আধি ভৌতিক

আধি ভৌতিক

জগনমামা বললেন, তাহলে বাবা ঝন্টু ততক্ষণ তুমি মামিমার সঙ্গে গল্পসল্প ( করো। আমি ঝটপট বাজারটা সেরে আসি।

বলে দরজার দিকে পা বাড়িয়ে হঠাৎ ঘুরে ডাকলেন, কই গো। ছাতিটা দাও বরং! এই সাতসকালেই রোদ্দুরটা বড় চড়ে গেছে।

জগনমামার মাথায় এমন প্রকাণ্ড টাক আমি আশা করিনি। এতকাল পরে ওঁকে দেখে খুব হকচকিয়ে গিয়েছিলাম। চেহারায় কী দারুণ অদলবদল না ঘটে গেছে। রোগা খটমটে চেহারার মানুষ ছিলেন। এখন বিশাল পিপে হয়ে উঠেছেন। মুখে এমন অশান্ত হাসিও দেখেছি বলে মনে পড়ে না। এই মফস্বল শহরে এখন ওঁর উকিল হিসেবে বেজায় নামডাকও হয়েছে এবং তার কারণ সম্ভবত ওঁর চেহারার এই ভোলবদল। আগে ওই শুটকো চেহারা আর খিটখিটে মেজাজের জন্যে মক্কেল যেমন জুটত না, তেমনি হাকিমরাও নাকি ওঁকে এজলাসে দেখলে চটে যেতেন। অবিশ্যি, সবই শোনা কথা।

এও শোনা কথা যে জগনমামার স্ত্রী আত্মহত্যাই করেছিলেন। কৌশলে কলেরায় মৃত্যু বলে ব্যাপারটা ধামাচাপা দেওয়া হয়েছিল। উকিল-মানুষদের তো পেটে-পেটে

বুদ্ধি।

বলে রাখা ভালো, জগনমামা কস্মিনকালে আমার মামাকুলের কেউ নন। ছেলেবেলায় আমার বাবা-মারা যান। পাড়াগাঁয়ে সম্পত্তি রাখার নানা ঝামেলা। মামলা মোকদ্দমার দায় সামলাতে হতো তাই মাকেই। সেই সুবাদে এই উকিল ভদ্রলোক মায়ের দাদা হয়ে উঠেছিলেন। কিন্তু আমি ভেবে পেলাম না জগনমামার মতো উকিল কেন ধরেছিলেন মা! তখন আরও কত জাঁদরেল উকিল এ শহরে তো ছিল। মামলায় হেরে গেলেও দেখতাম ফের এই ভদ্রলোকের কাছে এসে পড়েছেন।

হয়তো এটাই মানুষের অভ্যাস। চেনা-জানা ডাক্তারের হাতে মরতেও রাজি যেমন, তেমনি উকিল-মোক্তারের বেলাও তাই।

এখন মা নেই। আমি বিষয়সম্পত্তির হাল ধরেছি। আমি সেই একই অভ্যাসে এসে জুটেছি জগন-উকিলের দরজায়। মামলায় হার-জিত-ভবিষ্যতের কথা–ছোটবেলা থেকে যাঁকে মামা বলে জানি, তাঁর কাছে এসে দাঁড়ালে মনের জোর ভীষণ বেড়ে যায়।

তবে তার চেয়ে বড় কথা, জগনমামার এখন নাকি নামডাক হয়েছে। কাজেই আমার মনের জোর অনেক বেশি করেই বেড়েছে। আজ রোববার। আগের দিন ও রাত্তিরটা জগনমামার বাড়ি কুটুম্বিতা এবং শলাপরামর্শ করা যাবে বলেই আসা। আগামীকাল ফার্স্ট আওয়ারে কেস ঠোকা যাবে।

বুঝতে পারছিলাম, জগনমামা আবার বিয়ে করেছেন। তবে অবাক হচ্ছিলাম নতুন মামিমা একবারও ঘর থেকে বেরুচ্ছেন না দেখে। ভেতরের বারান্দার একটা চেয়ারে আমি বসে আছি। জগনমামা ওপাশের কিচেন থেকে চা এনেছেন। চায়ের খালি কাপ প্লেট-উনি রেখে এসেছেন। মামিমার পাত্তা নেই। জগনমামা ওঁর উদ্দেশে কথাবার্তা বলছেন। কিন্তু কোনও সাড়া আসছে না।

তাই ভাবছিলুম, একটা দাম্পত্য কলহ-গোছের কিছু ঘটে থাকবে। নাকি মামিমা ঠাকুরঘরে পুজোয় বসে আছেন?

জগনমামা ছাতি চাইলেন। তবু মামিমার সাড়া এল না। তখন জগনমামা মুখে একটু বিরক্তি ফুটিয়ে উঠোন থেকে বারান্দায় উঠলেন। তারপর তির খোঁজে ঘরে ঢুকলেন। ঘর থেকে ওঁর চাপা গলা শুনতে পেলাম। একটু পরে বেরিয়ে এলেন ছাতি হাতে। মুখে অশান্ত কথাবার্তা-হাসি। বললেন, তাহলে গল্পসল্প করো তোমরা। আমি ঝটপট ফিরব।

উনি খিড়কির দরজা দিয়ে বেরিয়ে গেলেন। ওদিকটায় আগাছার জঙ্গলের ভেতর দিয়ে শর্টকাট পায়ে চলার পথ আছে। গিয়ে উঠেছে বাজারের চওড়া রাস্তায়। এদিকটা একেবারে নিরিবিলি নিঃঝুম জায়গা। আশেপাশে বাড়ি বিশেষ নেই। গঙ্গার ধারে শহরের একপ্রান্তে এই বাড়িটার বয়স প্রাচীন। একটু তফাতে হাসপাতাল এলাকা, অন্য দিকটায় গঙ্গার পাড়ে বনজঙ্গলের সঙ্গে সাজানো ঘন বন। ভাঙন আটকাতেই ওই নিরামিষ জঙ্গল, জগনমামার ভাষায় নৈমিষারণ্য।

বাড়ি একেবারে চুপচাপ। গ্রীষ্মের এই সাতসকালে গঙ্গার দিক থেকে একটা হাওয়া এল শনশনিয়ে। হাওয়াটা খিড়কির দরজা ঠেলে উঠোনে ঢুকে বই-বাই করে ঘুরতে থাকল। তারপর পাঁচিলের ধারে জবা ও শিউলির ঝোপে হুলুস্থুল করে পটাপট কিছু হলুদ পাতা ছিঁড়ে পাঁচিল ডিঙিয়ে চলে গেল। এই সময় আমার মনে পড়ল যেদিকে হাওয়াটা গেল সেদিকটায় শ্মশানঘাট এবং একটু পরে সেই উঁচু বটগাছের মাথায় ঝাঁকুনি লাগল!

কিছু করার না থাকলে আমার উদ্ভট সব অনুভূতি জাগে। হঠাৎ মনে পড়ল ছেলেবেলায় দেখা মামির অর্থাৎ জগনবাবুর প্রথম স্ত্রীর কথা। আত্মহত্যা করলে মানুষ নাকি ভূত হয়। এমন নিরিবিলি বাড়িতে ভূতের পক্ষে হামলা করা ভারি সহজ। পুরোনো মামিমার ভূত নতুন মামিকে জ্বালায় না?

কে জানে কেন, এ বাড়িতে রাতে থাকতে হবে ভাবতেই এবার অস্বস্তি জাগল। ভূতে আমার বিশ্বাস নেই। কিন্তু ভূতের ভয় আমার বেজায় রকমের।

একটু কাশলাম। ভেতরের ঘর একেবারে চুপচাপ। সিগারেট টানতে থাকলাম। জগনমামা বলছিলেন, সব সময় খালি তোদের গল্প করি। তোর মায়ের মতো মহীয়সী মেয়ে তো আর হয় না। আর এই টুকুন ছিলি জানিস বাবা ঝন্টু? এই অ্যাটুকুন। আর কী ভীতু কী ভীতু।

এত সব যদি শুনে থাকেন ভদ্রমহিলা, তাহলে আমাকে দেখার জন্যে বেরুলেন না কেন কিছুতেই মাথায় ঢুকছে না।

সিগারেট শেষ করে বাড়ি ঢুকে চমকে উঠলাম। কোথা থেকে একটা নেড়ি কুকুর ঢুকে পড়েছে যে। বারান্দায় গিয়ে ভেতরের ঘরের পর্দার ফাঁকে উঁকি দিচ্ছে। চেঁচিয়ে উঠলাম, মামিমা! কুকুর ঢুকছে। কুকুর!

তবু সাড়া নেই দেখে দৌড়ে এলাম। কুকুরটা ঘরে ঢুকে পড়েছিল। লাথি খেয়ে কেঁউ-কেঁউ করে উঠল এবং ডিগবাজি খেতে-খেতে উঠোনে গিয়ে পড়ল। তারপর লেজ গুটিয়ে পালাল।

পর্দা তুলে উঁকি মেরে ডাকলাম, মামিমা! কিন্তু ঘর ফাঁকা। কেউ নেই। সেকেলে পালঙ্কের ওপর জগনমামার লুঙ্গি পড়ে আছে। ড্রেসিং টেবিলের দিকে তাকালাম। এক গুচ্ছের স্নো-পাউডার ইত্যাদি যথারীতি সাজানো। ওপাশে আলনায় কয়েকটা শাড়ি ও সায়া পর্যন্ত। সেগুলো অত ময়লা কেন ভেবে পেলাম না।

কিন্তু ঘরে একটা মেয়েলি গন্ধ টের পাচ্ছিলুম। আবছা মনে হল, মামিমার বয়স নিশ্চয় জগনমামার তুলনায় ঢের কম। মেয়েলি গন্ধটা কি চুলের? স্নানের পর মেয়েদের চুলের এমন গন্ধ হয়। একটু লজ্জা পেলাম! এ ঘরে ঢুকে দাঁড়িয়ে থাকাটা ঠিক হচ্ছে না। ভদ্রমহিলা ওপাশে কোথাও আছেন। এসে গেলে অপ্রস্তুতের একশেষ হবে।

বেরিয়ে আসার আগে ড্রেসিং টেবিলে রাখা ছবিটার দিকে চোখ পড়ল। পুরুষ ও মহিলার ছবি পাশাপাশি। কিন্তু চিনতে পারলাম না। শুধু দেখলাম, যুবতী মহিলাটি কেমন চোখে তাকিয়ে হাসছেন।

ঠিক এইসময় বাইরে জগনমামার সাড়া পেলাম।…বহু ভাগ্যে দুটো গলদা পেলাম, বুঝলে? মোট দুটো। থাকগে। এতেই হবে। আর ইয়ে, শানোর ছাই! ভুলে গেলাম যে!

ঝটপট বেরিয়ে শুনলাম, মামিমার গলা,–এ অসময়ে ওদের বাড়ি না গেলে চলত না? ঝটপট ফিরে এসো তাহলে। অবিশ্যি আজ রোববার। বেলা করেই খাওয়া যাবে।

নতুন মামিমা তাহলে কিচেনে ছিলেন।

ঘুরে জগনমামা একগাল হেসে বললেন,–এই যে ঝন্টু। আলাপ হল মামিমার সঙ্গে? গল্পের রাজা! থুড়ি রাণি! রাণি আর তুমি তো বরাবর ভূতের গল্প শুনতে ভালোবাসতে! এখন অবিশ্যি বড় হয়েছ। তাহলে মন্দ লাগবে না। কী বলো।

বলে চোখ নাচালেন,–রাত্তিরে শুনবেখণ…

বাইরের ঘরে জগনমামার ওকালতির আপিস। আজ ছুটির দিন বলে বুঝি ওঁর মুহুরিবাবু আসেননি। সেই ঘরে হাত-পা ছড়িয়ে বসে জিরিয়ে নিচ্ছিলাম। বাইরে রোদ বেড়েছে। এখনই লু হাওয়া বইতে শুরু করেছে। চারপাশে শুধু গাছপালার শনশন আর গঙ্গায় নাইতে যাওয়ার সরু গলিপথে আবর্জনার ঝড় বইছে শোঁশো করে। ভেতর থেকে জগনমামার কথাবার্তার আওয়াজ ভেসে আসছে। নতুন মামিমার সঙ্গে অনর্গল কথা বলছেন। ভদ্রমহিলাকে ভারি অদ্ভুত বলব। সম্ভবত শুনেই যাচ্ছেন মুখ বুজে।

আর কৌতূহল সম্বরণ করা দুঃসাধ্য হল। পর্দার ফাঁক দিয়ে উঁকি মারলাম। জগনমামা কিচেনের বারান্দায় দাঁড়িয়ে টেবিলে তরকারি কুটছেন এবং কথা বলছেন। কিচেনের দরজা সামনাসামনি। ভেতরে কেরোসিন কুকার জ্বলছে। রান্না হচ্ছে। কিন্তু নতুন মামিকে দেখা যাচ্ছে না।

মরিয়া হয়ে এগিয়ে গেলাম। আমার সাড়া পেয়ে জগনমামা হেসে বললেন, এসো বাবাজি! তোমার মামিমাকে বলছিলাম, ঝন্টু তো পাড়াগাঁয়ের ছেলে, বিশুদ্ধ জলবায়ু আর নির্ভেজাল খাদ্য খেয়ে মানুষ হয়েছে। এ ভূতের জায়গায় অখাদ্য কি ওর রুচবে?

বলেই ভেতরের সেই ঘরের দিকে তাকালেন।…তোমার অত কেন লজ্জা বলল তো? ঝন্টু বলতে গেলে আমার আপন ভাগনে। এসো। কই? বেশ, এসো না। ফিরে গিয়ে তোমারই বদনাম করবে! অচেনা তো নয়। সেই ছোট্ট বয়সে কতবার দেখেছ। বড় হয়েছে বলে লজ্জা! আশ্চর্য!

আপন মনে ফের গজগজ করতে থাকলেন।…তোমার এই একরোখামিই যত সর্বনাশের গোড়া।

আমি হকচকিয়ে গেছি ততক্ষণে। ছোট্ট বয়সে কতবার দেখেছে–এর মানে কী? তাহলে কি নতুন মামিমা আমার চেনাজানা কোনও মহিলা? জগনমামার হাবভাব দেখে কোনও কথা জিগ্যেস করতে সাহস হল না! বুঝলাম, আমার খুব পরিচিত মহিলাকেই বিয়ে করেছেন জগনমামা। এত পরিচিত যে মুখোমুখি হলে নিশ্চয়ই দুজনেই অপ্রস্তুত হয়ে পড়ার আশঙ্কা আছে। তাই উনি দেখা দিচ্ছেন না। খুব ভাবনায় পড়ে গেলাম। খুঁজেই পেলাম না, তেমন কে হতে পারেন নতুন মামিমা।

দুপুরে খাওয়ার সময়ও উনি এলেন না। জগনমামার মুখ গম্ভীর। সেটা খুবই স্বাভাবিক। টেবিলে সবই সাজানো ছিল! দুজনে চুপচাপ খেলাম। খাওয়া হলে জগনমামা বললেন,–ওপরে গিয়ে ঘুমিয়ে নাও। সাড়ে পাঁচটার আগে উঠো না। গরম কমলে বরং ঘুরে এসো গঙ্গার ধারে।

লম্বা হয়ে গেল ঘুমটা। উঠে দেখি টেবিলে চা ঢাকা আছে। নতুন মামিমা এসে দিয়ে গেছেন কি? বোধহয় জগনমামাই। বাড়ির ভেতর চুপচাপ। চা জুড়িয়ে গিয়েছিল। কল্পনা করলাম, নতুন মামিমা চা রেখে গেছেন, এবং আশ্চর্য, সেই মিষ্টি মেয়েলি গন্ধটা অবিকল টের পেলাম।

দরজা ভেজিয়ে গলিরাস্তায় গঙ্গার ধারে ঘুরতে গেলাম। ঘণ্টা দুই পরে যখন ফিরে এলাম, তখন এদিকটা ঘন অন্ধকারে ঢাকা। লোডশেডিং। দরজা বন্ধ থাকবে ভেবেছিলাম। কিন্তু কড়া নেড়ে সাড়া না পেয়ে ঠেলতেই দেখি, তেমনি খোলা। ভেতরে ঢুকে ডাকলাম, জগনমামা।

সাড়া এল,–আয় ঝন্টু। এখানে আয়। উঠোনে দাঁড়িয়ে আছেন জগনমামা কালো মূর্তিটি হয়ে। আলো নেই বাড়িতে। বললাম, আলো জ্বালেননি যে!

জগনমামা বললেন, অন্ধকার ভালো লাগে। আয় এখানে আয়। কী গো! এখন তো ঝন্টু তোমাকে দেখতে পাচ্ছে না, এবার কথা বলবে না কী? অ ঝন্টু, মামিমার সঙ্গে কথা বল।

ডাকলাম,–মামিমা। তারপর টের পেলাম অন্ধকার উঠোনে আবছা হয়ে দাঁড়িয়ে আছি শুধু আমি আর জগনমামা। হঠাৎ কেমন গা ছমছম করে উঠল। বললাম, জগনমামা, মামিমা কই?

এই তো! দেখতে পাচ্ছিস না? জগনমামা অস্বাভাবিক গলায় বললেন, কই গো, ঝন্টুকে ছুঁয়ে দাও তো! আহা দাও না বাবা! বলতে গেলে আপন ভাগ্নে ছোটবেলায় কত আদর করেছ!

অদ্ভুত হাসি হেসে জগনমামা আমার একটা হাত টেনে অন্য হাতে অন্ধকারে অদৃশ্য মামিমার হাত টানার ভঙ্গি করতেই আমার মাথা ঘুরে গেল এবং আচমকা হাত ছাড়িয়ে নিয়ে এক লাফে বারান্দা থেকে বাইরের ঘরে–তারপর ব্যাগট্যাগের কথা ভুলে দড়াম করে দরজা খুলে গলিতে গিয়ে পড়লাম। জগনমামা যে একজন বিদেহিনী স্ত্রীলোক নিয়ে ঘর করছেন, এতে আর সন্দেহ ছিল না।

.

মাস দুয়েক পরে একদিন শহরে গেছি। ব্যাগটা নিয়ে আসতে তো বটেই। জগনমামার অবস্থা দেখতেও তীব্র কৌতূহল হল। নিরিবিলি জায়গায় পুরোনো জরাজীর্ণ বাড়িটা দেখে একটু গা ছমছম করছিল। কিন্তু দিনদুপুরে আশা করি আর ভূতের ভয়টা পাব না।

দরজায় কড়া নাড়ার পর খুলল। খুলতেই আমার বুকের ভেতর রক্ত চড়াৎ করে উঠল। হাসিখুশি মিষ্টি চেহারার এক সুন্দরী মহিলা দরজার পাল্লায় হাত রেখে দাঁড়িয়েছেন। যেই হাসিখুশি মুখে বলছেন,-কাকে চাই, অমনি আমি পিছিয়ে এসেছি। আর লাফ দিয়েই–

ইনিই যে সেই নিরাকার মামিমা, যাঁর সঙ্গে জগনমামা অনর্গল কথা বলতেন এবং যিনি আত্মহত্যা করে মারা যান, তিনি ছাড়া আর কে হতে পারেন? ভুল হয়েছে বলে আমি হনহন করে চলে এলাম, পা টলছিল। একবারও পিছু ফেরার সাহস হল না। নিরাকার আকার ধরেই সমস্যা।

কিন্তু ব্যাপারটা আগাগোড়া রহস্যময়। তবে এটুকু মনে পড়ছে, পেছনে জগনমামার যেন চিৎকার শুনছিলাম ঝন্টু ও ঝন্টু! চলে যাচ্ছিস কেন? তোর নতুন মামিমার সঙ্গে আলাপ করে যা! কানের ভুল হতেও তো পারে। নতুন শব্দটা কি সত্যি শুনেছিলাম…?

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *