১. সুতপুত্ৰ উগ্রশ্রবা কর্তৃক গরুড় পুরাণের মাহাত্ম্য বর্ণনা

গরুড় পুরাণ (পৃথ্বীরাজ সেন)
অষ্টাদশ পুরাণ সমগ্র অখণ্ড সংস্করণ
উপদেষ্টা– শ্রী নরেশচন্দ্র শাস্ত্রী
সম্পাদনা • পরিমার্জনা • গ্রন্থনা– পৃথ্বীরাজ সেন

সুতপুত্ৰ উগ্রশ্রবা কর্তৃক গরুড় পুরাণের মাহাত্ম্য বর্ণনা

সুতমুনি উগ্রশ্রবা নৈমিষারণ্যে বসে ঋষিদের মাহাত্ম্য বর্ণনা করেছেন। সাত্ত্বিক পুরাণগুলির মধ্যে এই পুরাণ অন্যতম সেরা। স্বয়ং শ্রীকৃষ্ণ এই পুরাণের প্রবক্তা। তিনি তার বাহক বিনতানন্দন গরুড়কে এই পুরাণ শ্রবণ করিয়েছিলেন। মহর্ষি বেদব্যাস এই পুরাণ লিপিবদ্ধ করেন। উগ্রশ্রম তাঁর কাছ থেকে এই পুরাণের মাহাত্ম্য সম্পর্কে বিদিত হয়েছিলেন। এই পুরাণ যে পাঠ ও শ্রবণ করে, তার মঙ্গল সাধিত হয়।

.

গরুড় পুরাণের দুটি খণ্ড–পূর্ব খণ্ড ও উত্তরখণ্ড। বিভিন্ন ধরনের দেবদেবীর পুজো-আচ্চা, নানা উপাখ্যান, বৈদ্যশাস্ত্র, ধর্মকথা, অর্থনীতি, শ্রীগোবিন্দের ধ্যান ও পূজার নিয়ম, নীতিসার, নানা ধরনের ব্রত, সূর্য-চন্দ্রাদি বংশকথা নানা ধরনের প্রায়শ্চিত্ত ইত্যাদি নিয়ে পূর্বখণ্ড রচিত। উত্তরখণ্ডের মধ্যে আছে মানুষের মৃত্যুর পারলৌকিক ক্রিয়াদি, বৃষোৎসর্গ প্রেতত্বনাশকর্ম ইত্যাদি। এছাড়া বিভিন্ন নরকের নাম ও তার শাস্তি, বিবিধ দানের ফলাফল, অপমৃত্যুর গতি, পাপভেদে চিহ্নভেদ সম্পর্কেও অনেক কথা এই খণ্ডে বর্ণিত হয়েছে। মানুষ যা কিছু জ্ঞাত হতে চায়, গরুড় সেই সকল প্রশ্ন তার প্রভু শ্রীকৃষ্ণের কাছে রেখেছেন। স্বয়ং শ্রীগোবিন্দ তার উত্তর দিয়েছেন। এর মধ্যে কোনো কল্পনার স্থান নেই। আমরা কলিকালের মানুষ। আমরা কী জানি? গুরু? ধর্ম? না, এসব কিছুই আমাদের কাছে মান্য নয়। আর পরলোকের কথা তো চিন্তাই করি না। কিন্তু এই গরুড় পুরাণ পাঠ বা শ্রবণ করলে জানা যাবে যে, স্বয়ং ভগবান শ্রীকৃষ্ণ যে উত্তর প্রদান করেছেন, তা বাস্তবক্ষেত্রে একেবারেই মিথ্যা নয়।