| ৭ | কুমুদিনী
আমার এই প্রবাস আজ সাঙ্গ হবে। ওরা আজ আমাকে নিতে আসবে।
আমি সুটকেস গুছিয়ে ফেলেছি।
সানড্রা, লিন্ডা আর সুজানও একে একে ঘরে ফিরবে।
সুজানকে ওর স্বামী নিতে আসবে এই রবিবারেই। লিন্ডা সামনের সপ্তাহে ওর মা-বাবার কাছে ফিরবে। শুধু সানড্রা ফিরে যাচ্ছে একলা ঘরে—ওর মেয়ে এসে ওকে নিয়ে যাবে, তারপর বাড়ি পৌঁছে দেবে। মেয়ে তো থাকে না এ-দেশে। মেয়ে ফিরে যাবে তার নিজের কর্মস্থলে। সানড্রার জন্যেই আমার ভাবনা।
এখানে আমাদের অনেকদিন কাটল। হাসপাতালে একরকম ছিলুম। পরনির্ভর। ওষুধে, চিকিৎসায়, নিয়মে। ঈশ্বরের করুণার শেষ নেই, তাই আজ রোগ নিরাময় হয়ে আমরা এসেছি এ শুশ্রূষালয়ে, নিজেরা নিজেদের ভার নিতে শিখছি নতুন করে। ওষুধ খাওয়া, রান্নাবান্না করে নেওয়া, বিছানা করা, ঘর পরিষ্কার করা, নিত্য নৈমিত্তিক সাংসারিক কাজকর্মের অভেসগুলো আবার ফিরে আসছে আমাদের। বাড়ি ফিরে যাতে জীবনযাপনে অসুবিধে না হয়। মুদির দোকানেও যাচ্ছি, হিসেব করে জিনিসপত্তর কিনছি। নতুন করে পুরোনো জীবনে ফিরিয়ে দিচ্ছেন এঁরা আমাদের। সুজানকে তো গাড়ি চালানোও অভ্যেস করানো হচ্ছে—ও যেখানে থাকে, গাড়ি না চালালে ওর একদিনও চলবে না।
আমাদের মধ্যে আমিই বয়েসে জ্যেষ্ঠতমা এবং একমাত্র বিদেশি। কিন্তু এদের সযত্ন চিকিৎসায় আমি আবার সুস্থ হয়ে উঠেছি। মনেরও তো অসুখবিসুখ করতেই পারে, শরীরের মতোই। কিন্তু দেশে থাকলে আমাকে কি এভাবে—? কী জানি? মনের অসুখ হওয়া মানেই ওখানে পাগল হওয়া—তার চিকিৎসা মানেই পাগলাগারদ। এই ভয়েই মানুষ খুলে বলে না অসুস্থতার কথা। যতক্ষণ না কেউ সত্যি সত্যি পাগল হয়ে যাচ্ছে এই দেশে তত দিন তার চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয় না।
বাঁশি বলে, আমার খুকুও পাগল হয়নি। ঠিক সময়ে একটু যত্ন পেলেই আজ ও বেঁচে থাকত—প্রসূতি-পাগল আসলে পাগলই নয়, একটা সাময়িক রোগ। অথচ ওর শ্বশুরবাড়ি থেকে তো ওকে ছাড়লই না। আমার কাছে থাকলে কক্ষনো অমনটা ঘটত না। অযত্ন হয়েছিল। অবহেলা হয়েছিল। ওরা সতর্ক থাকেনি।
কিন্তু ডাক্তার আমাকে বলেছেন এসব নেগেটিভ চিন্তাগুলোকে আমার মাথা থেকে দূর করে দিতে। মনে তো আসবেই, কিন্তু বেশি প্রশ্রয় দেওয়া উচিত নয়। দুর্ঘটনা বলেই মেনে নেওয়া উচিত, তাতেই মনের শান্তি। খুকুর মৃত্যুর জন্য আমার কোনওমতেই নিজেকে দায়ী করা উচিত নয়। অথবা, ওর শ্বশুরবাড়িকে কেন শাস্তি দেওয়া হল না, এটা ভেবেও অযথা নিজেকে অপরাধী করা উচিত নয়। অপরাধবোধ থেকেই অনেক ধরনের মানসিক অসুস্থতা তৈরি হয়—আমাকে এখন নিজের দেহ-মনের যত্ন নিতে হবে সচেতনভাবে। এটা আমারই দায়িত্ব। ডাক্তার বলেছেন আমার কোনও স্থায়ী মানসিক রোগ নেই।
যা হয়েছিল, সেটা অবসাদ। গভীর বিষাদ রোগে আচ্ছন্ন হয়ে ছিলুম। এখন সেটা সেরে গিয়েছে। আমি সম্পূর্ণ সুস্থ।
ইন্দ্রও এখন একেবারেই সুস্থ জীবনে ফিরে এসেছে। ছবি আঁকছে। আজ গাড়ি চালিয়ে আমাকে সে নিজেই নিতে আসবে। নতুন করে ওর ড্রাইভিং লাইসেন্স হয়েছে।
মা-ছেলে দুজনেই আবার নতুন করে জীবন শুরু করতে চলেছি আমরা। একটা পর্ব শেষ হল।
আমার এই ওপরের ঘরটা থেকে বহুদূর পর্যন্ত দেখা যায়। এই যে ঢেউ খেলানো সবুজ সব্জিক্ষেত (ক্যালিফোর্নিয়াকে নাকি নর্থ আমেরিকার সবজির ভাণ্ডার বলা হয়), এদিকে চেয়ে থাকতে থাকতেই তো মনটা জুড়িয়ে যায়।—তার শেষে ওই ধূসর পাহাড়ের সারি—কখনও নীল, কখনও সবুজ, আকাশের আলোর ওপরে নির্ভর করে ওদের রং—কখনও দৃশ্য, কখনও আবার অদৃশ্যও হয়ে যায় কুয়াশার আড়ালে। আবার খুব ভালো ঝকঝকে দিন হলে তুষার শিখরও দেখা যায়। পাহাড়, ক্ষেত, আকাশ—আরও একটুখানি এগোলেই সমুদ্র। প্রশান্ত মহাসাগরের ঢেউ এসে লুটিয়ে পড়ছে বালিতে, পাথরের গায়ে আছড়ে পড়ছে, সী-গাল পাখিরা উড়ছে। সেদিন আমাদের গাড়িতে করে বিচে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। সুজান আর লিন্ডা জলে পা ভিজিয়ে এল। আমি আর অতখানি বালি পেরিয়ে যেতে পারিনি রোদের মধ্যে। আর সানড্রা আমাকে সাহচর্য দেবে বলেই গেল না।
আসলে সানড্রার খুব মন কেমন করছিল বোধহয়। সাউথ ক্যারোলিনাতে যে ছোট দ্বীপে ওর বাড়ি, সে বাড়ির উঠোনটা গড়িয়ে নেমে গিয়েছে সমুদ্রে। আটলান্টিকের ঢেউ ওর খিড়কি দোরে বাঁধা। সানড্রা ফিরে গিয়ে আর ওই বাড়িতে থাকবে না। ডাক্তাররা ওকে মত দেননি একদম একা একা অত বড় বাড়িতে বসবাস করতে। ওর মেয়ে ওর জন্যে ফ্লোরিডাতে একটি বৃদ্ধাবাসে ব্যবস্থা করেছে—সেইখানেই নিয়ে যাবে সানড্রাকে। সমুদ্র সেই শহরেও আছে, তবে বাড়ির উঠোনে নয়। সানড্রা কখনও ভাবেনি বৃদ্ধবাসে থাকার কথা।—বৃদ্ধবয়সে বসবাস করবার জন্যেই ওই বাড়িটা কিনেছিল। সাজিয়ে-গুছিয়ে নিয়েছিল নিজের মনের মতো করে। এভাবে অসুস্থ হয়ে পড়বে, সেটা কে ভাবতে পেরেছিল তখন? সানড্রার স্বামী ওর চেয়ে বেশ কিছুটা বয়েসে ছোট ছিল। সেই আগে মারা যাবে, এটাও হিসেবের মধ্যে ধরেনি ওরা। স্বামীর মৃত্যুর পরে সানড্রার আস্তে আস্তে মস্তিষ্কবিকৃতির লক্ষণ দেখা দিয়েছিল। এখানে বেশ অনেকদিন লেগেছে তার সেরে উঠতে। সানড্রা কৃষ্ণাঙ্গী, কিন্তু শিক্ষিত বিত্তবান ঘরের মেয়ে। চট করে বড় একটা দেখা যায় না এমনটা। ওর মেয়েটি ওয়াশিংটন ডি.সি-তে সরকারি চাকরি করছে কিন্তু মাকে কাছে নিয়ে রাখা সম্ভব না তার পক্ষে।
সে অবিবাহিতা, ঠিকমতো সংসার পাতেনি। একটা হোটেলে থাকে সুইট নিয়ে মাকে রাখবে কোথায়?
এদিক থেকে আমি কত সৌভাগ্যবতী। আমার পুত্রবধূ আমাকে মেয়ের মতোই (কি তার চেয়েও বেশি?) ভালোবাসে, কত যত্ন করে, আদর করে। সম্মান করে নিজের বাড়িতে ফিরিয়ে নিয়ে যাচ্ছে।
বাঁশিই আমার মা।
বাঁশির কাছে এসে আমার নতুন জন্ম হয়েছিল—ভবানীপুরের বাড়ির কুমুদিনীকে ভবানীপুরেই রেখে এসেছিলুম আমি, বাঁশির হাত ধরে যখন সাগরপারে পাড়ি দিই। ইন্দ্র? না, ইন্দ্রর অত ক্ষমতা কোথায় সে আরেকটা মানুষের ভার নেবে? তার তো নিজেরই ভার সইবার শক্তি নেই। আমিই ঠিকমতো গড়ে তুলতে পারিনি আমার ছেলেকে। আমি নিজেও পরিপূর্ণ মানুষ ছিলুম না বোধহয় তখনও—ওর বাবার চাপে নতিস্বীকার করতে করতে নিজেকে কোথায় হারিয়ে ফেলেছিলুম আমি। ছেলেকে আমি সেই মুক্তিটাই দিতে চেয়েছিলুম, আমি নিজে যেটার স্বাদ পাইনি। কিন্তু ছোট ছেলে তার সদ্ব্যবহার হয়তো করতে পারেনি। উপকারের চেয়ে অপকারই বেশি হয়েছিল হয়তো সেই স্বাধীনতায়। সবাই তো সব কিছুর যোগ্য হয় না।
আচ্ছা, ইন্দ্র বাঁশির ভালোবাসার যোগ্য কি? আমি বুঝব না। আমি তার মা, আমি সঠিক বিচার করতে পারব না নিশ্চয়ই। অবশ্য আমার সঙ্গে বাঁশিরও এখন যে সম্পর্ক, ওর কাছে আমি যে সীমাহীন ভালোবাসা পেয়েছি, আমি নিজেই তার যোগ্য কিনা আমার তা নিয়েও সন্দেহ আছে। ইন্দ্রর যোগ্যতার কথা হিসেব করবার আমি কে?
এখানে এসে এদের দেশের বাবা-মা আর সন্তানদের দেখছি, স্বামী-স্ত্রীকে দেখছি, আর অবাক হয়ে ভাবছি আমাদের কত সৌভাগ্য।
আমাদের মধ্যে জটিলতা কত কম, যা কিছু হয় সব খোলাখুলি।
লিন্ডাকে তার মা-বাবা নিতে আসছেন বটে, কিন্তু লিন্ডা তার মা-বাবার কাছে থাকবে না। লিন্ডা থাকে তার প্রণয়িনী চন্দ্রা সুব্রহ্মণ্যমের সঙ্গে। চন্দ্রা পড়ত লিন্ডার সঙ্গে একই বিশ্ববিদ্যালয়ে, বহুদিন তারা দুজনে পার্টনার। চন্দ্রারই ওকে নিতে আসবার কথা ছিল। কিন্তু হঠাৎ ওকে বাঙ্গালোরে চলে যেতে হয়েছে, ওর বাবার স্ট্রোক হওয়ার খবর পেয়ে। চন্দ্রা চেয়েছিল নিজে এসে লিন্ডাকে ফিরিয়ে নিয়ে যাবে—কিন্তু সেটা সম্ভব হল না, কবে যে এ-দেশে ফিরতে পারবে তারও স্থিরতা নেই। অনিশ্চিত সময়ের জন্য লিন্ডাকে সুস্থ হবার পরেও শুশ্রূষালয়ে রেখে দেওয়াটা কারুরই মনোমতো নয়।
লিন্ডার মা-বাবার সঙ্গে চন্দ্রার অবশেষে একটা সামাজিক সম্পর্ক অবশ্য তৈরি হয়েছে। বিশেষত অসুস্থতার সময়ে ওঁরা খুব কাছাকাছি এসেছেন। সকলের সর্বাঙ্গীন চেষ্টাতেই লিন্ডা সেরে উঠেছে। ছোটবেলাতেও একবার এরকম হয়েছিল লিন্ডার, নিয়মিত কাউন্সেলিং নেয় সে। চাকরির জায়গায় ক্রমাগত প্রচণ্ড চাপ সৃষ্টি হয়ে চলেছিল বেচারির, সেই অশান্তির ফলেই লিন্ডার হঠাৎ এই ব্রেকডাউনটা ঘটেছিল। এখন সে সুস্থ। এবার আবার চাকরি করার যোগ্য হয়ে উঠেছে সে, কিন্তু পুরোনো চাকরিতে ফিরবে না। এখান থেকেই বসে বসে অ্যাপ্লিকেশন করেছে, ফিরে গিয়ে ইন্টারভিউ দেবে। লিন্ডার বয়েস অল্প, সামনে পুরো জীবন পড়ে রয়েছে। চন্দ্রা এখন বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা করছে, আর লিন্ডা কমার্শিয়াল ফার্মে চাকরি করে। লিন্ডা বলছিল, ওরা ভাবছে, একটি কন্যাসন্তান দত্তক নেবে। আমি তাকে খুবই উৎসাহ দিয়েছি। একটি শিশু না এলে সংসার যেন অসম্পূর্ণ থেকে যায়। আর শিশুটিকে যে তোমার নিজের শরীর দিয়ে উৎপন্ন করতেই হবে এমন কোনও কথা নেই। জগতে কত শিশুর নিজস্ব ঘর নেই ভাবো তো? তুমি যদি তাদের ঘর দাও, স্নেহ দাও, বাবা-মা দাও, তোমারই সন্তান হবে সে। আমাদের দেশে এখনও দত্তক গ্রহণে মানসিক বাধা আছে দেখেছি—কার-না-কার রক্ত আসবে বংশে’—আরে, তুমি কি জানো তোমার শরীরে কার রক্ত বইছে? কতটুকু আর জানি আমরা নিজেদের বিষয়ে? নিজেদের পিতৃমাতৃ পরিচয় বিষয়ে? যা জানি, সেটাই সত্য কিনা তাও তো জানি না।
আমার অবাক লাগে ভাবতে এত বড় বড় যৌথ পরিবার ছিল, সেখানে কত যথেচ্ছাচার চলত, কত গোপন কেচ্ছা-কেলেংকারি—কে জানে সত্যি সত্যি কোন শিশুর পিতা কে? শুধু তো জরায়ুর ঠিকানাটাই নিশ্চিত জানা। ভৃত্য থেকে পুরুতমশাই, দেওর থেকে শ্বশুরমশাই—সকলেরই সম্ভাবনা থেকে যায় বংশধরের জন্ম দেওয়ার গৌরবের অংশভাক হবার। কেন যে আমরা বংশগৌরব নিয়ে ভাবি? কেন যে পিতৃত্ব নিয়ে এত আমাদের চিন্তা? শাস্ত্র থেকে পুরাণের কাহিনি থেকে কিছুই কি শিখিনি আমরা? এই যে রঙিন, আমাদের রঙিন স্বপ্ন, যদি সে জন্ম নিত বাঁশির গর্ভে, তাহলে কি এখনকার চেয়ে বেশি আপনার হত? বেশি ভালোবাসতুম আমরা তাকে? বাঁশি যখন রঙিনকে আনবে বলে ঠিক করল, আমার স্বামী ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেছিলেন। বংশে ছাই দিচ্ছে এরা। ওর শৈশবে আমাকে উনি আসতে দেননি বাঁশিকে সাহায্য করতে। একলাটি, ওই আমার পাগলা ছেলেকে সামলে, বাঁশিই বাচ্চা মানুষ করেছে, চাকরি বজায় রেখে। রঙিন বড় চমৎকার মেয়ে হয়েছে। ইন্দ্রর সন্তান হয়েই যদি ও ভূমিষ্ঠ হত, এর চেয়ে ভালো হতে পারত বলে আমি মনে করি না।
মানুষ করছ কীভাবে, ভালোবাসা আর শাসন, দুটোর সামঞ্জস্য রাখছ কতটা, এর ওপরেই বাচ্চার গড়ে ওঠা নির্ভর করে। যখন থেকে আমি এসেছি রঙিনের কাছে, আমি খুব সতর্ক থেকেছি যাতে কখনও ওর মায়ের ওপরে খবরদারি না করি। ওর বিষয়ে শেষ কথা বলবার অধিকার সর্বদা ওর মায়ের। এটা জানা থাকলে বাচ্চার বিগড়ে যাবার সম্ভাবনাটা কিঞ্চিৎ কমে। সে জানে, অন্যেরাও ওই একই মত দেবে—মায়ের কথার ওপর আর কথা নেই।
সেই অধিকার অবশ্য কেউ কাউকে দিতে পারে না—সেটা মানুষ অর্জন করে নেয়। বাঁশি তার স্বভাবগুণে এই জায়গায় পৌঁছেছে। এই পরিবারের প্রত্যেকেরই গার্জেন সে। এবং গার্জেন মানেই গুরুজনও। রঙিন জানে কথাটা। তার বাবাও জানে। এবং ঠাকুমাও। আমরা লতার মতো জড়িয়ে ধরে আছি বাঁশিকে। বাঁশি সকলেরই ভার সইতে পারে।
লিন্ডার সঙ্গে বাঁশির কথাবার্তা হয়েছে অ্যাডপশন বিষয়ে। এখান থেকে বেরিয়ে, চাকরি শুরু করার পরে, এবং চন্দ্রা ফিরে এলে, ওরা এই নিয়ে এগোবে ভেবেছে। চন্দ্রা হয়তো দেশ থেকে কোনও মেয়েকে দত্তক নেবার কথা ভাবছে। ওখানেও তো কত অনাথ শিশু বাবা-মায়ের স্নেহের আশ্রয়ের অপেক্ষায় রয়েছে।
আজ আমাকে নিতে আসছে ওরা। আমার নিজের ঘরটা পরিষ্কার করে গুছিয়ে রেখেছে রঙিন নিজে। রঙিনেরও গ্রীষ্মের ছুটি শুরু হল, এটা মস্ত আহ্লাদের ব্যাপার। সবাই মিলে আনন্দ করতে পারব কয়েকটা দিন। ইন্দ্রর সুস্থতা, আমার সুস্থতা, রঙিনের ছুটি—সব মিলিয়ে উৎসবের আবহাওয়া তৈরি হবে বাড়িতে। আর বাঁশি তো নিজেই উৎসব। জয় গুরু। হে ঠাকুর, তুমিই তো আসল। আমাদের রক্ষা করো, বাঁাশিকে আমরা যেন আর কষ্ট না দিই।