পূর্বখণ্ড- সংশয়
মধ্যখণ্ড— সংযোগ
উত্তরখণ্ড— সংকাশ

অষ্টম পরিচ্ছেদ— রমণপাষ্টি

অষ্টম পরিচ্ছেদ— রমণপাষ্টি

একটা সরু ঘামের ধারা নেমে আসতে শুরু করল তারিণীর কপাল থেকে, চিবুক বেয়ে। বাইরে গরম হাওয়া বইছে। টেবিলে রাখা জমানো মাখন গলে গলে পড়ছে পিরিচের ওপরে। কিন্তু তারিণীর ঘামের কারণ সেই গরম না। যে নাম আর কোনও দিন শুনবে বলে সে ভাবেনি, আজ আচমকা শুনে সে যেন দিশেহারা হয়ে গেছে। সাহেব এই নাম জানলেন কী করে? সেই রাতে সেই ঘরে তো বাবু আর তারিণী ছাড়া তৃতীয় কোনও মরমানুষ ছিল না!

ফ্রিম্যাসন সংঘের সঙ্গে তারিণীর যোগাযোগ ইদানীং একেবারেই কমে এসেছিল। বরং শৈলর যাতায়াত বেড়েছিল। শেষ যে সামান্য সুতোটুকু লেগেছিল, তাও বাবু প্রসন্নকুমার দত্তের জন্য। হাটখোলার দত্তবাড়ির এই বাবু বৃদ্ধ হয়েছেন। আগের মতো সময় দিতে পারতেন না। তার উপরে বহুমূত্র রোগ তাঁকে একেবারে কাবু করে ফেলেছিল। শেষের দিকে প্রায় শয্যাশায়ী থাকতেন। নাতি গোপালচন্দ্র ডাক্তার। সে সাধ্যমতো চেষ্টা চালাচ্ছিল তাঁকে সুস্থ রাখার।

তারিণীর বেশ মনে আছে সেই রাতের কথা। গত বছর বর্ষাকাল। সারা দিনমান বৃষ্টিতে কলকাতা শহর যেন বড়ো একটা পুকুরের রূপ নিয়েছে। তারিণীর অফিসে জল ঢুকবে ঢুকবে। শৈল তখন সবে তারিণীর সঙ্গে এসে থাকতে শুরু করেছে। তবে সে রাতে শৈল ছিল না। কোথাও গেছিল। এই বৃষ্টিতে ফেরার সম্ভাবনা কম। তারিণী রাতে ভাতে ভাত ফুটিয়ে খেয়ে শুরু পড়বে ভাবছে। এমন সময় দরজায় বেশ জোরে কড়া নাড়ার আওয়াজ। দরজা খুলে দেখে এক দামি ওয়েলার দাঁড়িয়ে তার অফিসের সামনে। এ গাড়ি সে চেনে। কোচোয়ান জানাল বাবু প্রসন্নকুমারের শেষ অবস্থা। তিনি তারিণীকে তলব করেছেন। এ ডাক উপেক্ষা করা যায় না।

প্রসন্নকুমারের চাকর পথ দেখিয়ে বৈঠকখানা থেকে শোবার ঘরের দিকে নিয়ে চলল। বিরাট বাড়ি। আগাগোড়া বেলোয়ারি ঝাড়লণ্ঠন, দেয়ালগিরি, গালচে, মখমল আর সাদা পাথরের সামগ্রীতে ভরা। তারিণীর চোখ কপালে ওঠার জোগাড়। শোবার ঘরে খান দুই ইটের উপরে বসানো উঁচু খাট। ওঠার জন্য সামনে দুই ধাপ কাঠের সিঁড়ি। বাবু প্রসন্নকুমার গায়ে দামি আলোয়ান দিয়ে শুয়ে আছেন। চোখ দুটি বোজা। মাথার কাছে উঁচু জলচৌকিতে জলের গেলাস নানা রঙের ওষুধের বোতল, পিকদানি আর পাট করা গামছা। বিছানার নিচে পিতলের বেডপ্যান ঢাকা দেওয়া। মাথার কাছে চিবুক অবধি ঘোমটা টেনে এক মহিলা পাখার বাতাস করছিলেন। তারিণীদের দেখেই শশব্যস্ত হয়ে উঠে দাঁড়ালেন। চাকর প্রসন্নকুমারের কাছে গিয়ে কানে কানে কী যেন বলল। প্রসন্নকুমার চোখ মেললেন। বড়ো দুর্বল সেই দৃষ্টি। এদিক ওদিক চেয়ে যেন তারিণীকেই খোঁজার চেষ্টা করলেন। তারিণী পাশে এসে দাঁড়াল। তাঁকে দেখতে পেয়ে একটু হাসার চেষ্টা করলেন যেন। খুব ক্ষীণস্বরে বললেন, “এসো আমার চুঁচুড়ার ব্রাদার”।

চাকর বিছানা থেকে একটু দূরে একটা কাঠের চেয়ার এনে দিল। বসতেই প্রসন্নকুমার হাত নেড়ে ঘরের সবাইকে বেরিয়ে যেতে বললেন। চাকরটাও বেরিয়ে গেলে প্রসন্নকুমারের তারিণীর দিকে ফিরে শুলেন, “খুব অসুবিধায় ফেললাম, তাই না? আমি জানি। কিন্তু আমার আর বেশি সময় নেই। এদিকে এই খবর এমনই যা না বলে মারা গেলে মরেও শান্তি পাব না।”

“কী হয়েছে আপনার?”

“দীনবন্ধু, কেশবচন্দ্র থেকে বঙ্কিমবাবু সবাই যে রোগে মারা গেছেন, সেই বহুমূত্র রোগের একেবারে চরম পর্যায় আমার দেহে। এই জীর্ণ দেহ এখন পরিত্যাগের সময় এসেছে। সারারাত দুচোখের পাতা এক করতে পারি না। ঘন ঘন শয্যাত্যাগ করি। জল খাই। শৌচাগারে যাই। ইদানীং মূত্রনালীতে বড়ো একটা স্ফোটক হয়েছে। বড়ো কষ্ট হে, বড়ো কষ্ট।”

তারিণী অপেক্ষায় ছিল কখন প্রসন্নবাবু কাজের কথায় আসেন। সে ছদ্ম মনোযোগ দেখিয়ে মাথা নেড়ে যাচ্ছিল।

“বঙ্কিমবাবু এককালে আমাদের সংঘের ঘনিষ্ঠ ছিলেন।”

এটা তারিণীর কাছে নতুন খবর। সাহিত্যসম্রাট নিজে ফ্রিম্যাসনদের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন এ কথা ঘুণাক্ষরেও সে টের পায়নি। প্রসন্ন তার মুখ দেখে মনের ভাব বুঝলেন। “গুপ্ত সমিতির বৈশিষ্ট্যই হল তার অনেক কথাই গুপ্ত থাকে। সদস্যরাও সব জানে না। বঙ্কিমের প্রথম চাকরি সাব ডেপুটি হিসেবে ১৮৫৮ সালে। তখন থেকে ১৮৭৯ অবধি সব সরকারি রিপোর্টে তাঁর নামে উচ্ছ্বসিত প্রশংসা। ১৮৭৯-এ অসুস্থতার জন্য দীর্ঘদিন তিনি হুগলীতে ছুটিতে ছিলেন। সেই সময়ই আমাদের সংঘ থেকে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছিল।”

“কেন?”

“সরকারের উচ্চপদে আসীন ক্ষমতাশালী মানুষরা চিরকাল আমাদের কাজে আসেন। আমি নিজে বঙ্কিমের সঙ্গে দেখা করি। তাঁকে আমাদের আদর্শ বোঝাই, উদ্দেশ্য বোঝাই। বঙ্কিম আমাদের সদস্য হতেও রাজি হন। প্রায় সেই সময়ই তিনি আনন্দমঠ লিখছিলেন। তুমি আনন্দমঠ পড়েছ?”

তারিণী মাথা নেড়ে জানাল সে পড়েনি।

“ম্যাসনিক লজে প্রথমবার ঢোকার সময় তোমায় কী কী প্রশ্ন করা হয়েছিল মনে আছে?”

“আজ্ঞে আছে। তোমার উদ্দেশ্য কী? আলোকপ্রাপ্ত হওয়া। তোমার পণ কী? আমার জীবন। তুমি কী ত্যাগ করবে? আমার সর্বস্ব। এমন সব”।

“বাহ। এবার দ্যাখো আনন্দমঠের একেবারে শুরুতেই বঙ্কিমবাবু ঠিক এই কথাগুলোই লিখেছেন”, বলে খাটের পাশে থেকে লাল মলাটের একটা বই তারিণীর হাতে তুলে দিলেন। তারিণীর চোখ বড়ো বড়ো হয়ে গেল। অবিকল সেই কথাগুলোই লেখা!

“এর পরেই বঙ্কিমের ভাগ্য বদলাতে শুরু করে। ১৮৮২ সালে বঙ্গদর্শনে এই লেখা প্ৰকাশ পেলে সরকারি রিপোর্টে তাঁর নামে বেশ খারাপ খারাপ কথাই লেখা হয়। এই রিপোর্ট আর কোনও দিন ভালো হয়নি। সারাজীবন ডেপুটি হয়েই থেকেছেন তিনি, তাও তৃতীয় বা দ্বিতীয় শ্রেণিতে। জীবনের একেবারে শেষে যখন তিনি স্বেচ্ছাবসরের সিদ্ধান্ত নিলেন, তার পরেই রিপোর্ট ভালো হয় ও প্রথম শ্রেণিতে উত্তীর্ণ হন। আমাকে নিজে তিনি বলেছেন আনন্দমঠ তাঁর জীবনের অভিশাপ।

“আপনি এই কথা বলতে আমায় ডেকেছেন?”

তারিণীর গলায় বোধহয় একটা বিরক্তির ছাপ টের পেয়েছিলেন প্রসন্নকুমার। বললেন, “এটা না বললে যে কারণে তোমায় ডাকা সেটা বুঝতে পারবে না। আপাতভাবে আমাদের সংঘের সঙ্গে সব সংস্রব ত্যাগ করলেও সংঘ তাঁকে পরিত্যাগ করেনি। আমরা হাত ধরলে হাত ছাড়ি না। সংঘে ঢোকা সহজ। বেরোনো অসম্ভব, তা তুমি জানো। তবে জীবনের একেবারে শেষদিকে তিনি আমাদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেছিলেন। বঙ্গদর্শনে বিজ্ঞাপন বেরোল। বঙ্কিমবাবুর নতুন সামাজিক উপন্যাস আসছে। নাম রমণপাষ্টি। একমাত্র আমিই বুঝলাম এই ডাক শুধু আমার জন্যেই।”

“কীভাবে?”

“পাষ্টি বোঝো? পাশা খেলার বোর্ড। আমাদের ম্যাসনিক স্কোয়ারকে মজা করে বঙ্কিম নাম দিয়েছিলেন রমণপাষ্টি। এ নাম আমি ছাড়া আর কেউ জানত না।”

তারিণী ম্যাসনিক স্কোয়ার জানে। একটা বর্গক্ষেত্রের মধ্যে নটা খোপ কেটে ১ থেকে ৯ এমনভাবে লেখা, যাতে যেদিক থেকেই যোগ করা হোক না কেন যোগফল পনেরো হয়। এই পনেরো হল ফ্রিম্যাসনদের স্বর্গীয় সংখ্যা।

“তারপর?”

“একদিন এক সন্ন্যাসী সেজে আমি গেলাম বঙ্কিমবাবুর বাড়ি। প্রথমে তো দারোয়ান ঢুকতেই দেবে না, আমি বাড়ির সামনের গলিতে অপেক্ষা করতে লাগলাম। খানিক বাদেই নাতিদের নিয়ে বঙ্কিম বেরোলেন বিকেলের হাওয়া খেতে। আমায় দেখেই চিনতে পারলেন। সসম্মানে নিয়ে গেলেন নিজের শোবার ঘরে। তারপর এক অদ্ভুত তথ্য দিলেন।”  

“কী তথ্য?”  

“আমাদের সংঘের বিলাতে যে ভাগটি আছে তার মধ্যে নাকি একদল চরমপন্থীর আগমন হয়েছে। তারা আমাদের মতো যিশুর দেখানো শান্তির পথ ছেড়ে হিংসার রাস্তা ধরেছে। তাদের উদ্দেশ্য যেনতেন প্রকারে ক্ষমতা দখল করা। আমাদের সংঘের মধ্যেই থেকে নিজেদের মতো এক উপসংঘ চালু করেছে তারা। রোমান প্যাগান আদর্শে দীক্ষিত এই উপসংঘ প্রচণ্ড নির্মম ও চরমপন্থায় বিশ্বাসী। কিন্তু তারা কারা, ঠিক কী করতে চায়, সব আমাদের অজানা। ব্রিটিশ পুলিশ এটুকু জানতে পেরেছে, তাদের মূল ঘাঁটি নাকি এখন এই দেশে। একেবারে অশরীরীর মতো কাজ চালায় তারা। গুপ্ত সমিতির মধ্যে গুপ্ত সমিতি। বুঝতে পারছ?”

উত্তর না দিয়ে উপরে নিচে মাথা নাড়ল তারিণী। এতক্ষণ কথা বলে ক্লান্ত হয়ে পড়েছিলেন প্রসন্নকুমার। হাত বাড়িয়ে জল চাইলেন।

তারিণী গেলাস এগিয়ে দিতে এক ঢোঁক জল খেয়ে বললেন, “বেশি খেতে ভয় পাই। ঘন অর্থহীন। বঙ্কিমবাবু কীভাবে জেনেছেন আমায় জানাননি। এক, এই উপসমিতির গোপন নাম

ঘন পেচ্ছাব পায়। যা বলছিলাম, পুলিশের কাছে মাত্র দুটো খবর আছে। তার একটা আবার জাবুলন। আর দুই, কোনও প্রেতাত্মা এদের শক্তিবৃদ্ধিতে সাহায্য করছে।”

“প্রেতাত্মা?”

“প্রেতাত্মা বলেননি অবশ্য। বলেছিলেন ভূত। সে তো একই হল।”

মাথা চুলকায় তারিণী। “এতবছর বাদে আমাকে এসব বলার মানে কী?”

“দ্যাখো তারিণী, ড্রিসকল সাহেবের কাছে তোমার প্রচুর সুখ্যাত আমি শুনেছি। আমি এটাও জানি, তুমি পাঁচকান করবে না। আমি এত বছর গোপনে এই জাবুলনদের খুঁজে বার করার চেষ্টা করেছি। কিন্তু আমার সেই স্বাস্থ্যও নেই। সত্যি বলতে কী, বুদ্ধিও নেই। তবে কিছু তো আঁচ পাই। বুঝতে পারছি সংঘের মধ্যেই এরা দারুণভাবে মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে। কিন্তু প্রকাশ্যে এদের নাম কেউ করে না। এদের মিটিং কোথায় হয় কেউ জানে না। তবে এটা বুঝেছি ভয়ংকর কিছু একটা করতে চলেছে এরা। আর সেটা খুব তাড়াতাড়ি। তেমন কিছু হলে সর্বনাশ হয়ে যেতে পারে। শুনেছি রমণপাষ্টিকে নতুনভাবে ব্যাখ্যা করছে এরা। খোপের নয়টা সংখ্যা আসলে এদের গ্র্যান্ডমাস্টার, মাস্টার আর সাতজন সিক্রেট মাস্টারের। বড়ো কিছু করতে গেলে এই নয়জন একত্রে রমণপাষ্টির দান দেয়। যার নম্বর আসে তাকে নিজের জীবন দিয়ে খেলা শুরু করতে হয়। কয়েকবছর আগে নাকি এই খেলা শুরু হয়ে গেছে। খেলা শেষে কী হয় সেটাও কেউ জানে না। বঙ্কিমবাবু সরকারি আমলা, ওঁর কাছে এসবের খবর থাকত।”

“বঙ্কিমবাবুর সেই বই?”

“সে আর লেখা হল কোথায়? বিজ্ঞাপন প্রকাশের কিছুদিন পরে তো বহুমূত্রে মারাই গেলেন। তারিণী, একমাত্র তুমিই পারো এদের খুঁজে বার করতে।”

“আপনি পুলিশকে জানাচ্ছেন না কেন?”

“কী জানাব? আমার হাতে কোনও প্রমাণ আছে? শুধু সন্দেহের বশে এভাবে কিছু করা যায় নাকি? আর…” বলে গলা খাদে নামিয়ে প্রসন্নকুমার বললেন, “পুলিশেও যে ওদের লোক লুকিয়ে নেই তার কী প্রমাণ? না হে। এই কাজ তোমাকেই করতে হবে। একা। গোপনে। ভয়ানক এক বিপদ ঘনিয়ে উঠছে। মুশকিল হল সেটা কী কিংবা কীভাবে আসছে সে বিষয়ে কিচ্ছু জানি না।”

সেই রাতে বাড়ি ফিরে অবধি কাউকে কিচ্ছু বলেনি তারিণী। প্রসন্নকুমার আর মাসখানেক বেঁচেছিলেন। ডাক্তার মহেন্দ্রলাল সরকার অবধি অনেক চেষ্টা করেও বাঁচাতে পারেননি। তারিণী চেষ্টা করেছে খোঁজ নেবার। কিন্তু এ যেন অদৃশ্য কাচের তৈরি এক দেওয়াল। কোনও দিক থেকেই কোনও সূত্র পাওয়া যাচ্ছে না। শেষে এই গোটা ব্যাপারটা বৃদ্ধ প্রসন্নকুমারের মনের আজগুবি খেয়াল ভেবে প্রায় ভুলেই গেছিল তারিণী। আজ সাইগারসন সাহেবের নামটা শুনে তাই হকচকিয়ে উঠল।

সাইগারসন বুঝলেন এ নাম তারিণীর পরিচিত। তারিণীও ঠিক যেমনটা হয়েছিল, তেমনিভাবে বলল সাইগারসনকে। আঙুলের ডগাগুলো এক করে, চোখ বন্ধ করে শুনছিলেন সাহেব। হঠাৎ কেউ দেখলে ভাববে সাহেব হয়তো ঘুমিয়ে পড়েছেন। প্রিয়নাথ হতবাক। এসব নিয়ে তার কোনও ধারণাই ছিল না। তারিণীর বলা শেষ হল। ঘরে তিন-চারটে মৌমাছি কোথা থেকে ঢুকে পড়েছে। তার গুনগুন ছাড়া অন্য কোনও শব্দ নেই। সাইগারসন চুপচাপ তাদের দিকে তাকিয়ে কী যেন ভাবছেন। প্রথম কথা তারিণীই বলল, “সাহেব, সুদূর লন্ডন থেকে এই জাবুলনের খোঁজে আপনি এ দেশে এসেছেন। আপনি আমার চেয়ে কিছু বেশি জানেন। যদি একটু খোলসা করে বলতেন….” সাইগারসন উত্তর না দিয়ে উঠে গিয়ে ডাইনিং টেবিলের একপাশে রাখা একতাড়া ছাপা কাগজ হাতে নিলেন। তাতে লাল হরফে লেখা, ‘কনফিডেনশিয়াল’।

“এই তথ্য প্রকাশ পেলে মাননীয় ইংরেজ বাহাদুর অবধি বিপদে পড়তে পারেন। তবে আপনাদের ওপর আমার ভরসা আছে। আর তথ্য গোপন রাখলে একত্র তদন্ত সম্ভব না। দয়া করে পড়ে দেখুন।” বলে সাইগারসন কাগজের তাড়াটা প্রিয়নাথ আর তারিণীর মাঝে রেখে দিলেন। খুব আলগোছে। যেন কোনও শক্তিশালী বোমা। এক্ষুনি ফেটে যাবে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *