পার্কে আরামের ঘুম দিয়ে জোয়ার্দার ভোর ৬টার দিকে জাগলেন। বিস্মিত হয়ে দেখলেন ঝাঁকে ঝাঁকে বুড়ো এবং আধাবুড়ো হাঁটাহাঁটি করছেন। অনেকের পরনে খেলোয়াড়দের মতো হাফপ্যান্ট। সাদা কেডস জুতা। উৎসব উৎসব ভাব। এক কোণায় টেবিল পাতা হয়েছে। টেবিলের পেছনে বাবরি চুলের এক ছেলে। সে পঞ্চাশ টাকা করে নিচ্ছে, সুগার মেপে দিচ্ছে। একজন ব্লাড প্ৰেশার মাপার যন্ত্র নিয়ে বসেছে। আরেকজনের কাছে ওজনের যন্ত্র। বুড়োদের দল স্বাস্থ্য রক্ষায় বের হয়েছে, এটা বুঝতে তাঁর সময় লাগল।
জোয়ার্দার আঙুল ফুটা করে সুগার মাপালেন। বাবরি চুল বলল, ফাস্টিং এ ফোর পয়েন্ট টু।
জোয়ার্দার বললেন, এটা ভালো না খারাপ?
কমতির দিকে আছে। আপনি কি ইনসুলিন নেন?
না।
জিটিটি করা আছে?
জিটিটি কী?
গ্রুকোজ টলারেন্স টেস্ট।
না।
প্রতি বুধবারে আমরা জিটিটির ব্যবস্থা রাখি। বুধবারে চলে আসবেন।
অবশ্যই আসব।
জোয়ার্দার প্ৰেশার মেপে জানলেন তাঁর নিচেরটা একটু বাড়তির দিকে, তবে ওপরেরটা ঠিক আছে।
ওপর-নিচ ব্যাপারটা তিনি বুঝলেন না। বোঝার ইচ্ছাও ছিল না। তিনি ওজন মাপলেন। তার ওজন পাওয়া গেল একাত্তর পাউন্ড। ওজনের সঙ্গে ভাগ্য পরীক্ষার কাগজও পাওয়া গেল। সেখানে লেখা অচিরেই লটারি কিং গুপ্তধন প্ৰাপ্তির সম্ভাবনা।
এক জায়গায় রং চা এবং ডায়াবেটিস বিস্কিট বিক্রি হচ্ছে। পাঁচ টাকায় একটা ডায়াবেটিস বিস্কিট এবং এক কাপ চা। সবাই খাচ্ছে। তিনিও খেলেন। বুড়োদের সঙ্গে কিছুক্ষণ দীেড়ালেন। তার বেশ ভালো লাগলো। বুড়োদের সব আলোচনাই রাতের ঘুম, রক্তের সুগার এবং ব্লাড প্রেশারে সীমাবদ্ধ। তাদের জগৎ ছোট হয়ে এই তিনে এসে থেমেছে।
জোয়ার্দারের অফিসে যেতে আধাঘণ্টার মতো দেরি হয়ে গেল। তাকে এক জোড়া স্যান্ডেল। কিনতে হলো। রাতে তার স্যান্ডেল চুরি হয়েছে। চোর পকেটে হাত দেয়নি। মানি ধ্যাগ নিয়ে গেলে ভালো ঝামেলা হতো। চোর মানিব্যাগ কেন নিলো না জোয়ার্দার বুঝতে পারছেন না। মনে হয় এই চোর তেমন এক্সপার্ট না। কিংবা তার চাহিদা কম। সে অল্পতেই তুষ্ট।
অফিসে ঢুকে জোয়ার্দার লক্ষ্য করলেন, সবাই তার দিকে কেমন করে যেন তাকাচ্ছে। তাদের তাকানোর ভঙ্গি থেকে কিছু বোঝা যাচ্ছে না। প্যান্টের জিপার খোলা থাকলে লোকজন এমন করে তাকায়। তার জিপার ঠিক আছে।
অফিসের পিয়ন হঠাৎ পা ছুঁয়ে তাকে সালাম করল। জোয়ার্দার বললেন, কী ব্যাপার?
স্যার, আপনার প্রমোশন হয়েছে। আপনি DGA হয়েছেন। জানেন না?
না তো। আমাকে এক কাপ চা দাও।
পিয়ন অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে। জোয়ার্দার যেন কিছুই হয়নি এমন ভঙ্গিতে ড্রয়ার খুলে ফাইল বের করতে লাগলেন। পিয়ন বলল, AG স্যারের সঙ্গে দেখা করবেন না?
দেখা করতে কি বলেছেন?
জি না।
তাহলে শুধু শুধু তাঁর সঙ্গে দেখা করব কেন?
স্যার মিষ্টি খাওয়াবেন না?
মিষ্টি খাওয়াব কেন?
এতবড় প্রমোশন পেয়েছেন মিষ্টি খাওয়াবেন না?
জোয়ার্দার মানি ব্যাগ খুলে একশ টাকার একটা নোট বের করলেন।
পিওন অবাক হয়ে তাকিয়ে রইল।
সুলতানার বাড়িতে হুলুস্থূল কাণ্ড।
অনিকা স্কুলে যায়নি। শুকনা মুখে বিড়াল কোলে ঘুরছে। রঞ্জু খবর পেয়ে ভোরে চলে এসেছে। বসার ঘরের সোফায় বসে কিছুক্ষণ পরপর বলছে,
Does not make any sense.
ঘটনা হচ্ছে সকালবেলা সুলতানা আবিষ্কার করেছেন তুহিন তুষারের ঘরের তিনটা বালিশ ছেড়া। ঘরময় তুলা উড়ছে। এই দুজন কাল রাতে ছিল না। রঞ্জু তার বাসায় নিয়ে গিয়েছিল। এখন রঞ্জুর সঙ্গে ফিরেছে। তারা সব কিছুতে মজা পায়। এবারের ঘটনায় মজা পাচ্ছে না। তারা আতংকিত কারণ বালিশের ভেতর তাদের গোপন টাকা লুকানো ছিল। তুলার সঙ্গে টাকাও বের হয়েছে।
সুলতানা চায়ের কাপ হাতে ভাইয়ের পাশে বসতে বসতে বললেন, আমি যে ঘরে দুই চুন্নি পুষছি তা তো জানি না। এদের এক্ষুনি বিদায় করা দরকার। আট হাজার তিন শ টাকা পাওয়া গেছে।
রঞ্জু বিরক্ত গলায় বলল, মূল জিনিস নিয়ে আগে আলোচনা কর। টাকা চুরি তো মূল না। কাজের লোক কিছু টাকা এদিক-ওদিক করবে। এটা মেনে নিতে হবে। তোমরা অসাবধান থাকবে ঘরময় টাকা ছড়িয়ে রাখবে। চুরি তো হবেই। উঠানে ধান ছিটিয়ে রাখলে কাক আসে। আসে না?
হুঁ।
দোষ তো কাকের না। দোষ যে ধান ছিটিয়েছে তারা। চুরির প্রসঙ্গ আপাতত বাদ। ওদের টাকা বাজেয়াপ্ত করা হবে। সেটাই ওদের শান্তি। এই দুজন চলে গেলে তোমার সংসার চলবে? কাজের মেয়ে পাওয়া আর ইউরেনিয়ামের খনি পাওয়া এখন সমান। বালিশ ছিঁড়ে তুলা কে বের করল এটা নিয়ে চিন্তা কর।
সুলতানা বললেন, ভূত না তো?
রঞ্জু বলল, কথায় কথায় ভূত-প্ৰেত নিয়ে আসবে না। ভূত-প্রেত আবার কী। আমার ধারণা, দরজা খুলে কেউ ঢুকেছে। তোমাকে ভয় দেখানোর জন্য এই কাণ্ড করেছে। বালিশ ছিঁড়ে চলে গেছে।
কে ঢুকবে দরজা খুলে?
যার কাছে মেইন দরজা খোলার চাবি আছে সে ঢুকবে।
তোর দুলাভাইয়ের কথা বলছিস?
রঞ্জু জবাব দিল, না।
তোর দুলাভাইকে টেলিফোন করে জিজ্ঞেস করব?
রঞ্জু বলল, করতে পারো। তবে টেকনিক্যালি জিজ্ঞেস করতে হবে। টেলিফোন তুলেই চিৎকার-চোঁচামেচি করলে তো হবে না। শায়লা মেয়েটি প্রসঙ্গে একটি কথাও বলবে না। আমি অলরেডি লোক লাগিয়েছি তারা পাত্তা লাগাবে।
সুলতানা বললেন, জিজ্ঞাসাবাদ যা করার তুই কর। আমি বাসায় আসতে বলি।
আসতে বললেই তো দুলাভাই ছুটে আসবেন না। অফিস ছুটি হলে তারপর হেলতে—দুলতে আসবেন।
জোয়ার্দরের সঙ্গে মোবাইল ফোন নেই। ফোন সিজ করা হয়েছে। সুলতানা বেশ ঝামেলা করেই অফিসের ল্যান্ডফোনে তাকে ধরলেন।
জোয়ার্দার বললেন, কেমন আছ?
সুলতানা বললেন, আমি কেমন আছি তোমার জানার দরকার নেই। তুমি এক্ষণ বাসায় আসো।
অফিস ছুটি হলেই আসব।
বাসায় বড় কোনো দুৰ্ঘটনা ঘটলেও তুমি অফিস করবে?
দুর্ঘটনা ঘটেছে?
তোমার সঙ্গে ইতিহাস কপচাতে পারব না। তোমার কাছে মেইন দরজা খোলার চাবি আছে কি না বলো।
চাবি আছে। এখন টেলিফোন রাখি। অফিসে কিছু ঝামেলা হয়েছে।
সুলতানা টেলিফোন রেখে গম্ভীর গলায় বললেন, রঞ্জু তুই যা ভেবেছিস তাই। তোর দুলাভাইয়ের কাছে মেইন দরজার চাবি আছে। কী অদ্ভুত মানুষ চিন্তা কর। আমাকে ভয় দেখানোর জন্য চুপি চুপি ঘরে ঢুকেছে। বালিশ ছিঁড়ে তছনছ করেছে। এই লোক তো যেকোনো সময় আমাকে খুন করতে পারে। চুপি চুপি ঘরে ঢুকে খুন করে পালিয়ে গেল। কেউ কিছু জানল না।
রঞ্জু বলল, দুলাভাইয়ের যে অদ্ভুত মানসিকতা দেখছি। নাথিং ইজ ইম্পসিবল। তোমাকে বলতে আমার খারাপ লাগছে আমার ধারণা দুলাভাই মাথা খারাপের দিকে যাচ্ছেন।
সুলতানা বললেন, আমি তো এই লোকের সঙ্গে বাস করব না। আজ সে অফিস থেকে ফিরুক, তুই তার সঙ্গে ফয়সালা করবি। আমি অনিকাকে নিয়ে তোর বাড়িতে উঠিব।
আমার দিক থেকে কোনোই সমস্যা নেই।
অনিকা দরজার আড়াল থেকে সব কথা শুনছে। সেখান থেকেই ক্ষীণ গলায় বলল, বাবা একা থাকবে?
সুলতানা বিরক্ত গলায় বললেন, একা থাকবে কোন দুঃখে? রাস্তা থেকে মেয়ে ধরে আনবে। ঐ মেয়ের কোলে বসে বাকি জীবন কাটাবে।
রঞ্জু বলল, বাচ্চাদের সামনে এ ধরনের কথা বলা ঠিক না।
জোয়ার্দার সাহেবের অফিসে আসলেই ঝামেলা হচ্ছে। তার সিনিয়র সহকমী বরকতউল্লাহর মাথা খারাপের মতো হয়ে গেছে। প্রমোশনের জন্যে তিনি অনেক ওপরের লেভেলে ধরাধরি করিয়েছেন। প্ৰধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক সচিব বরকতউল্লাহর আত্মীয়, সে বলেছে, বরকত ভাই, আপনি নাকে খাঁটি সরিষার তেল দিয়ে ঘুমান। খাঁটি তেল আপনার সন্ধানে না থাকলে আমাকে বলুন, আমি ঘানি ভাঙা তেল এনে দেব। DGA আপনি হচ্ছেন। কলকাঠি যা নাড়ার তা নাড়া হয়েছে। এরচে বেশি নাড়লে কাঠি ভেঙ্গে যাবে।
আজ ভোরবেলা কলকাঠি নাড়ার ফলাফল দেখে বরকতউল্লা স্তম্ভিত। ঘণ্টা দুই ঝিম ধরে থাকার পর হঠাৎ তাঁর মাথা চক্কর দিয়ে উঠল। তিনি চিৎকার-চোঁচামেচি শুরু করলেন। অশ্রাব্য ভাষায় জোয়ার্দারকে গালাগালি।
নির্বোধি গাধা। শূন্য আই কিউ-এর একজন মানুষ। সে DGA হয় কিভাবে? ঘোড়া ডিঙিয়ে ঘাস খাওয়া তো না, একে বলে হাতি ডিঙিয়ে কলা গাছ খাওয়া! আমি চুপচাপ বসে থাকব না। হাইকোর্টে মামলা করব। শালাকে আমি…।
বাকি কথা লেখা সম্ভব না। গালাগালি শোনার আনন্দের জন্য বরকতউল্লাহর অফিস রুমের সামনে ভিড় জমে গেল। গালাগালি করতে করতেই তাঁর স্ট্রোক হলো। দাঁড়ানো অবস্থা থেকে তিনি মেঝেতে পড়ে গেলেন। অ্যাম্বুলেন্সে করে তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলো।
ক্যান্টিনে জোয়ার্দার এক কোনায় বসে আছেন। তার এদিকে কেউ আসছে না। তবে ক্যান্টিনের বয় কয়েকবার এসে খোজ নিয়ে গেছে। তিনি সবজি, কৈ মাছ, ডালের অর্ডার দিয়েছেন। আজ মনে হয় দেরি হবে না।
খালেক ক্যান্টিনে ঢুকে সংকুচিত ভঙ্গিতে জোয়ার্দারের সামনে দাঁড়িয়ে বলল, স্যার বসব?
জোয়ার্দার অবাক হয়ে বললেন, জিজ্ঞেস করেছেন কেন?
এত বড় অফিসারের সামনে বসাও তো একধরনের বেয়াদবি। স্যার, আমি আপনার প্রমোশনে অন্তর থেকে খুশি হয়েছি। শুধু আমি একা না, অনেকেই খুশি হয়েছে। ভাবিকে কি খবরটা দিয়েছেন?
না।
জানি উনাকে খবর দিবেন না। আপনি অতি আজব মানুষ। আজ বাসায় যাবের সময় অবশ্যই ভাবির জন্য কোনো উপহার কিনে নিয়ে যাবেন।
কী উপহার কিনব?
মেয়েরা শাড়ি পেলে খুশি হয়। জামদানি শাড়ি কিনে নিয়ে যাবেন।
এত টাকা সঙ্গে নাই।
আমার কাছ থেকে ধার নিয়ে কিনবেন। শাড়ি আমি পছন্দ করে দেব। স্যার, আপনার ক্রেডিট কার্ড নাই?
না।
আশ্চৰ্য! আজকাল তো ভিক্ষুকেরও ক্রেডিট কার্ড আছে। আচ্ছা আমি এক সপ্তাহের মধ্যে ব্যবস্থা করে দিচ্ছি।
লাগবে না।
লাগবে না মানে? অবশ্যই লাগবে। এখন তো আর লেবেনডিস ভাবে চললে হবে না। গাড়িতে যাওয়া-আসা করবেন। ভাবই অন্য রকম।
গাড়ি কোথায় পাব?
অফিসের গাড়ি। DGA-র গাড়ি আছে।
ও আচ্ছা।
জোয়ার্দার বাসায় ফিরলেন সন্ধায়। সুলতানার হাতে শাড়ি দিতেই সুলতানা তীক্ষ্ণ গলায় চেঁচিয়ে উঠলেন, শাড়ি দিয়ে পার পেতে চাচ্ছ? লুচ্চা কোথাকার। এই শাড়ি রেখে দাও। রাস্তা থেকে যে মেয়ে আনবে তাকে দিয়ো। এখন সামনে বসো। তোমার সঙ্গে খুবই জরুরি কথা আছে। কথাগুলো আমি গুছিয়ে বলতে পারব না। কারণ তোমাকে দেখলেই রাগে আমার মাথায় রক্ত উঠে যাচ্ছে। রঞ্জু তুই বল।
সুলতানা সামনে থেকে চলে গেলেন। রঞ্জু বলল, দুলাভাই! বুকুর মানসিক অবস্থা তো দেখতেই পাচ্ছেন। প্ৰেশার ফ্ল্যাকচুয়েট করছে। আপনাকে দেখলে রেগে যাচ্ছে। আমার মনে হয় কিছুদিন আপনাদের আলাদা থাকা ভালো।
জোয়ার্দার বললেন, আচ্ছা।
বুবু কিছুদিন থাকুক আমার সঙ্গে।
থাকুক।
কী ঘটেছে আমি কিছুই জিজ্ঞেস করব না। আপনি কী নিজ থেকে কিছু বলবেন?
জোয়ার্দার বললেন, আমার মনটা খুব খারাপ। অফিস থেকে আসার পথে খবর পেয়েছি। বরকতউল্লাহ সাহেব মারা গেছেন।
বরকতউল্লাহ কে?
আমার একজন কলিগ। স্ট্রোক করে মারা গেছেন।
রাত এগারোটা। জোয়ার্দারের বাসা খালি। সবাই চলে গেছে। রাতের জন্য জোয়ার্দার চুলায় খিচুড়ি বসিয়েছেন।
ছাত্রজীবনে অনেকবার নিজে রান্না করেছেন। মাঝে মধ্যে এখনো রাধতে হয়। খিচুড়ি অখাদ্য হবে না। রান্নার শেষে এক চামচ ঘি দিতে পারলে ভালো হতো। তিনি ঘিয়ের কৌটা খুঁজে পাচ্ছেন না।
শোবারঘরে হুটোপুটির শব্দ শোনা যাচ্ছে। বিড়ালটা নিশ্চয় চলে এসেছে। বাসা যেহেতু খালি, জামালেরও আসার সম্ভাবনা।
জোয়ার্দার রান্নাঘর থেকেই লক্ষ্য করলেন কে যেন মন দিয়ে টিভি দেখছে। জামালের মতো না, বয়স্ক একজন মানুষ। জোয়ার্দার এগিয়ে গিয়ে দেখেন বরকতউল্লাহ বসে আছেন। এটা কী করে সম্ভব?
বরকতউল্লাহ তার দিকে তাকিয়ে বললেন, ভাল আছেন?
জোয়ার্দার তাকিয়েই আছেন। কী বলবেন ভেবে পাচ্ছেন না। বরকতুল্লাহ বললেন, কাইন্ডলি চ্যানেলটা বদলে দিন।
আমাকে বলছেন?
আপনাকে ছাড়া আর কাকে বলব। আর কেউ কি এখানে আছে? আমি সারাজীবন বলেছি আপনি একজন নিৰ্বোধ। আমি যে একা বলেছি তা-না! সবাই বলেছে। তারপর প্রমোশন হয়ে গেল। আপনার। এর মানে কি জানেন?
না।
এর মানে হচ্ছে এ্যাডমিনস্ট্রেশন হায়ার লেভেল গর্ধভ চায়।
স্যার! আপনি যে মারা গেছেন এটা জানেন?
গর্ধভের মত কথা বলবেন না। যদি সম্ভব হয় এক কাপ কফি খাওয়ান।
গেস্টরুমটা দেখিয়ে দেই স্যার যদি ইচ্ছা করে গেস্ট রুমে ঘুমাবেন।
আমি কোথায় ঘুমাব এটা আমার মাথা ব্যথা আপনার না। You go to hell.
জোয়ার্দার মোটামুটি নিশ্চিত হলেন তার মাথা পুরোপুরি খারাপ হয়ে গেছে। তার কোনো মানসিক হাসপাতালে ভর্তি হওয়া অত্যন্ত জরুরী।
Leave a Reply