কড়ায় গণ্ডায়
কড়ায় গণ্ডায় অর্থ অতি নিপুণ ও সূক্ষ্ম হিসেবের মাধ্যমে পুরোপুরি পাওনা আদায়। হিসেবের সূক্ষ্মতাকে কড়াক্রান্তি হিসেব বলেও উল্লেখ করা হয়ে থাকে এদেশে এখনো। যদিও কড়া, গণ্ডা কিংবা ক্রান্তির হিসেব জমির পরিমাপে ব্যবহৃত হতো, ঠিক তেমনি মুদ্রা হিসেবেও এ হিসেব ব্যবহারের নমুনা এদেশের অতীতে রয়েছে।
আমাদের দেশে গত শতাব্দীর পঞ্চাশ-ষাট দশকেও আমরা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শতকিয়ার পাশাপাশি কড়াকিয়া, গণ্ডাকিয়া, বুড়িকিয়া ইত্যাদি হিসেবের সাথে সুপরিচিত ছিলাম। আজ সে হিসেব হারিয়ে গেলেও অতীত অনুসন্ধানে ব্রতী মানুষের পক্ষে সে হিসেব না জানা দুর্ভাগ্যজনক বলে মনে হয়। ইতিহাসের এমন পণ্ডিতও এদেশে থাকতে পারেন যারা এসব হিসেব জানেন না অথচ এই বিষয়েই গবেষণা করেন।
সংক্ষেপে ৩ ক্রান্তিতে ১ কড়া বা কড়ি। কড়া বা কড়ির আরেক নাম কপর্দক বা বরাটক। ৪ কড়ায় ১ গণ্ডা। ২০ গণ্ডায় ১ পণ বা ১ আনা। আবার ১৬ পণ বা ৩২০ গণ্ডা বা ১২৮০ কড়াতে ১ কাহন বা ১ টাকা। এখানে আর বিস্তারিত আলোচনা না করে হিসেবের সূক্ষ্ম বা ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র এককের পরিচিতি সংক্ষেপে বলা হলো। এই হিসেবে কড়ায় গণ্ডায় কথাটি এদেশে চালু আছে বলে মনে করা যায়। কড়াক্রান্তি হিসেবের কথাও এসেছে প্রাচীনকালে প্রচলিত মুদ্রাব্যবস্থা ও পারিমাপ থেকে।
পাঠকের সুবিধার্থে হিসেবটি আবার দেয়া হলো-
৩ ক্রান্তি = ১ কড়া
১২ ক্রান্তি = 4 কড়া = ১ গণ্ডা
৫ গণ্ডা = ২০ কড়া = ১ বুড়ি = ১ পয়সা
৪ পয়সা = ৪ বুড়ি = ২০ গণ্ডা = ৮০ কড়া = ১ আনা
১৬ আনা = ৬৪ বুড়ি = ৬৪ পয়সা = ৩২০ গণ্ডা = ১২৮০ কড়া = ১ টাকা
৩ পাই = ১ পয়সা
১২ পাই = ৪ পয়সা = ১ আনা