ক্রিশ্চিয়ান যায়নবাদ
ক্রিশ্চিয়ান যায়নবাদ হচ্ছে খৃস্টবাদের ক্রমবর্ধমান একটি মারাত্মক ধারা। উনিশ শতকে আমেরিকান নাগরিক সাইরাস স্কোফিল্ড বাইবেলে ঐতিহাসিক ঘটনাবলীর যে ব্যাখ্যা করেন, তা থেকেই স্কোফিল্ড বাইবেল, আজকের যুগের সর্বাধিক জনপ্রিয় বাইবেল, যা সর্বত্র রেফারেন্স বাইবেল হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। স্কোফিল্ড তার ব্যাখ্যায় বলেছেন, যীশুখৃস্ট অর্থাৎ হযরত ঈসা আলাইহিস সালাম সে পর্যন্ত পৃথিবীতে পুনরায় প্রত্যাবর্তন করবেন না, যে পর্যন্ত না আগে কিছু ঘটনা সংঘটিত হয়। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য বিষয়গুলো হচ্ছে, জেরুসালেমে ইহুদীদের প্রত্যাবর্তন ও এর নিয়ন্ত্রণ গ্রহণ, হাইকালে সুলাইমানী পুনঃনির্মাণ এবং সবশেষে আরমাগেন্দন (হারমাজদু) যুদ্ধে লিপ্ত হওয়া। আরমাগেন্দন ধর্মততে বিশ্বাসী অধিকাংশ লোক, বাইবেলের স্কোফিল্ড ব্যাখ্যা অনুযায়ী মনে করে, ফিলিস্তিন হচ্ছে, ইহুদীদের জন্য আল্লাহর নির্বাচিত ভূমি। আমেরিকা, বৃটেন, ইটালীসহ খৃস্টান বিশ্বের বহু লোক স্কোফি বাইবেল অনুসরণ করে। একমাত্র আমেরিকার ১ কোটি থেকে ৪ কোটি খৃস্টান স্কোফিক্ত বাইবেলের অনুসারী। তাদের মতে, ইসরাইল কি করে তা নিয়ে মাথা ব্যথার কিছু নেই। ঈশ্বর চায় বলেই ইসরাইল ঐ সকল ঘটনা ঘটাচ্ছে। তাদের মতে, অন্যান্য লোকদেরও উচিত, লেবাননে ইসরাইলী আগ্রাসন এবং এর ফলে ১ লাখ লিলিস্তিনীর হতাহত হওয়া, ইরাকের পারমাণবিক চুল্লীর উপর ইসরাইলের বোমা বর্ষণ, ইসরাইল কর্তৃক ফিলিস্তিনীদের হাড়গোড় ভেঙে বিকল করে দেয়া, ফিলিস্তিনী শিশুদেরকে গুলী করে হত্যা করা, তাদের বাড়ী-ঘর ভেঙে দেয়া এবং ৩ হাজার বছরের পুরাতন আবাসভূমি ফিলিস্তিন থেকে তাদেরকে বহিষ্কার করা সহ ইসরাইলের এ জাতীয় সকল মানবতা-বিরোধী কাজের প্রতি সমর্থন জানানো। তাই দেখা যায়, বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ক্রিশ্চিয়ান যায়নবাদীরা বিভিন্ন দেশে ইসরাইলী স্বার্থের অনুকূল রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ভূমিকা পালন করে।
ইসরাইল ও ইহুদীদের কোন অন্যায় নেই। অন্যায় হচ্ছে অ-ইহুদীদের। ইহুদীরা ঈশ্বরের প্রিয় জাতি, আর অন্যরা অপ্রিয় জাতি। যাই হোক, ইসরাইলের প্রতি তথাকথিত ধর্মীয় আবেগ-অনুভূতির কারণে আমেরিকাসহ খৃস্টান বিশ্বের বিরাট জনগোষ্ঠী ইসরাইলের প্রতি যে অযৌক্তিক ও অবৈজ্ঞানিক সমর্থন জানাচ্ছে, তা বলাই বাহুল্য। কেননা, একজন লেখকের লেখায় মাত্রাতিরিক্ত উৎসাহিত হয়ে সেটাকে ধর্মের অংশ মনে করা স্বয়ং সেই ধর্মেরই দুর্বলতা এবং অন্তঃসারশূন্যতার প্রমাণ। মূল ধর্মগ্রন্থে এ জাতীয় সমর্থনের কথা থাকলে হয়তো সেটাকে একটা যুক্তি হিসেবে দাঁড় করানো যেত। কিন্তু স্কোফিল্ডের মনগড়া ব্যাখ্যায় কিভাবে তথাকথিত সভ্য ও শিক্ষিত খৃস্টান বিশ্ব ইহুদী ইসরাইলীদের সকল অন্যায়কে ন্যায় বলে মেনে নিচ্ছে তা চিন্তা করলেও গা শিউরে উঠে। তাও ১৯ শতকের মাথায় এসে ঐ ব্যাখ্যা দেয়া হয়েছে। গ্রেস হালসেল লিখেছেন, ক্রিশ্চিয়ান যায়নবাদ শুধু আরব ও ফিলিস্তিনী জনগণের জন্যই হুমকি নয়, বরং আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের অস্তিত্বের জন্যও হুমকিস্বরূপ। কেননা, ইসরাইল এমন এক দস্যু জাতি যাদের দ্বারা আজ আমরা পরিচালিত। যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক কোন নীতি নেই; ইসরাইল যা বলে এ বিষয়ে তাই হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের নীতি। গ্রেস হালসেল তার বইতে আরো বলেছেন, আমি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মৌলবাদী নামে খ্যাত খৃস্টানসহ আরো বহু খৃস্টানকে দেখেছি, তারা ইহুদীদের হুমকির ব্যাপারে সচেতন। এই খৃস্টানরা মনে করে, যীশুখৃস্ট ছিলেন মানবতার বাহক, ঈশ্বরের শান্তির বাণী আনয়নকারী, ভ্রাতৃত্ব, ভালবাসা ও সম্প্রীতির প্রবক্তা। তাই ইসরাইলের হত্যা, নির্যাতন, বহিষ্কার, বাড়ীঘর উচ্ছেদসহ যাবতীয় অমানবিক ও বর্বর তৎপরতাকে কিছুতেই সমর্থন করা যায় না। কেননা, তা যীশুর শিক্ষা-বিরোধী। আগেই পরিষ্কার হয়ে গেছে, ইহুদীদের সাথে খৃস্টানরাও মসজিদে আকসা এবং সাখরা ধ্বংস করার অভিন্ন ষড়যন্ত্রে লিপ্ত এবং সেই স্থানে হাইকাল তৈরির স্বপ্নে বিভোর রয়েছে। এখন আমরা ঐ সকল খৃস্টান সংস্থাসমূহ সম্পর্কে আলোচনা করবো।
১. গীর্জা প্রথমতঃ গীর্জার ভূমিকা সম্পর্কে আলোচনা করা যাক। আমেরিকার ইহুদীরা নিজেদের পক্ষে জনমত সৃষ্টির উদ্দেশ্যে খৃস্টান গীর্জাকে সহায়ক ক্ষেত্র হিসেবে বিবেচনা করে। গীর্জা রেডিও, টেলিভিশন, পত্র-পত্রিকা ও নিজস্ব প্রচারপত্রের মাধ্যমে কোটি কোটি লোকের কাছে বাণী পৌছায়। তাছাড়াও গীর্জার প্রভাবাধীন বিরাট সংখ্যক স্কুল রয়েছে। পাশ্চাত্যে ধর্মনিরপেক্ষ সমাজ ব্যবস্থা চালু থাকা সত্ত্বেও সেখানে যতটুকু নৈতিক ও মানবিক মূল্যবোেধ টিকে আছে, তা গীর্জারই অবদান। আমেরিকার মত বৃটেনের গীর্জারও একই অবস্থা। তারা হচ্ছে প্রটেস্ট্যান্ট খৃস্টান। তারা তাওরাতকে মূল কিতাব এবং ইঞ্জিলকে তার শাখা বলে মনে করে। তারাও ইহুদীদের স্বার্থে কাজ করে থাকে। অপরদিকে, ইটালীর ক্যাথলিক গীর্জার অনুসারীরাও ইহুদীদের দাবীর সমর্থক। কেননা, ইটালীর ক্যাথলিক পোপ ইসরাইলের শ্রমিক দলীয় প্রধান শিমুন পেরেজের সাথে আলোচনার পর ইহুদীদের প্রতি সমর্থন ঘোষণা করেছে। পোপ আলোচনায় নিশ্চিত হয়েছে যে, ইহুদীরা হযরত ঈসা আলাইহিস সালাম-কে হত্যা করেনি। এই হচ্ছে তথাকথিত ইহুদী-খৃস্টান সহযোগিতার ভিত্তি।
২. যায়নবাদী ৰাইবেলিস্ট এরা হচ্ছে, এংলিক্যান গীর্জার অনুসারী ও নিষ্ঠাবান যীশুপহী। তাদের মতে, ধর্মের প্রচার-প্রসার জরুরী। তথ্য মাধ্যমগুলো তাদেরকে মৌলবাদী খৃস্টান বলে আখ্যায়িত করে। আমেরিকায় খৃস্টান ধর্মের পুনর্জাগরণের জন্য তারা বিরাট ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে। তারা আমেরিকার সবচাইতে বেশী শক্তিশালী খৃষ্টান সম্প্রদায়। বাইবেলিস্টদের মতে, মাজদু দিবসের যুদ্ধের সাথে হাইকাল নির্মাণের ঘটনা জড়িত। তারপর ইঞ্জিলের ভবিষ্যদ্বাণী অনুযায়ী মাসীহর আগমন ঘটবে। তাই এ সম্প্রদায়টি ইহুদীদের মসজিদে আকসা ভাঙার পরিকল্পনাকে সমর্থন জানায়। তাদের আশংকা হল, এর ফলে ৩য় বিশ্বযুদ্ধ ছড়িয়ে পড়তে পারে। মার্কিন লেখিকা গ্রেস হালসেলের মতে, এই সম্প্রদায়ের সংখ্যা হল ৮৫ মিলিয়ন বা সাড়ে ৮ কোটি। বাজারে বিক্রীত বইয়ের মধ্যে তাদের বই সংখ্যা হচ্ছে এক তৃতীয়াংশ এবং তাদের রয়েছে ১৩শ’ রেডিও স্টেশন। যুক্তরাষ্ট্রের বেসরকারী স্কুলের মধ্যে তাদের স্কুলসমূহের ছাত্রসংখ্যা সর্বাধিক। তারা পবিত্র স্থান দেখার আওতায় জেরুসালেমে ধর্মীয় সফরের আয়োজন করে। বাইবেলিস্টদের চিন্তা-ধারার অনুসারী আরো আড়াইশ’ সংস্থা আছে যারা যুক্তরাষ্ট্রে ইহুদীদের সহযোগিতায় মুসলমানদের বিরুদ্ধে প্রকাশ্য যুদ্ধ করে যাচ্ছে। এদের মধ্যকার কোন কোন সংস্থা ৩য় হাইকাল নির্মাণে সরাসরি অংশগ্রহণের উদ্দেশ্যে অধিকৃত আরব এলাকায় নিজেদের শাখা কায়েম করেছে। ইহুদী-খৃস্টান মৈত্রীর কারণে কিছুসংখ্যক খৃস্টান ব্যক্তিত্ব ইহুদীদের স্বার্থে কাধে কাধ মিলিয়ে একসাথে কাজ করে যাচ্ছে। তারা হচ্ছে ?
১. ম্যাটন জিম ডোলসঃ তিনি নিজে প্রকাশ্যে বলে বেড়ান যে, ইঞ্জিল ইহুদীদের কিতাব। তিনি দাউদ ও রেডক্রসের তারকা খচিত আংটি পরেন এবং কাঁধে আমেরিকা ও ইসরাইলের প্রতীক খচিত পতাকা বহন করেন। তিনি আরো বলেন, আমি খৃস্টান-ইহুদী এবং আমি আমেরিকা ও ইসরাইলের সাথে আছি।
২. পাদ্রী জিমি সুগার্টঃ তিনি একজন প্রধান বাইবেলিস্ট সম্প্রদায়ভুক্ত পাদ্রী। তিনি অনলবর্ষী ও প্রভাবশীল বক্তা। বক্তৃতায় তিনি মুহূর্তের মধ্যে লোকদেরকে হাসাতে ও কাঁদাতে পারেন। তিনি টেলিভিশনে খৃস্টান মিশনারী সম্রাট বলে পরিচিত। তিনি নিজের বাগ্মিতা ও দক্ষতার কারণে বিশ্বব্যাপী কোটি কোটি টিভি দর্শকের অন্তরে নিজ সাম্রাজ্য ও আধিপত্য বিস্তার করতে সক্ষম হয়েছেন। তাই তিনি বছরে কমপক্ষে ১৫ কোটি ডলার চাঁদা সংগ্রহ করতে পারেন। তাঁর ধারণা হচ্ছে, মাজনু যুদ্ধ আসন্ন। যত শান্তি চুক্তিই সম্পাদন করা হোক না কেন, তাতে কোন লাভ নেই এবং আফ্রিকা, ইউরোপ ও মধ্য আমেরিকায় শান্তি আসতে পারে না। মধ্যপ্রাচের অবস্থা আরো খারাপ রূপ ধারণ করবে। মসজিদে আকসার স্থলে হাইকাল নির্মাণ প্রয়োজন যা হযরত মাসীহর আগনের পথ পরিষ্কার করবে। জিমি সুগার্ট দক্ষিণ আফ্রিকার প্রখ্যাত মুসলিম চিন্তাবিদ আহমদ দীদাতের সাথে এক বিতর্কে অংশগ্রহণ করে পরাজিত হয়েছিলেন।
৩. পদার্থ বিজ্ঞানী লাগার্ট ডলফিন ও ইনস্টিটিউটের বিভাগীয় প্রধান। তিনি এমন এক এক্সরে মেশিন আবিষ্কার করেছেন যার মাধ্যমে মাটির নীচে লুকিয়ে থাকা জিনিসের ছবি সংগ্রহ করা যায়। তিনি তার এই আবিষ্কারকে ইহুদীদের স্বার্থে ব্যবহার করছেন। তিনি স্টানলি গোল্ড ফোট নামক আরেকজন বিজ্ঞানীর সমভিব্যাহারে মসজিদে আকসা ও সাখরার উপর দিয়ে উড়ে যান এবং ছবি সংগ্রহ করেন। উদ্দেশ্য হল, মসজিদে আকসা ও সাখরা হাইকালে সুলাইমানীর উপর প্রতিষ্ঠিত, এই বিষয়টি প্রমাণ করা।
৩. জেরুসালেমে অবস্থিত আন্তর্জাতিক খৃস্টান দূতাবাস বাইবেলিস্টরা ১৯৮০ সালের সেপ্টেম্বর মাসে জেরুসালেমে ঐ দূতাবাস প্রতিষ্ঠা করে। দূতাবাস প্রতিষ্ঠার মূল উদ্দেশ্য হল, ইসলাম ও মুসলিমের বিরোধিতা করা। প্রতিষ্ঠার পরপরই দূতাবাস থেকে প্রচারিত এক ইশতাহারে বলা হয়, ইসলামের স্পিরিটের বিরুদ্ধে তোমাদের আহ্বান দরকার। তারপর আরো বলা হয় “আরব ও মুসলিম বিশ্বে রূহানী ইবাদতের জন্য ইসলামের খারাপ স্পিরিটই দায়ী। এছাড়াও গোটা বিশ্বের সর্বত্র এবং বিশেষ করে মধ্যপ্রাচ্যে ইসরাইল-বিরোধী ভূমিকার জন্য ইসলামের সেই রূহানিয়াতই দায়ী। ইসলাম আল্লাহর প্রতি বিদ্রুপ করে। কেননা, সবচাইতে পবিত্র পাহাড় সোরিয়ায় তাদের এই মসজিদ অবস্থিত। এটা হাইকালের পবিত্র স্থানে একটি বিরাট লজ্জা ও অপমানের বিষয়।” আমেরিকার বিভিন্ন রাজ্যে উক্ত দূতাবাসের ১৫টি কনসুলেট আছে। সেগুলো সর্বদা ইসরাইলের স্বার্থে কাজ করছে। ১৯৮০ সালে জেরুসালেম পোস্ট পত্রিকা এক নিবন্ধে লিখেছে, কনসুলেটগুলো মার্কিন পত্রিকা, রেডিও, টেলিভিশন, ফিল্ম, মিটিং এবং ইসরাইলের প্রতি ভালবাসার নৈশ অনুষ্ঠানে ইসরাইলের পক্ষে প্রচারণা চালায়।
৪. সংখ্যাগরিষ্ঠ নৈতিক সংস্থা। ১৯৭৯ সালে পাদ্রী জিরী পলওয়েল এই ধর্মীয় ও রাজনৈতিক সংস্থাটি প্রতিষ্ঠা করেন। এই সংস্থা বিশ্বের ৬শ’ রেডিও-টেলিভিশন স্টেশনের মাধ্যমে ইঞ্জিলের ঘন্টা’ শিরোনামে দৈনিক ১ ঘন্টা প্রোগ্রাম প্রচার করে। সংস্থার একটি সাময়িকী আছে এর নাম হচ্ছে, খৃস্টান ভয়েস। মিঃ পলওয়েল তার সংস্থার মাধ্যমে পবিত্র স্থানে সফরের উদ্দেশ্যে মাজদু উপত্যকাসহ তাওরাতে বর্ণিত অন্যান্য স্থানগুলো ভ্রমণের কর্মসূচী হাতে নেন। এক জনমত জরীপে জানা যায়, মার্কিন কংগ্রেসের বাইরে পালওয়েল সর্বাধিক আশ্চর্যজনক ব্যক্তি। তিনি ইসরাইলের নেতৃবৃন্দের ব্যক্তিগত বন্ধু। বিশেষ করে বেগিন ও এসহাক শামীরের বিশেষ বন্ধু। তার একটি মন্তব্য হল, ইসরাইল নামক এই ছোট দেশটির উপর রাশিয়া তার আরব মিত্রদের সহযোগিতায় পুনরায় আক্রমণ করবে।’ হাযকিয়াল নামক অন্য এক পাদ্রী ভবিষ্যদ্বাণী করেছেন যে, রাশিয়া পরাজিত হবে, আল্লাহ আবারও ইসরাইলকে রক্ষা করবেন।
৫. ধর্মীয় গোলটেবিল সংস্থা। ডানপন্থী খৃস্টানদের কর্মসূচী সমন্বয়ের উদ্দেশ্যে ১৯৭৯ সালে এই সংস্থাটি প্রতিষ্ঠা করা হয়। অনেকগুলো বড় বড় সংস্থা এর সাথে যুক্ত আছে। এদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে, পবিত্র কিতাবের অনুবাদকগণ এবং মার্কিন গীর্জা। সংস্থা। গোলটেবিল সংস্থার কাজ অত্যন্ত গোপন। এর কাছে বিশ্বের হাজার হাজার মানুষের গোপন ফাইল আছে। ইহুদীদের প্রতি সমর্থন দেয়াকে তারা ধর্মীয় দায়িত্ব মনে করে।
৬. হাইকাল পাহাড় সংস্থা টেরি রিজেনিহোভার তাওরাতে বর্ণিত ৩য় হাইকাল পুনঃনির্মাণ সংক্রান্ত ভবিষ্যদ্বাণীর বাস্তবায়নের জন্য এই সংস্থাটি কায়েম করেন। ইসরাইলের দাফার পত্রিকা ১৯৮৩ সালে এক নিবন্ধে লিখেছে, হাইকাল পাহাড় সংস্থা জেরুসালেমের মুসলিম ওয়াকফ বিভাগের সম্পত্তি কিনে সেখানে ইহুদী বসতি স্থাপনের উদ্দেশ্যে সাহায্য করার জন্য লক্ষ লক্ষ ডলার চাঁদা সগ্রহ করেছে। উক্ত অর্থ দ্বারা ৩য় হাইকাল নির্মাণেও সহযোগিতা করা হবে। ১৯৮৩ সালে মসজিদে আকসার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রকারী ইহুদীদেরকে আটক করার প্রতিবাদ জানিয়েছেন রিজেন হোভার। তিনি তাদের আত্মরক্ষার জন্য মামলা পরিচালনার খরচ পাঠিয়েছেন। রিজেন হোভার একজন বড় ধনী এবং জমিন ও পেট্রোল ব্যবসায়ী। তিনি ইহুদী সংস্থা ‘হাইকাল মোকাদ্দাসকে’ বিরাট অংকের সাহায্য দিয়েছেন। তাকে একবার প্রশ্ন করা হয়েছিল, মসজিদে আকসা কি হাইকাল তৈরির পথে বাধা? তিনি উত্তরে বলেন, মসজিদে আকসা কোন গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নয়।
.