চার
কিছুক্ষণের মধ্যে ধর্মারা হাইওয়ের সেই জায়গাটায় এসে পড়ল যেখানে দক্ষিণ কোয়েলের শুখা খাতটা মিশিরলালজীর বিজুরি তালুকের পাশ দিয়ে চলে গেছে।
ধর্মা বলল, ‘তোরা গাঁওয়ে ফিরে যা। আমি পরে আসছি।’ বলে এক মুহূর্তও দাড়াল না। লাফ দিয়ে কোয়েলের মরা খাতটায় নেমে ছুটতে লাগল।
এখন পূর্ণিমা চলছে। এই সন্ধ্যেরাতেই চাঁদির কটোরার মতে গোল একখানা চাঁদ উঠে এসেছে আকাশে। গলানো রুপোর মতে টলটলে তরল জ্যোৎস্নায় চারদিক ভেসে যাচ্ছে। কোথাও একফোঁটা মেঘ নেই। জ্যৈষ্ঠের ঝকঝকে নীলাকাশ সমস্ত চরাচরের ওপর ছড়িয়ে রয়েছে। তার গায়ে জরির ফুলের মতো অগুনতি তারা বসানো।
লক্ষ কোটি বছরের পুরনো চাঁদের আলো গায়ে মেখে দক্ষিণ কোয়েলের মরা খাতটা ছোটনাগপুরের গায়ে নিঝুম হয়ে পড়ে আছে। যতদূর চোখ চোখ যায়, সাদা ধবধবে শুকনো বালি চিকচিক করে কোয়েলের দুধারে ধুধু ফাঁকা শস্যক্ষেত্র, সেগুলোর গায়ে মানুষের তৈরি নানা জ্যামিতিক নকশা, এলোমেলো ঝোপঝাড় বা দু-একটা ঢ্যাঙা গাছটাছ—সব এই মুহূর্তে কেমন যেন আশ্চর্য মায়াবী মনে হতে থাকে। বালির ওপর দিয়ে দৌড়তে দৌড়তে একসময় ঘন সাবুই ঘাসের জঙ্গলের কাছে এসে পড়ল ধর্মা। ঘাসবনের একধারে এ ঘাসবনের একধারে একা একা টাঙ্গি হাতে চুপচাপ দাঁড়িয়ে ছিল কুশী আর মাঝে মাঝেই পায়ের বুড়ে আঙলে ভর দিয়ে ডিঙি মেরে মেরে কোয়েলের খাত ধরে সোজা হাইওয়েটার দিকে তাকাচ্ছিল। তাকে রীতিমত উদ্বিগ্ন দেখাচ্ছে। কুশীর পাশে অনেকগুলো বগেড়ি পাখি বালির ওপর পড়ে আছে, সেগুলোর পায়ে দড়ি বাঁধা। পাখিগুলোর পাশে পড়ে আছে কুড়ি-বাইশটা বাঁশের চৌকো চৌকো জালিকাটা ফাঁদ। ফাঁদের ভেতর থেকে পাখি বার করে ঐ অবস্থায় ফেলে রেখেছে কুশী।
ধর্মাকে দেখে কুশী বলল, ‘তখন বললি খামারে হাল-বয়েল জমা দিয়ে তুরন্ত চলে আসবি।’
ধর্মা হাঁপাতে হাঁপাতে বলল, ‘ক্যা করে, বড়ে সরকারের কোঠিতে যেতে হল যে।’
কুশী বলল, ‘আমি এদিকে তুহারকে লিয়ে দাঁড়িয়ে আছি তো দাঁড়িয়েই আছি। কোই নহী ইধর, স্রিফ হামনি একেলী। বহোত ডর লাগি।’
ধর্মা জিজ্ঞেস করল, ‘কৈয়া নিকলা?’
‘নহী।’
‘হামনিকো বহোত চিন্তা হুয়া—তু একেলী হ্যায়, কৈয়া নিকালনেসে মুশকিল হো যায়েগা।’ বলে জোরে একটা নিঃশ্বাস ফেলল ধৰ্মা। স্বস্তির নিঃশ্বাস।
কুশী এবার বলে, ‘কৈয়া নিকলা নহী, মাগর মেজুর নিকলা বহোত—ঝুনকে ঝুন (দলে দলে)—’ বলে সে সামনের দিকে আঙুল বাড়িয়ে দিল।
মেজুর অর্থাৎ ময়ুর। ধর্মার চোখে পড়ল খানিকটা দূরে কোয়েলের মরা খাতের চিকচিকে বালির ওপর ঝাঁক ঝাঁক ময়ূর পেখম মেলে ছোটাছুটি করছে। চাঁদের আলো দেখে এধারের জঙ্গল থেকে ওরা বেরিয়ে এসেছে। ধর্মার একবার লোভ হয় পাথর ছুঁড়ে দু-একটা ময়ুর মারে। পরক্ষণে মনে পড়ে যায়, সরকার থেকে ঢ্যাঁড়া পিটিয়ে ময়ুর মারা নিষিদ্ধ করে দেওয়া হয়েছে। কাজেই লোভটিকে দমিয়ে রাখতে হয়।
একটু ভেবে কুশী-এবার জিজ্ঞেস করে, ‘বড়ে সরকারের কোঠিতে কেন গিয়েছিলি?
‘মিঠাইয়া দিল যে। এই লো—’ কুশী এবং তার মা-বাপের ভাগের লাড্ডু দিতে দিতে ধর্মা বলল, ‘একেলী খাস না, মা-বাপকেও দিস।’
হাত পেতে লাড্ডু নিতে নিতে কুশী জানতে চাইল, হঠাৎ মিঠাইয়া দিলেন কেন বড়ে সরকার। তাঁর লেড়কা-লেড়কীর বিয়ের কথাবার্তা কি পাক্কী হয়ে গেল?
লাড্ডু বিতরণের কারণটা জানাতে জানাতে হঠাৎ ধর্মার নজর এসে পড়ে দড়ি-বাঁধা পাখিগুলোর ওপর। খুশিতে সে প্রায় চেঁচিয়েই ওঠে, ‘আরে বহোত চিড়িয়া—’ বলেই বালির ওপর হাঁটু গেড়ে বসে গুনতে শুরু করে, ‘এক দো তিন চার—আরে বাপ্পা, পুরা দো ডজন।’ তিন ডজন অর্থাৎ ছত্রিশ পর্যন্ত নির্ভুল গুনতে পারে ধর্মা, তারপরেই গোলমাল করে ফেলে।
কুশী আবার অতটাও গুনতে পারে না। ধর্মার মুখের দিকে তাকিয়ে সে বলল, ‘বহোত দাম মিলি—নায়?’
ধর্মা ঘাড় কাত করে বলল, ‘হাঁ।’ বলেই ফাঁদগুলো নতুন করে পেতে রাখে। রোজই ক্ষেতির কাজ শেষ হয়ে গেলে এখানে এসে ফাঁদ থেকে পাখি বার করে সেগুলো আবার পেতে রাখে সে। ফাঁদ পাতা হয়ে গেলে ঘাসের জঙ্গলে ঢুকে একটা জায়গা থেকে বালি খুঁড়ে পাউডারের পুরনো ভারী একটা কৌটো বার করল। কৌটোটা রেজগি আর নোটে প্রায় বোঝাই।
পয়সার কৌটোটা কুশীর কাছে দিয়ে এক হাতে বাগড়িগুলো এবং আরেক হাতে লাড্ডুর প্যাকেট ঝুলিয়ে ধর্মা বলল, ‘চল-’
রোজই ফাঁদে-পড়া পাখি আর পয়সার কৌটো নিয়ে ওরা এখান থেকে যায়। আজও গলানো চাঁদির মতো টলটলে মায়াবী জ্যোৎস্না গায়ে মেখে ধর্মা আর কুশী দক্ষিণ কোয়েলের মরা খাতের বালি মাড়িয়ে হাইওয়ের দিকে এগিয়ে চলল।
হাইওয়েটা ডান দিকে মিশিরলালজীদের বিজুরি তালুকের ভেতর দিয়ে মাইল দুয়েক দূরের ছোট রেল স্টেশনটাকে ছুঁয়ে পাটনার দিকে দৌড় লাগিয়েছে। আর বাঁ দিকে বড়ে সরকার রঘুনাথ সিংয়ের খামার বাড়ি আর কোঠির পাশ দিয়ে চলে গেছে গারুদিয়া তালুকের গাঁও আর বাজার-গঞ্জের দিকে।
হাইওয়েতে উঠে ধর্মা আর কুশী বা দিকে চলতে শুরু করল। আপাততঃ তারা যাচ্ছে গারুদিয়া বাজারে। এখানে পাটনা থেকে ঠিকাদাররা এসে আস্তানা গেড়েছে। ক’ সাল ধরে প্রায় বারো মাসই ওরা এখানে পড়ে থাকে। এ অঞ্চলে নতুন নতুন সড়ক তৈরি হচ্ছে, পুরনো রাস্তাঘাট মেরামত করা হচ্ছে, ব্রিজ বানানো হচ্ছে। ‘গরমিনে’র এইসব কাজের ঠিকাদারি নিয়ে ওরা এখানে এসেছে।
হাইওয়ে একেবারে নির্জন। ক্বচিৎ দু-একটা বয়েলগাড়ি ক্যাঁচ কোঁচ করতে করতে রেল স্টেশনের দিকে চলে যাচ্ছে। অনেক দূর থেকে গাড়িটার তলায় দোলায়মান লণ্ঠন জোনাকির মতো মনে হতে থাকে। আচমকা দু-একটা ট্রাক বা লঝঝড় প্রাইভেট বাস দু ধারের মাঠপ্রান্তর কাঁপিয়ে ছুটে যায়। তারপর আবার সব কিছু শান্ত, নিঝুম।
খানিকক্ষণ হাঁটবার পর মাঠের মাঝখানে দেহাতের পর দেহাত চোখে পড়ে। ওখানে অগুনতি কেরোসিনের ডিবে কি হেরিকেনের মিটমিটে আলো দেখা যায়। ঐ সব গাঁও থেকে মানুষের গলার স্বর আবছাভাবে বাতাসে ভেসে আসতে থাকে।
অনেক মাঠ, অনেক গাঁও পেরিয়ে একসময় ধর্মা আর কুশী গারুদিয়ার বাজারে এসে পড়ল।
গারুদিয়া বাজারটা বেশ জমজমাট। এখানে বিজলি বাতি আছে, সার সার দোকানপাট আছে। বেশির ভাগই একতলা দোতলা পাকা মকান এখানে। আর আছে পুলিশ চৌকি, হোটেল, স্কুল, দাওয়াখানা ইত্যাদি ইত্যাদি!
বাজার থেকে খানিকটা দূরে মাঝারি গোছের ‘গরমিন’ রেস্ট হাউস। ওখানেই ঠিকাদারদের আস্তানা।
চেনা জায়গা। দু-আড়াই সাল ধরে প্রায় রোজই একবার করে এখানে আসছে ধর্মারা!
রেস্ট হাউসের সামনের দিকে অনেকটা ঘাসের জমি। সেখানে এই রাত্রিবেলা বেতের চেয়ার পেতে ঠিকাদারবাবুরা তাস খেলছে। বাশের খুঁটি পুঁতে বিজলির তার টেনে একটা বাতি ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে মাথার ওপর।
ধর্মাদের দেখে ঠিকাদারবাবুদের ভাস খেলা বন্ধ হলো। তারপরেই তাদের নজর এসে পড়ল বাগড়িগুলোর ওপর। সঙ্গে সঙ্গে কয়েক জোড় চোখ চকচকিয়ে উঠল। গলা মিলিয়ে তারা চেঁচাল, ‘ইতনা বগেড়ি!’ সত্যিই এর আগে একসঙ্গে এতগুলো পাখি ধর্মারা আর আনতে পারে নি।
ধর্মা বলল, ‘হঁ সাব্, মিলা গৈল—’
মোটাসোটা চেহারার যে মধ্যবয়সী ঠিকাদারবাবুটি ধর্মার ডাইনে বসে আছে তার নাম অযোধ্যাপ্রসাদ। সে-ই যে এই ঠিকাদার কোম্পানির আসল মালিক, এতদিন যাতায়াতের ফলে সেটা জোনে ফেলেছে ধর্মারা। লোকটা প্রচণ্ড দারু আর মাংস খেতে পারে। বিশেষ করে বগেড়ি পাখির মাংস। দু-তিন বছরে পাঁচ সাত হাজার বাগড়ি তার পেটে ঢুকেছে। এভাবে চললে আর কিছুদিনের ভেতর ছোট-নাগপুরের বগেড়ি বংশ যে সাফ হয়ে যাবে, সে ব্যাপারে ধর্মার সন্দেহ নেই। কিন্তু এ নিয়ে বড় একটা মাথা ঘামায় না সে। পাখির বংশ রইল কি না রইল তাতে তার কী। তার পয়সা পাওয়া নিয়ে কথা।
এই পয়সাটা তার মুক্তি কেনার জন্য দরকার। বড়ে সরকার রঘুনাথ সিংয়ের হাত থেকে তাদের আর কুশীদের ছাড়ান পেতে হলে পুরাপাক্কা দু হাজার রুপাইয়া চাই-ই চাই। দু-তিন সাল ধরে সেই পয়সাই জমিয়ে চলেছে তারা। কিন্তু এসব কথা পরে।
ঠিকাদার অযোধ্যাপ্রসাদ বলল, ‘বহোত আচ্ছা।’ বলেই ছোঁ মেরে ধর্মার হাত থেকে দড়ি-বাঁধা বগেড়িগুলো প্রায় ছিনিয়ে নিয়ে সেগুলোর পেট টিপে টিপে পরখ করতে লাগল। পাখিগুলোর গা মাংসে ঠাসা। টেপাটেপি করতে করতে আরেক বার সে বলল, ‘বহোত আচ্ছা—’। শেষের বহোত আচ্ছাটা বগেড়িগুলো সম্পর্কে।
অনেক আশা নিয়ে দাড়িয়ে রইল ধর্মা। অযোধ্যাপ্রসাদের খুশী খুশী মুখ দেখে তার মনে হতে লাগল, আজ পয়সাটা বেশিই মিলবে।
অযোধ্যাপ্রসাদ পকেট থেকে একটা ব্যাগ বার করল। ব্যাগটা নোট আর রেজগিতে ফেটে পড়ছে।
কত রুপাইয়া আছে ঠিকাদারবাবুর ঐ ব্যাগটায়? দো হাজার হবে কি? ধর্মা ভাবতে চেষ্টা করল। অতগুলো টাকা নিশ্চয়ই কুশীদের তিনজন আর তাদের তিনজন মোট ছ’জনের মুক্তির দাম। ঐ টাকা-গুলো পেলে এখনই দৌড়ে গিয়ে রঘুনাথ সিংয়ের মুনশীজীর মুখের ওপর ছুঁড়ে দিয়ে আসতে পারত। তারপর আঃ, কী স্বাধীন মুক্ত নিশ্চিন্ত জীবন!
অযোধ্যাপ্রসাদ নোটের তাড়া থেকে বগেড়ির দাম বার করতে করতে বলল, ‘আজ তোদের এত দেরী হলো কেন রে? দারু নিয়ে বসে আছি। বগেড়ি ভাজা ছাড়া দারু জমে!’
কখন থেকে অন্যদিনে সন্ধ্যের আগে আগেই চলে আসে ধর্মারা। আজ সত্যিই দেরি হয়ে গেছে। ধর্মা বলল, ‘বড়ে সরকার মিঠাইয়া খিলাইল। উসি লিয়ে—’
অযোধ্যাপ্রসাদ বলল, ‘মিঠাইয়া খিলাল কেন রে? লেড়কা-লেড়কীর মাঙ্গি?’
‘নহী ঠিকাদার সাব।’ লাড্ডু খাওয়ানোর কারণটা জানিয়ে দিল ধর্মা, ‘বড়ে সরকার এম্লে বনেগা। উসি লিয়ে–’
এবার বেতের চেয়ারের ভেতর নড়েচড়ে বসল অযোধ্যাপ্রসাদ। হঠাৎ তাকে দারুণ উত্তেজিত মনে হলো এই মুহূর্তে। অন্য সঙ্গীদের দিকে তাকিয়ে সে বলতে লাগল, ‘সিংজী এম-এল-এ হতে যাচ্ছেন। অন্য ঠিকাদাররা যাবার আগে কাল সকালে গিয়েই তাঁর সঙ্গে দেখা করতে হবে। ওঁর সঙ্গে যোগাযোগ রাখলে পরে কাজে লাগবে, না কি বল?’
অন্য সবাই একসঙ্গে বলে উঠল, ‘হাঁ হাঁ জরুর। আমাদের যা কাজ তাতে এরকম পাওয়ারফুল লোকেদের হাতে রাখা দরকার। তা হলে বিছানায় শুয়ে শুয়েই এসব জায়গায় কন্ট্রাক্ট পেয়ে যাব।’
ধর্মা ওদের কথা বিশেষ কিছুই বুঝতে পারছিল না। একদৃষ্টে সে শুধু টাকার ব্যাগটার দিকে তাকিয়ে থাকে। তার চোখে পাতা পড়ে না।
এবার ধর্মার দিকে ফিরল অযোধ্যাপ্রসাদ। বলল, ‘বহোত বঢ়িয়া খবর দিয়েছিস। রঘুনাথ সিংজী এম-এল-এ হবেন। বহোত বঢ়িয়া বাত—’ বলেই ব্যাগ থেকে তিনটে দশ টাকার নোট বার করে ধর্মার দিকে ছুঁড়ে দিল। কুশীকে দেখিয়ে বলল, ‘ভালাই খবরের জন্যে আজ বেশি পয়সা দিলাম। দুলহানিয়াকে একটা শাড়ি কিনে দিস।’
মাটি থেকে নোট তিনটে কুড়িয়ে নেবার পরও ধর্মার যেন বিশ্বাস হচ্ছিল না। দু ডজন বগেড়ির জন্য নগদ ত্রিশ রুপাইয়া। এর আগে তিন টাকা সাড়ে তিন টাকার বেশি দাম কখনও পাওয়া যায় নি। কৃতজ্ঞতায় মাথাটা অনেকখানি ঝুঁকিয়ে ধর্মা আর কুশী বলল, ‘নমস্তে ঠিকাদার সাব, নমস্তে।’
এই ত্রিশটা টাকার কতখানি বগেড়ির জন্য এবং কতখানি রঘুনাথ সিংয়ের এম-এল-এ হবার খবর দেবার জন্য, ধর্মা ঠিক বুঝতে পারে না। তবে কোয়েলের মরা খাতে ঝুনকে ঝুন মেজুরের ছবি তার চোখের সামনে ভাসতে থাকে। ঠিকাদার বহুবার তাদের ময়ুর মেরে আনতে বলেছে। ময়ুরের মাংস নাকি খুবই সুস্বাদু। ঠিকাদার নাকের সামনে তাদের টোপ ঝুলিয়েই রেখেছে। ময়ূর ধরে আনতে পারলে অনেক বেশি দাম দেবে। দু ডজন বগেড়ির জন্য মিলেছে ত্রিশ রুপাইয়া। মেজুর এনে দিলে না জানি কত দাম পাওয়া যেত? কিন্তু সরকারী ঢ্যাঁড়া পড়েছে, ময়ূর মারা বারণ। কী আর করা যাবে! ধর্মা বড় করে দীর্ঘশ্বাস ফেলে।
অযোধ্যাপ্রসাদ বলল, ‘আজ যা, কাল বগেড়ি নিয়ে জলদি জলদি আসবি।’