জেরুসালেম শহরে খৃস্টানদের পবিত্র স্থান
জেরুসালেম শহরে খৃস্টানদের ২টা প্রধান পবিত্র স্থান আছে। ১. বেথেলহেম গীর্জা ও ২. কেয়ামাহ গীর্জা। কেয়ামাহ গীর্জাকে ইংরেজীতে Holy Sepulchre বলে। বেথেলহেম গীর্জা ও হযরত ঈসা আলাইহিস সালাম পশ্চিম জেরুসালেমের বেথেলহেমে জন্মগ্রহণ করেন। বাইজেনটাইন সম্রাট কনস্ট্যান্টইন ৪র্থ শতাব্দীতে হযরত ঈসার জন্মস্থানে একটি গ্রীক অর্থোডক্স গীর্জ নির্মাণ করেন। বেথলেহেম একটি ছোট শহর। এটি জেরুসালেম থেকে (৫ মাইল) ৮ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থিত। এতে বর্তমানে ৩৫ হাজার লোক বাস করে। শহরের অধিবাসীরা স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার ব্যাপারে আগ্রহী। ১৯৮৭ সালে ফিলিস্তিনী গণ জাগরণ আন্দোলন শুরুর পর থেকে এ যাবত দীর্ঘ ৫ বছর, ২৫শে ডিসেম্বরের খৃস্টমাস দিবস পালন উপলক্ষে, গণ-জাগরণ আন্দোলনের সমর্থনে খৃস্টমাস প্যারেড ও সম্বর্ধনা মুলতবী রাখে। ফিলিস্তিনের খৃস্টানরা ফিলিস্তিনীদের আত্মনিয়ন্ত্রণাধিকার প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্যে স্বাধীনতা চায়, অথচ ফিলিস্তিনের বাইরে যায়নবাদী খৃস্টানরা ইহুদীদের জবরদখলের প্রতি সমর্থন জানায়। কেয়ামাহ গীর্জা ও এটি পূর্ব জেরুসালেমে মসজিদে আকসার কাছে অবস্থিত। খৃস্টানদের মতে, মাদ্রাসা উমারিয়া থেকে শুরু করে জালজালায় অবস্থিত কেয়ামাহ গীর্জা পর্যন্ত সড়কটি একটি দুঃখজনক ঘটনার সাক্ষী। যখন ইহুদীরা হযরত ঈসা আলাইহিস সালাম-কে শূলে চড়িয়ে মারার সিদ্ধান্ত নিল, তখন তিনি নিজ পিঠে শূলের কাঠ বহন করে ঐ রাস্তা দিয়ে হেঁটে যান। ঐ রাস্তার ১৪টি পর্যায় বা মনযিল আছে। ৯টি গীর্জার বাইরে এবং ৫টি গীর্জার ভেতর। খৃস্টানরা হযরত ঈসার অনুসরণে ঐ রাস্তা দিয়ে ধর্মীয় কাফেলায় অশগ্রহণ করে চলতে থাকে। প্রতিটি পর্যায়ে যাত্রাবিরতি করে প্রার্থনা জানায়। কেয়ামাহ গীর্জা জেরুসালেমের সবচাইতে বড় গীর্জা। এতে একসাথে ৮ হাজার লোকের সংকুলান হয়। গীর্জাটি বহু ভাঙা-গড়ার পর বর্তমান পর্যায়ে পৌঁছেছে। এর ভেতর বহু নকশা ও ডিজাইন আছে। এর ভেতর অনেক জায়গায় গাধার উপর আরোহণরত অবস্থায় হযরত ঈসার ছবি এবং হযরত ইবরাহীম, ইসহাক ও ইয়াকুবের ছবিও রয়েছে। পুরাতন শহরের দেয়ালের ভেতর ও বাইরে খৃস্টানদের আরো অনেক গীর্জা আছে। জেরুসালেম খৃস্টানদের কাছে আনন্দ ও বেদনা- এই উভয়েরই স্মারক।
.