সাত
আজকে লেবেল সাঁটা হবে। প্রথম, দ্বিতীয়, তৃতীয়, পাঁচটা সান্ত্বনা পুরস্কার আছে। ভাস্করদা ডেকেছেন। এখনও এগজিবিশন খোলেনি, শূন্য দরজা ও বন্ধ ঘরে একটা ছোট টেবিলের তিন দিকে তিনজনে একহাতে পেনসিল নোটবই ও হাতে।
কান্তিদা বললেন—অদিতি য়ু আর রাইট। ওই সিভিলাইজেশনটা জাস্ট একটা গিমিক। ওকে বাদ দিয়ে দাও।
—কিন্তু প্লেস তো দিয়েছিলেন প্রথমে। সেটা কেন? আপনার যুক্তিটা শুনি। নিশ্চয়ই কিছু ভেবেছিলেন…।
—আসলে কী জানো? খুলেই বলি। আমার বন্ধুর ছেলে। মহা বদমাশ। কোন দায়িত্ববোধ নেই, ধৈর্য নেই, গুণ একমাত্র এই আঁকার ক্ষমতা, ড্রয়িংটা খুবই স্ট্রং লক্ষ করেছ নিশ্চয়। ছেলেটা এমন যে কৃতিত্বের কোনও স্বীকৃতি না পেলেই ধৈর্য হারিয়ে ফেলে। সব ছেড়েছুড়ে দিয়ে বাপের ব্লাড প্রেশার বাড়াবে। তাই একটা থার্ড পোজিশন দিয়েছিলাম। আফটার অল টিচার তো আমরা। এদের ভাল—মন্দের একটা নৈতিক দায় থেকেই যায়। হি হ্যাজ গট আইডিয়াজ। এই গাঁটটা যদি পেরোতে পারে, ওর বাবা হয়তো ওকে কম্প্যুটার গ্রাফিকসের একটা চাকরিতে ফিক্স করতে পারবে। বাস, আমি পরিষ্কার সব বলে দিলুম ভাই। এবার আমি হাত ধুয়ে ফেলছি। তোমরা যা বলবে তাই হবে।
অদিতি অনেকক্ষণ পর ভাল করে হাসল। বলল—বুঝলাম কান্তিদা। আই আন্ডারস্ট্যান্ড য়ু পার্ফেক্টলি। কিন্তু একটা কথা ভাবুন, এর পরিস্থিতির বৃত্তান্ত আপনি জানেন বলে করুণাবশত আপনি ওকে একটা ফেভার করছেন। অন্যদের কার কী পরিস্থিতি তা তো আপনি জানেন না। আরও খারাপ হতে পারে।
ভাস্করদা বললেন—রাইট। ওই ফাঁকিবাজটা কিন্তু চালাক কম নয় কান্তি। ও জানে ও ফাঁকি দিয়েছে। ও বুঝবে তুমিই ওকে ওই থার্ড পোজিশনটা পাইয়ে দিয়েছ। হেনসফোর্থ ও সব সময়ে ফাঁকি দিয়ে জিততে চাইবে। অর্থাৎ তোমার ‘নৈতিক দায়’—এর যুক্তিটা খাটল না। ভাল করতে গিয়ে তুমি ছেলেটার ক্ষতিই করবে। আর সত্যিই ওর কিন্তু আইডিয়া আছে, ও কেন কমার্শিয়াল নিয়ে পড়ল না আমি জানি না। তুমি ওর বাবাকে এই কমার্শিয়ালের আইডিয়াটা দিতে পারো। এনি ওয়ে ওকে কি পাঁচটার মধ্যে একটা সান্ত্বনা পুরস্কার দেওয়া যেতে পারে? অদিতি তুমি একমাত্র এক্সটারনাল। তুমি না বললে আমরা পক্ষপাতিত্বর দায়ে পড়ব।
অদিতি বলল—ঠিক আছে। কী করা যাবে কান্তিদা আপনার মান আমি রাখছি। ও একটা কনসোলেশন পেতে পারে।
—আচ্ছা এবার অদিতি তোমার যুক্তি আমি শুনব, ওই ‘ফেলাইন’কে তুমি ফার্স্ট কেন দিলে?
—আপনাদের যদি মনে হয় সে মেরিট ওর নেই, তা হলে দেবেন না। অদিতি হাসি হাসি মুখে বলল, যদিও ভেতরে ভেতরে সে রাগে জ্বলে যাচ্ছিল।
—আহা চটছ কেন? ভাস্করদা বললেন—কান্তি তার ব্যাপারটা এক্সপ্লেন করেছে। তুমি তোমারটা করো।
—টেকনিক ছাড়ুন। টেকনিক ছাড়িয়ে মেয়েটা একটা বিশুদ্ধ প্যাশনের জায়গায় পৌঁছেছে। ওর রঙের ব্যবহার, কনট্রাস্ট, তারপর ওই হুলো বেড়ালের ইমেজারি। ইট হ্যাড আ ট্রিমেনডাস ইমপ্যাক্ট অন মি। দ্যাটস অল।
—শেষ বিচারে অবশ্য ইমপ্যাক্টটাই আসল—কান্তিদা বললেন, আসলে এত যত্ন করে কষ্ট করে আমরা লাইন ড্রয়িং, রং মেশানো, মেলানো, কমপোজিশনের হার্মনি শেখালুম। সব উলটে দিয়েছে গো।
—মানে আপনাদের কোনও ছাপ নেই, এই তো? অদিতি বলল—আমি তর্ক করব না—আমার যুক্তি আমি বলেছি। এবার আপনাদের সিদ্ধান্ত। যতই এক্সটারন্যাল হই, আমার একার কথায় কিছু হতে পারে না, আমি সেটা চাইব না।
—ঠিক হ্যায়, ছবিটা হিস্টিরিক, কিন্তু পাওয়ারফুল। ওকে আমরা সেকেন্ড পোজিশনটা দিচ্ছি, কান্তি ঠিক আছে? তোমার ‘আড্ডা’ যেমন প্রথম ছিল, প্রথম রইল, খালি ‘সেপ্টেম্বরের মর্নিংটা’, চলে যাচ্ছে তৃতীয় স্থানে—কী কান্তি? অদিতি?
—অবশ্যই ঠিক আছে। অদিতির যুক্তি আমি মানছি। অদিতি ‘আড্ডাটা’ ভাল না?
—খুবই ভাল। এবার আমি যাই?
—খুশি হয়ে যাচ্ছ তো? কান্তিদা বললেন।
—দেখো আবার আমাদের নিন্দে কোরো না।—ছদ্ম ভয়ে ভাস্কর চক্রবর্তী বললেন।
—ও হো, লেবেল সাঁটা হতে থাক, আর চারটে কনসোলেশন ঠিক করে ফেলি। অদিতি আর দশ মিনিট।
—প্লিজ কান্তিদা আমার ‘চিত্রভানু’ হাঁ করে বসে থাকবে। ওটা আপনারা ঠিক করুন। আমার সম্মতি রইল।
—তা হলে সইগুলো করে দিয়ে যাও।
—ও হ্যাঁ। আচ্ছা ওই ছবিটা আমি পেতে পারি কি? একটু ভেবে বলবেন।
দুই মাথা একত্র হয়ে ‘সান্ত্বনা’র ব্যবস্থা করছেন এই দৃশ্য দেখে অদিতি চলে এল। সে ভাস্করদার ব্যবহারে একটা অস্বস্তি লক্ষ করেছে। কে জানে, হয়তো কল্পনা হতে পারে। কিন্তু তার কেমন মনে হচ্ছিল—তনিকার ওপর উনি খুশি নন। মেয়েটার বৃহস্পতি কুপিত। নিজের মনেই হাসতে হাসতে ফিরল অদিতি।
বিকেল সাড়ে পাঁচটা নাগাদ ‘চিত্রভানু’র ছাত্রছাত্রীদের নিয়ে আবার অ্যাকাডেমিতে আসতে হল। ওদের দেখা ডচিত। শৌনকরাও ছিল জনাচারেক।
ঢোকবার মুখে বাইরের কফি স্টলটা দেখে আহ্লাদি নন্দিনী বলল,—দিদি, কফি খাব।
—দেখছ না কী ভিড়, খুব দেরি হবে।
—কিচ্ছু না। আমি আর শৌনকদা যাচ্ছি। যেতে গিয়ে একটি বিরাট লম্বা—চওড়া ছেলের সঙ্গে ধাক্কা গেল শৌনক। স্যরি বলে এগিয়ে যাচ্ছে। অদিতি শুনল—আই হেট ফুচকা। তোরা কী করে খাস বল তো।
—আরে ওই তো দাদফাদ চুলকে সেই হাতে আলু মাখে লোকটা,—মোটা ছেলেটা হে হে করে হেসে বলল—দাদ আবার অস্থানে কুস্থানে হয়, জানিস তো। তাতেই সোয়াদটা বেড়ে যায়।
—দু’তিনটে হাত উঠে মোটা ছেলেটার ওপর আবোলতাবোল পড়তে লাগল, ছেলেটা হাসতে হাসতে মাথাটা নিচু করছে, ঘাড় গুটিয়ে নিচ্ছে। অদিতি একটু এগিয়ে গিয়ে বলল—তনিকা।
ডেনিমের মিডি—স্কার্ট পরা, লম্বা চুল জড়িয়ে হাতখোঁপা বাঁধা তনিকা হতভম্ব চোখে তাকিয়ে বলল আ.. আপনি?
—এই শৌনক, নন্দিনী, এদিকে এসো…তনিকা এরা আমার বন্ধু। তোমার বন্ধুদের সঙ্গে আলাপ করাও। —অদিতি এমন করে বলল যেন কত দিনের চেনা। ভেতরে ভেতরে অবশ্য সে জাল পাতছে।
—এ—এ সুবীর, ও নয়না, এটা রাস্না, জগদীশ এদিকে আয়। এ—ই বাবুল…
সুবীর বলে মোটা ছেলেটি বলল—ম্যাডাম নমস্কার। আমরা আজকে একটা জিনিস সেলিব্রেট করছি। এবার উন্মাদিনী একটা মেডেল ঝেঁপেছে।
—তনিকা চেঁচিয়ে উঠল—খবর্দার বলছি সুবীর…
—আরে মাকড়াটা তোকে সেকেন্ড প্রাইজ দিল শেষ পর্যন্ত, ভাবতে পারিস?—ওহ সারি ম্যাডাম।
হাসি চেপে অদিতি বলল, আমি খাওয়াচ্ছি—কতজন আছ?
সুবীর বলল, উঁহু ওটি হবে না ম্যাডাম। খাওয়াব বলেছি খাওয়াব।
নয়না বলে মেয়েটি বলল—সুবীরের বাবার অনেক টাকা ম্যাডাম, স্মাগলার তো!…সব্বাই হা হা করে হাসতে লাগল, খালি শৌনকরা এবং তনিকা অপ্রস্তুত মুখ নিয়ে দাঁড়িয়ে রইল। কফি খাওয়া হতে, প্লাস্টিকের কাপগুলো জড়ো করতে করতে সুবীর জিজ্ঞেস করল, আপনার পরিচয়টা ম্যাডাম… ঠিক…
—আমার নাম অদিতি সরকার।
—অ—দিতি? ম্যাডাম আপনি কোন অদিতি? আর্টিস্ট?
শৌনক বলল হ্যাঁ, উনি অদিতি সরকার। তোমাদের এই কমপিটিশনটাতে এক্সটারন্যাল—
অদিতি বলল, আহ শৌনক। চলো ছবি দেখতে যাওয়া যাক।
একটু এগিয়ে পেছন ফিরে বলল—তনিকা, সুবীর তোমরা এসো! সে দাঁড়িয়ে রইল যতক্ষণ না তনিকা আসে। ওকে সে আজ পাকড়াও করবেই।
যেহেতু অত বড় একটা দল ঘুরে ঘুরে প্রত্যেক ছবির সামনে দাঁড়িয়ে আলোচনা করছে, অন্যান্য আর্টিস্ট—ছাত্ররাও তুরন্ত এসে যোগ দিল।
—হু ইজ শি? রাস্না!
—অদিতি সরকার।
—সেই অদিতি সরকার? মানে অদিতি বোর্দো সরকার? এক্স?
—উঁহু অদিতি বোর্দোগুপ্ত সরকার, যিনি…
—ওরে বাবা। কী বলছেন অত?
—ওঁব ছাত্রছাত্রীদের এগজিবিশন দেখাতে নিয়ে এসেছেন।
এগজিবিশনে যারা ছবি দিয়েছে তাদের অনেকেই আজ উপস্থিত। ‘চিত্রভানু’র প্রাচীর ডিঙিয়ে তারা সেইখানে পৌঁছোতে চায় যেখানে ‘আড্ডার’ ফর্ম নিয়ে ‘পোর্ট্রেট অব আ বেগার’ ‘মস্তানি’ দা ফুড—লাভার্স’ প্রত্যেক ছবির সামনে দাঁড়িয়ে আলোচনা করছেন, অন্যদের মন্তব্য শুনছেন, জিজ্ঞাসাবাদ করছেন অদিতি সরকার।
যে মেয়েটি এইমাত্র এসে পৌঁছোল, একটা বাটিকের র্যাপ অন আর ঝোলা গুজরাতি কাজ করা টপ পরে, যথেষ্ট উমনোঝুমনো হওয়া সত্ত্বেও সে বড় মুগ্ধকর। কীসে ঠিক যে তার এই লাবণ্যের চাবিকাঠি বোঝা শক্ত। চোখ কি? বড় বড় নয়, ভাসা ভাসা নয়, একটু বরং বসা—ই। চোখের চারপাশে একটা হালকা কালিমা। এই বয়সে এ—রকম কালিমা স্বাভাবিক নয়। হয় মেয়েটি রাত জাগে, তা নয়তো সর্বক্ষণ পড়াশোনা করে অত্যন্ত অস্বাস্থ্যকর পদ্ধতিতে, আর তা নয়তো চূড়ান্ত উচ্ছৃঙ্খলতা অনিয়মে সে নিমজ্জিত। আবার এ সবের কোনওটাই ঠিক না হতে পারে। অনেকের এ রকম থাকে। টিভি অ্যাডে চোখের কালি দূর করবার জন্য অনেক রকম অব্যর্থ মলমের খোঁজ পাওয়া যায়। কাগজেটাগজে কত রকমের সৌন্দর্য উপদেষ্টার কলাম বেরোয়। শশা কিংবা আলু চাকা চাকা করে কেটে চোখের ওপর চাপা দিয়ে আধঘণ্টা শুয়ে থাকুন। তারপরে গোলাপজলের মিশ্রিত ঠান্ডা জল দিয়ে চোখ ধুয়ে ফেলুন। দেখবেন জোরে ঝাপটা দেবেন না কিন্তু। চোখের ক্ষতি হবে। আলতো করে ধোন। বারবার করে। এ ছাড়া অ্যাপ্রিকট বেটে নিয়ে একের চার ভাগ মসুরডাল বাটার একটা মিশ্রণ তৈরি করুন। সামান্য এক ফোঁটার মতো ডক্টর্স ব্র্যান্ডি মিশিয়ে নিলে ভাল হয়। এই মিশ্রণটি তর্জনীর ডগা দিয়ে আলতো করে চোখের চারপাশে লাগিয়ে দিন ঘুমোবার ঠিক আগে। গোলাপ জলে তুলো ভিজিয়ে বন্ধ চোখের ওপর চাপা দিন। দেখবেন আবার যেন ঘুমিয়ে পড়বেন না। আধঘণ্টাটাক পরে ঘুম আসার আগে তুলোটি খুলে ফেলুন। ঠান্ডা জলে ভেজা তুলো কিংবা নরম কাপড় দিয়ে মুছে ফেলুন। এবার শুয়ে চোখ বন্ধ করে চোখের ওপর তর্জনী রেখে হালকা মাসাজ করুন। ক্লক—ওয়াইজ, অ্যান্টি ক্লক—ওয়াইজ।
মেয়েটি কি টিভি দেখে না? বিউটিশিয়ানদের কলাম, সুন্দর প্রসাধন—প্রজ্ঞাবতী অভিনেত্রীদের কলাম পড়ে না? আশ্চর্য। ওর কি পুরুষ নয়নের মুগ্ধ সম্পাতের লোভ নেই? আকাঙ্ক্ষাময় কর্কশ আঙুল ছুঁয়ে যাবে ত্বক, চোখের ওপর নেমে আসবে কামাতুর চুম্বন। এই যে নারীজীবনের নারীরূপের একমাত্র সার্থকতা তা কি মেয়েটি জানে না? সবাই জানিয়ে দিচ্ছে, তবু জানে না?
চারপাশে একবার চোখ বুলিয়ে নিল, খঞ্জন গতিতে। কয়েক পায়ে এগিয়ে এল জটলাটার পাশে। চাপা গলায় হিসহিস করে ডাকল—তনি! এই তনি!
প্রথমে শুনতে পায়নি, পরক্ষণে কোনও বন্ধুর ঠেলায় পেছন ফিরল তনিকা।
—আমার ডায়েরিটা দিয়ে দে।
এতজন মানুষ জমে আছে, তবু কোনও পরোয়া নেই।
—দিবি, না দিবি না?
—আমার কাছে নেই।
—নেই? লায়ার।—ঠিক একটা কেউটে সাপের মতো তনিকার ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ল মেয়েটি। চড় মারছে, খামচে দিচ্ছে, মাঝে মাঝে বলছে—নেই, না? দেখাচ্ছি কেমন নেই।
তনিকা প্রথমটা দু’হাত তুলে নিজেকে আড়াল করবার চেষ্টা করল। তারপর সে—ও পালটা মার দিতে থাকল।
হতচকিত ভিড়ের মধ্যে থেকে সুবীর আর শৌনক দু’জনকে ছাড়াবার প্রাণপণ চেষ্টা করছে, অদিতি এগিয়ে এসে কঠিন গলায় বলল—অনোহিতা, এটা মারামারি করবার জায়গা নয়।
এক হাতে তনিকার খোঁপা খুলে—যাওয়া চুলের গোছা। অনোহিতা অবাক হয়ে মুখ তুলে তাকাল। আর সামনে ঢোলা প্যান্টের ওপর সাদা চিকনের কাজ করা পাঞ্জাবি গায়ে, অফ—হোয়াইট রঙের এক দীর্ঘাঙ্গী মহিলা দাঁড়িয়ে, মাথায় এলোমেলো বাঙালি—বাদামি চুল, একটু পুরু ঠোঁটে গোলাপি মায়া, কালো চোখে শান্ত বিদ্যুৎ।
সে যদি নাগিনী হয় এ তা হলে রানি নাগিনী।
পেছনে সভাসদবৃন্দ।
পশ্চাৎপটে খুনে লাল দুটো হুলো, চোখে সবুজ আগুন। পেছনে বেগুনি—গোলাপি সপ্তপর্ণীতে নিরাসক্ত আত্মস্থতা, কটকটে সবুজ নিমে উচ্চকিত অট্টহাসি।
পেছল শ্যাওলায় পা হড়কে যায়। অপার বিস্ময়ের চোখে মহিলার দিকে তাকিয়ে পিছু হটতে লাগল মেয়ে। তারপর এক ঝটকায় পেছন ফিরে চলে গেল, দুলতে লাগল অবিন্যস্ত চুল মাঝ—পিঠ পর্যন্ত। ঝুলতে লাগল কাঁধের বাঁধনি—কাজের ঝোলা।