তুষারের ঝড়ে

হঠাৎ কে যেন আমাকে ছুড়ে দিল এখানে, তুষারের ঝড়ে
যতদূর চোখ যায়, যতদূর যায় না, চোখ ধাঁধানো সাদা, শুধু সাদা, শুধু সাঁ সাঁ
উদ্বাহু নৃত্য চলছে তুষার-কন্যার, শুকনো পাতার মত আমাকে ওড়াচ্ছে,
পাকে ফেলে খুলে নিচ্ছে গা ঢাকার সবকটা কাপড়।
আমার চুল চোখ,
আমার সব,
আমার সর্বাঙ্গ ঢেকে গেছে তুষারে।
আকাশ নেমে এসেছে একেবারে কাছে, ছুঁতে নিলেই
জীবন্ত একটি ডাল খসে পড়ল,
আকাশ এখন আর আকাশের মত নয়,
মুখ থুবড়ে সেও পড়েছে ঝড়ে।
দুএকটি গাছ হয়ত ছিল কোথাও, ভেঙে ভেঙে তলিয়ে যাচ্ছে তুষার-স্তূপে
প্রকৃতির কাফন আমাকে মুড়িয়ে নিয়ে ঢুকে যাচ্ছে কোথাও, কোনও গর্তে।
ঠোঁটদুটো কাঁপছে আমার, কান লাল হয়ে আছে, নাকে গালে রক্ত জমে আছে,
হাতের আঙুলগুলো সাদা, হিম হয়ে থাকা সাদা,
আঙুলগুলোকে আঙুল বলে বোধ হচ্ছে না, কয়েক লক্ষ সুঁই যেন বিঁধে আছে আঙুলে,
আমি কিছু শুনতে পাচ্ছি না আর, কিছুকে দেখতে পাচ্ছি না,
সব সাদা, মৃত্যুর মত নৈঃশব্দের মত চন্দ্রমল্লিকার মত
একটু একটু করে রক্তহীন হচ্ছে ত্বক,
একটু একটু করে তীব্র তীক্ষ্ণ শীতার্ত দাঁত আমাকে খেতে খেতে খেতে খেতে
আমার পা থেকে, হাত থেকে উরুর দিকে বাহুর দিকে হৃদপিণ্ডের দিকে উঠে আসছে,
উঠে আসছে।

আমি জমে যাচ্ছি
জমে যাচ্ছি আমি
গোটা আমিটি
বরফের
একটি
পিণ্ড
হয়ে
যাচ্ছি …

ও দেশ, ও কলকাতা, একটু আগুন দিবি?

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *