ইতি নির্ভয়পুর – ৩৬

৩৬

সাহেব বেশ হস্তদন্ত হয়ে ঢুকল অস্মিতার ঘরে। অস্মিতা অনুপমা টি-এস্টেটের কাগজপত্র নিয়ে মশগুল হয়ে বসে আছে।

সাহেব বলল, “তুমি জানতে শৌনক বসু বিখ্যাত কার্ডিওলজিস্ট শোভন বসুর ছেলে?”

অস্মিতা হেসে বলল, “জানতাম। আমার এক বন্ধু মেডিকেল কলেজের ডাক্তার। ও-ই প্রথম এই ইনফর্মেশনটা দিয়েছিল। ছেলেকে বিদেশে পাঠাতে চেয়েছিল বাবা, ছেলে গ্রামের মানুষের সেবা করবে, এই নিয়েই দ্বন্দ্ব। তাই বাবা-ছেলের বিচ্ছেদ। যদিও শৌনক নিজেকে অনাথ বলে পরিচয় দিত ওই রাগ থেকেই।”

সাহেব বলল, “সেটা আগে কেন বলোনি?”

অস্মিতা বলল, “যাহ বাবা, আমি কী করে বলব? তোমার বোনই তো কাউকে বলতে বারণ করেছিল। বলেছিল, ‘ওই সরকারি হাসপাতালে চাকরি করা, সরকারি কোয়ার্টারে থাকা শৌনককেই আমি ভালোবাসি। এটাই মল্লিক-বাড়ির লোককে মেনে নিতে হবে। ও কার্ডিওলজিস্ট শোভন বসু আর গাইনোকোলজিস্ট নিবেদিতা বসুর ছেলে এই পরিচয়ে নয়।”

সাহেব বলল, “তোমরা মেয়েরা বড্ড জটিল, বুঝলে! আমি শৌনকের সঙ্গে অকারণে কত খারাপ ব্যবহার করেছি বলো তো? আজ ওর বাবা-মা এসেছিলেন আমাদের বাড়িতে নূপুরের আর শৌনকের সম্বন্ধ নিয়ে। আমাদের বিয়ের পরে পরেই ওদের বিয়ে হত। নূপুর বলল, ও এমডি করবে, তারপর বিয়ে করবে। তাই নিবেদিতা বসু সঙ্গে সঙ্গে বিয়েটা পিছিয়ে দিলেন

অস্মিতা বলল, “সাহেব একটা কথা বলব? প্লিজ তুমিও আমার বাবার মতো শুধু টাকাপয়সা আর বংশপরিচয় দিয়ে মানুষকে বিচার কোরো না। মানুষের শিক্ষা, আচরণ এগুলোকেও মূল্য দিয়ো। তোমার এই দিকটা আমায় বড্ড কষ্ট দেয়।”

সাহেব একটু চুপ করে থেকে বলল, “বেশ। এখন যাবে কি?”

অস্মিতা বলল, “কোথায়?”

“শৌনকের কাছে। ওর কাছে ক্ষমা চাইব।”

অস্মিতা হেসে বলল, “আমি কেন যাব? যখন ওকে হুমকি দিতে গিয়েছিলে, তখন কি আমায় নিয়ে গিয়েছিলে?”

সাহেব বলল, “প্লিজ। আমার একা যেতে কেমন একটা লাগছে।”

সাহেবের কথা শেষ হবার আগেই নিরঞ্জনবাবু প্রায় হাঁপাতে হাঁপাতে এসে বলল, “সাহেব শুনেছ, আমাদের মৃণাল ঘোষালকে পুলিশ অ্যারেস্ট করেছে! ও-ই পামেলা মিত্রকে খুন করিয়েছে। ঘোষালের কোম্পানির লরি আর ড্রাইভার কৃষ্ণনাথকেও পাওয়া গেছে। সে-ই স্বীকার করেছে, ঘোষাল ওকে বলেছিল, একটি মহিলাকে লরি চাপা দিতে হবে। তার বিনিময়ে নাকি চল্লিশ হাজার টাকাও দিয়েছে ঘোষাল ওই ড্রাইভারকে। কনকলতা নাকি পুলিশকে বলেছে, পামেলা মিত্রর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল মৃণালের। সেদিনও সন্ধ্যা অবধি পামেলার কাছেই ছিল মৃণাল। সব প্রমাণের সাপেক্ষেই মৃণাল অ্যারেস্ট হল। কিন্তু আমার মাথায় এখনও ঢুকল না, পামেলাকে হঠাৎ খুন কেন করতে গেল মৃণাল? ওদের তো খুব দোস্তি ছিল।”

সাহেব বলল, “আঙ্কেল ইতিহাস বলছে, আজ যে শত্রু অতীতে সে সব চেয়ে ঘনিষ্ঠ বন্ধু ছিল। আমার ধারণা, তোমরা যে নার্সিংহোম করবে প্ল্যান করেছিলে ওটা নিয়েই গন্ডগোল। আসলে যে জায়গায় নার্সিংহোম করবে ভেবেছিলে তোমরা, ওটার মালিক এখন সুজয় হাঁসদা। কনকজেঠিমা সুজয়কে দিয়ে দিয়েছে। ওটা নিয়েই মনে হয় পামেলা মিত্রর সঙ্গে ঝামেলা হয়েছিল মৃণালজেঠুর।”

নিরঞ্জন-আঙ্কেল একটু চুপ করে থেকে বলল, “পামেলার জায়গার পাশেই মৃণালের জমিটা ছিল। গোটাটা নিয়ে আমাদের করার প্ল্যান ছিল। কনকবউদি কেন যে হঠাৎ এমন খেপে উঠল কে জানে! মুশকিল হচ্ছে এই যে, আমাদের সমাজের একজনকে পুলিশ অ্যারেস্ট করল, এরপর কি আর নির্ভয়পুরের এই আদিবাসীরা আমাদের মানবে? এমনিতেই তো সুজয় আন্দোলন করে করে এদের সুযোগ-সুবিধা পাইয়ে দিচ্ছে। তারপর আবার ভোটে জিতলে তো এ অঞ্চলে টেকা দায় হয়ে যাবে। তাই পামেলার জায়গায় আমি ক্যান্ডিটেড হলাম। দল অফার করল, দাঁড়িয়ে গেলাম। আসলে সুজয়কে হারাতে গেলে স্ট্রং লোক দরকার। তাই পামেলার বদলে আমি।”

অস্মিতা অবাক হয়ে বলল, “কেন বাপি? তুমি কেন এসবের মধ্যে ঢুকলে? দেখছ তো এখানের পরিবেশটা ক’দিনে কেমন বিষাক্ত হয়ে উঠেছে। নীহার মারা গেল অ্যাক্সিডেন্টে, পামেলা মিত্র মারা গেল, মৃণালজেঠু অ্যারেস্ট হল এরপরেও তুমি কেন ঢুকলে এর মধ্যে?”

নিরঞ্জন বলল, “তবে কি সব ওই আদিবাসীদের হাতে তুলে দেব? সাহেব, তোমার বোনের তো আবার বিয়ে ঠিক হয়েছে শুনলাম। কে জানত শৌনক ডাক্তারের এমন একখানা জবরদস্ত ব্যাকগ্রাউন্ড আছে!”

বাবা যদি আরও কিছু বলে ফেলে সাহেবের সামনে, তাই অস্মিতা থামিয়ে দিয়ে বলল, “চলো সাহেব, আমাদের দেরি হচ্ছে। তোমার যা ইচ্ছে হয় করো বাপি। শুধু এটুকুই বলব, নির্ভয়পুরে ভয় নেই এটা ভেবো না। আগে পাহাড়ি এলাকাগুলোয় শুধু হাতির ভয় ছিল। খুন-জখমের ভয় ছিল না। পামেলা মিত্রর ওরকম মৃত্যু দেখার পরে মনে হচ্ছে, এখানে সব সম্ভব।”

সাহেব আর অস্মিতা যখন শৌনকের কোয়ার্টারে পৌঁছাল তখন বাইরে থেকেই গান শুনতে পাচ্ছিল। কেউ একজন খালি গলায় গান গাইছিল,

“তোর এ সকাল ঘুম ভেঙে দিতে পারি
তোর এ বিকেল ঘুড়ি ছিঁড়ে দিতে পারি,
তোকে আলোর আলপিন দিতে পারি
তোকে বসন্তের দিন দিতে পারি,
আমাকে খুঁজে দে জল ফড়িং।”

অস্মিতা বলল, “কী সুন্দর গলা না?”

প্রলয় দরজা খুলে একটু তটস্থ গলায় বলল, “সাহেবদাদা তুমি?” সাহেব কথা না বাড়িয়ে ভিতরে ঢুকে গেল। দেখল, নিবেদিতা বসুর কোলে মাথা রেখে শুয়ে আছে শৌনক। নিবেদিতাদেবীই ছেলের চুলে বিলি কাটতে কাটতে খালি গলায় গান গাইছেন। বুকটা কেমন একটা মুচড়ে উঠল সাহেবের। মাকে হারানোর পর এভাবে কেউ কোনওদিন আদর করেনি ওকে। অতসী-আন্টি যত্ন করেছে ঠিকই, কিন্তু দূরত্ব মেইনটেন করে।

সাহেবকে দেখেই গান থামাল নিবেদিতা।

অস্মিতা বলল, “থামলেন কেন? কী সুন্দর গাইছিলেন।”

শৌনক ধড়ফড় করে উঠে বসল। আজ অবধি যতদিন সাহেবের সঙ্গে সাক্ষাৎ হয়েছে, ততবারই অপমানিত হয়েছে ও। আজ বাবা-মায়ের সামনে আবার কী বলতে এল কে জানে! নূপুরদের বাড়িতে বাকি সবাই মা-বাবাকে খুব আপ্যায়ন করেছে। এখন আবার সাহেব কী বলতে এসেছে কে জানে!

সাহেব একটা চেয়ারে বসে বলল, “জানেন আন্টি, আপনাকে দেখে আমার মায়ের কথা মনে পড়ল। আমার মা-ও আমার মাথায় এভাবে বিলি কেটে গল্প বলে ঘুম পাড়িয়ে দিত। শৌনক খুব লাকি, আপনার মতো মা পেয়েছে। শৌনক, আমি আজ তোমার কাছে ক্ষমা চাইতে এসেছি। আগের ব্যবহার ভুলে যেয়ো প্লিজ।”

শৌনক হেসে বলল, “সত্যি বলছি, আমার এই মুহূর্তে কিছুই মনে নেই। কতদিন পরে আবার আমি বাবাই, মাকে কাছে পেলাম। তাই আজ আর কারও ওপরে কোনও রাগ নেই।”

অস্মিতা বলল, “আমি কিন্তু তোমার পরিচয় জেনে গেছিলাম। আমার এক বন্ধু আছে মেডিকেল কলেজে। ও-ই বলেছিল, তোমার বাবা তোমায় বিদেশে পাঠাতে চান আর তুমি যেতে চাও না। এই নিয়ে তোমাদের অশান্তি।”

শোভন হেসে বলল, “এ সমস্যা চিরকালীন। তোমরা আর কবেই বা বাবা-মায়ের কথা শুনলে? আমরাই বাধ্য হই তোমাদের কথা শুনে চলতে।”

সাহেবরা চলে যাবার পর শৌনক বলল, “মা, সাহেব যদি আমার জন্ম পরিচয় জানতে পারে তা হলে কি বোনের সঙ্গে বিয়ে দিতে অস্বীকার করবে?”

শোভন বলল, “শানু, একটা কথা বল তো, তোর মায়ের থেকে তোকে আর কেউ বেশি ভালোবাসতে পারত? নাকি আমার থেকে বেশি ভালো বাবাই তোর আর কেউ হতে পারত? তা হলে বারবার ওই একই কথা বলছিস কেন?”

শৌনক বলল, “না, ওদের ফ্যামিলিতে আমরা আসলটা গোপন করলাম কিনা তাই।”

নিবেদিতা বলল, “আমাদের আপত্তি নেই বলতে। কারণ তাতে আমাদের কিছুই বদলে যাবে না। কিন্তু নূপুর বারণ করেছে বলতে। ও বলেছে, কিছু অর্থহীন সত্যি এতটাই খারাপ অনুভুতি জাগায় যে, তাকে লুকিয়ে রাখাই শ্রেয়। এবারে তুই বল আমাদের কী করা উচিত।”

ওদের কথা শেষ হবার আগেই নূপুর ঢুকল। সোজা হাসপাতাল থেকেই এল। এসেই বলল, “শৌনক, মৃণাল ঘোষাল অ্যারেস্টেড। পুলিশ সব প্রমাণ জোগাড় করে বুঝেছে, ঘোষাল খুনি। আর-একটা কথা, পামেলা মিত্রর সিটে দাঁড়িয়েছে নিরঞ্জনকাকু।”

শৌনক চমকে উঠে বলল, “আর সুনীল-স্যার?”

নূপুর বলল, “এখন সুস্থ। তবে কথা খুবই কম বলছে। আজ প্রথম সুজয়দার মাকে খুব খুশি দেখলাম মৃণাল ঘোষাল অ্যারেস্ট হওয়ায়। বাই দ্যা ওয়ে, তুমি তো অনাথ বাচ্চা, তো মায়ের কোলে শুয়ে কী করছ? ওঠো ওঠো, আন্টিকে আমি ডেকে এনেছি নির্ভয়পুরে। তাই আদর, ভালোবাসা সব আমার পাওনা।”

শৌনক নিবেদিতাকে জড়িয়ে ধরে বলল, “কতদিন পরে আবার সেই মা মা গন্ধটা পেলাম। থ্যাঙ্ক ইউ নূপুর।”

শোভন বলল, “তোর মতো অসভ্য, গোঁয়ার ছেলের কপালে এমন একটা বুঝদার মেয়ে জুটল, ভাবতেই পারছি না!”

শৌনক বলল, “এটাই হয় বাবাই। বোকা টাইপ, অবাধ্য টাইপ ছেলেগুলোর প্রেমে সুন্দরী, গোছানো মেয়েরা পড়ে। মাকেই দেখো না।”

শোভন যথারীতি না বুঝেই বলল, “একদম তাই।”

নিবেদিতা হেসে বলল, “তুই তোর বাবাইয়ের পিছনে লাগা ছাড়। এখন বল, কলকাতা কবে ফিরবি?”

শৌনক আর নূপুরের চোখাচোখিটা চোখ এড়াল না নিবেদিতার।

শৌনক বলল, “দেখি নূপুরও তো এমডি-তে ভর্তি হবে কলকাতায়। তখনই ব্যাক করব।”

শোভনের দু’চোখ ছাপিয়ে জল নামতে চাইছে আজ। কতদিন পরে আবার সব ফিরে পেয়েছে। সেই বাবাই ডাকটা ফিরে পেয়েছে।

শোভন বলল, “তোর যেদিন ইচ্ছে হয় সেদিন যাবি। তাছাড়া সপ্তাহে একদিন কলকাতা তুই সহজেই যেতে পারিস। ফ্লাইটে তো মাত্র দু’ঘণ্টা লাগে রে।”

শৌনক বলল, “এত দুশ্চিন্তা করছ কেন বাবাই? আমি ফিরব খুব তাড়াতাড়ি।”

নুপুরকে এগিয়ে দিতে গেল শৌনক, বাইরে বেরিয়ে নূপুর বলল, “সুজয়দার জেতাটা টাফ হয়ে গেল শৌনক। পামেলা মিত্রকে কেউই তেমন পছন্দ করত না। কিন্তু নিরঞ্জনকাকুর অনুপমা টি এস্টেট এখানের সব থেকে পুরোনো। তাই এখানের প্রচুর মানুষ কাজ করে ওই কোম্পানিতে। এরা ভাববে, নিরঞ্জনকাকুকে ভোট না দিলে বোধহয় চাকরি খোয়াতে হবে। ইনফ্যাক্ট সুজয়দা নিজেও তো অনুপমা টি-এস্টেটের ক্যাশিয়ার পোস্টে আছে। মালিকের সঙ্গে সরাসরি টক্করে যাওয়া!”

শৌনক বলল, “যদি একান্ত সুজয় চাকরি খুইয়ে ফেলে, তা হলে ওদের ফ্যামিলিটাকে নিয়ে আমি কলকাতা চলে যাব। সুজয়ের চাকরির অভাব হবে না।”

নূপুর বলল, “উফ শৌনক, তুমি কেন প্র্যাকটিক্যাল নও বলো তো? ওরা হঠাৎ জন্মভিটে ছেড়ে তোমার সঙ্গে কলকাতা যাবেই বা কেন? তুমি যে কেন এমন ভাবুক টাইপের হলে, কে জানে! আবার কী ভাবছ বলো তো?”

শৌনক বলল, “তুমিই তো এমডি-র দোহাই দিয়ে বিয়েটা ভিলে করলে। এমন ভাব করছ যেন, বিয়ে করলে আমি হায়ার স্টাডিতে বাধা দিতাম?”

নূপুর মুচকি মুচকি হেসে বলল, “আমিই পারতাম না। আসলে তোমার মতো গোঁয়ারকে সামলাতে সামলাতে সময় চলে যেত, পড়তাম কখন? তাছাড়া মল্লিক-বাড়ির মেয়েকে কাছে পেয়ে তুমি ঠিক কী কী শোধ তুলতে, সেটা নিয়েও দুশ্চিন্তায় আছি।”

শৌনক হেসে বলল, “কিছুই করতাম না। কারণ, মল্লিক-বাড়ির মেয়েকে আমি শুধুই বন্ধু ভাবি। কিন্তু যখনই সে আমার স্ত্রী হয়ে যাবে, তখন ব্যাপারটা আমার দখলে চলে আসবে। আমিই তখন তার রাজা, পূজা, মন্ত্রী, অমাত্য সব কিছু।”

নূপুর হেসে বলল, “খুব শখ না?”

শৌনক বলল, “শখ কেন হবে? এটা আমার গণতান্ত্রিক অধিকারের মধ্যে পড়ে। এই যে আগামিকাল আমরা ভোট দিতে যাব, এটা যেমন আমার গণতান্ত্রিক অধিকার, তেমনই বউকে আদর করাটাও অধিকার। ইনফ্যাক্ট, প্রেমিকাকে আদর করাটাও আমার কর্তব্যের মধ্যেই পড়ে।”

নূপুর বলল, “আপাতত রাস্তায় দাঁড়িয়ে বাই বলা ছাড়া কিছুই তোমার অধিকারের মধ্যে পড়ে না।”

শৌনক বলল, “তুমি আমায় চ্যালেঞ্জ কোরো না কিন্তু।”

নূপুর বলল, “একেবারেই করছি না।”

শৌনক নুপূরের গাড়ির হ্যান্ডেলটা খুলতে খুলতেই বলল, “ইশ, একটা পোকা ঢুকল তোমার চোখে, ওয়েট।”

নূপুর অসচেতন হতেই শৌনকের ঠোঁট ছুঁয়ে গেল নূপুরের সারাদিনের পরিশ্রমে ক্লান্ত ঠোঁট দুটোকে। নূপুর কিছু বলার আগেই শৌনক বলল, “বলেছিলাম না চ্যালেঞ্জ কোরো না।”

নূপুর হাসতে হাসতে বলল, “এটা তো স্কুল প্রেমের পর্যায়ে চলে গেল ডক্টর বসু!”

শৌনক বলল, “প্রেমের নিয়মই এটা, এক ধাক্কায় বয়েসটাকে কমিয়ে দেয়। ও তোমার ডাক্তারি শাস্ত্রে নেই। বাই, এখন এসো। মল্লিক-বাড়ির মেয়ের লজ্জা করে না নির্ভয়পুরের রাস্তায় দাঁড়িয়ে হবু বরের আদর খেতে? আমি গিয়ে বাবাইয়ের আদর খেয়ে আসি।”

নূপুর হাসতে হাসতে গাড়িতে উঠে বলল, “পাগল!”

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *