দ্বিতীয়াধ্যায়—দ্বিতীয়াহ্নিক : গন্ধাদির স্বাভাবিকত্ব

দ্বিতীয়াধ্যায়ে—দ্বিতীয়াহ্নিকম্

পুষ্পবস্ত্রয়োঃ সতি সন্নিকর্ষে গুণান্তরা প্রাদুর্ভাবো বস্ত্রে গন্ধাভাবলিঙ্গম্।। ১।।

অনুবাদ

পুষ্প ও বস্ত্রের সম্মিলনসময়ে (বস্ত্রে পুষ্পগন্ধ অনুভূত হইলেও) অবয়ব গুণানুসারে (তাদৃশ গন্ধের) অনুৎপত্তিই বস্ত্রে যে (পুষ্প) গন্ধ নাই ইহার জ্ঞাপক।। ১।।

ব্যাখ্যা

কোন্ গুণ কোন্ দ্রব্যের স্বাভাবিক এবং কোন্ গুণ ঔপাধিক অর্থাৎ আগন্তুক তাহা বুঝাইবার জন্য কয়েকটী সূত্র রচিত হইতেছে। সেই সকল স্বাভাবিক গুণই সেই সব দ্রব্যের লক্ষণ, ঔপাধিক গুণ নহে, ইহা প্রতিপন্ন করাই উদ্দেশ্য। প্রথমেই পৃথিবীর কথা হইতেছে। গন্ধ পৃথিবীর লক্ষণ ইহা কথিত হইয়াছে। কিন্তু গন্ধ তো বায়ুতেও অনুভূত হয়। সুরভি সমীরণের উপাদেয় ভাব এবং দুর্গন্ধ বায়ুর বর্জ্জনীয়তা কে অস্বীকার করিবে? অতএব গন্ধ পৃথিবীর লক্ষণ হইলে বায়ুতে অতিব্যাপ্তি হয়। এই পূর্ব্বপক্ষের উত্তর প্রদানার্থ এই সূত্র। ভাবার্থ এই, যেমন বস্ত্রে পুষ্প রাখিলে মৃগনাভি বা আতর দিলে বস্ত্রে সেই পুষ্পাদির গন্ধ অনুভূত হইলেও তাহা বস্ত্রের গন্ধ নহে, পরন্তু সেই পুষ্পাদিরই সূক্ষ্মাংশের গন্ধ, সেইরূপ বায়ুতে যে গন্ধ অনুভূত হয় তাহা বায়ুর নিজস্ব নহে, পরকীয়। কেননা বস্ত্রে যে স্বাভাবিক পুষ্পগন্ধ নাই এবং বায়ুতে যে স্বাভাবিক গন্ধ নাই তাহা নিম্নলিখিত হেতু দ্বারা নিশ্চিত হইয়াছে; অবয়বে যে গুণ থাকে, অবয়বী দ্রব্যে তজ্জাতীয় গুণ উৎপন্ন হয়; অবয়বিগুণের সহিত অবয়বগুণের এই, জন্য-জনক-ভাব আছে। অবয়বে গন্ধ থাকিলে তবে অবয়বীতে গন্ধ উৎপন্ন হইতে পারে, নতুবা নহে। তন্তু অবয়ব, বস্ত্র অবয়বী; বস্ত্ৰনিৰ্ম্মাণ সময়ে তন্তুতে পুষ্পাদির গন্ধ পাওয়া যায় নাই। বস্ত্র প্রস্তুত হইলে তাহার সহিত পুষ্পাদিকে সম্মিলিত করিলে তবে গন্ধ পাওয়া গিয়াছে। সুতরাং অবয়বে ঐ গন্ধ নাই, তবে অবয়বীতে ঐরূপ গন্ধ থাকিবে কিরূপে? তন্তুকে পুষ্পবাসিত করিলে তাহার অবয়ব লইয়া বিচার করিবে। বায়ুর অবয়বেও গন্ধ নাই, বায়ুতেও গন্ধ থাকিবে না। অতএব বায়ুতে যে গন্ধ অনুভূত হয় তাহা স্বাভাবিক নহে, ঔপাধিক।। ১।।

উপস্কারঃ

ইদানীং ভূতানাং লক্ষণানি গন্ধাদীনি পরীচিক্ষিষুর্গন্ধাদীনাং স্বাভাবিকত্বমৌপাধিকত্বঞ্চ ব্যবস্থাপয়ন্নাহ।

রূপরসগন্ধস্পর্শা যত্ৰ কারণগুণপ্রক্রমেণোৎপদ্যন্তে তত্র স্বাভাবিকাঃ সন্তো লক্ষণতামুপযন্তি নান্যথ্য, নহি সমীরণে উপলভ্যমানং সৌরভং শিলাতলে উপলভ্যমানং শৈত্যং জলে উপলভ্যমানমৌষ্ণ্যং বা লক্ষণং ভবতি। তদেতদাহ পুষ্পবস্ত্রয়োরিতি। নহি কনককেতকীকুসুমসন্নিকৃষ্টে বাসসি কনককেতকীসৌরভমুপলভ্যমানং বাসসঃ। নহি বাসসঃ কারণগুণপ্রক্রমেন তদুৎপন্নম্। কিন্তর্হি কনককেতকীসন্নিধানাদৌপাধিকং নহি বস্ত্ৰে গন্ধাভাবে কেতকীগন্ধাভাবো লিঙ্গম্। কিং লিঙ্গমত উক্তং গুণান্তরাপ্রাদুর্ভাব ইতি। গুণান্তরাৎ কারণগুণাৎ অপ্রাদুর্ভাবোহনুৎপত্তিঃ। যদি হি বস্ত্রে যো গন্ধ উপলভ্যতে স তস্য স্বাভাবিকঃ স্যাত্তদা তদবয়বেষু তন্তুষু কেতকীসন্নিকর্ষাৎ পূৰ্ব্বং তত্র বস্ত্রে চোপলভ্যেত, ন চৈবমিত্যর্থঃ। তথাচ বিবাদাধ্যাসিতো গন্ধো ন বস্ত্রসমবেতঃ তদবয়বগুণাজন্যবিশেষগুণত্বাৎ শীতোষ্ণস্পর্শা- দিবৎ।। ১।।

.

ব্যবস্থিতঃ পৃথিব্যাং গন্ধঃ।। ২।।

অনুবাদ

গন্ধ পৃথিবীতে অবধারিত (আছে)।।২।।

ব্যাখ্যা

পৃথিবীতে যে গন্ধ আছে তাহা স্বাভাবিক, ঔপাধিক নহে। স্বাভাবিকগুণ দ্রব্যে সমবায় সম্বন্ধে থাকে, ঔপাধিকগুণ তাহা থাকে না। এই স্বাভাবিক গন্ধ পৃথিবীতে নিশ্চিতই আছে, কোনরূপেই ইহার অভাব সিদ্ধ করা যায় না।। ২।।

উপস্কারঃ

স্বাভাবিকং গন্ধং পৃথিব্যা লক্ষণমাহ।

পৃথিব্যাং ব্যবস্থিতোহযোগান্যযোগাভ্যাং পরিচ্ছিন্নঃ সমানাসমানজাতীয়ব্যাবৰ্ত্তকতয়া গন্ধো লক্ষণমিত্যর্থঃ। ভবতি হি পৃথিবী গন্ধবত্যেব, পৃথিব্যের গন্ধবতীতি, তদেবং সমানজাতীয়েভ্যো জলাদ্যষ্টভ্যোঽসমানজাতীয়েভ্যো গুণাদিপঞ্চভ্যো ব্যাবর্ত্তকঃ স্বাভাবিকঃ পৃথিব্যাং গন্ধ ইতি ব্যবস্থিতম্।।২।।

.

এতেনোষ্ণতা ব্যাখ্যাতা।।৩।।

অনুবাদ

উষ্ণতা ইহার দ্বারা বিবৃত হইল।।৩।।

ব্যাখ্যা

জলে যে উষ্ণস্পর্শ অনুভূত হয়, তাহা ঔপাধিক, উনানে হাঁড়ী চড়াইয়া ঘটী করিয়া জল ঢালিয়াছ; ৩। ৪ ঘটী জলে এক হাঁড়ী পূর্ণ হইয়াছে; তাহার পর অগ্নির উত্তাপে পূর্ণ এক হাঁড়ী জল তপ্ত হইয়াছে। এই জলের উষ্ণস্পর্শ আছে বটে। কিন্তু মনে করিয়া দেখ, যে কয়ঘটী জলে হাঁড়ীপূর্ণ জল হইয়াছিল, সেই কয়ঘটী জল কি উষ্ণ ছিল? সেই কয়ঘটী জল—এক-হাঁড়ীজলের অবয়ব; অবয়বে যে উষ্ণতা ছিল না, তাহা অবয়বীতে আসিবে কিরূপে? অবয়বগুণের সমান গুণই অবয়বীতে উৎপন্ন হইয়া থাকে। অতএব অবয়ব জলে উষ্ণতা না থাকায় অবয়বী জলে উষ্ণতার অভাবই নির্ণীত হয়।। ৩।।

উপস্কারঃ

গন্ধস্য স্বাভাবিকত্বব্যবস্থাপন প্রকারমুষ্ণতায়াং তেজোলক্ষণেহ প্যতিদিশন্নাহ অবাদিলক্ষণে শৈত্যাদাবপ্যয়মতিদেশো দ্রষ্টব্যঃ।।৩।।

.

তেজস উষ্ণতা।। ৪।।

অনুবাদ

তেজের উষ্ণতা (অবধারিত আছে)।। ৪।।

ব্যাখ্যা

উষ্ণতা বা উষ্ণস্পর্শ তেজের স্বাভাবিকগুণ, এই স্বাভাবিক গুণ তেজের লক্ষণ। অতএব জলাদিতে অতিব্যাপ্তির সম্ভাবনা নাই।। ৪।।

উপস্কারঃ

তেজোলক্ষণং পরীক্ষ্যতে।

স্বাভাবিক্যুষ্ণতা তেজোলক্ষণমিত্যর্থঃ রূপমপি শুক্লভাস্বরমুপলক্ষ্যতে।। ৪।।

.

অপ্‌সু শীততা।।৫।।

অনুবাদ

শৈত্য জলে (অবধারিত)।।৫।।

ব্যাখ্যা

বায়ু এবং বিলাতী মাটীর মেঝে ইত্যাদিতে শৈত্য অনুভূত হইলেও তাহা বায়ু প্রভৃতির স্বাভাবিক ধর্ম্ম নহে, ঔপাধিকমাত্র। স্বাভাবিক শৈত্যই জলের লক্ষণ। পৃথিবী, জল, তেজ, বায়ু এই রীতিক্রমে দ্রব্য নির্দ্দেশ ও লক্ষণ হইলেও এইস্থানে পৃথিবীর পর তেজের উল্লেখ—পৃথিবী ও তেজের নৈমিত্তিক দ্রবত্ব স্বাভাবিক ধর্ম্ম এবং তদুভয়ের তাহা লক্ষণ, ইহা সূচিত হইয়াছে। এই অনুসারে অন্যান্য স্বাভাবিক ধৰ্ম্মও অনুসন্ধান করিবে এবং ক্রম পরিত্যাগ করাতে ইহাও বুঝা গেল যে, নিদেশ ও লক্ষণস্থলে যেটা যেরূপ আছে, এখানে সেটা সেরূপভাবেই যে পরীক্ষিত হইবে এমন কোন কথা নাই। পরীক্ষার পদ্ধতিমাত্র প্রদর্শিত হইল, ক্ৰম বা নিৰ্দ্দিষ্ট ও লক্ষিত বস্তুর উল্লেখ এখানে নিষ্প্রয়োজন। এই পদ্ধতিক্রমে পরীক্ষা করিয়া ক্রমানুসারে এবং অনুক্তের পূরণ দ্বারা যথাযথ যোজনা অধ্যাপকগণ করিয়া দিবেন। অতএব বায়ুলক্ষণের পরীক্ষা সূত্রে উল্লিখিত হয় নাই। অনুষ্ণ অশীত অপাকজ স্পর্শ, বায়ুর স্বাভাবিক গুণ, ইহা বুঝিয়া লইবে।।৫।।

উপস্কারঃ

অপাং লক্ষণং পরীক্ষ্যতে।

স্বাভাবিকী শীততা অপাং লক্ষণমিত্যর্থঃ। তথাচ শিলাতলশ্রীখণ্ডাদৌ নাতিব্যাপ্তিরিতি ভাবঃ। শীততয়া রূপরসাবপ্যুক্তলক্ষণৌ স্নেহং সাংসিদ্ধিকদ্রবত্বঞ্চোপলক্ষয়তি। ননু উদ্দেশলক্ষণক্রমভঙ্গঃ কুত ইতি চেন্ন, তেজঃস্পর্শস্য পৃথিবীজলস্পর্শয়োরভিভাবকত্বসূচনায়, তয়োমধ্যে তেজঃপরীক্ষায়া উক্তত্বাৎ; বায়ুপরীক্ষাসূচনার্থং বা ক্রমলঙ্ঘনং তথাচাপাকজানুষ্ণা- শীতস্পর্শো বায়োঃ স্বাভাবিকঃ সন্ লক্ষণমিত্যুন্নেয়মিতি তাৎপৰ্য্যম্।। ৫।।

.

অপরস্মিন্নপরং যুগপৎ চিরং ক্ষিপ্রমিতি কাললিঙ্গানি।। ৬।।

অনুবাদ

বয়ঃকনিষ্ঠে কনিষ্ঠত্ব জ্ঞান, (জ্যেষ্ঠে জ্যেষ্ঠত্ব জ্ঞান) যুগপৎ, শীঘ্র এবং বিলম্ব এই প্রকার জ্ঞান কালের অনুমাপক।। ৬।।

ব্যাখ্যা

কনিষ্ঠত্ব প্রভৃতি জ্ঞান কালকে অবলম্বন করিয়াই হইয়া থাকে। এই কালের পরিচ্ছেদ ক্রিয়া দ্বারা হইয়া থাকে; ফলতঃ কাল এক অখণ্ড, তাহা কৰ্ম্মবিশেষ দ্বারা উপলক্ষিত হইয়া ‘ইদানীং’ ‘তদানীং’ ইত্যাদি ব্যবহার-বিষয় হইয়া থাকে। কৰ্ম্মকে—সূর্য্যগমনাদিকে কাল বলিলে, ‘কাল অনাদি অনন্ত’ ইত্যাদি শাস্ত্ৰ অপ্ৰমাণ হইয়া উঠে। এবং ‘এ কালের ছেলে’ ইত্যাদি জ্ঞানে এই ছেলে অর্থাৎ বালকের সঙ্গে ‘এখন’ এই অংশের যে সম্বন্ধ হইয়াছে তাহা কোন্ সম্বন্ধ? যাহার কৰ্ম্ম তাহাতেই কর্ম্মের সম্বন্ধ থাকে। ছেলের সঙ্গে সূর্য্য-কর্ম্মের সম্বন্ধ থাকিবে কেন? সুতরাং সূর্য্যক্রিয়ার সঙ্গে ছেলের সম্বন্ধ রাখিতে হইলে একটা পরম্পরা সম্বন্ধ স্থির করিতে হয়। সেই সম্বন্ধ যে দ্রব্যঘটিত হইবে, তাহাই কালদ্রব্য ইহাও বলা যায়। স্বাশ্রয়তপনসংযোগিসংযোগ সেই সম্বন্ধ। স্বশব্দে সূৰ্য্যকৰ্ম্ম অর্থাৎ সূর্য্যের গতি, তাহার আশ্রয় তপন—সূৰ্য্য, তৎসংযোগী যে দ্রব্য, তাহার সংযোগ ঐ বালকে আছে। সেই দ্রব্য কি?—কাল; কাল সূর্য্যেও সংযুক্ত—বালকেও সংযুক্ত—কেন না কাল সর্ব্বমূর্ত্তসংযোগী, ইহারই সংজ্ঞান্তর বিভু। আকাশ বিভু হইলেও আকাশকে উক্ত দ্রব্যস্বরূপ বলিলে বিশেষ হেতু না থাকায় তুল্য যুক্তিতে অসংখ্য বিভু জীবাত্মাকেও ঐ দ্রব্য বলিতে পার। সুতরাং গৌরব হয়, তদপেক্ষা কাল নামক অতিরিক্ত দ্রব্য স্বীকার করাই উচিত।।৬।।

উপস্কারঃ

তদেবং কারণগুণপূর্ব্বকাঃ ‘ স্পর্শবতাং বিশেষগুণা গন্ধাদয়ঃ পৃথিব্যাদীনাং লক্ষণানীত্যুক্তম্। ইদানীং ক্রমপ্রাপ্তং কাললক্ষণপ্রকরণমারভমাণ আহ

ইতিকারো জ্ঞানপ্রকারপরঃ প্রত্যেকমভিসম্বধ্যতে, তথাচাপরমিতিপ্রত্যয়ো যুগপদিতি- প্রত্যয়ঃ চিরমিতিপ্রত্যয়ঃ ক্ষিপ্রমিতিপ্রত্যয়ঃ কাললিঙ্গানীত্যর্থঃ। অপরস্মিন্নপরমিত্যনেন পরস্মিন্ পরমিত্যপি দ্রষ্টব্যং তেনায়মর্থঃ। বহুতরতপনপরিস্পন্দান্তরিতজন্মনি স্থবিরে যুবানমবধিং কৃত্বা পরত্বমুৎপদ্যতে। তচ্চ পরত্বমসমবায়িকারণসাপেক্ষ, ন চ রূপাদ্যসমবায়ি – কারণ ব্যভিচারাৎ, ত্রয়াণাং গন্ধাদীনাং বায়ৌ পরত্বানুৎপাদকত্বাৎ স্পর্শস্যাপ্যুষ্ণাদিভেদেন ভিন্নস্য প্রত্যেকং ব্যভিচারাৎ ন চাবচ্ছিন্ন পরিমাণং তথা তস্য বিজাতীয়ানারম্ভকত্বাৎ তপনপরিস্পন্দানাঞ্চ ব্যধিকরণত্বাৎ তদবচ্ছিন্নদ্রব্যসংযোগ এবাসমবায়িকারণং পরিশিষ্যতে। তচ্চ দ্রব্যং পিণ্ডমার্ত্তণ্ডোভয়সংযুক্তং বিভু স্যাৎ, আকাশস্য তৎস্বাভাব্যকল্পনে ক্বচিদপি ভের্য্যভিঘাতাৎ সর্ব্বভেরীষু শব্দোৎপত্তিপ্রসঙ্গঃ। তথাচ কালস্যৈব মার্ত্তণ্ডসংযুক্তস্য পিণ্ডেন সংযোগঃ পরত্বাসমবায়িকারণম্। কাল এব মার্ত্তণ্ডক্রিয়োপনায়কঃ। আত্মনশ্চ দ্রব্যান্তরধর্ম্মেযু দ্রব্যান্তরাবচ্ছেদায় স্বপ্রত্যাসত্যতিরিক্তসন্নিকর্ষাপেক্ষত্বাৎ, অন্যথা বারাণসীস্থেন মহারজনারুণিমা পাটলিপুত্রেঽপি স্ফটিকমণেরারুণ্যপ্রসঙ্গাৎ। কালস্য তু তৎস্বভাবতয়ৈব কল্পনাদয়মদোষঃ। কালেনাপি রাগসংক্রমঃ কথং নেতি চেৎ নিয়তক্রিয়োপনায়কত্বেনৈব তৎসিদ্ধেঃ এবং স্থবিরমবধিং কৃত্বা যূনি অপরত্বোৎপত্তিনিরূপণীয়া। যুগপদিতি যুগপজ্জায়ন্তে, যুগপত্তিষ্ঠন্তি, যুগপৎ কুৰ্ব্বন্তি ইত্যাদিপ্রত্যয়ানাঞ্চ একস্মিন্ কালে একস্যাং সূৰ্য্যগতৌ একস্মিন্ সূৰ্য্যগত্যবচ্ছিন্নকালে ইত্যর্থঃ, ন চাপ্রাপ্তা এব সূর্য্যগতয়ো বিশেষণতামনুভজন্তি। ন চ স্বরূপপ্রত্যাসন্না এব তাঃ, তস্মাদেতাদৃশবিশিষ্টপ্রত্যয়ান্যথানুপপত্ত্যা বিশেষণপ্ৰাপকং যদ্ দ্রব্যং স কালঃ।।৬।।

.

দ্রব্যত্বনিত্যত্বে বায়ুনা ব্যাখ্যাতে।।৭।।

অনুবাদ

বায়ু (পরমাণু) দ্বারা (কালেরও) দ্রব্যত্ব এবং নিত্যত্ব ব্যাখ্যাত 33316211911

ব্যাখ্যা

যে কারণে বায়ুপরমাণুকে নিত্য দ্রব্য বলা হইয়াছে, সেই কারণেই কালকে নিত্য দ্রব্য বলিব, অর্থাৎ বায়ুপরমাণুর ন্যায় কালও নিরবয়ব এবং সংযোগাদিগুণ কালে আছে। যাহা নিরবয়ব ও গুণবান্ তাহা নিত্যদ্ৰব্য।।৭।।

উপস্কারঃ

ননু সিধ্যতু কালঃ, স তু নিত্যো দ্রব্যং বেতি ন প্রমাণমত আহ।

যথা বায়ুপরমাণোগুণবত্ত্বাদ্রব্যত্বম্ অদ্রব্যদ্রব্যত্বাচ্চ নিত্যত্বং তথা কালস্যাপীত্যর্থঃ।।৭।।

.

তত্ত্বম্ভাবেন।। ৮।

অনুবাদ

সত্তা দ্বারা (কালের) একত্ব (বিবৃত হইয়াছে)।। ৮।।

ব্যাখ্যা

‘ইদানীং’ ‘তদানীং’ ‘যুগপৎ’ ইত্যাদি প্রত্যয় অনুগত, অর্থাৎ একপ্রকার, ব্যবহৰ্ত্তবিশেষে সকল সময়েই এইরূপ প্রত্যয় হয়, বিশেষতঃ ‘এক’ স্বীকার করাতে লাঘব। এই জন্য কাল এক। তবে যে সেকেণ্ড, মিনিট ইত্যাদি ব্যবহার হয় তাহা কৰ্ম্মবিশেষমূলক। স্পন্দনবিশেষ কাল দ্রব্যের বিশেষণ হইয়াই বিশিষ্টরূপে অনেক আকারে ব্যবহৃত হয়। যথা আকাশ এক হইলেও ঘটাকাশ, পটাকাশ ইত্যাদি ব্যবহার হয়। মনে কর, ঘড়ীর কাঁটায় স্পন্দন, তাহাতেই সেকেণ্ড, মিনিট বুঝিতেছি –অর্থাৎ ঐ স্পন্দনবিশিষ্ট যে কাল তাহাই সেকেণ্ড, মিনিট ইত্যাদি। অতএব স্বাশ্রয়তপনসংযোগিসংযোগের ন্যায়, স্বাশ্রয়দ্রব্যসংযোগিসংযোগ সম্বন্ধের তত্ত্বও আলোচনা করিবে।। ৮।।

উপস্কারঃ

তথাপি সন্তু বহবঃ কালা ইত্যত আহ।

ব্যাখ্যাতমিতি বিপরিণতেনান্বয়ঃ। চিরাদিপ্রত্যয়ানাং কাললিঙ্গানাং সৰ্ব্বত্রাবিশেষাদনেকত্বেঽপ্যাত্মনামিব বিশেষলিঙ্গাভাবাৎ সত্তাবদেকত্বং কালস্যেত্যর্থঃ। নম্বেবং ক্ষণলবমুহূৰ্ত্তযামদিবসাহোরাত্রপক্ষমাসত্বয়নসংবৎসরাদিভেদেন ভূয়াংসঃ কালাস্তৎ কথমেক ইতি চেন্ন ভেদভানস্য উপাধিনিবন্ধনত্বাৎ। যথা এক এব স্ফটিকমণির্জবাতা- পিঞ্জাদ্যুপাধ্যুপরাগেণ ভিন্ন ইব ভাসতে তথৈক এব কালঃ সূর্য্যস্পন্দাদ্যবচ্ছেদভেদেন তত্তৎকাৰ্য্যাবচ্ছেদভেদেন চ ভিন্ন ইব ভাসতে ইত্যভ্যুপগমাৎ তথাচ কালোপাধ্যব্যাপকঃ কালোপাধিঃ, স্বাধেয়কাদাচিৎকাভাব প্রতিযোগ্যনাধারঃ কালো বা ক্ষণঃ প্রতিক্ষণং কস্যচিদুৎপত্তেঃ কস্যচিদ্বিনাশাদেতদধ্যবসেয়ম্। ক্ষণদ্বয়ঞ্চ লব ইত্যাদ্যাগমপ্রসিদ্ধম্। ননু তথাপ্যতীতানাগতবৰ্ত্তমানভেদেন কালত্বমস্ত শ্রয়তে হি “ত্রৈকাল্যমুপাবৰ্ত্ততে” “ত্রৈকাল্যা- সিদ্ধিঃ” ইত্যাদীতি চেন্ন বস্তুতৎপ্রাগভাবতৎপ্রধ্বংসাবচ্ছেদেন ত্রৈকাল্যব্যবহারাৎ, যেন হি বস্তুনা যঃ কালোঽবচ্ছিদ্যতে স তস্য বর্ত্তমানঃ, যৎপ্রাগভাবেন যঃ কালোঽবচ্ছিদ্যতে স তস্য ভবিষ্যৎ কালঃ, যৎপ্রধ্বংসেন যঃ কালোঽবচ্ছিদ্যতে স তস্যাতীতকালঃ। তথাচাবচ্ছেদকত্রিত্বাধীনঃ কালত্রিত্বব্যবহারঃ।।৮।।

.

নিত্যেষ্বভাবাদনিত্যেষু ভাবাৎ কারণে কালাখ্যেতি।।৯।।

অনুবাদ

নিত্য বস্তুতে (যুগপৎ উৎপন্ন ইত্যাদি প্রত্যয়) নাই, অনিত্য বস্তুতে আছে এই হেতু (জন্য মাত্রের) কারণের নাম কাল।। ৯।।

ব্যাখ্যা

উৎপত্তিশীল বস্তু মাত্রেরই কালকে উৎপত্তির অধিকরণরূপে জানা যায়। ‘অমুক অমুক এক সময়ে উৎপন্ন’, ‘ঐ বস্তু অমুক সময়ে উৎপন্ন’ ‘হৈমন্তিক ধান্য’ ইত্যাদি প্রচলিত কথা ও নামে সেই-জ্ঞান প্রমাণিত। যাহা উৎপত্তির অধিকরণরূপে জ্ঞাত হয়, তাহার উৎপত্তি-হেতুত্ব সৰ্ব্বত্র স্বীকৃত। এই সুবর্ণে বলয় হয়, এইরূপ জ্ঞান আছে, সুবর্ণ যে বলয়ের কারণ তাহাও স্বীকৃত এবং কাল যে জগতের কারণ—তাহা শ্রুতিতেও (শ্বেতাশ্বতর উপনিষদে) আছে। সুতরাং কাল জন্য বস্তুর অন্যতম কারণ, ইহাই এই সূত্রের ভাবার্থ।।৯।।

উপস্কারঃ

ইদানীং সৰ্ব্বোৎপত্তিমতাং কালঃ কারণমিত্যাহ।

ইতিশব্দো হেতৌ ইতি হেতোঃ কারণে সর্ব্বোৎপত্তিমৎকারণে কাল ইত্যাখ্যা। হেতুমাহ নিত্যেম্বভাবাৎ অনিত্যেষু ভাবাদিতি, নিত্যেষু আকাশাদিষু যুগপজ্জাতঃ, চিরং জাতঃ, ক্ষিপ্ৰ জাতঃ, ইদানীং জাতঃ, দিবা জাতঃ, রাত্রৌ জাত ইত্যাদিপ্রত্যয়স্যাভাবাৎ, অনিত্যেষু ঘটপটাদিষু যৌগপদ্যাদিপ্রত্যয়ানাং ভাবাৎ, অন্বয়ব্যতিরেকাভ্যাং কারণং কাল ইত্যর্থঃ। ন কেবল যৌগপদ্যাদিপ্রত্যয়বলাৎ কালস্য সর্ব্বোৎপত্তিমন্নিমিত্তকারণত্বম্ অপি তু পুষ্পফলাদীনাং হৈমন্তিকবাসন্তিকপ্রাবৃষেণ্যাদিসংজ্ঞাবলাদপ্যেতদধ্যবসেয়ম্।।৯।।

.

ইত ইদমিতি যতস্তদ্দিশ্যং লিঙ্গম্।। ১০।

অনুবাদ

ইহা, ইহা হইতে (দূর, নিকট) ইত্যাদি ব্যবহার যাহা হইতে হয়, তাহাই দিকের অনুমাপক।। ১০।।

ব্যাখ্যা

দূরত্ব, নিকটত্ব দ্বারাই ইহা দূর, ইহা নিকট এইরূপ ব্যবহার হয়। সেই দূরত্ব, নিকটত্বই দিকের অনুমাপক। দিক্ না থাকিলে দূরত্ব, নিকটত্ব উৎপন্নই হইত না। কেননা, দূরত্ব-নিকটত্বরূপ গুণের অসমবায়িকারণ দিক্ ও তদ্বস্তুর সংযোগ। অসমবায়ি- কারণ ব্যতীত ভাবকার্য্য—দ্রব্য-গুণ-কর্ম্মের উৎপত্তি হয় না, ইহাই নিয়ম। সুতরাং দূরত্ব, নিকটত্ব অর্থাৎ দৈশিক পরত্ব ও অপরত্বেরও অসমবায়ি কারণ আছে, সে অসমবায়ি কারণ কে হইবে? তাহা দিক্‌সংযোগ। দিক্ আপনার সংযোগকে অবলম্বন করিয়া দূরস্থিত এক বস্তুতে অপর বস্তুর সংযোগ ঘটায়; যে যাহা হইতে যতখানি দূর হইবে দিক্ তাহাতে তথা হইতে তত সংযোগ ঘটাইয়া দেয়। অধিক দূর হইলে, অধিক বস্তুর সংযোগ ঘটায়, অল্প হইলে অল্প সংযোগ। যেখানে সমান সংযোগ তাহা দূরও নয়, নিকটও নয়, যেমন আপনার আপনি।। ১০।।

উপস্কারঃ

কাললিঙ্গপ্রকরণং সমাপ্য ইদানীং িিলঙ্গপ্রকরণমারভমাণ আহ।

দিশ ইদং দিশ্যং দিগনুমাপকম্ ইতোহল্পতরসংযুক্তসংযোগাশ্রয়াদিদং বহুত সংযুক্ত-সংযোগাধিকরণং পরম্ ইতশ্চ সংযুক্তসংযোগভূয়স্ত্বাধিকরণাদিদং সংযুক্তসংযোগাল্পীয়স্ত্বা- ধিকরণমপরমিতি নিয়তদিদেশয়োঃ সমানকালয়োঃ পিওয়োর্যতো দ্রব্যাদ্ভবতি সা দিগিত্যর্থঃ। ন হি তাদৃশং দ্রব্যমন্তরেণ ভূয়সাং সংযুক্তসংযোগানামল্পীয়সাং বা পিওয়োরুপনায়কমন্যদস্তি, ন চ তদুপনয়মন্তরেণ তত্তদ্বিশিষ্টবুদ্ধিঃ, ন চ তামন্তরেণ পরত্বাপরত্বয়োরুৎপত্তিঃ, ন চ তদুৎপত্তিং বিনা তদ্বিশিষ্টপ্রত্যয়ব্যবহারৌ। ন চ কাল এব সংযোগোপনায়কোহস্তু কিং দ্রব্যান্তরেণেতি বাচ্যং কালস্য নিয়তক্রিয়োপনায়কত্বেনৈব সিদ্ধেঃ, অনিয়ত পরধর্ম্মোপনায়কত্বকল্পনায়ান্তু কাশ্মীর-কুঙ্কুমপঙ্করাগং কার্ণাটকামিনীকুচকলসং প্রত্যুপনয়েৎ। আকাশাত্মনোরপি তথা পরধর্ম্মো- পসংক্রামকত্বে স এব প্রসঙ্গঃ, দিশস্ত নিয়ত পরধর্ম্মোপসংক্রামকতয়ৈব সিদ্ধত্বান্নাতিপ্রসঙ্গঃ, এবঞ্চ ক্রিয়োপনায়কাৎ কালাৎ সংযোগোপনায়িকা দিক্ পৃথগেব। কিঞ্চাস্মাৎ পূৰ্ব্বমিদম্ অস্মাদ্দক্ষিণমিদম্ অস্মাৎ পশ্চিমমিদম্ অস্মাদুত্তরমিদম্ অস্মাদ্দক্ষিণপূর্ব্বমিদম্ অস্মাদ্দক্ষিণ- পশ্চিমমিদম্ অস্মাৎ পশ্চিমোত্তরমিদম্ অস্মাদুত্তরপূর্ব্বমিদম্ অস্মাদধস্তাদিদম্ অস্মাদুপরিষ্টাদিদম্ ইত্যেতে প্রত্যয়া ইত ইদমিতীত্যনেন সংগৃহীতাঃ। এতেষাং প্রত্যয়ানাং নিমিত্তাত্তরাসম্ভবাৎ, কিঞ্চ নিয়তোপাধ্যুন্নায়কঃ কালঃ অনিয়তোপাধ্যুন্নায়িকা দিক্, ভবতি হি যদপেক্ষয়া যো বর্ত্তমানঃ স তদপেক্ষয়া বর্ত্তমান এব, দিগুপাধৌ তু নৈবং নিয়মঃ। যং প্রতি যা প্রাচী তং প্রত্যেব কদাচিত্তস্যাঃ প্রতীচীত্বাৎ, এবমুদীচ্যাদিম্বপি বাচ্যম্, যদপেক্ষয়া সূর্য্যোদয়াচলসন্নিহিতা যা দিক্‌ সা তদপেক্ষয়া প্রাচী, যদপেক্ষয়া সূৰ্য্যাস্তাচলসন্নিহিতা যা দিক্ সা তদপেক্ষয়া প্রতীচী, সন্নিধানন্তু সংযুক্তসংযোগাল্পীয়স্ত্বং তে চ সূৰ্য্যসংযোগা অল্পীয়াংসো ভূয়াংসো বা দিগুপনেয়াঃ। এবং প্রাচ্যভিমুখপুরুষবাম প্রদেশাবচ্ছিন্না দিগুদীচী, তাদৃশপুরুষদক্ষিণভাগাবচ্ছিন্না দিক্ দক্ষিণা, বামত্বদক্ষিণত্বে তু শরীরাবয়ববৃত্তিজাতিশেষৌ। গুরুত্বাসমবায়িকারণকক্রিয়াজন্যসংযোগাশ্রয়ো দিক্ অধঃ। অদৃষ্টবদাত্মসংযোগজন্যাগ্নিক্রিয়াজন্যসংযোগাশ্রয়োদিগৃর্দ্ধা এবঞ্চেন্দ্রাগ্নিযমনিঋ-তবরুণবায়ুসোমেশাননাগব্রহ্মাধিষ্ঠানোপলক্ষিতা দশ দিশ ইতি ব্যপদেশান্তরং প্রাচ্যাদিব্যপদেশাৎ।।১০।।

.

দ্রব্যত্বনিত্যত্বে বায়ুনা ব্যাখ্যাতে।। ১১।।

অনুবাদ

দ্রব্যত্ব ও নিত্যত্ব বায়ু দ্বারা ব্যাখ্যাত হইয়াছে।। ১১।।

ব্যাখ্যা

দ্রব্যাশ্রিত নহে বলিয়া বায়ু-পরমাণুকে নিত্য ও দ্রব্য বলা হইয়াছে এবং গুণ আছে বলিয়াও দ্রব্য বলা হইয়াছে। সেইরূপ দিও দ্রব্যাশ্রিত নহে এবং গুণযুক্ত, অতএব তাহা নিত্য দ্রব্য।। ১১।।

উপস্কারঃ

দিশো দ্রব্যত্বং নিত্যত্বঞ্চ বায়ুপরমাণুবদিত্যাহ।
গুণবত্ত্বাদ্রব্যত্বম্ অনাশ্রিতত্বাচ্চ নিত্যত্বমিত্যর্থঃ।।১১।।

.

তত্ত্বম্ভাবেন।।১২।

অনুবাদ

সত্তা দ্বারা (দিকেরও) তত্ত্ব (একত্ব) ব্যাখ্যাত হইয়াছে।। ১২।।

ব্যাখ্যা

দিক্‌কে এক বলিবার হেতু আছে এবং না বলিবার হেতু নাই, এজন্য দিক্‌ এক যে হেতু দ্বারা দিক্ সিদ্ধ হইয়াছে, তাহা এক-দিক্ সিদ্ধি বিষয়েই উপযোগী, নানা-দিক্ – সিদ্ধিবিষয়ে নহে। লাঘববশতঃ এক দিকই সিদ্ধ হয়।।১২।।

উপস্কারঃ

একত্বমতিদিশন্নাহ।

দিগ্‌লিঙ্গাবিশেষাদ্বিশেষলিঙ্গাভাবাচ্চ সত্তাবদেকত্বং তদনুবিধানাদেকপৃথক্‌ত্বম্।। ১২।।

.

কাৰ্য্যবিশেষেণ নানাত্বম্।। ১৩।।

অনুবাদ

কার্য্যভেদে (দিকের) অনেকত্ব (ব্যবহৃত হয়)।। ১৩।।

ব্যাখ্যা

কাৰ্য্য-ভেদ অর্থে উপাধিভেদ। যেমন এক অখণ্ড কাল উপাধিবশে সেকেণ্ড, মিনিট ইত্যাদি সংজ্ঞায় অভিহিত হয়, তদ্রূপ দিক্ এক হইলেও সূর্য্যের উদয়, অস্ত, বাম, দক্ষিণ ইত্যাদি উপাধি অর্থাৎ ভেদক ধর্ম্ম দ্বারা পূর্ব্ব, পশ্চিম ইত্যাদি নানা সংজ্ঞায় অভিহিত হইয়া থাকে।। ১৩।।

উপস্কারঃ

ননু যদ্যেকৈব দিক্ কথং তর্হি দশ ইতি প্রতীতিব্যবহারাবিত্যত আহ।
কাৰ্য্যবিশেষঃ কাৰ্য্যভেদস্তেন নানাত্বোপচার ইত্যর্থঃ।।১২।।

.

আদিত্যসংযোগাদ্ভূতপূৰ্ব্বাদ্ভবিষ্যতো ভূতাচ্চ প্রাচী।। ১৪।।

অনুবাদ

ভূত, ভবিষ্যৎ এবং বর্ত্তমান আদিত্যসংযোগ হইতেই ‘প্রাচী’ অর্থাৎ ‘পূৰ্ব্ব’ (এই ব্যবহার হয়)।। ১৪।।

ব্যাখ্যা

ভূত, ভবিষ্যৎ, বর্ত্তমান যে দিনের হউক একদিনের সূর্য্যোদয় যে ভাগে নিশ্চয় করিবে, তাহাকেই ‘পূর্ব্ব’ নামে ব্যবহার করিবে। ১৪।

উপস্কারঃ

তমেব কাৰ্য্যভেদং দর্শয়ন্নাহ।

প্রাক্ অস্যাং সবিতা অঞ্চতীতি প্রাচী, তথাচ যস্যাং দিশি মেরুপ্রদক্ষিণক্রমেণ ভ্রমত আদিত্যস্য প্রথমং সংযোগো ভূতপূর্ব্বো ভবিষ্যন্ বা ভবন্ বা সা দিক্ প্রাচী। অত্র পুরুষাভিসন্ধিভেদমাশ্রিত্য কালত্রয়োপবর্ণনম্, ভবতি হি কস্যচিৎ পূৰ্ব্বেদ্যুঃ প্রাতরস্যাং দিশি আদিত্যসংযোগঃ প্রথম বৃত্ত ইতীয়ং প্রাচীতি প্রাচীব্যবহারঃ। কস্যচিদপরেদ্যুরস্যাম্ আদিত্যসংযোগঃ প্ৰথম ভাবীত্যভিসন্ধায় প্রাচীব্যবহারঃ, কস্যচিদিদানীম্‌ অস্যাম্‌ আদিত্যসংযোগো ভবন্নস্তীত্যভিসন্ধায় প্রাচীব্যবহারঃ। ভূতাদিতি আদিকৰ্ম্মণি ক্তপ্রত্যয়ঃ, তেনাভিসন্ধেরনিয়মাৎ যদাপ্যাদিত্যসংযোগো নাস্তি রাত্রৌ মধ্যাহ্নাদৌ বা তত্রাপি প্রাচীব্যবহারানুগমঃ সিধ্যতীতি ভাবঃ।।১৪।।

.

তথা দক্ষিণা প্রতীচী উদীচী চ।।১৫।।।

অনুবাদ

‘দক্ষিণ’ ‘পশ্চিম’ এবং ‘উত্তর’ ব্যবহারও ঐরূপ।।১৫।।

ব্যাখ্যা

শ্রাবণ প্রভৃতি ছয় মাসে দুই প্রহরের সময় সূর্য্যের স্থিতিস্থান যে অংশ দেখিবে, তৎসন্নিহিত দিক্‌কে দক্ষিণ বলিবে, অথবা পূর্ব্বদিকে সম্মুখ করিয়া দণ্ডায়মান হইলে যাহা দক্ষিণ ভাগ তাহাই দক্ষিণ দিক্ (যাহা বাম তাহা উত্তর)। অস্তাচল-সন্নিহিত দিক্‌ পশ্চিম, সুমেরুসন্নিহিত দিক্ উত্তর, প্রকারান্তরেও ঐ সকল দিকের উপাধি স্থির করা যায়।। ১৫।।

উপস্কারঃ

দিগন্তরব্যবহারেঽপীমমেব প্রকারমতিদিশন্নাহ।

তদ্বদেব দক্ষিণদিগ্বৰ্ত্তিন গাদিনা সহাদিত্যসংযোগাদ্ভুতপূৰ্ব্বাদ্ভবিষ্যতে ভূতাদ্বা দক্ষিণাব্যবহারঃ, এবং প্রতীচ্যুদীচ্যোরপি ব্যবহার উন্নেয়ঃ। বামত্বদক্ষিণত্বে নিরুক্তে এব।।১৫।।

.

