ওঝার ব্যাটা বনগরু
পণ্ডিতের মূর্খ পুত্র সম্পর্কে এই প্রবাদ ব্যবহৃত হয়ে থাকে। ওঝা শব্দটি মূলত এসেছে সংস্কৃত উপাধ্যায় থেকে (উপাধ্যায় > উবজ্ঝাঅ > ওঝাঅ > ওঝা)। উপাধ্যায় হলেন শিক্ষক, অধ্যাপক, উপদেষ্টা কিংবা কোনো বিশেষ বিষয়ে পারদর্শী ও প্রাজ্ঞ পণ্ডিত। উপাধ্যায় এর প্রাকৃত রূপ উবজ্ঝাঅ। তা থেকে এসেছে ওঝা শব্দ। মৈথিলী ব্রাহ্মণদের মধ্যে বর্তমানে এ পদবি আছে। তবে প্রাচীন ব্রাহ্মণদের মধ্যে ওঝা পদবির ব্যবহার ব্যাপকভাবে প্রচলিত ছিল বলে আমরা জানি। আবার সাপের বিষ নামানো চিকিৎসক বা ভূত তাড়ানোর চিকিৎসক হিসেবেও ওঝারা এদেশে পরিচিত। অনেকক্ষেত্রে ওঝাকে রোজা নামেও আখ্যায়িত করা হয়। যাহোক, আমাদের আলোচ্য প্রবাদের ক্ষেত্রে ওঝা শব্দে পণ্ডিত বা জ্ঞানীকেই বুঝানো হয়েছে।
বনগরু দেশজ শব্দ। এর অর্থ গবয় (সংস্কৃত) বা গলকম্বলহীন গরুর মতো এক জাতীয় পশু। একশ্রেণীর বানরকেও গবয় বলা হয়। গয়াল নামেও বনগরুর পরিচিতি পাই আমরা যা বুনো মহিষ বা বুনো ষাঁড়ের সাথে তুলনীয়। স্বাভাবিকভাবেই বন্য গয়াল মূর্খশ্রেণীর প্রাণী হিসেবে বিবেচিত।
কোনো জ্ঞানী মানুষের ছেলে যদি মূর্খ হয় তবে সমাজ তাকে বনগরুর সাথে তুলনা করে বলে—ওঝার ব্যাটা বনগরু।