিস বিন আমির বিন নাওফল নিহত হন খুবাইব বিন ইসাফের হাতে।
২. তুয়াইমা বিন আদি বিন নাওফল নিহত হন আলী বিন আবি তালিবের হাতে।
গ. বনি আসাদ বিন আব্দ্ আল-উজ্জা- (গোত্রের ৭ জন :
১. যামায়া বিন আল-আসওয়াদ বিন আল-মুত্তালিব নিহত হন আলী বিন আবি তালিব এবং হামযার সহযোগিতায় ছাবিত বিন আল-জিধের হাতে।
২. আবুল বখতারি বিন হিশাম (আসল নাম আল-আস বিন হিশাম ইবনু আল হারিস) নিহত হন আল-মুজাদ্দার বিন জিয়াদ আল বলিভির হাতে।
৩. আল-হারিস বিন যামায়া নিহত হন আম্মার বিন ইয়াসিরের হাতে।
৪. নাওফল বিন খুওয়াইলাদ বিন আসাদ ছিলেন নবীজির স্ত্রী খাদিজার ভাই কিন্তু কুরাইশদের মধ্যে একজন হাড় বজ্জাত। তিনি নিহত হন আলী বিন আবি তালিবের হাতে।
৫. আকিল বিন আল-আসওয়াদ বিন আল-মুত্তালিব নিহত হন আলী বিন আবি তালিব এবং হামযা কর্তৃক।
৬. উকবা বিন যাইদ (একজন ইয়েমেনি এবং বনি আসাদের মিত্র।
৭. উমাইর নামের তাদের মুক্তি দেওয়া একজন ক্রীতদাস।
ঘ. বনি আব্দ্ আদ-দার বিন কুসে গোত্রের চারজন :
১. পৌত্তলিক বাহিনীর পতাকা বহনকারী আল-নাদার বিন আল-হারিস বিন কালদা বিন আলকামা প্রথমে মুসলমানদের হাতে বন্দী হন এবং পরে নবীজির আদেশে আলী বিন আবি তালিব তাকে আস-সাফরা উপত্যকায় আল-উসিল নামক স্থানে হত্যা করেন। আল-নাদারও ছিলেন কুরাইশ দলের একজন হাড় বজ্জাত এবং একজন বড় যুদ্ধাপরাধী। মক্কায় মুসলমানদের প্রতি অত্যাচারীদের মধ্যে তিনি ছিলেন একজন
২. যাইদ বিন মুলাইস, উমাইর বিন হাশাম বিন আব্দ্ মানাফ বিন আব্ আদ-দার মুক্তি দেওয়া ক্রীতদাস। ইনি নিহত হন আবু বকর সিদ্দিকির মুক্তিদেওয়া ক্রীতদাস বিলাল[১] বিন রিবার হাতে।
[১. বিলাল রিন রিবাহ্ ছিলেন একজন নিগ্রো দাস এবং বিখ্যাত ময়াযযিন। প্রকৃত নাম বিলাল বিন হামামাহ্ (তার মা)। আবু বকর সিদ্দিকি তাকে মক্কার পৌত্তলিক মালিকদের কাছ থেকে কিনে তাদের অত্যাচার থেকে বাঁচিয়েছিলেন এবং পরে মুক্তি দিয়েছিলেন। পরবর্তীতে তিনি সব সময় নবীজির সঙ্গে থাকেন এবং মুয়াযযিন হিসেবে কাজ করেন এবং পরবর্তী সব যুদ্ধেও অংশগ্রহণ করেন। নবীজির নির্দেশে তিনি বিখ্যাত মুসলিম সেনাপতি আবি ওবায়দা বিন আল-জাররাহ্র ভাই হয়ে আরবীয় উপদ্বীপের বাইরা ইসলামের সব যুদ্ধে অংশ নেন এবং সিরিয়ায় মৃত্যু বরণ করেন। বিলাল একজন বড় মাপের সাহাবী ছিলেন। তিনি পৌত্তলিক মক্কাবাসীদের জঘন্য অত্যাচারের শিকার ছিলেন।
পৌত্তলিকদের বড় নেতা উসাইয়া বিন খালাপ তাকে দুপুরের প্রচন্ড রোদে জ্বলন্ত বালির উপর ফেলে দিয়ে বুকে পাথর চাপিয়ে বলত, “মুহাম্মাদকে প্রত্যাখান কিংবা না মরা পর্যন্ত তার এই অত্যাচার চলবে।” বিলাল তখন জবাব দেন “আল্লাহ্ এক! আল্লাহ্ এক।” এ অবস্থায় একদিন আবু বকর তাকে দেখতে পান। তখন তিনি তাকে ক্রয় করে মুক্তি দেন। খলিফা ওমরের শাসনামলে ২০ হিজরীতে তিনি আমওয়াস নামক স্থানে প্লেগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু বরণ করেন।]
৩. নাবিয়াহ্ বিন যাইদ বিন মুলাইস; বনি মাযিন এবং বনি তামিম গোত্রের লোক এবং কুরাইশদের একজন মিত্র।
৪. কাইসের লোক ওবায়েদ বিন সালিত (কুরাইশদের একজন মিত্র)।
ঙ বনি তামিম বিন মুররাহ্ গোত্রের চারজন :
১. মালিক বিন ওবায়দুল্লাহ্ বিন ওসমান (তালহা বিন ওবায়দুল্লাহ্ ভাই)। তিনি বন্দী অবস্থায় মৃত্যু বরণ করেন।
২. আমর বিন আব্দুল্লাহ্ বিন যাদ-আন।
৩. আলী বিন আবি তালিবের হাতে নিহত ওমাইর বিন ওসমান বিন আমর বিন কা’ব বিন সা’দ বিন তাইম।
৪. সুহাইব[১] বিন সানান কর্তৃক নিহত ওসমান বিন মালিক বিন ওবায়দুল্লাহ্।
[১ সুহাইব আর-রুমী নামে পরিচিত এই ব্যক্তি ছিলেন নবীজির একজন বিখ্যাত সাহাবী। তাঁর জাতি-সূত্র সম্পর্কে বিভিন্ন ধারণা প্রচলিত আছে। কারো কারো মতে তিনি ছিলেন একজন ‘নামিরি’ এবং বনি কাসিত গোত্রের লোক। ছোটবেলায় তার পরিবার যখন টাইগ্রীস নদীর তীরে ইরাকের পারস্য সেকস্টরে বাস করতেন তখন তিনি রোমানদের দাসত্ব বরণ করেছিলেন। এভাবে বিদেশের মাটিতে বড় হওয়ার জন্য তিনি তোতলামিতে ভোগেন। পরে কাল্ব গোত্রের একজন লোক তাকে ক্রয় করে মক্কায় আবদুল্লাহ্ বিন যাদ-আন আল- তাইমির কাছে বিক্রয় করে দেন এবং সেখান থেকে তিনি মুক্তি লাভ করেন। এটাও কথিত আছে যে তিনি জাতিগতভাবে রোমান ছিলেন এবং রোম সাম্রাজ্য থেকে পালিয়ে মক্কায় এসে ইবনু খাদআনের সঙ্গে মৈত্রীর সম্পর্ক স্থাপন করেন। তার রোমান হওয়ার পিছনে যুক্তি হলো, তার গায়ের রং ছিল কালচে লাল। এরকম দৈহিক বৈশিষ্ট সাধারণত : রোমানদের মধ্যেই দেখা যায়। যারা প্রথম ইসলাম গ্রহণ করেন এবং ধর্মের জন্য জীবন দেন তিনি ছিলেন তাদের মধ্যে একজন। আলীর সঙ্গে মদীনায় গিয়ে তিনি ইসলামের সব যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন এবং অন্যতম বড় সাহাবীর মর্যাদা লাভ করেন। ওমর তার জানাযা নামাযের ইমামতি করার জন্য সুহাইবের নাম উল্লেখ করেন। তিনি ৩৮ হিজরীতে ৭০ বছর বয়সে মৃত্যু বরণ করেন।]
চ. খালিদ বিন ওয়ালিদের বনি মাখযুম গোত্রের চব্বিশজন :
১. মক্কী বাহিনীর প্রধান সেনাধ্যক্ষ আবু জেহেল। তার আসল নাম ছিল আমর বিন হিশাম বিন আল-মুগিরা বিন আমর বিন মাখযুম। মুয়াদ বিন আমর বিন আল-যামুহ্ তাকে তরবারি দিয়ে আঘাত করে তার একটা পা কেটে ফেলেন এবং পরে মুয়াইদ বিন আফরা আবার তাকে বর্শাবিদ্ধ করেন। শেষে আব্দুল্লাহ্ বিন মাসুদ তার শিরচ্ছেদ করেন।
২. আল-আস বিন হিশাম বিন আল-মুগিরা বিন আব্দুল্লাহ্ বিন আমর বিন মাখযুম নিহত হন তার ভাতিজা ওমর বিন আল-খাত্তাবের হাতে।
৩. এজিদ বিন আব্দুল্লাহ্ (বনি মাখজুমের মিত্র) ছিলেন বনি তামিম গোত্রের লোক। তিনি নিহত হন আম্মার বিন ইয়াসিরের হাতে।
৪. আবু মুসাফা আল-আসারী (বনি মাখজুমের মিত্র) নিহত হন আবু দুজানা[১] কর্তৃক।
[১. এর জীবনবৃত্তান্তের জন্য এই লেখকের গাজওয়াত ওহুদ দ্রষ্টব্য।]
৫. আল-আসাদ গোত্রের হারমালাহ্ বিন আমর (বনি মাখজুমের মিত্র) নিহত হন খারাজাহ্[২] বিন যাইদ কর্তৃক।
[২.খারাজাহ্ ওহুদের যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। তার জীবন বৃত্তান্তের জন্য আমার গ্রন্থ গাজওয়াত ওহুদ দ্রষ্টব্য।]
৬. মাসুদ বিন আবি ওমাইয়া বিন আল-মুগিরা নিহত হন আলী বিন আবি তালিব কর্তৃক।
৭. আবু কায়েস বিন আল-ওয়ালিদ বিন আল-মুগিরা (খালিদ বিন ওয়ালিদের ভাই) নিহত হন হামযা বিন আব্দুল মুত্তালিব কর্তৃক।
৮. আবু কায়েস বিন আল-ফাকিহা বিন আল-মুগিরা নিহত হন আলী বিন আবু তালিব কর্তৃক।
৯. রাফাহ্ বিন আবিদ বিন আব্দুল্লাহ্ বিন আমর বিন মাখজুম নিহত হন সা’দ বিন আর-রাবি কর্তৃক।
১০. আল-মুন্দির বিন আবি রাফা বিন আবিদ নিহত হন মা’আল বিন আদি ইবনু আল-জাদ বিন আল-আজলানের হাতে।
১১. আস-সাইব বিন আবি সাইব বিন আবিদ নিহত হন আয-যুবাইর বিন আল-আওয়াম কর্তৃক। ইবনু হিশামের মতে আস-সাইব পরবর্তীতে ইসলাম গ্রহণ করে ভাল মুসলমান হয়েছিলেন। (ইবনু হিশাম, প্রথম খণ্ড, পৃঃ ৭১১ দ্রষ্টব্য)
১২. আল- আসওয়াদ বিন আব্দুল আসাদ বিন হিলাল বিন আব্দুল্লাহ্ বিন ওমর ইবনু মাখজুম নিহত হন হামজা বিন আব্দুল মুত্তালিব কর্তৃক।
১৩. হাজিব বিন আস-সাইব বিন ওয়াইমার বিন আমর বিন আইদ বিন ইমরান বিন মাখজুম নিহত হন আলী বিন আবু তালিব কর্তৃক।
১৪. ওয়াইমার বিন আস-সাইব বিন ওয়াইমার। আননাওমান বিন মালিক আল-কাওকালি কর্তৃক দ্বন্দযুদ্ধে নিহত
১৫. তে গোত্রের আমর বিন সুফিয়ান (বনি মাখজুমের মিত্র) নিহত হন এজিদ বিন রুকাইশের হাতে।
১৬. তে গোত্রের জা’বার বিন সুফিয়ান (আরেক মিত্র) নিহত হন জীবার আবু বরদাহ্ বিন নাইয়ার কর্তৃক।
১৭. আব্দুল্লাহ্ বিন আল-মুন্দির বিন আবি রাফাহ্ নিহত হন আলী বিন আবি তালিব কর্তৃক।
১৮. হুদাইফা বিন আবি হুদাইফা বিন আল- মুগিরা নিহত হন সা’দ বিন আবি ওয়াক্কাস কর্তৃক।
১৯. হিশাম বিন আবি হুদাইফা বিন আল-মুগিরা নিহত হন সুহাইব বিন সিনান কর্তৃক
২০. যুহাইর বিন আবি রাফাহ নিহত হন আবু উসাইদ মালিক বিন রাবিয়া কর্তৃক
২১. আস-সাইব বিন আবি রাফাহ্ নিহত হন আব্দুর রহমান বিন আউফ কর্তৃক।
২২. আইদ বিন আস-সাইব বিন উয়াইমার। তিনি হামযা বিন আব্দুল মুত্তালিব কর্তৃক আহত হয়ে বন্দী হন এবং পরে পণের বিনিময়ে মুক্তিলাভ করেন। পরে মৃত্যুবরণ করেন।
২৩. উমাইর নামের তে গোত্রের একজন লোক (বনি মাখজুমের মিত্র)।
২৪. খাইয়ার নামের আল-কারাহ্ গোত্রের আরেকজন লোক (বনি মাখজুমের মিত্র)।
ছ. বনি সাহাম বিন আমর (আমর বিন আল-আস এর গোত্র) গোত্রের সাতজন :
১. মুন্নাব্বাহ্ বিন আল-হাজ্জাজ বিন হুদাইফা বিন সা’দ বিন সাহাম নিহত হন আবুল ইয়াসির বনি সালামার ভাইয়ের হাতে।
২. তার পুত্র আল-আস বিন মুন্নাব্বাহ্ বিন আল-হাজ্জাজ নিহত হন আলী-বিন আবু তালিব কর্তৃক।
৩. তার ভাই নাবিয়াহ্ বিন আল-হাজ্জাজ নিহত হন যৌথভাবে হামজা বিন আব্দুল মুত্তালিব এবং সা’দ বিন আবি ওয়াক্কাস কর্তৃক।
৪. কারো কারো মতে, আবুল-আস বিন কায়েস বিন আদি বিন সা’দ বিন সাহাম নিহত হন আলী বিন আবু তালিব কর্তৃক; আবার কারো কারো মতে তিনি নিহত হন আল-নাওমান বিন মালিক আল-কোকালি কর্তৃক; আবার কারো কারো মতে আবু দুজানা কর্তৃক।
৫. আসিম বিন দাবিরা বিন সাইদ বিন সা’দ বিন সাহাম নিহত হন বনি সালামার আবুল ইয়াসির কর্তৃক।
৬. আল-হারিস বিন মুন্নাব্বাহ্ বিন আল-হাজ্জাজ নিহত হন সুহাইব বিন সানান কর্তৃক।
৭. আসিম বিন দবিরার ভাই আমির বিন আউফ বিন দবিরা নিহত হন আব্দুল্লাহ বিন সালামা আল-আজলানী কর্তৃক; মতান্তরে আবু দুজানা কর্তৃক।
জ. বনি আমির বিন লু’য়াই গোত্রের দু’জন :
১. ইবনু হিশামের মতে, মুয়াইইয়াহ্ বিন আমির (তাদের বনি আব্দুল কায়েস গোত্রীয় মিত্র) নিহত হন ওক্কাশা[১] বিন মুহাসিন কর্তৃক।
[১. ওক্কাশা বিন মুহাসিন বিন হারদান বিন কাইস ছিলেন বনি আসাদ বিন খাজিমা গোত্রের লোক এবং বনি আব্দ্ শামসের একজন মিত্র। তিনি ছিলেন প্রথম ইসলাম গ্রহণকারীদের একজন। তার সম্পর্কে নবীজির একটা কথা খুব উল্লেখযোগ্য। কথিত আছে একদিন নবীজি বলেছিলেন যে ৭০ হাজার লোক তাদের জীবনাচরণের কোন রকম হিসাব ছাড়াই বেহেশতে যাবেন এবং ওক্কাশা ছিলেন তাদের মধ্যে একজন। একথা শুনে আরেকজন লোক উঠে দাঁড়ান এবং নজীজিকে তার জন্য প্রার্থনা করতে অনুরোধ করেন। এতে নবীজি বলেন; ওক্কাশা আগে পেয়ে গেছেন।” কোন লোক হাঁটতে গিয়ে অন্যের আগে চলে গেলে নবীজির এই উক্তিটি প্রবাদ বাক্য হিসেবে ব্যবহৃত হয়। দলত্যাগীদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে গিয়ে ওক্কাশা শহীদ হন। তাকে হত্যা করেছিলেন তালিবা বিন খুওয়ালিদ আল-আসাদি।]
২. মুয়াবাদ বিন ওয়াহ্হাব (বনি আমিরের বনি কার্ বিন আউফ গোত্রীয় মিত্র) নিহত হন আল-বাকিরের পুত্র খালিদ এবং আইয়াসের হাতে।
ঝ. বনি জামহা বিন আমর বিন হাসিস গোত্রের চারজন :
১. ওমাইয়া বিন খালাফ বিন ওয়াহ্হাব বিন হুদাইফা জামহা নিহত হন বনি মাজিন গোত্রের একজন আনসারের হাতে।
২. তার পুত্র আলী বিন ওমাইয়া বিন খালাফ নিহত হন আম্মার বিন ইয়াসির কর্তৃক।
৩. আউস বিন মুয়াইর বিন লাওদান বিন সা’দ বিন জামহা নিহত হন একটা ভাষ্য অনুসারে আলী বিন আবু তালিব কর্তৃক; অন্য একটা ভাষ্য অনুসারে আল-হাসিন বিন আল-হারিস কর্তৃক এবং আরেক ভাষ্য মতে ওসমান বিন মাজুন কর্তৃক।
৪. সাবরাহ্ বিন মালিক (বনি জামহার একজন মিত্র) নিহত হয়েছিলেন একজন অজ্ঞাতনামার হাতে।
কুরাইশ বন্দীদের নাম
বদরের যুদ্ধে মুসলমানদের হাতে যে সব পৌত্তলিক বন্দী হয়েছিলেন তাদের সংখ্যাও ছিল ৭০। তাদের নাম নীচে দেওয়া হলো :
ক. বনি হাশিম গোত্রের ৪ জন :
১. আল-আব্বাস বিন আব্দুল মুত্তালিব[১]
২. আকিল[১] বিন আবি তালিব।
৩. নাওফল[২] বিন আল-হারিস বিন আল-মুত্তালিব।
৪. উত্তাহ্ নামের বনি হাশিমের একজন মিত্ৰ।
খ. বনি আল-মুত্তালিব বিন আব্দ্ মানাফ গোত্রের ৫ জন :
১. আস-সাইব বিন আবিদ বিন আব্দ্ ইয়াজিদ[৩]।
[১. নবীজির চাচা আল-আব্বাস বিন আব্দুল মুত্তালিব বিন হাশিম বিন আব্দ মানাফ বয়সে নবীজির চেয়ে দু’বছরের বড় ছিলেন। তিনি মুক্তিপণের বিনিময়ে নিজেকে এবং তার ভাতিজা আকিল বিন আবি তালিবকে মুক্ত করে মক্কার ফিরে যান। কথিত আছে, তিনি গোপনে মুসলমান হয়েছিলেন এবং মক্কী বাহিনী সম্পর্কে খবর সরবরাহ করে মুসলমানদের সহযোগিতা করেছিলেন। মক্কা বিজয়ের কিছু পূর্বে তিনি মদীনায় চলে যান এবং বিজয়ের সময় মুসলমানদের সাথে থাকেন। হুনাইনের যুদ্ধে অন্যরা পালিয়ে গেলেও তিনি মহানবীর পাশে ছিলেন। তিনি খুব জোরে কথা বলতে পারতেন। তিনি মুসলমান শক্তিকে সংগঠিত করার ব্যাপারে একটা বড় ভূমিকা পালন করেন। মহানবী বলতেন, “যে আব্বাসকে পীড়া দেয় সে আমাকেই পীড়া দেয়। প্রকৃতপক্ষে চাচা হচ্ছে পিতৃতুল্য।” তিনি ছিলেন দীর্ঘ-দেহী ও সুদর্শন। তিনি ৩২ হিজরীতে মদীনায় মৃত্যুবরণ করেন।]
২. খালিফা আলীর ভাই আকিল বিন আবি তালিব মক্কা বিজয়ের পর ইসলাম গ্রহণ করেন। তিনি হুনাইনের যুদ্ধে এবং জর্ডানে মুয়াতার যুদ্ধেও অংশগ্রহণ করেন। তিনি খুব বুদ্ধিমান ও রিচক্ষণ ছিলেন। তিনি তার ভাই খলিফা আলীর পক্ষ ছেড়ে তাঁর রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ মুয়াইয়ার দলে যোগ দেন। আরবীয়দের বংশ-ইতিহাস সম্পর্কে তার ভাল জ্ঞান ছিল। কোন কোন ঐতিহাসিকের মতে সিফফিনের যুদ্ধে মুয়াইয়ার সঙ্গে অবস্থানকালে মুয়াইয়া তাকে বলেছিলেন “আজ আপনি আমাদের সঙ্গে।” জবাবে তিনি বলেছিলেন, “জ্বি, তবে বদরের যুদ্ধেও আমি আপনাদের সঙ্গেই ছিলাম।” এজিদের শাসনামলে প্রথম দিকে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। ৩. নবীজির এক চাচাত ভাই নাওফল বিন আল-হারিস বিন আব্দুল মুত্তালিব বিন হাশিম বিন আব্ দ্ মানাফ মুক্তিলাভ করেছিলেন তার চাচা আল-আব্বাসের দেওয়া মুক্তিপণের মাধ্যমে। তিনি বর্ণার ব্যবসা করতেন। বনি হাশিম গোত্রের ইসলাম গ্রহণকারীদের মধ্যে তিনি ছিলেন সর্বাপেক্ষা বয়োজ্যেষ্ঠ। খলিফা ওমরের শাসনামলের ২য় বর্ষে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। ওমর তার জানাযায় শরীক হয়েছিলেন।]
২. নাওমান বিন আমর বিন আলকামাহ্ বিন আল-মুত্তালিব।
৩. আকিল বিন আমর (বনি আল-মুত্তালিবের একজন মিত্র)।
৪. তার ভাই তামিম (বনি আল-মুত্তালিবের আরেকজন মিত্র)।
৫. ইবনু আল-তামিম (বিন আল-মুত্তালিবের আরেক মিত্র যার প্রকৃত নাম জানা যায়নি)।
গ. বনি আব্দ্ শাম্স্ বিন আব্দ মানাফ গোত্রের ৯ জন :
১. আমর বিন আবি সুফিয়ান বিন হার্ব
২. আল-হারিস বিন আবি ওয়াজরাহ্।
৩. আবুল-আস বিন আল-রাবি[২]।
৪. আবুল-আস বিন নাওফল বিন আব্দ্ শাম্স্।
৫. আবু রাইশাহ্ বিন আমর (বনি আব্দ্ শাসের একজন মিত্র)।
৬. আমর বিন আল-আযরাক (বনি আব্দ্ শাস্ত্রের আরেক মিত্র)।
৭. আকাবাহ্ বিন আব্দ্ আল-হারিস বিন আল-হাদরামি (আরেক মিত্র)।
৮. খালিদ বিন ওসাইদ বিন আবি আল-আইস[১]।
৯. আবুল-আরিদ ইয়াসার (আল-আস বিন ওমাইয়ার মুক্তি দেওয়া ক্রীতদাস)।
[১. ইনি ছিলেন বিখ্যাত মুসলিম ব্যবহার শাস্ত্রজ্ঞ ইমাম শাফির প্র-পিতামহ। বদরের যুদ্ধে তিনি বনি হাশিম গোত্রের পতাকা বহন করেছিলেন। মুক্তিলাভের পর তিনি ইসলাম গ্রহণ করে ভাল মুসলমান হয়ে যান।
২. ইনি পরিচিত ছিলেন আবুল-আস বিন আর-রাবি বিন আব্দুল উজ্জা বিন আব্দ্ শাম্স্ বিন আব্দু মানাফ হিসেবে। প্রকৃত নাম ছিল লাকিত, মতান্তরে ইয়াসির। তিনি মহানবীর কন্যা জয়নবকে বিয়ে করেছিলেন। তিনি এত বেশী মহৎ ও সৎ ছিলেন যে লোকে তাকে বিশ্বাস করে তার কাছে তাদের জিনিসপত্র রাখতো। তিনি অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে বিত্তবান কুরাইশদের হয়ে বাণিজ্য উপলক্ষে সিরিয়া যেতেন। একবার ভাল ব্যবসা করে সিরিয়া থেকে বাড়ী ফেরার সময় মহানবীর সাহাবীরা শত্রুর সম্পত্তি হিসেবে তার সমস্ত জিনিসপত্র দখল করতে চান কিন্তু তার স্ত্রী (মহানবীর কন্যা) তাকে রক্ষা করেন। কিছু সাহাবী অবশ্য তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে বলেন, “আপনি ইসলাম গ্রহণ করলে মক্কার পৌত্তলিকদের সব সম্পত্তি দখল করতে পারবেন।” জবাবে তিনি বলেন “আপনারা আমাকে খারাপ পরামর্শ দিচ্ছেন। আমি কি বিশ্বাসঘাতকতা করব? “এরপর তিনি মক্কার গিয়ে মালিকদের জিনিসপত্র তাদের হাতে তুলে দিয়ে বলেন,” হে মক্কাবাসী, আমি কি আমার বিশ্বাস রেখেছি?” তারা বলেন, “হ্যাঁ রেখেছেন।” এরপর তিনি ইসলাম গ্রহণ করে মদীনায় চলে যান এবং সেখানে নবীজি নতুনভাবে বিয়ে দিয়ে তার স্ত্রীকে ফেরত দেন। তিনি ১২ হিজরীতে মৃত্যুবরণ করেন।]
ঘ. বনি নাওফল বিন আব্দ মানাফ গোত্রের ৪ জন : :
১. আদি বিন আল-খাইয়ার বিন আদি বিন নাওফল।
২. ওসমান বিন আব্দ্ শাম্স্ (গাযওয়ান বিন জাবিরের চাচাত ভাই এবং বনি নাওফলের বনি মাজিন বিন মনসুর গোত্রীয় মিত্র।)।
৩. আবু দাউর (একজন মিত্র)।
৪. নাবহান (বনি নাওফলের একজন মুক্তিপ্রাপ্ত ক্রীতদাস)।
ঙ. বনি আব্দ্ আদ-দার বিন কুসা-ই গোত্রের ৩ জন :
১. আবু আজিজ বিন ওমাইর বিন হাশিম (মু’সাব বিন ওমাইরের ভাই)।
২. আল-আস-ওয়াদ বিন আমির (বনি আব্দ্ আদ-দারের একজন মিত্র)।
৩. আকিল (ইয়েমেন থেকে আগত একজন মিত্র)।
চ. বনি আসাদ বিন আব্দুল উজ্জা গোত্রের ৪ জন :
১. আস-সাইব বিন আবি জাইশ বিন আল-মুত্তালিব বিন আসাদ
২. আল-হুয়াইরিস বিন আব্বাদ বিন ওসমান বিন আসাদ।
৩. সলিম বিন শিমাখ (বনি আসাদের একজন মিত্র)।
৪. আব্দুল্লাহ্ বিন হামিদ বিন যুহাইর বিন আল-হারিস।
ছ. বনি মাখজুম বিন ইয়াখজা গোত্রের ১০ জন :
১. খালিদ বিন হিশাম বিন আল-মুগিরা।
২. ওমাইয়া বিন আবি হুদাইফা বিন আল-মুগিরা।
৩. ওসমান বিন আব্দুল্লাহ্ বিন আল-মুগিরা।
৪. আবুল মুন্দির বিন আবি রিফাহ্
৫. আবু আতা আব্দুল্লাহ্ বিন আবি সাইব।
৬. আল-মুত্তালিব বিন হান্তাব বিন আল-হারিস।
৭. খালিদ বিন আল-আলম (একজন মিত্র)। দৃঢ়তা ও অধ্যবসায় সম্পর্কে নিম্নোক্ত সুবিখ্যাত চরণের রচয়িতা হয়েও তিনিই সর্বপ্রথম যুদ্ধ থেকে পালিয়ে গিয়েছিলেন। তিনি লিখেছিলেন, “আমাদের ক্ষত থেকে ঝরা রক্ত আমাদের গোড়ালীতে পড়ে না। আমাদের রক্ত ঝরে পায়ের আঙ্গুলে।”
[১ খালিদ বিন ওসাইদ বিন আবি আল-আইস বিন ওমাইয়া বিন আব্দ শাম্স্ ছিলেন আতাব বিন ওসাইদের ভাই। মক্কা বিজয়ের পর মহানবী তাকে মক্কার গভর্ণর নিযুক্ত করেন। তার ভাই আতাবকে পাঠানো হয়েছিল দলত্যাগীদের বিরুদ্ধে একটা শাস্তিমূলক অভিযানের নেতৃত্ব দিয়ে।]
৮. আল-ওয়ালিদ বিন আল-ওয়ালিদ বিন আল-মুগিরা (খালিদ বিন ওয়ালিদের ভাই)।
৯. সাইফি বিন আবি রাফাহ্ বিন আবিদ।
১০. কায়েস বিন আস-সাইব।
জ. বনি সাম বিন আমর বিন হাসিস গোত্রের ৫ জন :
১. আবু রাদা বিন দাবিরা বিন সাইদ বিন সাদ বিন সাম।
২. ওয়াফরা বিন কায়েস বিন আদি বিন হুদাফা বিন সাদ বিন সাম।
৩. হানজালা বিন কাবিসা বিন হুদাফা বিন সা’দ বিন সাম।
৪. আল-হাজ্জাজ বিন কায়েস বিন আদি বিন সা’দ বিন সাম।
৫. আমান (আসলাম নামে পরিচিত)। নাবিয়া আল-হাজ্জাজের মুক্তি- দেওয়া ক্রীতদাস।
ঝ. বনি জুমহা বিন আমর বিন হাসিস গোত্রের ১১ জন :
১. আব্দুল্লাহ্ বিন উব্বাঈ বিন খালাফ বিন ওয়াহাব।
২. আবু ইজ্জাহ্ (আমর বিন আব্দ্ বিন ওসমান বিন ওয়াহাব)।
৩. আল-ফাকিহা (ওমাইয়া বিন খালাফের ছেড়েদেওয়া ক্রীতদাস)।
৪. ওয়াহাব বিন ওমাইর।
৫. রাবিয়াহ্ বিন দাররাজ বিন আল-আনবাস বিন আহ্বাহ্ বিন ওয়াহাব।
৬. আমর বিন উব্বাঈ বিন খালাফ।
৭. আবু রহম বিন আব্দুল্লাহ (বনি জুমহার মিত্র)।
৮. ইবনু ইসহাক কর্তৃক উল্লেখিত একজন অপরিচিত ব্যক্তি যিনিও বনি জুমহার একজন মিত্র ছিলেন।
৯. নাসতাস (ওমাইয়া বিন খালাফের মুক্তি দেওয়া ক্রীতদাস)।
১০. ওমাইয়া বিন খালাফের মুক্তি দেওয়া আরেকজন ক্রীতদাস যার পরিচয় প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব হয়নি।
১১. আবু রাফে (ওমাইয়া বিন খালাফের জামিনদার)।
ঞ. বনি আমির বিন লুয়াঈ গোত্রের ৫ জন :
১. মালিক বিন আল-দাখশামের হাতে বন্দী-সুহাইল বিন আমর’।
২. আব্দ্ বিন জাম’আ বিন কায়েস।
৩. আব্দুর রহমান বিন মানশাও বিন ওয়ার্কদান
৪. হাবিব বিন জাবির
৫. আস-সাইব বিন মালিক।
ট. বনি আল-হারিস বিন ফি গোত্রের ৪ জন :
১. আত-তুফাইল বিন আবি কানি।
২. উৎবা বিন আমর বিন জাহ্দাম।
৩. সাফি (ইয়েমেনের লোক), বনি আল-হারিসের মিত্র।
৪. সাফি (আরেক ইয়েমেনবাসী), বনি আল-হারিসের মিত্র।
যে সব মুসলমান বদরের যুদ্ধে লড়েছিলেন।
বদরের যুদ্ধে মোট ৩১৭ জন মুসলমান অংশ গ্রহণ করেছিলেন। তাঁদের মধ্যে ৮৩ জন মুহাজিরিন, ২৩১ জন আনসার ছিলেন। আনসারদের মধ্যে ১৭০ জন ছিলেন আল-খাজরাজ গোত্রের এবং ৬১ জন ছিলেন আউস গোত্রের। যে সব মুসলমান বদরের যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন তাদের নাম নিজ নিজ গোত্র অনুসারে নীচে দেওয়া হলো :
মুহাজিরিন
ক. বনি হাশিম বিন আব্দ্ মানাফ গোত্রের ৮ জন :
১. মহানবী মুহাম্মদ (সঃ) বিন আব্দুল্লাহ্ বিন আব্দুল মুত্তালিব বিন হাশিম বিন আব্দ্ মানাফ।
২. হামজা বিন আব্দুল মুত্তালিব বিন হাশিম বিন আব্দ্ মানাফ।
৩. আলী-বিন আবি তালিব বিন আব্দুল মুত্তালিব বিন হাশিম বিন আব্ মানাফ।
৪. মহানবীর মুক্তি দেওয়া ক্রীতদাস যাইদ বিন হারিসা বিন শুরজিল আল- কালবি।
[১. ইনি ছিলেন কুরাইশদের একজন বড় সঙ্গী ও মুখপাত্র। তিনি মক্কা বিজয়ের পর ইসলাম গ্রহণ করেন। হুদাইবিয়ার সন্ধিতে তিনি কুরাইশদের প্রতিনিধিত্ব করেন। মক্কা বিজয়ের দিন নবীজি কা’বা ঘরের দরজায় দাঁড়িয়ে কুরাইশদের জিজ্ঞেস করেন, “আমি আপনাদের কি করবো ভাবছেন?” এতে সুহাইল জবাব দেন, “আমরা ভাল কিছু ভাবছি ও আশা করছি। আপনি একজন মহৎ ভাই, একজন মহৎ পিতার সন্তান এবং আপনার হাতে ক্ষমতা আছে।” নবীজি বললেন, “আমার ভাই (নবী) জোসেফ পূর্বে যা বলেছিলেন আমিও আপনাদের প্রতি তাই বলছি : “আজ আপনাদের কোন দোষ নেই।” তিনি সিরিয়ায় মুসলমানদের সাথে থেকে যুদ্ধ করেন এবং আমওয়াসে প্লেগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেন।]
৫. আবিসিনিয়ার অধিবাসী আনসা; নবীজির মুক্তি দেওয়া ক্রীতদাস।
৬. নবীজির মুক্তি দেওয়া আরেকজন ক্রীতদাস আবু কাবিশা আল- ফারসি।
৭. বনি হাশিমের মিত্র কানাজ বিন হাসিন বিন ইয়ারবু। ডাকনাম আবু মুরশিদ।
৮. তার পুত্র মুরশিদ বিন আবু মুরশিদ (বনি হাশিমের মিত্র)।
খ. বনি আল-মুত্তালিব বিন আব্দ্ মানাফ গোত্রের ৪ জন :
১. ওবাইদা বিন আল-হারিস বিন আল-মুত্তালিব (যুদ্ধে নিহত)।
২. আত-তুফাইল বিন আল-হারিস বিন আল-মুত্তালিব।
৩. আল-হাসিন বিন আল-হারিস বিন আল-মুত্তালিব।
৪. মিসতাহ; প্রকৃত নাম আউফ বিন আদাদা বিন আবাদ্বীন আল- মুত্তালিব।
গ. বনি ওমাইয়া বিন আব্দ্ শাম্স্ বিন আব্দ্ মানাফ গোত্রের ১৬ জন :
১. ওসমান বিন আফ্ফান। তাঁর স্ত্রী রুকাইয়া (নবীজির কন্যা) অসুস্থ ছিলেন বলে তিনি মদীনায় থেকে গিয়েছিলেন। অবশ্য নবীজি তাঁকে অন্যের সমানই গনিমতেরমাল দিয়েছিলেন 1
২. আবু হুদাইফা বিন উবাহ্ বিন রাবিয়াহ্ বিন আব্দ্ শাম্স্ বিন আব্দ্ মানাফ।
৩. সলিম[১], আবু হুদাইফা বিন উবাহ্ বিন রাবিয়ার মুক্তি দেওয়া ক্রীতদাস।
৪. আব্দুল্লাহ্ বিন জাশ (বনি ওমাইয়া বিন আব্দ্ শামসের মিত্র)।
[১. আবু হুদাইফার মুক্তি দেওয়া ক্রীতদাস সলিম বিন মাকাল ছিলেন অন্যতম প্রধান সাহাবী এবং প্রথম ইসলাম গ্রহণকারী তিনি ছিলেন ফাতিমা নাম্নী একজন আনসারী মহিলার (ইয়ায়ারের কন্যা) জামিনদার। তার কাছ থেকে মুক্তিলাভের পর বিখ্যাত সাহাবী আবু হুদাইফা তাকে পোষ্যপুত্র হিসেবে গ্রহণ করেন (যেমন নবীজি গ্রহণ করেছিলেন যাইদ বিন হারিসাকে)। পরে তার ভাই আল-ওয়ালিদ বিন উবার কন্যা ফাতিমাকে তার সঙ্গে বিয়ে দেন। আল্লাহ্ মুসলমানদেরকে অন্যের ছেলেকে নিজের ছেলে বলতে বারণ না করা পর্যন্ত আবু হুদাইফা সলিমকে ছেলে হিসেবেই পালন করেন। সাহাবীদের মধ্যে সলিমের স্থান খুব উঁচু সারিতে। কুবার মসজিদে তিনি আবু বকর এবং ওমর সহ অন্যান্য মুহাজিরিনদের নামাযের ইমামতি করতেন। তিনি ওমর বিন আল-খাত্তাবের সঙ্গে মদীনায় অভিপ্রয়াণ করেন। ওমর তাকে এতটাই সম্মান করতেন যে তিনি যখন আহত হয়ে তাঁর উত্তরসূরীর কথা ভাবছিলেন তখন সলিমের কথা স্মরণ করে তিনি বলেছিলেন, “সলিম জীবিত থাকলে তাকেই আমি আমার উত্তরসূরী নিয়োগ করতাম। তিনি কুরআনে বিশেষজ্ঞ ছিলেন। নবীজি মুসলমানদেরকে চারজনের কাছ থেকে কুরআন শেখার পরামর্শ দেন; ইবনু উম আব্দ্; উবাইই বিন কাব; সলিম এবং মুয়াদ বিন যাবাল। তিনি বদরের যুদ্ধে অংশ নেন এবং ১২ হিজরীতে ইয়ামার যুদ্ধে তার বন্ধু আবু হুদাইফার সঙ্গে নিহত হন।]
৫. ওক্বাশা বিন মুসিন (আরেক মিত্র)।
৬. শুজা বিন ওয়াহাব বিন রাবিয়া (আরেক মিত্র)
৭. ওকাবা বিন ওয়াহাব বিন রাবিয়া (আরেক মিত্র)।
৮. ইয়াজিদ বিন রুকাইশ (একজন মিত্র)।
৯. আবু সিন্নান মুহসিন বিন হারিদান বিন কায়েশ (মিত্র)।
১০ সিনান বিন আবি সিন্নান (মিত্র)।
১১. মুহারাজ বিন নাদালা বিন আব্দুল্লাহ্ (একজন মিত্র)।
১২. রাবিয়া বিন আকদাম বিন সাখবারা (একজন মিত্র)।
১৩. দাকিফ বিন আমর (একজন মিত্র)
১৪. মালিক বিন আমর (একজন মিত্র)।
১৫. মুদলিজ বিন আমর (একজন মিত্র)।
১৬. আবু মুখশি (একজন মিত্র)।
ঘ. বনি নাওফল বিন আব্দ্ মানাফ গোত্রের ২ জন :
১. উৎবাহ্ বিন গাজওয়ান (একজন মিত্র)।
২. উৎবাহ্ বিন গাজওয়ানের মুক্তি দেওয়া ক্রীতদাস খুব্বাব (একজন মিত্র)।
ঙ. বনি আসাদ বিন আব্দুল উজ্জা গোত্রের ৩ জন :
১. আয-যুবাইর বিন আল-আওয়াম বিন খুয়াইলিদ বিন আসাদ।
২. হাতিব বিন আরি বালতা আল-ইয়েমানি[১]।
[১. প্রকৃত নাম যাইদ বিন আল-খাত্তাব বিন নুফাইল; ওমর বিন আল-খাত্তাবের বড় ভাই। তিনি ওমরের আগে ইসলাম গ্রহণ করেন এবং বদর সহ অন্য সব যুদ্ধে অংশ নেন। তিনি আল- ইয়ামামার যুদ্ধে মুসলমানদের পতাকা বহন করেন এবং মৃত্যুবরণ করেন। তার মৃত্যুতে ওমর খুব শোকাহত হয়ে বলেছিলেন, “তিনি আমার আগে দু’টো ভাল কাজ করেছেন : ইসলাম গ্রহণ এবং শাহাদৎ বরণ।”]
৩. সা’দ আল-কালবি (হাতিব বিন আবি বালতার মুক্তি দেওয়া ক্রীতদাস ও একজন মিত্র)।
চ. বনি আব্দ্-উদ-দার বিন কুসাই গোত্রের ২ জন :
১. মুসা’ব বিন ওমাইর বিন হাশিম বিন আবদ মানাফ বিন আদ্ দারস।
২. যুওয়াইত বিন সা’দ বিন হারিমালাহ্।
ছ. বনি জাহরা বিন কিলাব গোত্রের ৮ জন :
১. আব্দুর রহমান বিন আউফ। ২. সা’দ বিন আবি ওয়াক্কাস।
৩. ওমর বিন আবি ওয়াক্কাস।
৪. আল-মিকদাদ বিন আমর বিন দালাবা (একজন মিত্র)।
৫. আব্দুল্লাহ্ বিন মাসুদ বিন আল-হারিস আল-হাদলি (একজন মিত্র)।
৬. মাসুদ বিন রাবিয়া বিন আমর বিন সাদ (একজন মিত্র)।
৭. দু-শিমালাইন বিন আমর বিন নাদলা আল-খুজাঈ (একজন মিত্র)।
৮. খাব্বাব বিন আল-আরাত আল-তামিমি (একজন মিত্র)।
জ. বনি তাইম বিন মুররাহ্ গোত্রের ৫ জন :
১. আবু বকর আস-সিদ্দিক (প্রকৃত নাম : আতিক বিন ওসমান বিন আমির বিন আমর বিন কা’ব বিন সা’দ বিন তাইম)।
২. বিলাল বিন রাবাহ্ (আবু বকর সিদ্দিকের মুক্তি দেওয়া ক্রীতদাস)।
৩. আমির বিন ফাহিরা (আবু বকর সিদ্দিকের মুক্তি দেওয়া আরেকজন ক্রীতদাস)।
৪. সুহাইব বিন সিনান (আব্দুল্লাহ্ বিন আমর বিন জা’দান আল-তাইমির মুক্তি দেওয়া ক্রীতদাস)।
৫. তালহা বিন ওবায়দুল্লাহ্ বিন ওসমান বিন আমর বিন কা’ব বিন সা’দ বিন তাইম। বদরের যুদ্ধের সময় তিনি সিরিয়ায় ছিলেন। তথাপি মহানবী অন্য যোদ্ধাদের মত তাকেও লুণ্ঠিত দ্রব্যের সমান ভাগ দিয়েছিলেন।
ঝ. বনি মাখজুম গোত্রের ৫ জন :
১. আবু সালামা বিন আব্দুল আসাদ (প্রকৃত নাম : আব্দুল্লাহ্ বিন আব্দুল আসাদ)।
২. শাম্মাস বিন ওসমান বিন আশ-শারিদ।
৩. আল-আরকাম বিন আবি আল-আরকাম (প্রকৃত নাম আব্দ্ মানাফ বিন আসাদ)।
৪. আম্মার বিন ইয়াসির।
৫. মুয়াত্তিব বিন আউফ বিন আমির আল-খুযাঈ (একজন মিত্র)।
ঞ. বনি আদি বিন কা’ব (ওমর বিন আল-খাত্তাবের পরিবার) গোত্রের ১৪ জন :
১. ওমর বিন আল-খাত্তাব বিন নুফাইল বিন আব্দুল উজ্জা।
২. মিহজা আল-আক্কি (ওমর বিন আল-খাত্তাবের মুক্তি দেওয়া ক্রীতদাস)
৩. আমর বিন সুরাকা বিন আল-মুতামার
৪. আব্দুল্লাহ্ বিন সুরাকা।
৫. ওয়াকিদ বিন আব্দুল্লাহ্ বিন আব্দ্ মানাফ আল-এরবুঈ (একজন মিত্র)।
৬. খাওলি বিন আবি খাওলি (একজন মিত্র)।
৭. মালিক বিন আবি খাওলি (একজন মিত্র)।
৮. আমির বিন রাবিয়া আল-ওয়াইল (একজন মিত্র)।
৯. আমির বিন আল-বাকির বিন আব্দ্ ইয়ালিল (একজন মিত্র)।
১০. আকিল বিন আল-বাকির।
১১. খালিদ বিন আল-বাকির।
১২. আয়াস বিন আল-বাকির।
১৩ . যাইদ বিন আল-খাত্তাব (ওমর বিন আল-খাত্তাবের পুত্র)।
১৪. সাইদ বিন যাইদ বিন আমর বিন নুফাইল। যুদ্ধের সময় তিনি সিরিয়াতে থাকলেও মহানবী তাকে অন্যের সম পরিমাণ লুণ্ঠিত মাল দিয়েছিলেন।
ট. বনি জুমাহ্ বিন আমর বিন হাসিস বিন কাব গোত্রের ৫ জন :
১. ওসমান বিন মাজুন।
২. আস-সাইব বিন ওসমান বিন মাজুন।
৩. কুদ্দামা বিন মাজুন।
৪. আব্দুল্লাহ্ বিন মাজুন।
৫. মামার বিন আল-হারিস বিন মা’মার।
ঠ. বনি সাহম বিন আমর হাসিস গোত্রের ১ জন :
১. ইবনু ইসহাক এর নাম উল্লেখ করেন নি।
ড. বনি আমির বিন লুয়াঈ গোত্রের ৭ জন :
১. আবু সাবরা বিন আবি রাহম বিন আব্দুল উজ্জা।
২. আব্দুল্লাহ্ বিন মাখরামা বিন আব্দুল উজ্জা।
৩. আব্দুল্লাহ্ বিন সুহাইল বিন আমর।
৪. ওমাইর বিন আউফ (সুহাইল বিন আমরের মুক্তি দেওয়া ক্রীতদাস)।
৫. সা’দ বিন খাওলা (একজন মিত্র)।
৬. ওয়াহব বিন সা’দ বিন আবি সারহ্।
৭. হাতিব বিন আমর।
ঢ. বনি আল-হারিস বিন ফি গোত্রের ৬ জন :
১. আমির বিন আব্দুল্লাহ্ বিন আল-জাররাহ (ডাকনাম আবু ওবায়দা ইবনু আল-জাররাহ হিসেবেই আধিক পরিচিত)।
২. আমর বিন আল-হারিস বিন জুহাইর।
৩. মুহাইল বিন ওয়াহব বিন রাবিয়া।
৪. সাফওয়ান বিন ওয়াহব বিন রাবিয়া।
৫. আমর বিন আবি সারহ বিন রাবিয়া।
৬. আইইয়াদ বিন জুহাইর।
যে সব মুহাজিরিন বদরের যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলেন এটাই হচ্ছে তাদের পরিপূর্ণ তালিকা। এদের মধ্যে ওসমান বিন আফ্ফান, তালহা বিন ওবায়দুল্লাহ্ এবং সাইদ বিন যাইদ বিন আমর বিন নুফাইল-এই তিনজন প্রকৃতপক্ষে যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন নি কিন্তু অন্যান্যদের মত লুণ্ঠিত মালের ভাগ পেয়েছিলেন।
আনসারদের মধ্যে যারা যুদ্ধ করেছিলেন
ক. বনি আব্দ্ আল-আশহাল (আউসের একটি শাখা) গোত্রের ১৫ জন :
১. সাদ বিন মুয়াদ।
২. আল-হারিস বিন আউস বিন মুয়াদ।
৩. আল-হারিস বিন উস্ বিন রাফে।
৪. সা’দ বিন যাইদ বিন মালিক।
৫. সালামা বিন সালামা বিন ওয়াকাশ।
৬. উব্বাদ বিন বিশর বিন ওয়াকাশ।
৭. সালামা বিন ছাবিত বিন ওয়াকাশ।
৮. রাফে বিন ইয়াজিদ বিন কুৰ্য।
৯. আল-হারিস বিন খাযামা বিন আদি।
১০. মুহাম্মদ বিন মুসলিমা[১]।
[১. তার জীবন বৃত্তান্তের জন্য গাজওয়াত ওহুদ দ্রষ্টব্য।]
১১. সালামা বিন আসলাম বিন হারিস (তাদের বনি আল-হারিস গোত্রীয় মিত্র)।
১২. আবুল হায়সাম বিন আল-তাইহান।
১৩. ওবায়েদ বিন আল-তাইহান।
১৪. আমর বিন মু’য়াদ বিন আন-নাওমান।
১৫. আব্দুল্লাহ্ বিন সাল।
খ. বনি জাফর (আউসের একটা শাখা) গোত্রের ২ জন :
১. কাতাদা বিন আন-নাওমান বিন যাইদ[২]।
[২. তার জীবন বৃত্তান্তের জন্য গাজওয়াত ওহুদ দ্রষ্টব্য।]
২. ওবায়েদ বিন আউস বিন মালিক।
গ. বনি আব্দ্ বিন রাজাহ (আউসের একটা শাখা) গোত্রের ৩ জন :
১. নাসর বিন আল-হারিস বিন আব্দ্।
২. মু’তাব বিন আব্দ্।
৩. আব্দুল্লাহ্ বিন তারিক আল-বালিভি (একজন মিত্র)।
ঘ. বনি হারিসা বিন আল-হারিস (আউসের একটা শাখা) গোত্রের ৩ জন :
১. মাসুদ বিন সাদ বিন আমির।
২. আবু আনবাস বিন জাবর।
৩. হানি বিন নিয়ার আল-বালিভি (একজন মিত্র)।
ঙ. বনি আমর বিন আউফ (আউসের একটা শাখা) গোত্রের ৬ জন :
১. আসিম বিন ছাবিত বিন কায়েস।
২. কায়েস আবুল আকলাহ্ বিন ইসামা।
৩. মুয়াত্তিব বিন কুশাইর।
৪. আবু মালাইল বিন আল-আযার।
৫. আমর বিন মু’বিদ আল-আযার।
৬. সাল বিন হানিফ[১]
[১. তার জীবন বৃত্তান্তের জন্য গাজওয়াত ওহুদ দ্রষ্টব্য।]
চ. বনি ওমাইয়া বিন যাইদ (আউসের একটি শাখা) গোত্রের ৯ জন :
১. মুবাশ্বির বিন আব্দুল মুনদির বিন যানবার।
২. রাফা বিন আব্দ্ আল-মুন্দির বিন যানবার।
৩. সাদ বিন ওবাইদ বিন আন-নাওমান।
৪. ওয়াইম বিন সাঈদাহ্।
৫. রাফিহ্ বিন আনজাদাহ্।
৬. ওবাইদ বিন আবি ওবাইদ।
৭. দালাবা বিন হাতিব।
৮. আল-হারিস বিন হাতিব। যুদ্ধের ময়দানের দিকে অগ্রসর হওয়ার সময় নবীজি তাকে ফেরৎ পাঠিয়েছিলেন। কিন্তু তাকেও লুণ্ঠিত মা- লের সমান ভাগ দেওয়া হয়েছিল।
৯. আবু লুবাবাহ্।
ছ. বনি ওবাইদ বিন যাইদ (আউসের আরেক শাখা) গোত্রের ৭ জন :
১. উনাইস বিন কাতাদা বিন রাবিয়া।
২. মান বিন আদি বিন আল-জাদ আল-বালিভি (মিত্র)।
৩. আব্দুল্লাহ্ বিন সালামা আল-আজলানি (মিত্র)।
৪.যাইদ বিন আসলাম বিন দালাবা আল-আজলানি (একজন মিত্র)।
৫. রাবি বিন রাফিহ্ বিন যাইদ আল-আজলানি (একজন মিত্র)।
৬. আসিম বিন আদি বিন আল-জাদ আল-আজলানি (একজন মিত্র)। মুসলমান সেনাবাহিনীর সঙ্গে তিনি যুদ্ধ করতে আসলেও মহানবী তাকে মদীনায় ফেরৎ পাঠান। তিনিও লুণ্ঠিত মালামালের সমান ভাগ পান। এজন্য তিনি যুদ্ধে অংশগ্রহণকারীদের সমান মর্যাদা লাভ করেন।
৭. সাবিত বিন আকওয়াম বিন দালাবা আল-আজলানি (একজন মিত্র)।
জ. বনি দালারা বিন ওমর বিন আউফ (আউসের একটা শাখা) গোত্রের ৭ জনঃ
১. আব্দুল্লাহ্ বিন জুবাইর বিন আন-নাওমান।
২. আসিম বিন কায়েস বিন সাবিত।
৩. আবু দিয়াহ্ বিন সাবিত বিন আন-নাওমান।
৪. আবু হান্না; আরেক নাম আবু হাববা বিন সাবিত বিন আন-নাওমান।
৫. সলিম বিন ওমাইর বিন সাবিত।
৬. আল-হারিস বিন আন-নাওমান বিন ওমাইয়া।
৭. খাওয়াত বিন জুবাইর বিন আন-নাওমান।
ঝ. বনি জাৰ্জিবিন কালফা বিন আউফ (আউসের একটি শাখা) গোত্রের জন :
১. মুনদির বিন মুহাম্মাদ বিন ওকাবা
২. আবু আকিল বিন আব্দুল্লাহ বিন দালাবা (বনি আনিফ গোত্রীয় একজন মিত্র)।
ঞ. বনি গানাম বিন আস-সালাম (আউসের একটা শাখা) গোত্রের ৫ জন :
১. সাঁদ বিন খায়সামা।
২. মুনদির বিন কুদ্দামা বিন আরাফাজা।
৩. মালিক বিন কুদ্দামা বিন আরাফাজা।
৪. আল-হারিস বিন আরাফাজা।
৫. তামিম (তাদের ছেড়ে দেওয়া ক্রীতদাস)।
ট. বনি মুয়াইয়া বিন মালিক বিন আউফ (আউসের একটি শাখা) গোত্রের ৩ জন :
১. জাবার বিন আতিক বিন আল-হারিস
২. মালিক বিন নুমাইলা (মদীনা থেকে আগত তাদের মিত্র)।
৩. আন-নাওমান বিন আসর (বালি গোত্রীয় একজন মিত্র)।
এই ৬১ জন আনসারের সবাই ছিলেন আউস গোত্রের।
যুদ্ধে অংশগ্রহণকারী খাজরাজের যোদ্ধাগণ
ক. রনি ইমরা’য়েল কায়েস বিন মালিক গোত্রের ৪ জন :
১. খারিজা বিন যাইদ।
২. সা’দ বিন আর-রাবিয়া।
৩. আব্দুল্লাহ্ বিন রাওয়াহা।
৪. খাল্লাদ বিন সুয়াইদ বিন দালাবা।
খ. বনি যাইদ বিন মালিক গোত্রের ২ জন :
১. বশির বিন সা’দ বিন দালাবা।
২. সামাক বিন সা’দ বিন দালাবা।
গ. বনি আদি বিন কা’ব বিন আল-খাজরাজ গোত্রের ৩ জন :
১. সাবি বিন কায়েস বিন এইশাহ্
২. ওব্বাদ বিন কায়েস বিন এইশাহ্
৩. আব্দুল্লাহ বিন আস
ঘ. বনি আমার বিন হারিসা বিন দালাবা গোত্রের ১ জন :
১. ইয়াজিদ বিন আল-হারিস বিন কায়েস।
ঙ. বনি জুয়াশাম বিন আল-হারিস বিন আল-খাজরাজ গোত্রের ৪ জন :
১. খুবাইব বিন ইসাফ বিন উবাহ।
২. আব্দুল্লাহ বিন যাইদ বিন দালাবা।
৩. হুরাইস বিন যাইদ বিন দালাবা।
৪. সুফিয়ান বিন বাশার।
চ. বনি জিদারা বিন আউফ বিন আল-হারিস গোত্রের ৪ জন :
১. তামিম বিন ইয়ার বিন কায়েস।
২. আব্দুল্লাহ্ বিন ওমাইর।
৩. যাইদ বিন্ আল-মুযাইন বিন কায়েস।
৪. আব্দুল্লাহ্ বিন উরফাতা বিন আদি।
ছ. বনি আল-আবজার (বনি খাদরা) গোত্রের ১ জন :
১. আব্দুল্লাহ্ বিন রাবিয়া বিন কায়েস।
জ. বনি আউফ বিন আল-খাজরাজ গোত্রের ২ জন :
১. আব্দুল্লাহ্ বিন আব্দুল্লাহ্ বিন উব্বাঈ বিন সালুন[১]।
[১. ইনি ছিলেন অন্যতম পছন্দনীয় মুসলমান যুবক এবং বিখ্যাত সাহাবী যিনি নবীজির সঙ্গে থেবে ইসলামের সব যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। তার পিতা ছিলেন একজন বড় ভক্ত এবং তাকে হত্য করার জন্য তিনি নবীজির অনুমতি প্রার্থনা করেন। কিন্তু নবীজি তাকে হত্যা না করে বর তার সঙ্গে ভাল আচরণ করতে বলেন। তিনি ১২ হিজরিতে আল-ইয়ামামার যুদ্ধে নিহত হন।]
২. আউস বিন খাউলি বিন আব্দুল্লাহ বিন আল-হারিস।
ঝ. বনি জাযা বিন আদি বিন মালিক গোত্রের ৬ জন :
১. যাইদ বিন ওয়াদিয়া বিন আমর (তাদের গাতফান গোত্রীয় মিত্র)।
২. আমির বিন সালামা বিন আমির (তাদের ইয়েমেনী মিত্র)।
৩. আবু হুমাইদা, মা’বাদ বিন আব্বাদ (ইবনু ওব্বাদা বিন কুশাইর হিসেবেও পরিচিত)।
৪. আমির বিন আল-বুকির (তাদের মিত্র)।
৫. ওকাবা বিন ওয়াহাব বিন কালদাহ তাদের গাতফানী মিত্র)
৬. রাফাহ্ বিন আমর বিন যাইদ (তাদের মিত্র)।
ঞ. বনি সলিম বিন আউফ গোত্রের ১ জন :
১. নাওফল বিন আব্দুল্লাহ্ বিন নাদালা।
ট. বনি আসরাম বিন ফি বিন দালাবা গোত্রের ২ জন :
১. ওব্বাদা বিন আস-সামিত।
২. আউস বিন আস-সামিত।
ঠ. বনি দা’দ বিন ফির বিন দালাবা গোত্রের ১ জন :
১. আন-নাওমান বিন মালিক বিন দালাবা।
ড. বনি লাওদান বিন সলিম গোত্রের ১০ জন :
১. সাবিত বিন হাযাল।
২. মালিক বিন আল-দাখশাম বিন মুরদাখা (তিনি ছিলেন বনি মুরদাখা গোত্রের লোক)।
৩. রাবিয়া বিন আইয়াস বিন আমর বিন গানাম।
৪. ওয়ারকাহ্ বিন আইয়াস।
৫. আমর বিন আইয়াস (তাদের ইয়েমেনী মিত্র)।
৬. আল-মিজদার বিন যায়াদ আল-বলিভি (তাদের মিত্র)।
৭. ওব্বাদা বিন আল-খাশখাশ বিন আমর।
৮. নাহাব (বাহাত নামেও পরিচিত) বিন দালাবা বিন হুজমা।
৯. আব্দুল্লাহ্ বিন দালাবা বিন হুজমা।
১০. উতাবা বিন রাবিয়া বিন খালিদ বিন মুয়াইয়া (তাদের মিত্র)।
ঢ. বনি সাইদা বিন কা’ব বিন আল-খাজরাজ গোত্রের ২ জন :
১. আবু দু’জানা (সাম্মাক বিন আউস বিন খারশা)।
২. আল-মুন্দির বিন আমর বিন খুনাইস (আল-মুন্দির বিন আমর বিন খানবাশ নামেও পরিচিত)।
ণ. বনি আল-বদি বিন আমির বিন আউফ গোত্রের ২ জন :
১. আবু উসাইদ বিন রাবিয়া বিন আল-বদি।
২. মালিক বিন মাসুদ বিন আল-বদি।
ত. বনি তারিফ বিন আল-খাজরাজ গোত্রের ৬ জন :
১. আব্দ্ রাব্বা বিন হক বিন আউস।
২.কা’ব বিন হিম্মার (বিন জাম্মাজ বিন দালাবা আল-গাবাশানি আল-জুহানি নামেও পরিচিত)।
৩. দামারা বিন আমর (ইবনু বাশর আল-জুহানি বলেও পরিচিত)
৪. যিয়াদ বিন আমর (ইবনু বাশর নামেও পরিচিত) আল-জুহানি (একজন মিত্র)।
৫. বাসবাস বিন আমর আল-জুহানি (একজন মিত্র)।
৬. আব্দুল্লআহ্ বিন আমির আল-বালিভি (একজন মিত্র)।
থ. বনি জাশম বিন আল-খাযরাজ গোত্রের ১২ জন :
১. খিরাশ বিন আল-সিম্মা বিন আমর।
২. আল-হুব্বাব বিন আল-মুন্দির।
৩. ওমাইর বিন আল-হাম্মাম।
৪.তামিম (খাররাশ বিন আস-সিম্মার মুক্তি দেওয়া ক্রীতদাস)
৫. আব্দুল্লাহ্ বিন আমর বিন হারাম।
৬. মুয়াদ বিন আমর বিন আল-জামুহ্।
৭. খাল্লাদ বিন আমর বিন আল-জামুহ্।
৮. উকাবাহ্ বিন আমির বিন নাবি [১]।
[১. তার জীবন বৃত্তান্তের জন্য আমাদের বই গাজওয়াত ওহুদ দ্রষ্টব্য।]
৯. হাবিব বিন আসওয়াদ (তাদের মুক্তি দেওয়া ক্রীতদাস)।
১০. সাবিত বিন দালাবা বিন যাইদ।
১১. মুয়াইদ বিন আমর বিন আল-জামুহ্।
১২. ওমাইর বিন আল-হারিস বিন দালাবা।
দ. বনি উবাইদ বিন আদি বিন গানাম বিন কা’ব গোত্রের ৯ জন :
১. বশর বিন আল-বারা বিন মারুর বিন সাখার।
২. আত-তুফাইল বিন মালিক বিন খুনসা।
৩. সিনান বিন সাইফি বিন খুনসা।
৪. আব্দুল্লাহ্ বিন আন-জাদ বিন কায়েস বিন সাখার বিন খুনসা।
৫. উৎবাহ্ বিন আব্দুল্লাহ্ বিন সাখার বিন খুনসা।
৬. খারাজা বিন হুমাইর আল-আশজাই (তাদের মিত্র)।
৭. আব্দুল্লাহ্ বিন হুমাইর (তাদের মিত্র)।
৮. আত-তুফাইল বিন আন-নাওমান বিন খুনসা।
৯. লেখক যদিও বলেছেন যে যুদ্ধে অংশগ্রহণকারীর সংখ্যা ছিল ৯ জন তথাপি তিনি এখানে ৮ জনের নাম উল্লেক করেছেন—অনুবাদক
ধ. বনি খুনাস বিন সিনান বিন উবাইদ গোত্রের ৭ জন :
১. ইয়াজিদ বিন আল-মুনদির বিন সারহ্ বিন খুনাস।
২. মা’কিল বিন আল-মুনদির বিন খুনাস।
৩. আব্দুল্লাহ্ বিন আন-নাওমান বিন বালদামা।
৪. আদ-দাহাক বিন হারিসা বিন যাইদ।
৫. সাওয়াদ বিন যুরাইক বিন দালাবা।
৬. মা’বাদ বিন কায়েস বিন সাখার বিন হারাম।
৭. আব্দুল্লাহ্ বিন কায়েস বিন সাখার বিন হারাম।
ন. বনি আন-নাওমান বিন উবাইদ গোত্রের ৪ জন :
১. আব্দুল্লাহ্ বিন আব্দ মানাফ বিন আল-নাওমান।
২. জাবির বিন আব্দুল্লাহ্ বিন রিয়াব বিন আন-নাওমান।
৩. খালিদা বিন কায়েস বিন আন-নাওমান।
৪. আন-নাওমান বিন সিনান (তাদের ছেড়ে দেওয়া ক্রীতদাস)
প. বনি সাওয়াদ বিন গানাম বিন কা’ব বিন সালামা গোত্রের ৪ জন :
১. ইয়াজিদ বিন হাদিদা।
২. সুলাইম বিন আমর বিন হাদিদা।
৩. কাতাবা বিন আমর বিন হাদিদা।
৪. আন্তারা (সুলাইম বিন আমরের ছেড়ে দেওয়া ক্রীতদাস)।
ফ. বনি আদি বিন নাবি বিন আমর বিন সাওয়াদ বিন গানাম গোত্রের ৬ জন:
১. আশ্ বিন আমির বিন আদি।
২. দা’লাবা বিন গানামা বিন আদি।
৩. সাল বিন কায়েস বিন আবি কা’ব।
৪. আমর বিন তাক্ বিন যাইদ বিন ওমাইয়া।
৫. মুয়া’দ বিন জাব্বাল বিন আমর বিন আউস।
৬. [ লেখক ষষ্ট নামটি উল্লেখ করেন নি- অনুবাদক ]
ব. বনি জুরাইক বিন আমির বিন জুরাইক গোত্রের ৭ জন :
১. কায়েস বিন মুসিন বিন খালিদ।
২. আবু খালিদ (আল-হারিস বিন কায়েস বিন খালিদ)।
৩. জুবাইর বিন আয়াস বিন খালিদ।
৪. আবু উবাদাহ্ (সা’দ বিন ওসমান বিন খুলদা।
৫. দাকওয়ান বিন আব্দ্ কায়েস বিন খুলদা।
৬. মাসুদ বিন খুলদা বিন আমির।
ভ. বনি খালিদ বিন আমির বিন জুরাইক গোত্রের ১ জন :
১. উব্বাদ বিন কায়েস বিন আমির বিন খালিদ।
ম. বনি খুলদা বিন আমির বিন জুরাইক গোত্রের ৫ জন :
১. আসাদ বিন ইয়াজিদ বিন আল-ফাকিহা।
২. আল-ফাকিহা বিন বিশর বিন আল-ফাকিহা।
৩. মুয়াদ বিন মাইস বিন কায়েস।
৪. আইদ বিন মাইস বিন কায়েস।
৫. মাসুদ বিন সা’দ বিন কায়েস।
য. বনি আল-আজলান বিন আমর বিন আমির বিন জুরাইক গোত্রের ৬ জনঃ
১. রাফাহ্ বিন রাফিহ্ বিন আল-আজলান।
২. খাল্লাদ বিন রাফিহ্ বিন মালিক।
৩. ওবাইদ বিন যাইদ বিন আমির।
৪. ওবাইদ বিন মালিক বিন আমর।
৫. মালাইল বিন ওয়ারাহ্ বিন খালিদ।
৬. আসমাহ্ বিন আল-হাসীন বিন ওয়ারাহ্।
র. বনি বিয়াদাহ্ বিন আমির বিন জুরাইক গোত্রের ৬ জন :
১. জিয়াদ বিন লাবিদ বিন আমির।
২. ফারওয়া বিন আমর বিন ওয়াদাফা।
৩. খালিদ বিন কায়েস বিন মালিক।
৪. রুজাইলা বিন দালাবা বিন খালিদ।
৫. আতিইয়া বিন নুওয়াইরা বিন আমির।
৬. খালিফা বিন আদি বিন আমর (আলিফা বলেও পরিচিত)।
ল. বনি হাবিরববিন আব্দ্ হারিদা গোত্রের ২ জন :
১. রাফিহ্ বিন আল-মা’লি বিন লাওদান।
২. হিলাল বিন আল-মালি বিন লাওদান
ব. এবং বনি আল-নাজ্জার (তাইম-উল্লাহ্ বিন দালাবা বিন আমর বিন আল-খাজরাজ) গোত্রের ৫৩ জন :
১. খালিদ বিন যাইদ বিন খুলাইব।
২. সাবিত বিন খালিদ বিন আন-নাওমান
৩. আম্মারা বিন হাজম বিন যাইদ।
৪. সুরাকাহ্ বিন কা’ব বিন আব্দুল উজ্জা।
৫. হারিদা বিন আল-নাওমান বিন যাইদ।
৬. সুলাইম বিন কায়েস বিন ফাদ।
৭. সুহাইল বিন রাফিহ্ বিন আবি আমর।
৮. আদি বিন আজ-জাগবা (তাদের জুহাইনিয়ার মিত্র)।
৯. মাসুদ বিন আউস বিন যাইদ।
১০. আবু খুদাইমা বিন আউস বিন যাইদ।
১১. রাফিহ্ বিন আল-হারিস বিন সাওয়াদ।
১২. আউফ বিন আল-হারিস বিন রাফায়াহ্ ১৩. মুয়াইদ বিন আল-হারিস বিন রাফায়াহ্।
১৪. মুয়াদ বিন আল-হারিস বিন রাফায়াহ্ (ইনি ছিলেন আবু জেহেলের হত্যাকারী আফরার পুত্রদের মধ্যে তৃতীয়)।
১৫. আন-নাওমান বিন আমর বিন রাফাহ্ (নুয়াইমান নামেও পরিচিত)। ১৬. আমির বিন মুখালিদ বিন আল-হারিস।
১৭. আব্দুল্লাহ্ বিন কায়েস বিন খালিদ।
১৮. আসিমা (তাদের আশজার মিত্র)।
১৯. ওয়াদিয়াহ্ বিন আমর (তাদের জুহাইনিয়ার মিত্র)।
২০. সাবিত বিন আমর বিন যাইদ।
২১. দালাবা বিন আমর বিন মুহসিন।
২২. সাল বিন আতিক বিন আমর।
২৩. আল-হারিস বিন আস-সাম্মা বিন আমর[১]। ইবনু ইসহাকের মতে আর-রাওহাতে তার অস্থিভঙ্গ ঘটাতে তিনি বদরের যুদ্ধে অংশ নিতে পারেননি। কিন্তু মহানবী তাকে লুণ্ঠিত মালের ভাগ দিয়েছিলেন। এজন্য তাকেও বদরের সঙ্গী হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
২৪. উব্বাঈ বিন কা’ব বিন কায়েস[২]।
২৫. আস্ বিন মুয়াদ বিন আনস্।
২৬. আউস বিন সাবিত বিন আল-মুনদির।
২৭. আবু শেখ (উব্বাঈ বিন সাবিত বিন আল-মুনাদির, হাসান বিন সাবিতের ভাই)।
২৮. আবু তালহা (যাইদ বিন সাহল বিন আসওয়াদ)।[৩]
২৯. হারিদা বিন সুরাকাহ্ বিন আল-হারিদ।
৩০. আমর বিন দালাবা বিন ওয়াহাব।
৩১. সালিত বিন কায়েস বিন আমর বিন আতিক।
৩২. আবু যাইদ কায়েস বিন সাকন।
৩৩. আবু খারাজা আমর বিন কায়েস বিন মালিক
৩৪. সাবিত বিন খুনসা বিন আমর।
৩৫. আমির বিন ওমাইয়া বিন যাইদ।
৩৬. মুহারিজ বিন আমির বিন মালিক।
৩৭. সাওয়াদ বিন গাজিয়াহ্ বিন উহায়িব আল-বলিভি (তাদের মিত্র)। ৩৮. আল-হারিস বিন জালিম বিন আব্স (আবুল আউর)। আবুল আউর বিন আল-হারিস বিন জালিম নামেও পরিচিত।
৩৯. সুলাইম বিন মালহান বিন খালিদ বিন যাইদ।
৪০. হারাম বিন মালহান বিন খালিদ।
]১. ইনি ছিলেন অন্যতম সাহসী যোদ্ধা যিনি ওহুদের যুদ্ধে শেষ পর্যন্ত নবীজির পাশে ছিলেন। তার জীবন বৃত্তান্তের জন্য গাজওয়াত ওহুদ দ্রষ্টব্য।
২. তার জীবন বৃত্তান্তের জন্য “ওহুদের যুদ্ধ” বই দ্রষ্টব্য।
৩ ইসলামিক যুদ্ধের অন্যতম শ্রেষ্ঠ বীর; তার জীবন বৃত্তান্তের জন্য আমাদের “ওহুদের যুদ্ধ” বই দ্রষ্টব্য।]
৪১. কায়েস বিন আবি সা’সাহ্।
৪২. আব্দুল্লাাহ্ বিন কাব বিন আমর বিন আউফ।
৪৩. ওসাইমা (তাদের বনি আসাদ বিন খুজাইমা গোত্রীয় মিত্র)
৪৪. ওমাইর বিন আমির বিন মালিক।
৪৫. সুরাকাহ্ বিন আমর বিন আতিয়া
৪৬. কায়েস বিন মুখাল্লাদ বিন দালাবা।
৪৭. আন-নাওমান বিন আব্দ্ আমর বিন মাসুদ।
৪৮. আদ-দাহাক বিন আব্দ আমর বিন মাসুদ।
৪০. সুলাইম বিন আল হারিস বিন দালাবা।
৫০. জাব্বির বিন সুহাইল বিন আব্দ্ আল-আশহাল।
৫১. সা’দ বিন সুহাইল বিন আব্দ্ আল-আশহাল।
৫২. কা’ব বিন যাইদ বিন কায়েস।
৫৩. বুজাইর বিন আবি বুজাইর (তাদের গাতফানের মিত্র)।
বদরের যুদ্ধ সম্পর্কে আল-কুরআন
পবিত্র কুরআন শরীফে বদরের যুদ্ধ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। এতে যুদ্ধের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলি স্থান পেয়েছে। সূরা আল-আনফাল’ এর ৭৫টি আয়াতই বদরের যুদ্ধ সম্পর্কে
ইবনু ইসহাক বলেন, “যখন বদরের যুদ্ধ শেষ হয় তখন মহান আল্লাহ্তায়ালা সূরা ‘আল-আনফাল’ নাযেল করেন। এই সূরাটির সম্পূর্ণটাই এই মহাযুদ্ধ সম্পর্কে।”
কুরআন শরীফে প্রথমেই উল্লেখিত হয়েছে লুঠের মাল সম্পর্কে মুসলমানদের মত-পার্থক্য)। আল্লাহ্ বলেন :
অর্থঃ তারা তোমাকে (হে মুহাম্মদ) যুদ্ধের লুণ্ঠিত মালামাল সম্পর্কে জিজ্ঞেস করছে। এ মালের মালিক হচ্ছে আল্লাহ্ ও তাঁর নবী। অতএব আল্লাহর প্রতি কর্তব্য পালন কর এবং তোমাদের মত-পার্থক্য ভুলে যাও। তোমরা যদি প্রকৃত বিশ্বাসী হও তাহলে আল্লাহ্ ও তাঁর দূতের কথা মেনে চল। (viii : ১)
এই আয়াতটিই লুণ্ঠিত মালের ভাগাভাগি সম্পর্কিত বিতর্ক মীমাংসা করে দেয়। এতে গোটা বিষয়টি নবীজির হাতে ছেড়ে দেওয়া হয় এবং মুসলমানদেরকে তাঁর আদেশ মান্য করতে বলা হয়। এই আয়াত অনুসারে মহানবী মুসলমান সৈন্যদের মধ্যে সমানভাবে লুণ্ঠিত মাল বন্টন করেন।
ওবাদা বিন আস-সামিত বলতেন, “যুদ্ধে দখলকৃত মালামাল বন্টন সম্পর্কে আমরা মুসলমান যোদ্ধারা যখন একমত হতে পারছিলাম না তখনই সূরা আল-আনফাল নাযেল হয়েছিল। বিষয়টি যখন আমাদের আচরণকে কলুষিত করতে যাচ্ছিল তখন আল্লাহ্তায়ালা ব্যাপারটি নিজের হাতে নিয়ে নেন এবং নবীজিকে দায়িত্ব দেন। নবীজি তখন উহা সমানভাবে আমাদের মধ্যে বন্টন করেন। এতে করে আমাদের অন্তরে খোদা-ভক্তি, খোদা প্রতি কর্তব্য, নবীজির প্রতি আনুগত্য ও শান্তি প্রতিষ্ঠিত হয়। পবিত্র কুরআনে কুরাইশ বহরকে ধরার জন্য মহানবীর মদীনা ত্যাগ, বহর দখলের জন্য মুসলমানদের ইচ্ছা এবং কুরাইশদের মোকাবিলার প্রতি কারো কারো অনীহার কথা এই আয়াতগুলিতে উল্লেখ করা হয়েছে :
অর্থঃ যদিও তোমার প্রভু তোমাকে (মুহাম্মদ) সত্যের পথে তোমার বাড়ী থেকে বের করেছেন তবু দেখ একদল বিশ্বাসী-এর প্রতি অনীহা প্রকাশ করছে এবং সুষ্পষ্ট সত্য সম্পর্কে তোমার সঙ্গে তর্ক করছে। ব্যাপারটা এরকম যেন তাদেরকে দৃশ্যমান মৃত্যের দিকে ঠেলে দেয়া হচ্ছে। এবং আল্লাহ্ যখন ওয়াদা করেছিলেন যে সেনাবাহিনীর দু’টি দলের মধ্যে একটি দল তোমাদের হবে তখন তোমরা চেয়েছিলে যে অস্ত্রবিহীন দলটি তোমাদের হতে পারে। এবং আল্লাহ্ চেয়েছিলেন যে তাঁর কথার দ্বারা সত্যের জয় হবে এবং অবিশ্বাসীদের মূলোৎপাটন হবে। (viii : : ৫-৮)
কুরআন শরীফে কুরাইশদের প্রার্থনা এবং যুদ্ধের আগে আবু জেহেল কিভাবে রক্ত-সম্পর্ক ছিন্নকারীদের ধ্বংস করার জন্য আল্লাহকে ডেকেছিলেন সেকথা উল্লেখিত আছে তিনি বলেছিলেন “হে আল্লাহ্ তিনি (অর্থাৎ মহানবী) রক্ত-সম্পর্ক ছিন্ন করে আমাদের জন্য একটা অজানা জিনিস নিয়ে এসেছেন। অতএব কাল সকালেই তিনি যেন ধ্বংস হন।” এ প্রসঙ্গে আল্লাহ্ বলেন :
অর্থঃ, (হে কুরাইশরা!) তোমরা যদি ন্যায়বিচার চেয়ে থাক তাহলে এই হচ্ছে ন্যায়বিচার। এবং তোমরা যদি বিশ্বাসীদেরকে অত্যাচার করা বন্ধ কর সেটাই তোমাদের জন্য ভাল হবে, কিন্তু তোমরা যদি আক্রমণে ফিরে আস তাহলে আমরাও ফিরে আসব। এবং সংখ্যায় যতই হোক না কেন তোমাদের সেনাবাহিনী তোমাদের কোন কাজে লাগবে না। এটা জেনে রেখ, আল্লাহ্ (তাঁর নেতৃত্ব) বিশ্বাসীদের পক্ষে। (viii : ১৯)
পবিত্র কুরআনে বদরে দুই সেনাবাহিনীর অদ্ভূৎ ও অপ্রত্যাশিত মোকাবিলার কথাও উল্লেখ আছে। মুসলমানরা কুরাইশদের সঙ্গে কোন সশস্ত্র সংঘর্ষ কামনাও করেননি কিংবা প্রত্যাশাও করেননি। তারা কুরাইশদের বহর দখল করতে বেরুলে অকস্মাৎ তাদের পূর্ণ সামরিক শক্তির সম্মুখীন হতে হয়।
আল্লাহ্ বলেনঃ
অর্থঃ স্মরণ কর তখনকার কথা যখন তোমরা উপত্যকাটির নিকটবর্তী ধারে ছিলে এবং তারা ছিল দূরবর্তী ধারে এবং বহরটি ছিল তোমাদের নীচে। এবং তোমরা যদি চুক্তি করে সেখানে থাকতে তাহলে নিশ্চয়ই তোমরা সে চুক্তি ভঙ্গ করতে। কিন্তু ব্যাপারটা এমন ছিল যে যা করার ছিল তা আল্লাহ্ই করবেন। তিনি চেয়েছিলেন যে যারা ধ্বংস হতে চায় তারা সুষ্পষ্ট প্ৰমাণ সহই ধ্বংস হবে এবং যারা বাঁচতে চায় তারাও সুষ্পষ্ট প্রমাণ সহই বাঁচবে। (viii) : 82)
যে সংকটময় অবস্থায় নবীজি ভয় পেয়েছিলেন যে তাঁর ক্ষুদ্র মুসলিম বাহিনী ধ্বংস হয়ে যেতে পারে পবিত্র কুরআনে তারও উল্লেখ আছে। এ অবস্থায় শত্রুদের বিরুদ্ধে মুসলমানদের সাহায্য করার জন্য তিনি আল্লাহ্ কাছে প্রার্থনা করেছিলেন এবং মুসলমানদেরকে নৈতিক ও আধ্যাত্মিক ভাবে উৎসাহদানের জন্য আল্লাহ্ ফেরশতাদের পাঠিয়ে দিয়েছিলেন। কুরআনে আছে :
অর্থঃ তুমি যখন তোমার প্রভুর সাহায্য চেয়েছিলে তখন তিনি জবাব দিয়েছিলেন : আমি তোমাকে এক হাজার ফেরেশ্তা দিয়ে সাহায্য করবো। আল্লাহ্ শুধুমাত্র শুভ সংবাদ হিসেবে এটি নির্ধারণ করেছিলেন যাতে করে তোমাদের অন্তর স্বস্তি পেতে পারে। বিজয় আসে শুধুমাত্র আল্লাহর সহযোগিতাতেই। দেখ, আল্লাহ্ হচ্ছেন শক্তিশালী, ও জ্ঞানী। (viii : ৯-১০)
যুদ্ধের অব্যবহিত আগে মুসলমান সেনাবাহিনীর উপর যে শান্তি নেমে এসেছিল এবং যে অধ্যবসায়, শান্ত মনোভাব ও নির্ভীকতা নিয়ে তারা শত্রুর মোকাবিলা করেছিলেন তা কুরআনে বর্ণিত হয়েছে এভাবে :
অর্থ : স্মরণ কর সেই সময়কার কথা যখন তোমারদের প্রভুর তরফ থেকে শান্তির চিহ্ন হিসেবে তোমরা তন্দ্রাভিভূত হয়েছিলে। তোমাদের ধৌত করার জন্য তিনি আকাশ থেকে পানি পাঠিয়েছিলেন। তিনি তোমাদের শয়তানের শয়তানি থেকে পবিত্র করতে চেয়েছিলেন এবং তোমাদের অন্তরকে শক্ত ও পদক্ষেপকে দৃঢ় করতে চেয়েছিলেন। (viii : ১১)
যুদ্ধের প্রচণ্ডতার মধ্যে ঘরে বসে আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করার সময় মহানবী যে একটু তন্দ্রাচ্ছন্ন হয়ে পড়েছিলেন সেকথা কুরআনে বলা হয়েছে নিম্নোক্ত আয়াতে :
অর্থঃ স্মরণ কর সেই সময়কার কথা যখন আল্লাহ তোমাকে স্বপ্নের মধ্যে তাদেরকে কম সংখ্যা দেখিয়েছিলেন। তিনি যদি তাদেরকে বেশী সংখ্যায় দেখাতেন তাহলে তোমরা (মুসলমানগণ) ভয় পেতে এবং এ বিষয়টি নিয়ে ঝগড়া করতে। কিন্তু আল্লাহ্ তোমাদেরকে রক্ষা করেছিলেন। দেখ, আল্লাহ্ জানেন মানুষের অন্তরের কথা। (viii : 43)
অনুরূপভাবে, মহানবী যখন মুসলমানদেরকে আদেশ করেছিলেন পৌত্তলিকদের আক্রমণের জবাব দিতে তখন যে তিনি পৌত্তলিকদের দিকে পাথর ছুঁড়ে মেরেছিলেন সেকথাও কুরআনে উল্লেখ করা হয়েছে। আল্লাহ্ বলেন :
অর্থঃ তুমি (মোহাম্মদ) যখন পাথর ছুঁড়েছিলে তখন আসলে তুমি তা ছুড়নি, ছুঁড়েছিলেন আল্লাহ্। তিনি বিশ্বাসীদের পরীক্ষা করেছিলেন। দেখ, আল্লাহ্ সবকিছু শুনেন এবং জানেন। এটাই হচ্ছে ঘটনা এবং এটাও জেন যে আল্লাহ্ই অবিশ্বাসীদের পরিকল্পনাকে দূর্বল করে দেন। (viii : ১৭-১৮)
এই আয়াতযুগলকে ব্যাখ্যা করতে গিয়ে ইবনু ইসহাক বলেছেন, “তখন আল্লাহ্ নবী এক মুঠ পাথর হাতে তুলে নিযে কুরাইশদের প্রতি নিক্ষেপ করে বলেন : ‘পৌত্তলিকদের মুখ চূর্ণ হয়ে যাক’। এই বলে তিনি তাঁর সঙ্গীদেরকে পৌত্তলিকদের উপর আক্রমণ চালানোর আদেশ দেন এবং তারা পরাজিত হয়।”
মুসলমানরা যখন তাদের শত্রুর মোকাবিলা করেন তখনকার তাদের মানসিক ও আধ্যাত্মিক অবস্থাও পবিত্র কুরআনে বর্ণিত হয়েছে। একটা সেনাবাহিনীর পূর্ব প্রস্ততি হিসেবে যা কিছু দরকার তার সবই তাদের ছিল। সংখ্যায় কম হয়েও অক্ষুন্ন মনোবল দিয়ে তারা একটা বিশাল প্রতিপক্ষকে পরাজিত করতে সক্ষম ছিল। এটা ছিল মুসলমানদের উপর আল্লাহর একটা বিশেষ আশির্বাদ। এর ফলে তারা কখনোই কুরাইশদের সংখ্যাধিক্য দেখে ভয় পাননি। মহান আল্লাহ্তায়ালা বলেন :
অর্থঃ এবং যখন আল্লাহ্ তাদেরকে তোমাদের (মুসলমানদের) চোখে কম সংখ্যায় প্রতিভাত করেছিলেন। (viii : 44)
এছাড়া, পবিত্র কুরআন মুসলমানদের স্মরণ করিয়ে দিয়েছে কিভাবে বদরের যুদ্ধের বিজয় তাদের গোটা সামাজিক, অর্থনৈতিক এবং রাজনৈতিক জীবনে একটা পরিবর্তন এনে দিয়েছিল এবং তার ফলে যুদ্ধের আগেকার বিপদাপন্ন অবস্থা থেকে বেরিয়ে তাদের দেশে তারা একটা বৃহত্তম একক দল হিসেবে প্রতিষ্ঠা পেয়েছিলেন। কুরআনে বলা হয়েছে :
অর্থঃ এবং স্মরণ কর যখন তোমরা সংখ্যায় কম ছিলে এবং দেশে দূর্বল বিবেচিত হতে এবং শত্রুরা তোমাদেরকে তাড়িয়ে দেবে এই ভয়ে ভীত ছিলে। স্মরণ কর কিভাবে আল্লাহ তোমাদেরকে আশ্রয় দিয়েছিলেন, তাঁর সহযোগিতায় কিভাবে তোমরা শক্তিশালী হয়েছিলে এবং কিভাবে তিনি তোমাদিগকে ভাল ভাল জিনিষ দিয়েছিলেন তাঁর প্রতি তোমাদের কৃতজ্ঞ হওয়া উচিত। (viii : ২৬)
আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশের লক্ষ্যে কুরআন সাধারণভাবে সকল মুসলমান এবং বিশেষভাবে বদরের যোদ্ধাদের স্মরণ করিয়ে দিয়েছে যে তারা যেন তাদের প্রভু ও তাঁর নবীর প্রতি কর্তব্যপরায়ন হন। কুরআন তাদেরকে মতভেদ এবং ঝগড়াঝাটির বিরুদ্ধে সতর্কবাণী উচ্চারণ করে বলেছে যে এর ফলে তারা শক্তিহীন হয়ে পড়বে। এছাড়া তাদের সবরকম অহংকার, ভণ্ডামী এবং একগুয়েমী পরিহার করতে বলা হয়েছে। বলা হয়েছে এগুলোর জন্যই মক্কী বাহিনীর পরাজয় হয়েছিল।
মক্কী বাহিনীর সেনাপতি আবু জেহেলের উদ্ধত আরচণই তাদের জন্য ইতিহাসের নজীরবিহীন শোচনীয় পরাজয় ডেকে এনেছিল। কুরআনে বলা হয়েছে :
অর্থ : এবং আল্লাহ্ ও তাঁর দূতকে মান্য কর এবং ভয়ে যেন তোমরা দূর্বল হয়ে না পড় সেজন্য পরস্পরের সঙ্গে ঝগড়া করো না। তোমরা বরং অবিচল থাকবে। দেখ, আল্লাহ্ হচ্ছেন অবিচলদের সঙ্গে। যারা অহংকার নিয়ে বাড়ী থেকে বের হয়ে আল্লাহর পথ থেকে মানুষকে সরিয়ে নিতে চেয়েছিল তাদের মত হয়ো না। আল্লাহ্ জানেন তারা কি করছে। এবং শয়তান যখন তাদের কাজকে ভাল প্রতিপন্ন করে বলেছিল : কোন মানুষই আজ তোমাদেরকে পরাজিত করতে পারবেনা, কারণ আমি তোমাদের রক্ষক। কিন্তু দুই সেনাবাহিনী যখন পরস্পরের দৃষ্টিগোচর হয় তখনই সেস এই বলে পালিয়ে যায় : দেখ, আমার কোন দোষ নেই। দেখ, তোমরা যা দেখছ না আমি তাই দেখছি। দেখ, আল্লাহকে ভয় কর এবং আল্লাহ্ হচ্ছেন. কঠিন শাস্তি দাতা। (viii : ৪৬-৪৮)
যুদ্ধ-ক্ষেত্র থেকে পলায়ন
এই সূরায় কুরআন খুব কঠোর ভাষায় মুসলমানদের সতর্ক ক’রে দিয়েছে তারা যেন তাদের শত্রুদের প্রতি পৃষ্ঠ প্রদর্শন না করেন। এহেন কাজকে কুরআন দেশদ্রোহিতা এবং যড়যন্ত্র হিসেবে বর্ণনা করে অপরাধীদের জন্য দোযখের শাশ্বত আগুনের ভয় দেখিয়েছে। কুরআনে বলা হয়েছে :
অর্থ : হে বিশ্বাসীগণ! যুদ্ধে তোমরা কখনোই অবিশ্বাসীদের প্রতি পৃষ্ঠ প্রদর্শন করবে না। যে ব্যক্তি যুদ্ধের কৌশল কিংবা কোন দলে যোগদানের ইচ্ছা ছাড়া শত্রুদের প্রতি পৃষ্ঠ-প্রদর্শন করবে তার প্রতি আল্লাহ্ রাগ বর্ষিত হবে এবং তার গন্তব্য হবে দোযখ। (viii : ১৫-১৬)
এই সূরাতে তাদের এবং তাদের প্রভুর শত্রুদের সহযোগিতা করতে মুসলমানদেরকে নিষেধ করা হয়েছে :
অর্থ : তোমরা যদি যুদ্ধে তাদের সম্মুখীন হও তাহলে এমন ভাব দেখাও যাতে তাদের পিছনে যারা আছে তারা ভয় পেয়ে যায় এবং সতর্ক হয়ে যায়। তোমরা যদি তোমাদের কোন মিত্রদের কাছ থেকে ষড়যন্ত্রের ভয় পাও তাহলে তাদের চুক্তি তাদেরকে ফেরত দিতে পার। দেখ, আল্লাহ বিশ্বাসঘাতকদের ভালবাসেন না। তাদের বিরুদ্ধে লড়ার জন্য যতটা পার সশস্ত্র সৈন্য ও অশ্ব প্রস্তুত রাখ, যাতে করে তোমরা তোমাদের এবং আল্লাহর শত্রুদের মনে ভীতির সঞ্চার করতে পার। তোমরা যাদেরকে চেন না এমন যারা তাদের পাশে আছে তাদেরকেও ভয় দেখাও। আল্লাহ্ তাদেরকে চেনেন। তোমরা আল্লাহ্ পথে যা কিছুই ব্যয় কর না কেন তোমরা তার সম্পূর্ণ প্রতিদান পাবে। তোমাদের প্রতি অন্যায় করা হবে না। (viii : ৫৭-৬০)
সংকটময় অবস্থায় পবিত্র কুরআন যে মুসলমানদেরকে প্রয়োজনীয় অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে তাদের শত্রুদের মোকাবিলা করার আহবান জানায় এতদসত্বেও এই মৌলিক ব্যাপারটা অপরিবর্তিতই থাকে যে ইসলাম হচ্ছে শান্তির পক্ষে এবং মুসলমানরা যুদ্ধ করবে কেবল তখনই যখন শান্তি বিপদাপন্ন হয়ে পড়ে। এই মৌলিক বিষয়টি ব্যাখ্যা করে কুরআনে বলা হয়েছে :
অর্থ : এবং তারা যদি শান্তি চায় তাহলে তোমরাও শান্তি চাইবে এবং আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস রাখবে। দেখ, আল্লাহ্ সবকিছু শুনেন এবং জানেন। (viii : ৬১)
যে সব মুহাজিরিন এবং আনসারদের প্রচেষ্টায় (আল্লাহর সাহায্য ও দয়ায় এই বিরাট বিজয় সম্ভব হয়েছিল তাদেরকে পবিত্র কুরআনে এভাবে প্ৰশংসা করা হয়েছে :
অর্থঃ যারা বিশ্বাস স্থাপন করে আল্লাহ্ কাজে গৃহত্যাগ করেছিল এবং যারা তাদেরকে গ্রহণ ও সাহায্য করেছিল তারাই সত্যিকারের বিশ্বাসী। তাদের জন্য ক্ষমা ও পর্যাপ্ত খাদ্যের ব্যবস্থা থাকবে। (viii : ৭৪)
এই সূরায় আমরা এটাই দেখি যে, পৌত্তলিকদের সামরিক শক্তিকে সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস না ক’রে মুক্তিপণের বিনিময়ে তাদের ছেড়ে দেওয়ার জন্য আল্লাহ্ মহানবীকে তিরস্কার করেছিলেন। কুরাইশরা যখন তাদের সমস্ত সামরিক শক্তি সংগ্রহ করে ক্ষুদ্র মুসলমান সম্প্রদায়কে ধ্বংস করার জন্য উঠেপড়ে লেগেছিল তখন বিদ্যমান পরিস্থিেিত যুদ্ধ-বন্দীদের হত্যা করাই ছিল উপযুক্ত কাজ। আল্লাহ্ মহানবীকে তিরস্কার করে বলেন :
অর্থঃ কোন নবী তাঁর দেশের বহু অবিশ্বাসীকে ধ্বংস না করা পর্যন্ত কাউকে বন্দী রাখতে পারেন না। তুমি ইহলোকের লাভ চাও কিন্তু আল্লাহ্ তোমার জন্য পরলোকের কল্যাণ চান। আল্লাহ্ শক্তিশালী ও জ্ঞানী। আল্লাহ্ কাছে থেকে আগে কোন অনুমোদন না এসে থাকলে এখনকার কাজের জন্য তুমি কঠোর শাস্তি পেতে। (viii : ৬৭-৬৮)