এতেন দিগন্তরালানি ব্যাখ্যাতানি।।১৬।।

অনুবাদ

ইহা দ্বারা দিগন্তরাল অর্থাৎ কোণ চতুষ্টয়ও বিবৃত হইল।।১৬।।

ব্যাখ্যা

ভেদক ধৰ্ম্ম গ্রহণ করিয়া যেরূপ পূর্ব্বাদিদিক্ চতুষ্টয় ব্যবহার উপপন্ন করা হইয়াছে, সেইরূপে কোণ ব্যবহার উপপন্ন হইবে। উদয়-গিরিসন্নিহিত হইয়া সুমেরু- ব্যবহিত যে দিক্, তাহাই অগ্নিকোণ, সুমেরু ব্যবহিত হইয়া অস্তাচলসন্নিহিত দিক্ নৈঋত কোণ, অস্তাচলসন্নিহিত ও সুমেরুসন্নিহিত দিক্ বায়ুকোণ এবং সুমেরুসন্নিহিত ও উদয়াচল সন্নিহিত দিক্ ঈশান কোণ।।১৬।।

উপস্কারঃ

দিগন্তরালব্যবহারেঽপীমমেব প্রকারমতিদিশন্নাহ।

প্রাচীদক্ষিণয়োর্দিশোর্লক্ষণসাঙ্কর্য্যেণ দক্ষিণপূর্ব্বা দিগিতি ব্যবহারঃ, এবং দক্ষিণপশ্চিমা পশ্চিমোত্তরা উত্তরপূৰ্ব্বেত্যূহ্যম্। এতে চাদিত্যসংযোগা যেন বিভুনা দ্রব্যেণোপনীয়ন্তে সা দিগিতি কণাদরহস্যে ব্যুৎপাদিতং বিস্তরতঃ।।১৬।।

.

সামান্য প্রত্যক্ষাদ্বিশেষা প্রত্যক্ষাদ্বিশেষস্মৃতেশ্চ সংশয়ঃ।। ১৭।।

অনুবাদ

সাধারণ ধর্ম্ম বিশিষ্ট ধর্ম্মিজ্ঞান, (একতর) ব্যাপ্য দর্শনের অভাব এবং (সংশয়ীয়) কোটিদ্বয়ের জ্ঞান ও সন্নিকর্ষ প্রভৃতি থাকিলে সংশয় হয়।

(অথবা)

ধৰ্ম্মিজ্ঞান, ব্যাপ্য দর্শনের অভাব,—কোটিদ্বয়ের জ্ঞান এবং সন্নিকর্ষ প্রভৃতি থাকিলে সংশয় হয়।। ১৭।।

ব্যাখ্যা

আকাশ, কাল এবং দিক্ সৰ্ব্বব্যাপক; সৰ্ব্ববিধ, পরিচ্ছিন্ন দ্রব্যেই ইহাদের সংযোগ আছে। এই তিনের মধ্যে কাল এবং দিকের কথা কথিত হইয়াছে। আকাশেরও কিছু কিছু না হইয়াছে এমন নয়; শব্দ আকাশের হেতু বলিয়া স্থিরীকৃত হইয়াছে। সেই শব্দ সম্বন্ধে বিশেষ বক্তব্য এইস্থানে কীৰ্ত্তিত হইবে। শব্দে গুণত্ব সন্দেহ, নিত্যত্ব সন্দেহ আছে, সে সন্দেহ দূর করিতে হইবে। এক্ষণে সন্দেহ উৎপত্তির কারণ কি? তাহাই প্রদর্শিত হইতেছে। যে দুটী বিভিন্ন ধর্ম্ম, সংশয়ের বিষয় হইয়া থাকে, সংশয় উৎপত্তির পূর্ব্বে সেই ধর্ম্মদ্বয়ের সমানাধিকরণ ধর্ম্ম এই স্থানে আছে এইরূপ জ্ঞান হয়। সেই দুইটী ধর্ম্মের স্মরণ হয় এবং দুইটী ধর্ম্মের মধ্যে কোন একটী ধর্ম্মের ব্যাপ্য ধর্ম্মান্তর পরিদৃষ্ট না হয়, সেই সময় প্রত্যক্ষের সাধারণ কারণ সন্নিকর্ষ অর্থাৎ চক্ষুঃসংযোগ প্রভৃতি থাকিলে সংশয় হয়। মনে কর, স্থাণু অর্থাৎ ডাল-পালা-শূন্য গাছের একটী গুঁড়ি খাড়া হইয়া আছে, তুমি দূর হইতে দেখিতে পাইলে; তুমি তাহার দণ্ডায়মানভাব বুঝিতে পারিলে, তখন তোমার মনে হয়, এই যে দণ্ডায়মানভাব, ইহা স্থাণুতেও থাকে, মনুষ্য প্রভৃতি অন্যত্রেও থাকে। তখন স্থাণু বলিয়া স্থির করিতে পার এমন ব্যাপ্য দর্শন ঘটিল না। শুষ্ক শাখা প্রভৃতির ভগ্নাবশিষ্ট হ্রস্বাংশ প্রভৃতিই স্থাণুত্বের ব্যাপ্য, কেননা ঐরূপ শুষ্ক ভগ্ন শাখার বা স্কন্ধের সত্তা স্থাণু ভিন্ন অন্যত্র সম্ভবে না। তাহা যদি বুঝিতে না পারা যায়, তাহা হইলেই ব্যাপ্য দর্শন ঘটিল না। তখন স্থাণুত্ব এবং স্থাণুত্বাভাব দুইটীই মনে পড়ে। আর দূরবর্তী দণ্ডায়মান বস্তুতে সেই দুইটী ভাবের ‘অব্যবস্থিত সমাবেশ করিয়া আমরা সন্দিহান হই, ভাবি ‘ঐ বস্তু স্থাণু কি না?’ ইহাই সংশয়। যে দুটী ধর্ম্ম সংশয়ের বিষয় তাহার দার্শনিক নাম কোটি। যে বস্তুতে ঐ সংশয় হয়, তাহার নাম ধৰ্ম্মী। প্রদর্শিত স্থলে স্থাণুত্ব এবং স্থাণুত্বাভাবে দুইটী কোটি। ‘ঐ বস্তু’ ধৰ্ম্মী। এই সংশয় হইলে, তুমি আরও একটু অগ্রসর হইলে, তখন তুমি সেই গুঁড়িটীর ঊর্দ্ধ ভাগে শুষ্ক শাখা ভঙ্গের চিহ্ন দেখিতে পাইলে, তখন তোমার ব্যাপ্য দর্শন হইল, তখন আর সংশয় হইবে না।

অনুবাদে যে অথবা-কল্প আছে তাহার ব্যাখ্যা এই যে, যে কোনরূপে যদি কোটিদ্বয়ের জ্ঞান হয় এবং ধর্ম্মি-জ্ঞান থাকে, আর ব্যাপ্য দর্শন না থাকে, তাহা হইলে এবং আলোক প্রভৃতি সাধারণ কারণ ও ভ্রমকারণ থাকিলে সংশয় হয়। ঐ যে দুইটী ধর্ম্মের সমানাধিকরণ ধর্ম্ম দণ্ডায়মান ভাব ইহাতে আছে এইরূপ জ্ঞান, তাহা—ঐ দুটী ধর্ম্ম অর্থাৎ সংশয়ের দুইটী কোটিকে স্মরণ করাইয়া দিয়াছে এবং উহা ধৰ্ম্মিজ্ঞান স্বরূপ এই জন্যই সংশয়ের উৎপত্তির হেতু, নতুবা তাহা সংশয়ের উৎপত্তির হেতু হইত না। কোন বালক অন্যান্য স্থাণুতে যেরূপ দণ্ডায়মান ভাব প্রভৃতি ধৰ্ম্ম দেখিয়াছে এবং যাহা স্থাণু নয় বলিয়া নিশ্চয় করিয়া তাহাতে যে ধর্ম্ম দেখিয়াছে—ঐ দূরবর্ত্তী বস্তুতে সে সকল ধৰ্ম্ম দেখিতে পাইল না, অন্যরূপ দণ্ডায়মান ভাব দেখিল, তখনও তাহার সংশয় হয় ‘ঐ বস্তু স্থাণু কি না?’—ইহার পূর্ব্বেতো সাধারণধৰ্ম্মবিশিষ্ট ধর্ম্মিজ্ঞান হয় নাই। ‘অথবা’—কল্পে এখানে দোষ নাই, কেননা ঐ যে দুই ধর্ম্মের বিরুদ্ধধর্ম্মজ্ঞান উহাই দুইটী ধর্ম্মের বা কোটিদ্বয়ের স্মারক, আর ধর্ম্মিজ্ঞানাদি তো হইয়াছেই। সুতরাং সংশয় হইবার পক্ষে কোন বাধা নাই।। ১৭।

উপস্কারঃ

চতুৰ্ণাং ভূতানাং রূপাদীনি লক্ষণানি কারণগুণপূৰ্ব্বকতয়া কারণগুণপূর্ব্বকতয়া তাত্ত্বিকানি অন্যথাত্বৌপাধিকানীতি ব্যবস্থিতং পূৰ্ব্বমেব, বিশেষগুণশূন্যবিভুলিঙ্গঞ্চোক্তম্। ইদানীমাকাশস্য লিঙ্গং শব্দঃ পরীক্ষণীয়ঃ। সত্তি চাত্র তান্ত্রিকাণাং বিপ্রতিপত্তয়ঃ, কেচিচ্ছব্দং দ্রব্যমাচক্ষতে, কেচিদ্‌গুণম্, গুণত্বে সত্যপ্যেকে নিত্যমাহুঃ, অপরে ত্বনিত্যম্, অন্যে তু শব্দেঽপি স্ফোটাখ্যং শব্দান্তরমাহুঃ। তদত্র পরীক্ষামারভমাণঃ পরীক্ষাপ্রথমাঙ্গং সংশয়মেব তাবলক্ষণতঃ কারণত ব্যবস্থাপয়ন্নাহ।

সামান্য প্রত্যক্ষাদিতি সামান্যবতো ধৰ্ম্মিণঃ প্রত্যক্ষাৎ গ্রহণাৎ মতুব্‌লোপাৎ, বিশেষাপ্রত্যক্ষাদিতি বিশেষস্য পরস্পরব্যাবর্ত্তকস্য ধৰ্ম্মস্য বক্রকোটরাদেঃ শিরঃপাণ্যাদেশ্চা- প্রত্যক্ষাদগ্রহণাৎ বিশেষস্মৃতেঃ বিশেষস্য কোটিদ্বয়স্য স্থাণুত্বপুরুষত্বলক্ষণস্য স্মরণাৎ স্মরণমপি গ্রহণপরং ক্বচিদনুভূয়মানধর্ম্ময়োরপি কোটিত্বাৎ, চকারাদদৃষ্টাদেঃ সংশয়কারণস্য সংগ্রহঃ, অসাধারণো ধর্ম্মোহনধ্যবসায়াত্মকজ্ঞানজনক ইতি নোক্তঃ, যদ্বা অসাধারণস্যাপি ব্যাবৃত্তিদ্বারা কারণত্বং সপক্ষবিপক্ষব্যাবৃত্তিঃ সাধারণধৰ্ম্ম এবেতি নোক্তঃ, বিপ্রতিপত্তিরপি বিরুদ্ধ প্রতিপত্তিদ্বয়জন্যং বাক্যদ্বয়ং শব্দো নিত্য ইত্যপরং তদুভয়ং তদুভয়জন্যঞ্চ জ্ঞানদ্বয়মযুগপদ্ভাবিত্বাৎসম্ভূয় ন সংশায়কমতস্ত শব্দত্বাদিরসাধারণঃ, সত্ত্বপ্রমেয়ত্বাদিঃ সাধারণো বা ধৰ্ম্মঃ সংশায়ক ইতি পৃথনোক্তা সমানতন্ত্রে গৌতমীয়েহনধ্য- বসায়জ্ঞানস্যানভ্যুপগমাৎ অসাধারণো ধৰ্ম্মঃ সংশয়কারণত্বেনোক্তঃ বিপ্রতিপত্তেবিরুদ্ধ- বাক্যদ্বয়স্যান্বয়ব্যতিরেকশালিতয়া সংশয়কারণত্বমুক্তম্, ন্যায়ভাষ্যে চ উপলভ্যমানত্বং যৎ সংশয়কারণমুক্তং সদস্যুপলভ্যতে অসদস্যুপলভ্যতে ইতি উপলভ্যমানমিদং সদসদ্বেতি যচ্চানুপলভ্যমানত্ব সদপি নোপলভ্যতে মূলককীলকাদি, অসদপি নোপলভ্যতে গগনারবিন্দাদি। তথাচ পঞ্চবিধঃ সংশয় ইতি তদেতৎ সামান্যমেবেতি সামান্য প্রত্যক্ষাদিত্যনেনৈব গতার্থম্। ন্যায়বার্ত্তিকেঽপি যৎ কারণভেদেন সংশয়ে ত্রিত্বমুক্তং তদপি ন সম্ভবতি ব্যভিচারেণ সমানধৰ্ম্মাদীনাং ত্রয়াণাং কারণত্বস্যৈবাসম্ভবাৎ। ন হি তৃণারণিমণিজন্যবহৌ বৈজাত্যবদত্রাপি বৈজাত্যং কল্পনীয়ং সংশয়ত্বাবচ্ছিন্নকাৰ্য্যং প্রতি সমানধর্ম্মত্বেনৈব কারণতায়াঃ কল্পনাৎ, যচ্চ প্রধানবিধিকোটিত্ব প্রধাননিষেধকোটিত্বাদি বৈজাত্যমুক্তং তদননুগতত্বান্নাবচ্ছেদকং তথাচ সংশয়ো ন ত্ৰিবিধো ন বা পঞ্চবিধকিত্বেকবিধ এব, প্রকারান্তরেণ তু দ্বৈবিধ্যং সূত্রকৃদেব স্পষ্টয়তি। ননু জিজ্ঞাসাজনকজ্ঞানং সংশয় ইতি ন লক্ষণম্ অনধ্যবসায়েঽপি গতত্বাৎ, সংস্কারাজনকজ্ঞানং সংশয় ইত্যপি নির্বিকল্পকসাধারণং বিশিষ্টজ্ঞানত্বেন সংশয়স্যাপি সংস্কারজনকত্বাৎ। সংশয়ত্বঞ্চ জাতিরপি ন লক্ষণং ধৰ্ম্মংশে সংশয়ত্বাভাবেন তদংশে তজ্জাত্যভাবাৎ, জাতেশ্চাব্যাপ্যবৃত্তিত্বানভ্যুপগমাৎ ইতি চেৎ একস্মিন্ ধর্ম্মিণি বিরোধিনানাপ্রকারকং জ্ঞানং সংশয় ইতি তল্লক্ষণাৎ।। ১৭।।

.

দৃষ্টঞ্চ দৃষ্টবৎ।। ১৮।।

অনুবাদ

পূর্ব্ব দৃষ্টের অনুরূপ ধৰ্ম্ম (দৃষ্ট হইয়া সংশয় উৎপত্তির হেতু হয়)।। ১৮।।

ব্যাখ্যা

সংশয় দুই প্রকার, বহিবিষয়ক এবং অন্তবিষয়ক। তন্মধ্যে বহিবিষয়ক সংশয়ও দুই প্রকার—একাধিক স্থানে কোন একটী ধর্ম্মে কোটিদ্বয়ের সামানাধিকরণ্য জ্ঞান হইবার পর যে সংশয় জন্মে, তাহা এক প্রকার এবং বিভিন্ন কালে একই স্থানে কোন একটা ধর্ম্মে কোটিদ্বয়ের সামানাধিকরণ্য জ্ঞানমূলক অন্য প্রকার। প্রথম প্রকারের বহিবিষয়ক সংশয় প্রদর্শনের জন্য এই সূত্র।

দণ্ডায়মান ভাব স্থাণু এবং মনুষ্য দুই স্থানে পূর্ব্বে দৃষ্ট হইয়াছে। ঐ যে দূরবর্ত্তী বস্তুতে দণ্ডায়মান ভাব দেখা যাইতেছে—তাহা তদুভয়ের অনুরূপ। এই দ্রষ্টা পুরুষ, এক স্থানে দণ্ডায়মান ভাবে স্থাণুত্বের সামানাধিকরণ্য দেখিয়াছে এবং অন্যত্র তদভাবের সামানাধিকরণ্য দেখিয়াছে। সুতরাং কোটিদ্বয়ের সামানাধিকরণ্য একাধিক স্থানে জ্ঞাত হইল, তাহার পর যখন ঐ দূরবর্ত্তী বস্তুতে তৎসদৃশ দণ্ডায়মান ভাব দেখিল, তখন তাহার সংশয় হয়। সুতরাং ইহা প্রথম প্রকার সংশয়।। ১৮।।

উপস্কারঃ

দ্বিবিধঃ সংশয়ো বহির্বিষয়কোহন্তবিষয়কশ্চ, বহিববিষয়কোঽপি দৃশ্যমানধৰ্ম্মি- কোহদৃশ্যমানধৰ্ম্মিকশ্চ। তত্র দৃশ্যমানধৰ্ম্মিকো যথা ঊর্দ্ধত্ববিশিষ্টস্য ধৰ্ম্মিণো দর্শনাৎ অয়ং স্থাণুঃ পুরুষো বেতি। অদৃশ্যমানধৰ্ম্মিকো যথা অরণ্যে ঝাটাদ্যন্তরিতে গোগবয়াদিপিণ্ডে বিষাণমাত্ৰদর্শনাৎ অয়ং গৌর্গবয়ো বেতি। বস্তুতস্তত্রাপি বিষাণধৰ্ম্মিক এব সন্দেহো বিষাণমিদং গোসম্বন্ধি গবয়সম্বন্ধি বেতি, বিবক্ষামাত্রাও দ্বৈবিধ্যাভিধানম্। য‍ সামান্যং সংশয়হেতুস্তদনেকত্র দৃষ্টং সংশয়াকম্ একত্র ধর্ম্মিণি বা দৃষ্টং সংশয়হেতুরিত্যত্র প্রথমাং বিধামাহ।

দৃষ্টমূর্দ্ধত্বং সংশয়হেতুঃ দৃষ্টবদিতি বতিপ্রত্যয়ঃ। তেন দৃষ্টাভ্যাং স্থাণুপুরুষাভ্যাং তুল্যং বর্ত্ততে পুরোবর্ত্তিনি যদূর্দ্ধত্বং তদ্দৃষ্টং সংশয়হেতুরিত্যর্থঃ।।১৮।।

.

যথাদৃষ্টমযথাদৃষ্টত্বাচ্চ।। ১৯।।

অনুবাদ

একরূপে দৃষ্ট বস্তু—অন্যরূপে দৃষ্ট হওয়াতেও (সংশয়-উৎপত্তির কারণ হয়)।। ১৯।।

ব্যাখ্যা

দ্বিতীয় প্রকার বহিবিষয়ক সংশয় প্রদর্শিত হইতেছে। মনে কর, রামকে তুমি একবার দেখিয়াছ, তখন তাহার দিব্য চুলের পরিপাটী, তখন তোমার নিকট রাম একরূপে দৃষ্ট হইল। তাহার পর কোন সময়ে দেখিলে, রাম নেড়া, মোটেই তাহার চুল নাই,—তখন সে অন্যরূপে দৃষ্ট হইল। এই হেতু সময়ান্তরে তাহার মস্তক বস্ত্রাবৃত থাকিলে তোমার সংশয় হইবে, রাম কেশ-শোভিত কিনা?—এখানে একাধিক স্থানে কেশ-কেশাভাবের সামানাধিকরণ্য রামত্বে গৃহীত হয় নাই। কিন্তু এক রামেই বিভিন্ন কালে হইয়াছে; এইজন্য ইহা দ্বিতীয় প্রকার সংশয়।। ১৯।।

উপস্কারঃ

একধৰ্ম্মিবিষয়ং যদ্দৃষ্টং তদুদাহরতি।

সংশয়হেতুরিতি শেষঃ, চকারঃ পূর্ব্বোক্তসমুচ্চয়ার্থঃ অযথাদৃষ্টত্বাদ্ধেতোর্যথাদৃষ্টমপি সংশায়কং যথা চৈত্রো যথাদৃষ্টঃ কেশবান্, কালান্তরে অযথাদৃষ্টঃ কেশবিনাকৃতো দৃষ্ট ইত্যর্থঃ। ক্রমেণ তত্রৈব চৈত্রে বস্ত্রাবৃতমস্তকে দৃষ্টে সতি ভবতি সংশয়শ্চৈত্রোঽয়ং সকেশো নিষ্কেশো বেতি। তত্র হি চৈত্রত্বং সমানো ধৰ্ম্মঃ সংশায়কঃ স চৈকত্রৈব দৃষ্ট ইত্যভিন্ন এব ধৰ্ম্মিণি দৃষ্টঃ সংশয়হেতুঃ।।১৯।।

.

বিদ্যাঽ বিদ্যাতশ্চ সংশয়ঃ।।২০।।

অনুবাদ

প্রমা কি ভ্রম এরূপ সংশয়ও (হয়)।। ২০।।

ব্যাখ্যা

অন্তবিষয়ক সংশয়ের স্থল প্রদর্শিত হইতেছে। অন্তবিষয়ক অর্থে— আন্তরবিষয়ক। জ্ঞান অন্তরের বস্তু। মনে কর, তুমি এই সূত্র আলোচনা করিয়া একরূপ বুঝিলে, তখন তোমার মনে হয় আমার এই যে বুঝা বা জ্ঞান, ইহা ঠিক কিনা?—কেননা, আমি বুঝিয়াছি এইরূপ জ্ঞান, যাহা ভ্রম তদ্বিষয়েও হয়, যাহা প্রমা তদ্বিষয়েও হয়। সুতরাং ‘জ্ঞায়মানত্ব’রূপ ধর্ম্ম কোটিদ্বয়ের সমানাধিকরণ জ্ঞাননামক ধৰ্ম্মীতে এই জ্ঞানমূলক যে প্রমাত্ব সংশয় অর্থাৎ এই জ্ঞান ঠিক কিনা, এইরূপ জ্ঞান, তাহা আন্তর সংশয়। এইরূপ সুখাদিধৰ্ম্মীতেও যে সংশয়, তাহাকেও আন্তর সংশয় বলিয়া জানিবে।। ২০।।

উপস্কারঃ

উপলভ্যমানত্বং সমানমেব ধৰ্ম্মং সংশয়কারণমাহ।

আন্তরসংশয়ো হি বিদ্যাঽবিদ্যাভ্যাং ভবতি, যথা মৌহুৰ্ত্তিকঃ সম্যগাদিশতি চন্দ্রোপরাগাদি, অসম্যগপি, তত্র স্বজ্ঞানে সংশয়োঽস্য জায়তে সম্যগাদিষ্টমসম্যগ্বেতি, যদ্বা জ্ঞানং হি ক্বচিদ্বিদ্যা ভবতি কচিচ্চাবিদ্যা অপ্রমা ভবতি। তথাচ জ্ঞায়মানত্বাৎ সদিদমসদ্বেতি সংশয়ো জায়তে, পুনঃ সংশয়গ্রহণমিহাপি সামান্য প্রত্যক্ষাদেব সংশয়ো ন তু নিমিত্তাত্তরাদিতি সূচনার্থং, তথাচ “সমানানেকধর্ম্মোপপত্তের্বিপ্রতিপত্তেরুপলব্ধানুপলব্ধ্যব্যবস্থাতশ বিশেষাপেক্ষে বিমর্শঃ সংশয়ঃ” ইতি গৌতমীয়ে লক্ষণে উপলব্ধ্যনুপলব্ধ্যব্যবস্থেত্যস্য পৃথগেব সংশয়কারণত্বং কৈশ্চিদুক্তং তন্নিরস্তম্।। ২০।।

.

শ্রোত্রগ্রহণো যোহর্থঃ স শব্দঃ।।২১।।

অনুবাদ

যে জাতিম‍ বস্তু শ্রোত্র দ্বারা গৃহীত হয় তাহা শব্দ।। ২১।।

ব্যাখ্যা

শব্দ স্বরূপ ধৰ্ম্মীতে যে সংশয় হইবে, তাহার পূর্ব্বে ধর্ম্মী নিশ্চয় করা আবশ্যক। এইজন্য শব্দ কি, তাহা কথিত হইতেছে। যে বস্তু শ্রোত্র ইন্দ্রিয় দ্বারা গৃহীত হয়, অথচ তাহার সজাতীয় বস্তু অনেক থাকে—তাহাই শব্দ। যদিও শব্দত্ব শ্রোত্র দ্বারা গৃহীত হয়, তথাপি তাহার সজাতীয় কিছুই নাই—শব্দ-সজাতীয় নানা বস্তু বিভিন্ন প্রকার শব্দ ইত্যাদি আছে।। ২১।।

উপস্কারঃ

এবং লক্ষণতঃ স্বরূপতশ্চ পরীক্ষাপ্রথমাঙ্গং সংশয়ং ব্যুৎপাদ্য ইদানীং পরীক্ষাবিষয়ং শব্দং ধৰ্ম্মিণং দর্শয়ন্নাহ।

শ্রোত্রং গ্রহণং গ্রহকরণং যস্য স শ্রোত্রগ্রহণঃ, অর্থ ইতি ধৰ্ম্মীত্যর্থঃ, তথাচ শব্দবৃত্তিধৰ্ম্মেষু শ্রোত্রগ্রাহ্যেষু শব্দত্বতারত্বাদিগুণত্বসত্ত্বাদিষু নাতিব্যাপ্তিঃ, অর্থপদেন ধর্ম্মিপরেণ জাতিধৰ্ম্মিত্বম্ অভিপ্রেতম্। অতঃ স্ফোটনামা শব্দসমবেতঃ শব্দো নাস্তীতি সূচিতম্। নন্বেকং পদম্ একবাক্যমিতি প্রতীতিবলাদবশ্যং স্ফোটোহঙ্গীকৰ্ত্তব্যঃ, ন হি বহুবর্ণাত্মকে পদে বহুবর্ণাত্মকে বা বাক্যে ভবত্বেকত্ব প্রত্যয়ঃ স্ফোট ইতি চার্থস্ফুটীকরণাধীনা সংজ্ঞা, বর্ণানাং প্রত্যেক তাবদর্থপ্রত্যয়াজনকত্বমেব, মিলনত্ত্বেকবক্তৃকাণামাশুতরবিনাশিনামসম্ভবীতি স্ফোটাদেবার্থ- প্রত্যয়ঃ, তজ্ঞানমন্তরেণার্থস্ফুটীভাবাভাবাৎ, স চ স্ফোটো যদ্যপি পদভাবেনাবস্থিতেষু সৰ্ব্বেম্বেব বর্ণেষু তথাপি চরমবর্ণে স্ফুটীভবতি। মৈবং সঙ্কেতবদ্বর্ণত্বং পদত্বং, যথাচ সঙ্কেতবলাদেব পদাদর্থপ্রতীতৌ কিং স্ফোটেন বর্ণানাম্ বহুনামপ্যেকার্থপ্রতিপাদকত্বমেকং ধৰ্ম্মমভিপ্রেত্য এবং পদমিতি ভাক্তো ব্যবহারঃ। এবং বাক্যেঽপি যদি বর্ণাতিরিক্তঃ পদাত্মা কশ্চিৎ প্রত্যক্ষতো গৃহ্যেত স্বীক্রিয়েতাপি স্ফোটঃ সোহয়ং স্ফোটবাদস্তুচ্ছত্বাদুপেক্ষিতঃ সূত্রকৃতা।। ২১।।

.

তুল্যজাতীয়েষ্বর্থান্তরভূতেষু বিশেষস্য উভয়থা দৃষ্টত্বাৎ।। ২২।।

অনুবাদ

সজাতীয় এবং বিজাতীয় উভয়স্থলেই (শব্দত্ব এবং শ্রোত্রগ্রাহ্যত্ব) অবৃত্তি, ইহা প্রত্যক্ষসিদ্ধ। অতএব তথাবিধ শব্দত্ব প্রভৃতি জ্ঞান শব্দে হওয়ায় শব্দ গুণ, কি দ্রব্য, কিংবা কর্ম্ম, এইরূপ সংশয় হয়।। ২২।।

ব্যাখ্যা

সজাতীয় অর্থে যাহা গুণ বলিয়া স্থিরীকৃত, বিজাতীয় অর্থে যাহা গুণ নহে বলিয়া বা দ্রব্য কি কৰ্ম্ম বলিয়া স্থিরীকৃত; শব্দত্ব বা শ্রোত্রগ্রাহ্যত্ব উক্ত দুই প্রকার স্থানে থাকে না, এই তদুভয়াবৃত্তিশব্দত্ব শব্দে আছে, এই যে জ্ঞান, তাহা গুণত্ব এবং তদভাব এই কোটিদ্বয়ের অথবা গুণত্ব, দ্রব্যত্ব এবং কর্ম্মত্ব এই কোটিত্রয়ের স্মারক হইয়া দ্বিকোটিক বা ত্রিকোটিক সংশয় উৎপাদন করে। সেই সংশয়ের স্বরূপ,—শব্দ—গুণ কি না? অথবা শব্দ—দ্রব্য, কি গুণ, কিংবা কৰ্ম্ম? সংশয়ে ভাব এবং অভাব এই দুই কোটিই থাকে, ইহা অনেকে বলেন। আবার দুই, তিন বা ততোধিক ভাব-কোটি অথবা অভাব- কোটিও সংশয়ের হইতে পারে, ইহাও অনেকের মত। এই মতানুসারেই শব্দ গুণ কি দ্রব্য কিংবা কৰ্ম্ম এই আকারের কোটিত্রয়যুক্ত সংশয় উল্লিখিত হইয়াছে।। ২২।।

উপস্কারঃ

তদেবং শব্দে ধৰ্ম্মিণ্যুপস্থিতে গুণত্বে সত্যেব তস্যাকাশলিঙ্গত্বম্, অতো গুণত্বব্যবস্থাপনায় ত্রিকোটিকং সংশয়মুপপাদয়ন্নাহ

শব্দে সংশয় ইতি শেষঃ। শব্দে শব্দত্বং শ্রোত্রগ্রাহ্যত্বং চোপলভ্যতে। তচ্চ তুল্যজাতীয়েষু ত্রয়োবিংশতৌ গুণেষু অর্থান্তরভূতেষু দ্রব্যেষু কর্ম্মসু চ বিশেষস্য ব্যাবৃত্তেঃ উভয়থা উভয়ত্র দর্শনাৎ শব্দঃ কিং গুণো দ্রব্যং কৰ্ম্ম বেতি সংশয়ং জনয়তি। সামান্যবিশেষসমবায়কোটিকত্ব ন্তু সত্ত্বকারণবত্ত্বাদিবৈধর্ম্ম্যদর্শনান্ন ভবতি, ননু চাসাধারণধর্ম্মস্যানধ্যবসায়জনকত্বাৎ সংশয়জনকত্বং প্রতিষিদ্ধং শব্দত্বং শ্রোত্রগ্রাহ্যত্বঞ্চাসাধারণ এব ধর্ম্মঃ কথং সংশয়ং জনয়িষ্যতীতি চেৎ সত্যং, ব্যাবৃত্তিরস্য সজাতীয়াসজাতীয়সাধারণীতি ব্যাবৃত্তেঃ সাধারণস্যৈব ধৰ্ম্মস্য সংশয়জনকত্বেনোক্তত্বাৎ শব্দত্ব প্রতিযোগিকী ব্যাবৃত্তিঃ সমানো ধৰ্ম্মঃ উভয়গতব্যাবৃত্তিপ্রতিযোগিত্বঞ্চ শব্দত্বমসাধারণো ধৰ্ম্মঃ। তদুক্তং “ বিশেষস্যোভয় থা দর্শনাদি”তি। অত্র হি বিশেষস্য ব্যাবৃত্তেরুভয়ত্র সজাতীয়ে বিজাতীয়ে চ দর্শনস সংশয়হেতুত্বেনোপাদানাৎ স চ সমান এব ধৰ্ম্ম ইতি।। ২২।।

.

একদ্রব্যত্বান্ন দ্রব্যম্।। ২৩।।

অনুবাদ

একমাত্র দ্রব্যে (সমবায় সম্বন্ধে) আছে বলিয়া (শব্দ) দ্রব্য নহে।। ২৩।।

ব্যাখ্যা

এই স্থলে সংশয়ের কোটি তিন, তন্মধ্যে শব্দে একটী রাখিয়া অন্যগুলির নিষেধ করিতে হইবে। দ্রব্যত্ব ও কর্ম্মত্ব সেই নিষেধ্য বস্তু। ‘দ্রব্য নহে’ ইহা দ্রব্যত্বের নিষেধ এই নিষেধ বা বাধানুমিতির হেতু, শব্দের একমাত্র দ্রব্যে সমবায় সম্বন্ধে বর্ত্তমানতা। অর্থাৎ দ্রব্য দুই প্রকার হয়, অসমবেত এবং অনেকসমবেত। যে দ্রব্য নিরবয়ব—পরমাণু, আকাশ ইত্যাদি তাহা অসমবেত, আর যে দ্রব্য সাবয়ব তাহা অনেকসমবেত। কেন না একটী অবয়ব দ্বারা তো কার্য্য উৎপন্ন হয় না, সেই সাবয়ব দ্রব্য স্বকীয় সকল অবয়বেই সমবেত। এখন দেখ, শব্দ অসমবেতও নহে, অনেকসমবেতও নহে, একমাত্র সমবেত; সুতরাং দ্রব্য হইতে পারে না।। ২৩।।

উপস্কারঃ

তদেবং সংশয়ং দর্শয়িত্বা দ্রব্যত্বকোটিব্যুদাসায়াহ।

একং দ্রব্যং সমবায়ি যস্য তদেকদ্রব্যং দ্রব্যঞ্চ কিমপ্যেকদ্রব্যসমবায়িকারণকং ন ভবতীতি দ্রব্যবৈধৰ্ম্মান্নায়ং শব্দো দ্রব্যমিত্যর্থঃ।। ২৩।।

.

নাপি কৰ্ম্মাহ চাক্ষুষত্বাৎ।। ২৪।।

অনুবাদ

(শব্দ) কৰ্ম্মও নহে, কেন না তাহা চাক্ষুষ প্রত্যক্ষের বিষয় হয় না।। ২৪।।

ব্যাখ্যা

কৰ্ম্ম—স্পন্দন, কোন না কোন স্থানে চাক্ষুষ প্রত্যক্ষের বিষয় হয়, কিন্তু শব্দ কোথাও তাহা হয় না; ইহা কর্ম্মের সহিত শব্দের বৈলক্ষণ্য; এই জন্যই শব্দকে কৰ্ম্ম বলিতে পারিতেছি না। যদি বল, শব্দ কৰ্ম্মবিশেষ, কোন কৰ্ম্ম চাক্ষুষ প্রত্যক্ষের বিষয় হইলেও বায়ু প্রভৃতির কর্ম্ম তো চাক্ষুষ প্রত্যক্ষের বিষয় হয় না, অথচ তাহা কৰ্ম্মবিশেষ, সেইরূপ শব্দও চাক্ষুষ প্রত্যক্ষের বিষয় স্পন্দন না হইলেও কৰ্ম্ম হইতে পারে। তাহার উত্তর এই যে, বায়ুর স্পন্দন কোন প্রকার বাহ্য প্রত্যক্ষের বিষয়ই নহে, কিন্তু এমন কৰ্ম্ম একটীও দেখাইতে পারিবে না, যাহা চাক্ষুষ প্রত্যক্ষের অযোগ্য এবং অন্যবিধ বাহ্য প্রত্যক্ষের যোগ্য। পরন্তু শব্দ এইরূপই হইয়া থাকে, অতএব তাহা কৰ্ম্মবিশেষও হইতে পারে না।। ২৪।।

উপস্কারঃ

ননু কৰ্ম্মৈকদ্রব্যমেব তথাচ শব্দঃ কৰ্ম্ম স্যাদিত্যত আহ।

প্রত্যয়স্য শব্দবিষয়কস্যাচাক্ষুষত্বাৎ চক্ষুভিন্নবহিরিন্দ্রিয়জন্যত্বাদিত্যর্থঃ। তথাচ শব্দত্বং ন কৰ্ম্মবৃত্তিঃ চাক্ষুষপ্রত্যক্ষাবৃত্তিজাতিত্বাৎ রসত্বাদিবদিতি ভাবঃ।।২৪।।

.

গুণস্য সতোহপবর্গঃ কৰ্ম্মভিঃ সাধর্ম্ম্যম্।। ২৫।।

অনুবাদ

শব্দ গুণ হইলেও আশুবিনাশিত্ব (শব্দ এবং) কর্ম্মের সাধর্ম্ম (মাত্ৰ)।। ২৫।।

ব্যাখ্যা

যেমন ভাবত্ব, সত্তা ইত্যাদি ধৰ্ম্ম, নানা পদার্থের সাধর্ম্ম হইলেও সেই সকল পদার্থের অভেদসাধক হয় না, তদ্রূপ আশু-বিনাশিত্ব শব্দ এবং কর্ম্মের সাধর্ম্ম হইলেও তাহা তদুভয়ের অভেদসাধক নহে। মাত্র সাধর্ম্মে অভেদ সিদ্ধি হয় না, বৈধর্ম্মের অভাব থাকিলে অভেদসিদ্ধি হয়।। ২৫।।

উপস্কারঃ

ননু শব্দঃ কৰ্ম্ম আশুতরবিনাশিত্বাৎ উৎক্ষেপণাদিবদিতি চেদত্রাহ।

অপবর্গঃ আশুনাশঃ স চ গুণত্বেঽপি দ্বিত্বাদিবদাশু ভাবিনাশকসন্নিপাতাধীন ইতি কৰ্ম্মভিঃ সাধর্ম্মমাত্রমস্য ন তু কৰ্ম্মত্বমেব ত্বদুক্তহেতোরাশুতরবিনাশিত্বস্য দ্বিত্বজ্ঞানসুখদুঃখা- দিভিরনৈকান্তিকত্বমিতি ভাবঃ।।২৫।।

.

সতো লিঙ্গাভাবাৎ।। ২৬।।

অনুবাদ

(শব্দ যে) নিত্য এ বিষয়ে প্রমাণ নাই।। ২৬।।

ব্যাখ্যা

শব্দ ও কর্ম্মের আশুবিনাশিত্ব সাধর্ম্ম নহে, কেননা শব্দ নিত্য। অতএব ‘আশুবিনাশিত্ব’ হেতু দ্বারাও শব্দ এবং কর্ম্মের অভেদ সিদ্ধ হয় না—ইহা মীমাংসক মতানুযায়ীর উত্তর; এ উত্তর বৈশেষিকের অভিপ্রেত নহে। কেননা, শব্দ যে নিত্য এ বিষয়ে প্রমাণ নাই।। ২৬।।

উপস্কারঃ

ননু সিধ্যতু শব্দো গুণস্তথাপি নাসাবাকাশলিঙ্গম্ আকাশং হি তদাহনুমাপয়েৎ যদি তস্য কাৰ্য্যঃ স্যাৎ কিন্তু নিত্য এবায়ং কদাচিদনুপলন্তস্তু ব্যঞ্জকাভাবপ্রযুক্ত ইত্যাশঙ্ক্যাহ।

যদি হি উচ্চারণাৎ প্রাগুৰ্দ্ধং শব্দঃ সন্ স্যাৎ তদা সতোঽস্য লিঙ্গং প্রমাণান্তরং স্যাৎ, ন চাশ্রবণদশায়াং শব্দসত্ত্বে প্রমাণমস্তি তস্মাৎ কার্য্য এবায়ং ন ব্যঙ্গ্য ইতি।।২৬।।

.

নিত্যবৈধৰ্ম্মাৎ।। ২৭।।

অনুবাদ

নিত্য বস্তুর সহিত (শব্দের) বৈধর্ম্ম (বৈলক্ষণ্য) আছে।। ২৭।

ব্যাখ্যা

নিত্য বস্তু সৰ্ব্বকালস্থায়ী, শব্দ তো সেরূপ নহে; যদি বল শব্দও সৰ্ব্বকালস্থায়ী, তাহা হইলে সৰ্ব্বদাই তাহার শ্রবণ হয় না কেন? তোমরা বলিবে, গৃহে ঘট থাকিলেও আলোক না থাকিলে, তাহা যেমন দেখা যায় না, কিন্তু আলোক হইলেই দেখা যায়, সেইরূপ শব্দ থাকিলেও উচ্চারণ না হইলে—তাহা শুনা যায় না, উচ্চারণ হইলে শুনা যায়। অর্থাৎ যেমন আলোক—ব্যঞ্জক এবং ঘট—ব্যঙ্গ্য, সেইরূপ উচ্চারণ—ব্যঞ্জক এবং শব্দ—ব্যঙ্গ্য। আমরা তাহার উত্তরে বলি, ঘট ও আলোকের ন্যায় শব্দ ও উচ্চারণের ব্যঙ্গ্যব্যঞ্জকভাব হইলে, ঘটদর্শনে যেমন আলোককারী প্রদীপাদির অনুমান করা যায় না, সেইরূপ বাক্য শ্রবণে উচ্চারণকারী মানবেরও অনুমান করা যাইত না; ফলে কিন্তু সেরূপ অনুমান হয়। অতএব শব্দ যে ব্যঙ্গ্য তাহা নহে।। ২৭।।

উপস্কারঃ

ইতশ্চ ন ব্যঙ্গ্যোঽসাবিত্যাহ।

নিত্যেন সহাস্য শব্দস্য বৈধৰ্ম্মমুপলভ্যতে, যতশ্চৈত্রো বক্তীত্যত্রাবৃতোঽপি চৈত্রমৈত্ৰাদির্বচনেনানুমীয়তে ন ব্যঞ্জকঃ প্রদীপাদির্ব্যঙ্গ্যেন ঘটাদিনা ক্বচিদমীয়তে, তস্মাজ্জন্য এবায়ং ন ব্যঙ্গ্য ইতি ভাবঃ।।২৭।।

অনিত্যশ্চায়ং কারণতঃ।। ২৮।।

অনুবাদ

শব্দ অনিত্য, কেননা তাহা কারণ-সাপেক্ষ।। ২৮।।

ব্যাখ্যা

যে বস্তু কারণাধীন, তাহাই অনিত্য, শব্দও কারণাধীন, অতএব অনিত্য।। ২৮।।

উপস্কারঃ

ব্যঙ্গ্যত্বে বাধকমুক্ত্বা সম্প্রত্যনিত্যত্বে হেতুমাহ।

কারণত উৎপত্তের্দৃষ্টত্বাদিতি শেষঃ। উপলভ্যতে হি ভেরীদণ্ডসংযোগাদিভ্যঃ প্রাদুর্ভবন্ শব্দঃ, তথাচোৎপত্তিমত্ত্বাদনিত্যোহয়মিতি যদ্ধা কারণত ইতি কারণবত্ত্বহেতুমুপলক্ষয়তি।। ২৮।।

.

ন চাসিদ্ধং বিকারাৎ।। ২৯।।

অনুবাদ

(কারণ-সাপেক্ষত্ব শব্দে) অসিদ্ধ নহে; কেননা, (তাহাতে) তারতম্য আছে।।২৯।।

ব্যাখ্যা

কোন শব্দ উচ্চ, কোন শব্দ অনুচ্চ ইত্যাদি ভেদ শব্দে আছে; উচ্চারণের বৈলক্ষণ্যে এইরূপ ভেদ হইয়াছে, জোরে উচ্চারণ করিলে উচ্চ শব্দ হয়, আস্তে উচ্চারণ করিলে অনুচ্চ শব্দ হয়। এই দেখিয়াই বুঝা যাইতেছে, উচ্চারণের সঙ্গে শব্দের কার্য্যকারণতাভাব আছে। কারণ না হইলে তাহার অবস্থাভেদে কার্য্যের অবস্থাভেদ হইত না। অর্থাৎ উচ্চারণ দ্বারা অভিহন্যমান বায়ুর সহিত আকাশের সংযোগ হয়—তাহা বর্ণাত্মকশব্দের অসমবায়িকারণ, উচ্চারণ তারতম্যে ঐ সংযোগের তারতম্য হয়, সংযোগতারতম্যে শব্দেরও তারতম্য হয়। উচ্চারণ—উচ্চারয়িতার প্রযত্ন, প্রযত্নফলে বাগ্যন্ত্রের চেষ্টা স্পন্দন হয়, শরীরের বাগ্যন্ত্র-অংশ বায়ুপ্রধান, সেই স্পন্দন বায়ু ও আকাশের সংযোগের হেতু—এই ক্রম ধরিয়া উচ্চারণকে শব্দের কারণ বলা হইয়াছে এবং তাহার তারতম্যে শব্দেরও তারতম্য কথিত হইয়াছে। ফলে শব্দ কারণসাপেক্ষ না হইলে এই প্রত্যক্ষসিদ্ধ উচ্চত্ব, অনুচ্চত্বের উৎপত্তি হয় না। সুতরাং শব্দে কারণসাপেক্ষত্ব অসিদ্ধ নহে।। ২৯।।

উপস্কারঃ

ন চ কারণবত্ত্বং শব্দস্য স্বরূপাসিদ্ধমত আহ।

শব্দস্য কারণবত্ত্বমসিদ্ধমিতি বাচ্যং তীব্রমন্দাদিভাবেন বিকারস্য দর্শনাৎ ভেরীদণ্ডাভিঘাতস্য তীব্রতয়া, তীব্রস্য মন্দতয়া, মন্দস্য শব্দস্যোপলম্ভাৎ, নহ্যভিব্যঞ্জকতীব্রত্বাদ্য- ধীনোহভিব্যঙ্গ্যতীব্রত্বাদিঃ তথাচ কারণতো বিকারাদমীয়তে জন্যোঽয়ং ন ত্বভিব্যঙ্গ্য ইতি।। ২৯।।

.

অভিব্যক্তৌ দোষাৎ।। ৩০।।

অনুবাদ

অভিব্যক্তি পক্ষে দোষ আছে বলিয়াও (কারণসাপেক্ষত্ব মানিতে হয়)।। ৩০।।

ব্যাখ্যা

শব্দের শ্রবণেন্দ্রিয় দ্বারা প্রত্যক্ষ হয়। তাহার কারণ শ্রবণেন্দ্রিয়ে মনোযোগ, শ্রবণের সহিত শব্দের সম্বন্ধ, প্রত্যক্ষ কালেও শব্দের অস্তিত্ব এবং অদৃষ্ট প্রভৃতি সামান্যকারণ; এইগুলি থাকিলে শব্দের প্রত্যক্ষ হয় ইহা বৈশেষিক প্রভৃতির মত। এই মতে শব্দকে নিত্য বলিলে, শব্দপ্রত্যক্ষের অন্যান্য কারণ থাকিলেও শব্দ না থাকিলে শব্দের প্রত্যক্ষ হইবে না, যেহেতু সকল কারণ না থাকিলে কাৰ্য্য উৎপন্ন হয় না, শব্দপ্রত্যক্ষে শব্দও কারণ কিনা। যদি শব্দ নিত্য হয় তাহা হইলে, শব্দের অস্তিত্ব তো সদাসৰ্ব্বক্ষণ আছে, সুতরাং অন্যান্য কারণ থাকিলেই—অর্থাৎ যখন ক শব্দ শুনিতে পাইতেছি, তখন ককারাদি সকল শব্দই এককালে শুনিতে পাই না কেন?—এই হইল যাহারা শব্দ নিত্য বলেন, তাঁহাদের উপর প্রথম আক্রমণ তদুত্তরে আক্রান্ত মীমাংসকগণ বলেন, যেমন চাক্ষুষ প্রত্যক্ষে আলোক কারণ, সেইরূপ শব্দের প্রত্যক্ষে শব্দের উচ্চারণও কারণ। উচ্চারণ না হইলে শব্দ থাকিলে ও শুনা যায় না। তাহার উত্তরে আক্রমণকারীরা বলিতেছেন, অভিব্যক্তি পক্ষে অর্থাৎ উচ্চারণ শব্দপ্রত্যক্ষের কারণ, শব্দের কারণ নহে—এইরূপ বলিলে দোষ হয়, যথা সমান-দেশস্থ, সমানকালীন এবং সমানেন্দ্রিয়গ্রাহ্য নানা বস্তুর অভিব্যঞ্জক বা প্রত্যক্ষহেতু অপর বস্তু একই হইয়া থাকে। মনে কর, আলোক; একটী ঘটে এক সময়ে রূপ আছে, পরিমাণ আছে, সংখ্যা আছে, সংযোগ আছে, আলোক ঘটসংযুক্ত হইয়া যদি রূপপ্রত্যক্ষের হেতু হয় তো পরিমাণাদি প্রত্যক্ষেরও হেতু হইবে। ঐ রূপাদি প্রত্যক্ষের বিভিন্ন অভিব্যঞ্জক থাকে না,—একই অভিব্যঞ্জক ইহা সর্ব্বত্রই পরিদৃষ্ট। শব্দপ্রত্যক্ষে তাহা বলিতে পারিবে না, কেন না অবিনশ্বর শব্দ সমানদেশস্থ এবং সমানেন্দ্রিয়গ্রাহ্য—এক উচ্চারণকে তাহার অভিব্যঞ্জক বলিলে, ক উচ্চারণ করিলে ককারাদিবর্ণমালাই এককালে শ্রুত হইতে পারে। এক অভিব্যঞ্জক না বলিলে দৃষ্টবিরোধ হয়, ইহাই দোষ।

উপস্কারঃ

ননু ব্যঞ্জকস্যৈবায়ং মহিমা যত্তীব্রমন্দাদিভাবেনাভিব্যনক্তি ভেরীদণ্ডাদ্যভিহতো বায়ুরেব তীরো মন্দশ্চ তথা প্রত্যয়মাধত্তে অত আহ।

শব্দস্যাভিব্যক্তৌ সমানদেশানাং সমানেন্দ্রিয়গ্রাহ্যাণাং প্রতিনিয়তব্যঞ্জকব্যঙ্গ্যত্বং দোষঃ স্যাৎ, ন চ তাদৃশানাং প্রতিনিয়তব্যঞ্জকব্যঙ্গ্যত্বং ক্বচিদ্ দৃষ্টম্ অত্র যদি তথা ন স্বীক্ৰিয়েত তদা ককারাভিব্যক্তৌ সৰ্ব্ববর্ণাভিব্যক্তিপ্রসঙ্গঃ। ননু সমানদেশানামপি সত্ত্বনরত্বব্রাহ্মণত্বানাং স্বরূপভেদসংস্থানযোনিব্যঙ্গ্যানাং প্রতিনিয়তব্যঞ্জকব্যঙ্গ্যত্বং দৃষ্টমেবেতি চেন্ন তেষাং সমানদেশত্বা-ভাবাৎ ন হি যাবান্ দেশঃ সত্ত্বস্য তাবানেব নরত্বস্য ব্রাহ্মণত্বস্য বা।। ৩০।।

.

সংযোগাদ্বিভাগাচ্চ শব্দনিষ্পত্তিঃ।।৩১॥

অনুবাদ

সংযোগ, বিভাগ এবং শব্দ হইতেও শব্দ উৎপন্ন হয়।।৩১।।

ব্যাখ্যা

ঢাকে ঘা দিলে শব্দ হয়, এই শব্দ—সংযোগ হইতে উৎপন্ন; বাঁশ চিরিবার সময়ে গাঁটফাটার শব্দ হয়, এই শব্দ বিভাগ হইতে উৎপন্ন। একস্থানে শব্দ আরম্ভ হয়, তাহার পর সেই শব্দ হইতে ক্রমে ক্রমে শ্রবণেন্দ্রিয়ের নভোভাগে শব্দ উৎপন্ন হইলেই তাহা প্রত্যক্ষীভূত হয়—এই যে শ্রবণেন্দ্রিয়স্থ নভোভাগে উৎপন্ন শব্দ, তাহা শব্দ হইতে উৎপন্ন। যদি এই সকল উৎপাদকই অভিব্যঞ্জক হয়, তাহা হইলে ঢাকে ঘা দিলেও ককারাদি বর্ণমালা শ্রুতিগোচর হউক। যদি বল, ধ্বনি সংযোগাদি-জন্য, কিন্তু বর্ণ নিত্য এবং অভিব্যঙ্গ্য। তদুত্তরে আমরা বলি, সর্ব্বদা অপ্রত্যক্ষ এবং উৎপত্তি-বিনাশের অনুভববশতঃ যদি ধ্বনিকে জন্য বলিতে পার, তবে সেই অনুভবে বর্ণকেই বা জন্য না বলিবে কেন?।। ৩১।।

উপস্কারঃ

ইতশ্চ নাভিব্যঙ্গ্যতেত্যাহ।

সংযোগাৎ ভেরীদণ্ডাদিসংযোগাৎ; বিভাগাৎ বংশে পাট্যমানে; তত্র সংযোগস্তাবন্নাদ্যস্য শব্দস্য কারণং তদভাবাৎ তস্মাৎ বংশদলদ্বয়বিভাগো নিমিত্তকারণং দলাকাশবিভাগশ্চা- সমবায়িকারণম্। যত্র চ দূরে বীণাদাবুৎপন্নঃ শব্দঃ তত্র সন্তানক্রমেণ উৎপদ্যমানঃ শব্দঃ কর্ণশঙ্কুল্যবচ্ছিন্নমাকাশদেশমাসাদয়ন্ গৃহ্যতে তেন শব্দাদপি শব্দনিষ্পত্তিরিতি।। ৩১।।

.

লিঙ্গাচ্চানিত্যঃ শব্দঃ।।৩২।।

অনুবাদ

শব্দ অনিত্য যেহেতু অনুমাপক আছে।। ৩২।।

ব্যাখ্যা

যাহা শ্রবণেন্দ্রিয়গ্রাহ্য গুণ তাহাই অনিত্য, যথা মৃদঙ্গের ধ্বনি, ককারাদি বর্ণ শ্রবণেন্দ্রিয়গ্রাহ্য গুণ, সুতরাং অনিত্য ইহাই অনুমান।। ৩২।।

উপস্কারঃ

অনিত্যত্বে হেত্বন্তরং সমুচ্চিনোতি।

বর্ণাত্মকঃ শব্দোঽনিত্যঃ জাতিমত্ত্বে সতি শ্রোত্রগ্রাহ্যত্বাৎ বীণাদিধ্বনিবদিত্যর্থঃ।।৩২।।

.

দ্বয়োস্তু প্রবৃত্ত্যোরভাবাৎ।। ৩৩।।

অনুবাদ

উভয়ের প্রবৃত্তি অনুপপন্ন হয়, অতএব (বৰ্ণ নিত্য)।। ৩৩।।

ব্যাখ্যা

যাঁহারা শব্দকে নিত্য বলেন, তাঁহারা বিবাদীর মতে দোষ দিতেছেন; গুরু বিদ্যা দান করেন শিষ্য গ্রহণ করে, এই বিদ্যা অর্থে—বর্ণমালাময় শাস্ত্র। বর্ণ স্থায়ী পদার্থ না হইলে, দানপ্রতিগ্রহে প্রবৃত্তি হইতে পারে না। যাহার যাহা আছে সেই তাহা দান করিতে পারে, গ্রহীতা তাহারই নিকট উপস্থিত হয়। বর্ণ অনিত্য হইলে, গুরুর তাহা তো থাকে না, কিসের দান কিসেরই বা প্রতিগ্রহে—প্রবৃত্তি হইবে।। ৩৩।।

উপস্কারঃ

ইদানীং নিত্যত্বে সিদ্ধান্তিনোক্তান্ হেতুন্ দূষয়িতুমাহ।

তুশব্দঃ পূর্ব্বোক্তব্যবচ্ছেদকঃ পূৰ্ব্বপক্ষাভিব্যক্ত্যর্থঃ। দ্বয়োরাচার্য্যাম্ভেবাসিনোরধ্যা- পনেঽধ্যয়নে চ প্রবৃত্তির্দৃশ্যতে, তস্যা অভাবাৎ অভাবপ্রসঙ্গাৎ, অধ্যাপনং হি সম্প্রদান সম্প্রদীয়তে গুরুণা শিষ্যায় বেদঃ, স যদি স্থিরো ভবতি তদা তস্য সম্প্রদানং সম্ভবতি। ননু সম্প্রদীয়মানং গবাদিদাতৃপ্রতিগ্রহীত্রোরন্তরাল উপলভ্যতে, ন চ বেদাদি গুরুশিষ্যয়োরন্তরালে উপলভ্যত ইতি নাধ্যাপনং সম্প্রদানমিতি চেৎ অন্তরালেহপি তত্রস্থপুরুষশ্রোত্রেণ তদুপলম্ভাৎ; কিঞ্চাভ্যাসাদপি শব্দস্য নিত্যতা, যথা পঞ্চকৃত্বো রূপং পশ্যতীতি স্থিরস্য রূপস্যাভ্যাসো দৃষ্টঃ, তথা দশকৃত্বোহধীতোহনুবাকঃ, বিংশতিকৃত্বোহধীত ইত্যভ্যাসঃ স্থৈর্য্যে শব্দস্য প্রমাণম্, সিদ্ধে চ স্থৈর্য্যে বিনাশকানুপলব্ধেঃ “তাবৎকালং স্থিরঞ্চৈনং কঃ পশ্চান্নাশয়িয্যতি” ইতি নিত্যতৈব পর্যবসন্নেতি ভাবঃ।। ৩৩।।

.

প্রথমাশব্দাৎ।।৩৪।।

অনুবাদ

প্রথমা শব্দ হইতেও (শব্দের নিত্যত্ব সিদ্ধ হয়)।। ৩৪।।

ব্যাখ্যা

‘ত্রিঃ প্রথমামন্বাহ’ এই শ্রুতি প্রথমা শব্দ। শ্রুতির অর্থ প্রথমা ঋক্ তিনবার পাঠ করিবে। ঋক্—বর্ণময়ী। বর্ণ অনিত্য হইলে, ‘তিনবার’ একথা সঙ্গত হইতে পারে না। এক পাঠেই এক ঋক্ বিনষ্ট হয়, তাহার পুনঃ পাঠ অসম্ভব, পুনঃপুনঃ পাঠ না হইলেও ‘তিনবার’ কথা বলা চলে না। অতএব শব্দ অনিত্য নহে।। ৩৪।।

উপস্কারঃ

হেত্বন্তরং শব্দস্য নিত্যত্বে আহ।

“ত্রিঃ প্রথমামন্বাহ ত্রিরুত্তমাম্” ইতি প্রথমোত্তময়োঃ সামিধেন্যোস্ত্রিরুচ্চারণং স্থৈর্য্যং বিনাহনুপপন্নমিত্যর্থঃ।।৩৪।।

.

সম্প্রতিপত্তিভাবাচ্চ।।৩৫।।

অনুবাদ

প্রত্যভিজ্ঞাহেতুও (শব্দকে নিত্য বলিতে হয়)।। ৩৫।।

ব্যাখ্যা

সেই শ্লোকটা কি বল তো, এরূপ কথা প্রায়ই ব্যবহৃত হয়। সেই শ্লোক অর্থে পূৰ্ব্বানুভূত শ্লোক। শ্লোক নিত্য না হইলে, পূৰ্ব্বানুভূতশ্লোক এখন কোথায় মিলিবে। অতএব এই সব ব্যবহারেও শব্দের নিত্যত্ব প্রমাণিত।। ৩৫।।

উপস্কারঃ

শব্দনিত্যত্বে হেত্বন্তরমাহ।

সম্প্রতিপত্তিঃ প্রত্যভিজ্ঞা, তদ্ভাবাৎ তৎসদ্ভাবাদিত্যর্থঃ। প্রতিপত্তিশব্দাদেব তদ্বিশেষস্য প্রত্যভিজ্ঞায়া লাভাৎ সম্পূৰ্ব্বঃ সত্যত্বমাহ, তথাচ যৈব গাথা মৈত্রেণোচ্চারিতা তামেবায়মুচ্চরতি, তমেব শ্লোকং পুনঃপুনঃ পঠতি, উক্তমেব বচনং পুনঃপুনরভিধৎসে, যদেব বাক্যং পরারি পরুচ্চ ত্বয়োক্তং তদেবেদানীমপি ব্রৃষে, স এবায়ং গকার ইত্যাদিপ্রত্যভিজ্ঞাবলাৎ স্থৈর্য্যং শব্দস্যেতি।।৩৫।।

.

সন্দিগ্ধাঃ সতি বহুত্বে।। ৩৬।।

অনুবাদ

(শব্দ) বহুত্ব সত্ত্বেও (উক্তহেতু সকল থাকে, অতএব) ব্যভিচারী।। ৩৬।।

ব্যাখ্যা

বহু হইলেও—ককারাদি প্রত্যেক বর্ণ উচ্চারণভেদে ভিন্ন হইলেও—ঐ সকল হেতু বাধক হয় না। কেন না যাহা স্বরূপতঃ বিভিন্ন, তৎসমুদায় স্থলেও ঐরূপ অধ্যয়ন, পুনঃপুনঃ করণ ব্যবহার, প্রত্যভিজ্ঞা ও শ্রুতি আছে। নৃত্যের অধ্যয়ন বা শিক্ষাস্থলে—গুরুশিষ্যের কথিতরূপ দান-প্রতিগ্রহে প্রবৃত্তি ‘দুইবার নৃত্য করিতেছি’ ‘তিনবার নৃত্য করিতেছে’ এইরূপ পুনঃপুনঃ কারণ ব্যবহার “যে নৃত্য পূৰ্ব্বে করিয়াছিলে অদ্যও সেই নৃত্য কর”–এইরূপ প্রত্যভিজ্ঞাসূচক শ্রুতিবাক্যও আছে। অথচ নৃত্য—স্পন্দনবিশেষ মাত্র, তাহা যে অনিত্য ইহা সকলেই জানেন। সুতরাং নৃত্য এক না হইলেও একজাতীয় অভিপ্রায়েই পুনঃপুনঃ করণ ব্যবহার ও প্রত্যভিজ্ঞা হয়। অধ্যাপন-অর্থে দান শব্দ—এবং অধ্যয়ন অর্থে প্রতিগ্রহ শব্দও ঔপচারিক। কথিত হেতুসমূহ নৃত্যস্থলেও আছে অথচ নৃত্য—অনিত্য, তবে তদ্দ্বারা বর্ণের নিত্যত্ব সিদ্ধ হইবে কেন? সেই হেতুসমূহ, যে ব্যভিচারী হইল।। ৩৬।।

উপস্কারঃ

সৰ্ব্বানিমান্ হেতূন্ দূষয়ন্নাহ।

সন্দিগ্ধা অনৈকান্তিকা ইত্যর্থঃ। তদুক্তং “বিরুদ্ধাসিদ্ধসন্দিগ্ধমলিঙ্গং কাশ্যপোহব্রবীৎ” ইতি। তথাচ বহুত্বে নানাত্বেঽপি অধ্যয়নমভ্যসনং প্রত্যভিজ্ঞানঞ্চ দৃষ্টমিত্যনৈকান্তিকত্বং হেতূনাং তথাহি নৃত্যমধীতে, নৃত্যমভ্যস্যতি, দ্বিরনৃত্যৎ, যদেব নৃত্যং পরুদকাষীরৈষমোঽপি তদেব করোষি, যদেব নৃত্যমেকেন চারণেন কৃতং তদেবায়মপি করোতীতি নৃত্যে দৃষ্টত্বাৎ তস্য চ কৰ্ম্মবিশেষস্য ত্বয়াপি স্থৈর্য্যানভ্যুপগমাৎ।।৩৬।।

.

সংখ্যাভাবঃ সামান্যতঃ।।৩৭।

অনুবাদ

সংখ্যা-ব্যবহার জাতিকে লইয়াই (হইয়া থাকে)।। ৩৭।।

ব্যাখ্যা

বর্ণ পঞ্চাশৎ, ইত্যাদি ব্যবহার বর্ণগত বিশেষ বিশেষ জাতি কত্ব প্রভৃতিকে লইয়াই হইয়া থাকে, অর্থাৎ পঞ্চাশৎ শ্রেণীর বর্ণ ইহাই অভিপ্রায়। যেমন বলা হয়, দ্রব্য নয়টী; পৃথিবীর অনন্ত ভেদ,—বৃক্ষ, লতা, ঘট, পট—সবই তো পৃথিবী—অথচ নয় দ্রব্য; অনন্ত পৃথিবীর পৃথিবীত্ব লইয়া একত্ব, জলত্ব লইয়া একত্ব, এইরূপে দ্রব্য নয়টী বলা যায়, সেইরূপ পঞ্চাশৎ বর্ণ এইরূপ বলা হইয়া থাকে।। ৩৭।।

দ্বিতীয় অধ্যায় দ্বিতীয় আহ্নিক সমাপ্ত

দ্বিতীয় অধ্যায় সমাপ্ত

উপস্কারঃ

ননু পঞ্চাশদ্বর্ণা অষ্টাক্ষরো মন্ত্রঃ এ্যক্ষরো মন্ত্রঃ অষ্টাক্ষরাহনুষ্টুবিত্যাদিসঙ্খ্যা কথং বর্ণানামনিত্যত্বে উচ্চারণভেদেনানন্ত্যসম্ভবাদিত্যত আহ।

সঙ্খ্যায়াঃ পঞ্চাশদাদিসঙ্খ্যায়া ভাবঃ সদ্ভাবঃ সামান্যতঃ কত্বগত্বাদিজাতিত ইত্যর্থঃ। ককারাদীনামানন্ত্যেঽপি কত্বগত্বাদ্যবচ্ছিন্নানাং পঞ্চাশত্ত্বং ত্রিত্বমষ্টত্বং বা দ্রব্যগুণাদীনামান্ত- গণিকভেদেনানন্ত্যেঽপি নবত্বচতুৰ্ব্বিংশতিত্বাদিবদিতি ভাবঃ। ননু স এবায়ং গকার ইতি প্রত্যভিজ্ঞৈব স্থৈর্য্যসাধিকা, নচৈষা তীব্রো গকারো মন্দো গকার ইতি প্রতীত্যা বিরুদ্ধধৰ্ম্মং গোচরয়ন্ত্যা বাধ্যতে তীব্রত্বাদেস্তত্রৌপাধিকত্বাৎ নচোপাধিভেদাদপি ভেদো মা ভূৎ তর্হি জবাতাপিঞ্জাদিসংযোগান্নীলপীতাদিভাবেন প্রথমানঃ স্ফটিকমণিরপি নানা কৃপাণমণিদর্পণে দীর্ঘাদিভাবেন ভাসমানং মুখমপি বা নানা ন ভাসতে। ননু কস্যায়ং তারত্বাদিধর্ম্মো গকারৌ- পাধিক ইতি চেন্ন, বায়ুধৰ্ম্মো নাদধর্ম্মো ধ্বনিধৰ্ম্মো বা ভবিষ্যতি কিং তত্র বিশেষচিন্তয়া, ত্বয়াপি তারত্বাদেঃ কত্বগত্বাদিনা পরাপরভাবানুপপত্ত্যা স্বাভাবিকত্বাভ্যুগমাদিতি চেন্মৈবম্, উৎপন্নো গকারঃ, নষ্টো গকারঃ, শ্রুতপূর্ব্বো গকারো নাস্তি, নিবৃত্তঃ কোলাহল ইত্যাদিবিরোধিপ্রতীতৌ সত্যামপি চেৎ ইয়ং প্রত্যভিজ্ঞা ন নিবৰ্ত্ততে, তদাস্যা জাতিবিষয়তাকল্পনাৎ। অন্যথা ব্যক্তিস্থৈর্য্য-মালম্বমানায়াম্ অস্যাং সত্যাম্ উক্তবিরোধিপ্রত্যয়া এব নোৎপদ্যেরন্, নচায়ং বায়ুধৰ্ম্মস্তদ্ধৰ্ম্মাণাং শ্রোত্রাবিষয়কত্বাৎ নাপি নাদধৰ্ম্মঃ, নাদো যদি বায়ুরেব তদা দোষস্যোক্তত্বাৎ, অন্যস্য নিৰ্ব্বত্তুমশক্যত্বাৎ, নাপি ধ্বনিধৰ্ম্মঃ, শঙ্খাদিধ্বনাবনুপলভ্যমানেঽপি গকারে তারত্বাদিপ্রতীতেঃ। স্বাভাবিকত্বে তু ন জাতিসাঙ্কৰ্য্যং গত্বাদিব্যাপ্যস্য তস্য নানাত্বাভ্যুপগমাৎ। কিঞ্চ শুকসারিকা-মনুষ্যপ্রভবে গকারাদিষু স্ফুটতরা রূপভেদপ্রথাহস্তি, এবং স্ত্রীপুংসপ্রভবেষু স্ত্রীপুংসভেদ-প্রভবেষু চ, যতঃ কাণ্ডপটাদ্যাবৃতা অপি শুকাদয়োহনুমীয়ন্তে ঔপাধিকত্বত্ত্বস্য নানুভূয়মানো-পাধিনিবন্ধনং কুঙ্কুমারুণা তরুণীতিবৎ, নাপ্যৌপপত্তিকমৌপাধিকত্বম্ উপপত্তেস্তাদৃশ-প্রমাণস্যাভাবাদিতি সংক্ষেপঃ।। ৩৭।।

ইতি বৈশেষিকসূত্রোপস্কারে শাঙ্করে দ্বিতীয়াধ্যায়স্য

দ্বিতীয়মাহ্নিকম্।

সমাপ্তশ্চায়ং দ্বিতীয়াধ্যায়ঃ।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *