1 of 3

ঘুঁটে পোড়ে গোবর হাসে

ঘুঁটে পোড়ে গোবর হাসে

জ্বালানি হিসেবে সুপ্রাচীনকাল থেকেই আমাদের দেশে গরুর গোবরের ব্যবহার চালু আছে। শহরাঞ্চলে ঘুঁটের ব্যবহার আজ তেমন পরিচিত না হলেও এখনো গ্রামাঞ্চলে সীমিত আকারে গোবর দিয়ে তৈরি ঘুঁটে জ্বালানি হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে থাকে।

সাধারণত গরুর গোবর (গূথ বা গোবিষ্ঠা বা গোবিট্ বা গোময়) দিয়ে এর সাথে কখনো কাঠ কয়লার গুঁড়া বা ধানের তুষ মিশিয়ে গোল চাকতি তৈরি করা হয় এবং সাধারণত ঘরের দেয়াল বা প্রাচীরে লাগিয়ে শুকানো হয়। এই চাকতি বা গোবরের শুকনো চাপড়ি জ্বালানিরূপে ব্যবহৃত হয়। অবশ্য গরুর শুকনো গোবর মাঠে শুকিয়ে যে আকারে পড়ে থাকে তাও ঘুঁটে নামে পরিচিত। প্রাচীনকালে মাঠ থেকে শুকনো ঘুঁটে সংগ্রহ করে অনেকেই অর্থ উপার্জন করতো। সাধারণত স্ত্রীলোকেরা এই কাজ করায় তাদের বলা হতো— ঘুঁটেকুড়ানি। আমাদের উপকথা, রূপকথায় ঘুঁটেকুড়ানি নামের প্রয়োগ অপ্রতুল নয়।

আগেকার দিনে গরুর গোবর ঘরদোর লেপা এবং ঘুঁটে বা দলা (দলিয়া) বানানো ছাড়া আর তেমন উল্লেখযোগ্য কাজে ব্যবহৃত হতো না। গোবরের পরিণামই ছিল আগুনে পোড়ার জন্য প্রস্তুত থাকা। সে কারণে অমোঘ নিয়তি হলো গোবর থেকেই ঘুঁটে হবে এবং সে ঘুঁটে জ্বালানি হয়ে পুড়বে।

অনেক ব্যক্তি অন্যের দুঃখ-কষ্ট বা জ্বালা-যন্ত্রণা দেখে সাময়িক আনন্দ প্রকাশ করলেও অবশেষে তাকেও যে ঐ ধরনের যন্ত্রণা পেতে হবে— একথা তাৎক্ষণিকভাবে চিন্তা করে না। কিন্তু ‘চক্রবৎ পরিবর্তন্তে দুঃখানি চ সুখানি চ’–দুঃখ ও সুখ চাকার মতো মানুষের জীবনে ঘুরছে প্রতিনিয়ত। তাই অন্যের কষ্ট দেখে আনন্দ প্রকাশ করলে সে ক্ষেত্রে আলোচ্য প্রবাদবাক্যটি প্রযুক্ত হয়ে থাকে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *