তুমি আমায় ডেকেছিলে ছুটির নিমন্ত্রণে – ৪

সুরুজ মিয়া ম‍ই নিয়ে এসেছেন।

ডাকবাংলোর পেছনে মই লাগানো হয়েছে। সুরুজ মিয়া নিজেই মই বেয়ে তরতর করে উঠলেন। নিশ্চিত হলেন যে মই আছে। মই ভেঙে পড়ে গেলে তাঁর উপর দোষ পড়বে।

শ্রাবণী বলল, ‘থ্যাংকস চেয়ারম চাচা।’

সুরুজ মিয়া শুকনো মুখে বললেন, ‘স্যার রাগই করেন কিনা।’

‘বাবা রাগ করবে না। আপনি শুধু শুধু ভয় পাচ্ছেন।’

‘আর কিছু লাগবে আম্মা? লাগলে বলবেন। লজ্জা করবেন না।’

‘আপনাকে যা আনতে বলা হবে আপনি তাই আনবেন?’

‘এত ক্ষমতা কি আমার আছে আম্মা! তবে চেষ্টা করব এইটা সত্য।’

‘আসুন চেয়ারম্যান চাচা, আমার সঙ্গে চা খান।’

‘জ্বি না আম্মা। আমি এখন যাই। স্যার ঘুম থেকে উঠলে একবার আসব। খোঁজ নিয়া যাব। আপনার কিছু লাগব কিনা তা তো আম্মা বলেন নাই। আমি হলাম আপনার বুড়ো ছেলে। ছেলেকে বলতে দোষ নাই।’

‘আমার কিচ্ছু লাগবে না। ও আচ্ছা, একটা জিনিস লাগতেও পারে। এখনো বুঝতে পারছি না। আপনাকে পরে বলব।’

সুরুজ মিয়া চিন্তিত বোধ করছেন। মিনিস্টার সাহেবের ছোট মেয়েটা অন্য দশটা মেয়ের মতো না। একটু আলাদা। মাথা খারাপও হতে পারে। বড়লোকের মেয়েগুলোর মাথা একটু খারাপ এমনিতেই থাকে। আর এ হল ছোট মেয়ে—আদর পেয়েছে বেশি। এই মেয়েটা সম্পর্কে গতকাল রাতে একটা খবর পেয়ে তিনি খুবই চিন্তিত বোধ করেছেন। মিনিস্টার সাহেবকে জানাবেন কিনা বুঝতে পারছেন না। জানানো উচিত কিনা তাও বুঝতে পারছেন না। ওসি সাহেবের সঙ্গে পরামর্শ করতে গিয়েছিলেন। ওসি সাহেবও কোনো পরামর্শ দিতে পারলেন না—শুধু বললেন, ‘চিন্তার বিষয় হয়ে গেল। লক্ষ্য রাখতে হবে।’

ব্যাপার তেমন কিছু না। পুলিশের সেন্ট্রি খবরটা দিয়েছে। সে মিথ্যা বলে নি। মিনিস্টারের মেয়েকে নিয়ে মিথ্যা বলার সাহস তার হবে না।

সে দেখেছে মিনিস্টার সাহেবের ছোট মেয়ে রাত তিনটার দিকে একটা চাদর গায়ে দিয়ে একা একা বাড়ি থেকে বের হয়ে নদীর তীর পর্যন্ত গেল। খানিকক্ষণ হাঁটল—তারপর ফিরে এল। পুলিশের সেন্ট্রি কাছে যায় নি, দূরে দূরে থেকেছে। তবে লক্ষ্য রেখেছে।

এখানে অবশ্যি ভয়ের কিছুই নেই। খুবই নিরাপদ জায়গা। তবু অঘটন ঘটতে কতক্ষণ লাগে? অঘটন যে কোনো সময় ঘটতে পারে। তবে এখন আর ভয়ের কিছু নেই। সুরুজ মিয়া নদীর পাড়ে লোক রেখে দিয়েছেন। নৌকা বাঁধা আছে। নৌকায় দুজন মাঝি। তাদের কাজ হল ডাকবাংলোর দিকে তাকিয়ে থাকা। কাউকে আসতে দেখলেই এক জন নৌকায় থাকবে, অন্যজন ছুটে এসে তাঁকে খবর দেবে। তখন না হয় মিনিস্টার সাহেবকে খবর দেয়া যাবে। ব্যাপারটা হয়তো কিছুই না। আবার হয়তো অনেক কিছু। মইয়ের ব্যাপারটা ধরা যাক। এমন কিছু না। ম‍ই দিয়ে ছাদে ওঠার শখ বড় মানুষের ছেলেপুলেদের হবেই। কিন্তু মই দিয়ে ছাদে উঠে এই মেয়ে যদি নিচে ঝাঁপ দেয় তখন অবস্থাটা কী হবে? যে মেয়ে নিশিরাতে নদীর পাড়ে যেতে পারে সে অনেক কিছুই করতে পারে। মেয়েটার মধ্যে পাগলামি আছে। ভালো রকম পাগলামি আছে। সুরুজ মিয়ার ধারণা, মেয়েটার বড় বোনের মধ্যেও আছে। সেই মেয়েও একা একা ঘুরে বেড়ায়। পাগলামি বংশগত ব্যাপার। এক জনের কারোর থাকলে সবার মধ্যে খানিকটা চলে আসে। মিনিস্টার সাহেবের মধ্যে কি আছে? সুরুজ মিয়া এখনো তা ধরতে পারেননি। তবে খানিকটা আছে বলে মনে হয়। না হলে থানার ওয়্যারলেস দিয়ে কেউ খবর পাঠায়— সুন্দরবনের বাঘের সংখ্যা কত? সুন্দরবনের বাঘের সংখ্যা দিয়ে কী হবে? কি একটা জানার বিষয়?

.

শ্রাবণী সুরুজ মিয়ার সঙ্গে বাগানে হাঁটছে। সুরুজ মিয়া মেয়েটির হাবভাব বোঝার চেষ্টা করছেন। মেয়েটাকে তো বেশ সহজ স্বাভাবিকই মনে হচ্ছে। ভয় পাওয়ার বোধহয় কিছু নেই। ঐ দিন রাতে নদীর ঘাটে একা একা কেন গিয়েছিল জিজ্ঞেস করে ফেলবেন নাকি? রেগে না গেলেই হল। হাসতে হাসতে জিজ্ঞেস করতে হবে, যাতে রাগতে না পারে।

‘আম্মা, একটা কথা বলব?’

‘বলতে ইচ্ছে করলে অবশ্যি বলবেন।’

সুরুজ মিয়া ইতস্তত করতে লাগলেন। বোধহয় বলাটা ঠিক হবে না।

শ্রাবণী বলল, ‘এমন কোনো কথা যা বলতে আপনার অস্বস্তি লাগছে?’

সুরুজ মিয়া মাথা চুলকাতে চুলকাতে বললেন, ‘ভুলও হইতে পারে। মানুষ মাত্রই ভুল হয়।’

‘বলে ফেলুন তো শুনি। এত প্যাঁচানোর কোনো দরকার নেই।’

‘ইয়ে মানে—ব্যাপার হয়েছে কি—পুলিশের সেন্ট্রি আমারে বলল—আপনারে নাকি দেখেছে রাত তিনটার দিকে একা একা নদীর পাড়ে গেছেন?’

শ্রাবণী সহজ গলায় বলল, ‘ঠিকই দেখেছে। আপনি এটা বলতে এত অস্বস্তি বোধ করছেন কেন?’

‘না মানে, গভীর রাত!

‘গভীর রাত হয়েছে তো কী হয়েছে? ভরা পূর্ণিমা। ডাকবাংলোর সঙ্গে নদী ডাকবাংলোয় পুলিশ পাহারা। কাছেই একদল আনসার, ডাকলেই ছুটে আসবে। আমি ভয় পাব কেন?’

‘না, ভয়ের কিছু নাই।

‘আমার অবশ্যি খানিকটা ভয় ভয় করছিল। কিন্তু এত সুন্দর লাগছিল বালির উপর চাঁদের আলো। ভাবলাম, কাছে গিয়েই দেখে আসি। আপনার ধারণা কাজটা ভুল হয়েছে?’

‘জ্বি না, আম্মা। ভুল হয় নাই। তবে স্যার শুনলে রাগ করবেন।’

‘বাবা শুনেছেন। সকালবেলায় বাবাকে বলেছি। বাবা রাগ করেন নি। শুধু বলেছেন—নেক্সট টাইম এমন ইচ্ছা যদি হয় তাহলে যেন এক জন সেন্ট্রি সঙ্গে করে নিয়ে যাই।’

সুরুজ মিয়া এখন খানিকটা নিশ্চিন্ত বোধ করছেন। ব্যাপারটা যত জটিল শুরুতে মনে হয়েছিল— এখন দেখা যাচ্ছে তত জটিল নয়।

‘চেয়ারম্যান চাচা!’

‘জ্বি আম্মা!’

‘আপনার বাড়ি এখান থেকে কত দূরে?’

‘বেশি দূরে না আম্মা। কাছেই।’

‘চলুন তাহলে আপনার বাড়ি থেকে বেড়িয়ে আসি।’

সুরুজ মিয়া হকচকিয়ে গিয়ে বললেন, ‘শুনে খুবই আনন্দ পেয়েছি আম্মা। কিন্তু স্যারকে না জিজ্ঞেস করে আপনাকে নিতে পারব না। স্যার অনুমতি দিলে একদিন নিয়ে যাব। বাড়ির মেয়েছেলেরাও আপনাকে আর বড় আম্মাকে দেখতে চায়।’

.

শাহেদের ঘুম ভেঙেছে। সে জানালা দিয়ে দেখছে শ্রাবণী এবং টুপি মাথায় বুড়ো ধরনের একজন লোক বাগানে হাঁটছে। শ্রাবণী হাত নেড়ে নেড়ে খুব গল্প করছে। শাহেদের জ্বর শেষ পর্যন্ত আসে নি। শরীর ঝরঝরে লাগছে। রাতে না খেয়েই ঘুমিয়ে পড়েছিল। এখন প্রচণ্ড খিদে বোধ হচ্ছে। শাহেদ বিছানা ছেড়ে বারান্দায় এসে দাঁড়াল। হাত উঁচিয়ে শ্রাবণীকে ইশারা করল। শ্রাবণী এগিয়ে আসছে। তাকে রোগা রোগা লাগছে।

‘গুড মর্নিং, শাহেদ ভাই।’

‘গুড মর্নিং, শ্রাবণী।’

‘এই মাত্র ঘুম থেকে উঠলেন?’

‘হুঁ।’

‘অনুমান করুন তো কটা বাজে?’

‘আটটা।’

‘হয় নি। বাজে মাত্র সাতটা। এই ব্যাপারটা আমি লক্ষ করেছি। গ্রামে এলেই দেখবেন সময় স্লো হয়ে যায়। এক ধরনের টাইম ডাইলেশন হয়। আপনার কাছে মনে হচ্ছে আটটা বাজে। আসলে বাজছে সাতটা।’

‘ঐ বুড়ো ভদ্রলোক কে?

‘উনার নাম সুরুজ মিয়া। চেয়ারম্যান। চেয়ারম্যান শুনলেই খুব খারাপ ধরনের চরিত্রের কথা মনে আসে। উনি মোটেই সে রকম নন। নিতান্তই ভালো মানুষ। আমার জন্যে মই এনে লাগিয়ে দিয়েছেন।’

‘কী এনে লাগিয়েছেন?’

‘মই। ছাদে ওঠার মই। আপনি তাড়াতাড়ি মুখ ধুয়ে ফেলুন, আপনার জন্যে চায়ের ব্যবস্থা করে আসি। কুয়ার পাশে বসে চা খান, দেখুন কী অদ্ভুত লাগে।’

‘কুয়ার পাড়ে বসে চা খেতে হবে?’

‘কিংবা এক কাজ করা যেতে পারে। আমরা দুজন চায়ের কাপ নিয়ে ছাদে চলে যেতে পারি। আপা ঘুম ভেঙে যখন দেখবে আপনি নেই, তখন তার মাথা খারাপ হয়ে যাবে।’

‘তোমার আপা কি এখনো ঘুমাচ্ছে?’

‘মনে হয় ঘুমাচ্ছে। ডেকে তুলব?’

‘দরকার নেই। তুমি বরং চা নিয়ে এস।’

শ্রাবণী রান্নাঘরে ঢুকল। রান্নাঘরে পিঠা বানানোর চেষ্টা হচ্ছে। জাহানারা ভাপা পিঠা বানাচ্ছেন। ঠিকমতো হচ্ছে না। ভেঙে যাচ্ছে। নবনীর ঘুম ভেঙেছে। সে মুখ ধুয়ে মার পাশে বসে আছে। মাকে সাহায্য করাই তার ইচ্ছা। কোনো উপায় নেই—জাহানারা তাকে কোনো কিছুতেই হাত দিতে দিচ্ছেন না। শ্রাবণী বলল, ‘আপা শাহেদ ভাই কুয়ার পাড়ে দাঁড়িয়ে আছেন। তোমাকে চা নিয়ে যেতে বলেছেন।’

নবনী লজ্জা পেয়ে গেল। জাহানারা মেয়ের এই লজ্জা উপভোগ করলেন। হাসি চাপতে চাপতে বললেন, ‘চা-টা তুই নিজেই বানিয়ে নিয়ে যা। পিঠার হাঁড়ি নামিয়ে কেতলি বসিয়ে দে।’

নবনী বলল, ‘সব তুমি করবে, চা-টাই বা শুধু শুধু আমি করব কেন? চা তুমি বানাবে।’

.

কুয়ার পাড়টা এত সুন্দর রাতে বোঝা যায় নি। কুয়ার চারপাশে চিকন চিকন পাতার অচেনা কিছু গাছ পুরো জায়গাটার উপর ছায়া ফেলে আছে। গাছের নিচ ঝকঝক করছে। একটা পাতাও পড়ে নাই। পরিষ্কার থাকারই কথা। সকাল-বিকাল দুবেলা ঝাঁট দেয়া হচ্ছে। মালী শাহেদকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে দুটা ফোল্ডিং চেয়ার নিয়ে এল। শাহেদ বলল, ‘আপনাদের ডাকবাংলো খুব সুন্দর।

মালী কিছু বলল না। এমনিতে সে প্রচুর কথা বলে। এখন চেয়ারম্যান সাহেব তাকে বলে দিয়েছেন—মুখ বন্ধ রাখবি, কোনো কথা বলবি না। কি বলতে কী বলবি সৰ্বনাশ হয়ে যাবে। যে সে লোক আসে নাই। মন্ত্রী। জাতসাপ।

ট্রেতে করে চা, টোস্ট বিসকিট নিয়ে নবনী আসছে। এই শীতের মধ্যেও ঘুম থেকে উঠেই সে গোসল করে হালকা গোলাপি রঙের শাড়ি পরেছে। কানে মুক্তার দুল। শাড়ির রং তার গায়ের রঙের সঙ্গে মিলেমিশে গেছে। সুন্দর দেখাচ্ছে নবনীকে। তার দিক থেকে চট করে চোখ ফিরিয়ে নেয়া সম্ভব না। শাহেদ বলল, ‘আজ ভোরবেলা আয়নায় তুমি নিজেকে দেখেছ?’

‘না। কেন?’

‘না দেখে থাকলে খবরদার দেখবে না। নজর লেগে যাবে। নিজের নজর সবচে’ বেশি লাগে। আজ তোমাকে দেখাচ্ছে স্বর্গের অপ্সরীদের মতো।’

‘স্বর্গের অপ্সরীরা কি চা এবং টোস্ট নিয়ে আসে? তারা আনে অমৃত।’

‘চা এখন অমৃতের মতো লাগবে।’

শাহেদ চায়ের কাপ তুলে নিল। নবনী বলল, বিসকিট খাও। নাশতা দিতে দেরি হবে। মা ভাপা পিঠা বানানোর চেষ্টা করছেন। পিঠা জোড়া লাগছে না। লাগবে বলেও মনে হয় না। রাতে ঘুম কেমন হয়েছিল?’

‘খুব ভালো ঘুম হয়েছে। এক ঘুমে রাত কাবার।’

নবনী শাহেদের সামনে বসেছে। সে তার নিজের চায়ের কাপ হাতে নিতে নিতে বলল, ‘জায়গাটা কী অদ্ভুত সুন্দর, লক্ষ করেছ?’

‘হ্যাঁ, লক্ষ করলাম।’

‘আর কী রকম নির্জন সেটা দেখেছ?’

‘হ্যাঁ।’

নবনী বলল, ‘ডাকবাংলোটা গ্রামের মূল বসতি থেকে অনেকখানি দূরে। নীলকর সাহেবরা বানিয়েছিল। তারা মানুষদের কাছ থেকে দূরে থাকতে চাইত।’

শাহেদ বলল, ‘এই অঞ্চলে তো নীলের চাষ হবার কথা না। নীলকর সাহেব তুমি কোথায় পেলে?’

‘আমি যা শুনেছি, তাই তোমাকে বললাম। সাহেবদের কবরখানাও নাকি আছে। এক সাহেবের স্ত্রী মারা গিয়েছিলেন—তাঁর কবর আছে। কবরে চার লাইনের কবিতা আছে।’

‘কবরটা কোথায়?’

‘আমি জানি না। শ্রাবণী জানে।’

‘ওকে বল তো আমাকে দেখাতে।’

‘বলব।’

শাহেদ হাসতে হাসতে বলল, ‘কোথাও বেড়াতে এসে অবশ্যি কবর দেখে বেড়ানো কোনো কাজের কথা না।

নবনী উঠে দাঁড়াল। শাহেদ বলল, ‘যাচ্ছ কোথায়? বোস না।’

‘নাশতার ব্যবস্থা দেখি। মা যা শুরু করেছে—আজ কেউ নাশতা খেতে পারব বলে মনে হয় না।’

‘নাশতা নিয়ে আমার কোনো মাথাব্যথা নেই, তুমি বোস।’

নবনী বসল। শাহেদ বলল, ‘সুন্দর প্রেমের কবিতা আমার মুখস্থ নেই—থাকলে এখন তোমার দিকে তাকিয়ে আবৃত্তি করতাম। তুমি এত সুন্দর কেন?’

নবনী চট করে মাথা ঘুরিয়ে নিল। তার চোখে পানি এসে যাচ্ছে। সে চোখের পানি শাহেদকে দেখাতে চায় না।

শাহেদ বলল, ‘আমার দিকে তাকাও, অন্যদিকে তাকিয়ে আছ কেন?’

নবনী বলল, ‘কাল রাতে আমি তোমাকে রাগিয়ে দিয়েছি। এরকম আর হবে না।’

শাহেদ হাসতে হাসতে বলল, ‘তার মানে কি এই যে আমি যা চাইব তাই পাব?’

নবনী জবাব দিল না।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *