আই. পি. সি. ৩৭৫ – ৮

আট

ঘাটপাড়ার পথ দিয়ে এগোতে এগোতে নদী থেকে আধ কিলোমিটার দূরে সরমা থেমেছিলেন।

দোকানপাট খুলছে। ভোরের বাস ধরতে লোক ও পথ দিয়েই যায়। ওপার থেকে তরকারি, ডিম, চাল নিয়েও লোক আসে।

কিছু লোকজন, কিছু ভিড়। টর্চের আলো।

সরমা এগিয়ে যান। ভিড় সরিয়ে দেন দু’হাতে। একজনকে বলেন, টর্চটা নেভান। আমি চিনেছি।

অতসী। মাথা একদিকে হেলান। হাত বোলান সরমা। জামা ছেঁড়া, কাপড় বা সায়া নেই।

কে একজন আস্তে বলে, বকুর মা!

সরমা বলেন, সরে যান। তারপর দাঁড়িয়ে পরনের কাপড় খুলে ফেলেন। হাতড়ে হাতড়ে অতসীকে যথাসাধ্য ঢাকেন, জড়িয়ে দেন কাপড়।

নতজানু সরমা ধীরে মুখ তোলেন চিবুক উঁচু করে। বলেন, বকু আমার কাছে স্বীকার করেছে সে অতসীকে মেরেছে আর…

—সে কোথায়?

মডেল গর্জে বলে।

ঈষৎ হাসেন সরমা।

—তার…আমার বাড়িতে…

—তাকে আমি…

—আপনারা তো কিছু করলেন না তাকে, এতকাল গেল, বিচার হল না…শাস্তি পেল না …অতসী, অতসী কিন্তু তাকে ছাড়েনি। সে সাধ্যমতো…

সরমার গলা নেমে আসে। ফিশফিশ করে বলেন, তাকে শাস্তি দিয়ে গেছে।

সরমা অতসীর বুকে মাথা রাখেন। দু’হাতে জড়িয়ে ধরেন ওকে।

মডেল বলে, ওনার গায়ে কিছু একটা ঢাকা দাও, এই চাদরটা দিন না আপনি। ভ্যান রিকশা বের করো। আর আমার সঙ্গে চলো হে যে যাবে। ওকে বাড়িতে…

কয়েক জোড়া পা ছুটে যাবার শব্দ।

সূর্য উঠছে। আকাশ লাল। প্রত্যুষ সূচিত হয়। সরমা নিশ্চল। জনতার আদালতেই তবে ৩৭৫ ধারায় আসামির বিচার হোক, যদিও অতসী আগেই সে দণ্ড দিয়ে গেছে। বকু নেই, অতসী নেই, সরমা ও নদী।

***

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *