যুবা অশ্বারোহী

যুবা অশ্বারোহী

যুবা অশ্বারোহী,
রাঙা কঙ্করের পথে কোন ব্যথা বহি
ফিরিতেছ একা একা নদীতীরে–সাঁঝে।
তোমারে চিনি না মোরা, আমাদের মাঝে
তোমারে পাই নি খুঁজে, দুপুরের রূঢ় কলরবে
নগরীর পথে মোরা নামিয়াছি যবে,
বন্দরের কোলাহলে–বেসাতির ফাঁদে
আধো হর্ষে—আধেক বিষাদে
বিকিকিনি করিয়াছি শুরু,
তুলিয়াছি স্থবিরের মতো দুটি ভুরু,
সংকোচ সংশয় ভয়ে উঠিয়াছি দহি—
দূরে—দূরে—কে তুমি বিরহী
ফিরিয়াছ, স্বপ্নালস আঁখি
দুটি তুলি দিবালোকে একান্ত একাকী
ছুটিয়াছ পাথরের বালুবেলা-পানে!
বনে বনে যখন অঘ্রানে
পাতা ঝরে—সবুজ পৃথিবী
যখন হারায়ে ফেলে শ্যাম বাস, কুসুমের নীবী
ঝাউশাখে পাখিনীর নীড়
ভেঙে যায়–কুয়াশার ভিড়
পথে পথে কালো হয়ে ওঠে,
অবেলায় নেভে আলো—সুন্দরীর ঠোঁটে
ডালিম ফুলের রং হয়ে যায় নীল,
মোরা ঘরে ফিরে যাই–কার ঝিল্‌মিল্‌
মায়ার মুকুরে তুমি একা দেখ ছবি!
পৃথিবীর যত গুণী আর যত কবি
তাহারে চেনে কি তারা? দিয়েছে কি ধরা
বাউলের বীণাতারে সে কখনও?—তাহার পসরা
ধরণীর মধুকর-ডিঙীগুলি খুঁজে
পাব মোরা কোনো দিন!—তাই চোখ বুজে
মাটির বুকের ’পরে মুখখানা রাখি,
আমরা ঘুমায়ে পড়ি; নির্জন একাকী
পাথরের পথ দিয়া অশ্বারোহী কোন্‌
চলে যায়—শুনেছি কখন
বিক্ষুব্ধ ক্ষুরের শব্দ–দেয়ালের গায়
সুর তার বেজে ওঠে, বিদায় জানায়!

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *