নকুল

পাণ্ডবদের চতুর্থ ভ্রাতা – পাণ্ডুর ভার্যা মাদ্রীর সন্তান। কিন্দম মুনির অভিশাপে পাণ্ডুর পক্ষে পিতা হওয়া সম্ভব ছিল না। মাদ্রী পুত্র কামনা করলে, পাণ্ডু তাঁর অপর ভার্যা কুন্তির সাহায্য চান। দুর্বাসা মুনির প্র্রদত্ত বরে কুন্তি যে-কোনও দেবতাকে আহবান করে তাঁর পুত্র ধারণ করতে পারতেন। কুন্তি মাদ্রীকে তাঁর শক্তি প্রদান করলে মাদ্রী অশ্বিনীকুমারদ্বয়কে আহবান করে নকুল ও সহদেবকে জন্ম দিলেন। পাণ্ডুর মৃত্যুর পর মাদ্রী সহমরণে গেলে কুন্তিই নকুল ও সহদেবকে পুত্রবৎ পালন করেন। নকুলের এক ভার্যা ছিলেন দ্রৌপদী (যিনি অন্য পঞ্চ পাণ্ডবেরও ভার্যা)। অপর ভার্যা হলেন চেদিরাজ শিশুপালের কন্যা করেণুমতী। ওঁর দুই পুত্র – শতানীক (দ্রৌপদীর) ও নিরমিত্র (করেণুমতীর)। রাজসূয়-যজ্ঞের সময়ে দশার্ণ, ত্রিগর্ত, মালব ইত্যাদি দেশ জয় করলেও, নকুল ভালো যোদ্ধা ছিলেন না। কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধে কর্ণ এবং কর্ণের পুত্র বৃষসেনের কাছে পরাজিত হয়ে তিনি পলায়ন করেন। কিন্তু তিনি ছিলেন সুপুরুষ, শান্ত প্রকৃতির ও জ্যেষ্ঠ ভ্রাতার অনুগত। পাণ্ডবদের মহাপ্রস্থানের পথে প্রথমে দ্রৌপদী, তারপর সহদেব ভূমিতে পতিত হবার পর নকুলের পতন হল। ভীম তার কারণ জিজ্ঞাসা করায় যুধিষ্ঠির উত্তর দেন যে, নকুল মনে করতেন যে, তাঁর চেয়ে সুপুরুষ পৃথিবীতে আর কেউ নেই, এই অহঙ্কারই তার পতনের কারণ।

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *