জেরুসালেম শহরের গুরুত্ব
এই শহরে মসজিদে আকসার মত পবিত্র স্থান রয়েছে। এটি আম্বিয়ায়ে কিরামের অবস্থান ও ইবাদতের স্থান এবং শত-সহস্র আল্লাহ-প্রেমিকের ভ্রমণকেন্দ্র। আসমানের কত অগণিত ফেরেশতা এখানে এসেছেন। এক হাদীস অনুযায়ী এখানেই ময়দানে হাশর ও নশর (উত্থান – বিস্তার) হবে। এই শহরের উপর দিয়ে মহানবী হযরত মুহাম্মদের (সাঃ) মে ’ রাজ হয়েছে। মসজিদে আকসার মধ্যে সুলাইমান আলাইহিস সালাম এর আসন ও দাউদ আলাইহিস সালাম এর মেহরাব রয়েছে। এই শহরে রয়েছে আইনে সালওয়ান’ বা সালওয়ান পানির নালা। এই নালার পানিকে হাউজে কাউসারের পানির মত মর্যাদাবান মনে করা হয়। এখানে রয়েছে মেহরাবে মরিয়ম। জেরুসালেম শহর পৃথিবীর একটি সর্ববৃহৎ পর্যটনকেন্দ্র। এটাকে একটি বহুজাতিক শহরও বলা যায়। মুসলমান, খৃস্টান ও ইহুদীদের ধর্মীয় উপাসনালয়ের কারণে এখানে বহিরাগত বহু পর্যটক ও তীর্থযাত্রীর আগমন ঘটে। হযরত ঈসার জন্মস্থানও এই জেরুসালেম শহরে। এখানে মসজিদে
আকসা ব্যতীত আরো ৩৫টি মসজিদ আছে। মসজিদে আকসার দেয়ালের বাইরে পূর্বদিকে বাবুর রাহমাহ’ সংলগ্ন রয়েছে দুইটি প্রখ্যাত মুসলিম গোরস্তান। এই গোরস্তানে শায়িত আছেন দুইজন প্রখ্যাত সাহাবী। তারা হলেন, উবাদাহ ইবন সামেত বদরী। তিনি ৬৫৩ খৃস্টাব্দে ইন্তিকাল করেন। অন্যজন হচ্ছেন, শাদ্দাদ বিন আউস- আনসারী। তিনি ৬৭৭ খৃস্টাব্দে ইন্তিকাল করেন। পবিত্র কুরআনে জেরুসালেম শহরকে বরকতময় ও পবিত্র ঘোষণা দিয়ে আল্লাহ বলেন- অর্থাৎ আমরা মসজিদে আকসার আশপাশকে বরকতপূর্ণ করে দিয়েছি। এখানে মসজিদে আকসার ‘আশপাশ’ বলতে জেরুসালেম শহরকেই বুঝানো হয়েছে। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, জেরুসালেম শহরের সেই বরকতপূর্ণ জিনিসগুলো কি কি? এই প্রশ্নের উত্তরে বলা যায়, জেরুসালেম শহরের নদীনালা, মিষ্টি পানি ও ফল ফলাদি হচ্ছে সেই বরকতময় জিনিস। এছাড়াও যুগ যুগ ধরে ইতিহাসের সিড়ি বেয়ে যেখানে বহু নবী-রাসূল ও আউলিয়া শায়িত আছেন, তাদের মত নেককার লোকদের জীবন-মৃত্যুর স্থান অবশ্যই বরকতময়।” অন্য এক আয়াতে ঐ বরকতের প্রতি ইঙ্গিত দিয়ে আল্লাহ বলেছেন,
আমরা যখন তাদেরকে আদেশ দিলাম, এই জনপদে প্রবেশ কর এবং সেখানকার যেখানে ইচ্ছা সেখানে পর্যাপ্ত খাও ‘। এই আয়াতে জেরুসালেম শহরে পর্যাপ্ত খাওয়া-পরার নির্দেশ থেকে বুঝা যায়, তা আল্লাহর অফুরন্ত নেয়ামতে বরকতপূর্ণ। মানুষের জীবন ধারণের জন্য খাদ্য ও পানীয় বেশী প্রয়োজন। জেরুসালেম শহরের অনুকূল আবহাওয়া কৃষিকাজের উপযোগী। এছাড়াও পর্যাপ্ত মিষ্টি পানি থাকায় খাদ্যসামগ্রীর অভাবের কোন প্রশ্নই ওঠে না। খাদ্য ও পানীয়ের পর্যাপ্ততার জন্য এই শহরটি বরকতময় হয়েছে।
.