৩-৪. রিজার্ভ ব্যাঙ্কের কারেন্সী অফিসার

অপুর্ববাবু রিজার্ভ ব্যাঙ্কের কারেন্সী অফিসার আর বিমলবাবু আশুতোষ কলেজে ইংরেজির অধ্যাপক। সপ্তাহের ছ’দিনই দু’জনকে ব্যস্ত থাকতে হয়। একটু ঢিলেঢালা আয়েষী দিন কাটাবার সুযোগ শুধু রবিবার। দু’জনেরই ঘুম ভেঙে যায় ভোরবেলায় কিন্তু দুজনেই গড়িমসি করে বিছানা ছাড়েন দেরি করে।

কিগো, বিছানা ছেড়ে উঠবে না নাকি? চটপট উঠে পড়ে মুখ ধুয়ে নাও; আর দেরি করলে চা ঠান্ডা হয়ে যাবে।

হ্যাঁ, হ্যাঁ, উঠছি।

অনুপমা ঘর থেকে বেরুতে বেরুতে বলেন, তুমি চা খেয়ে বাজার যাবে

তো?

কোন রবিবার বাজার যাই না বলতে পারো?

অনুপমা সে কথার উত্তর না দিয়েই চলে যান।

রবিবার সকালে বাজার যাবার ঝামেলা নেই অপূর্ববাবুর। উনি শনিবার অফিস থেকে ফেরার পথে জগুবাবুর বাজার বা লেক মার্কেট থেকে সারা সপ্তাহের বাজার করে বাড়ি ফেরেন।

যাইহোক বিমলবাবু বাজার থেকে ফেরার পাঁচ-দশ মিনিটের মধ্যেই অপূর্ববাবু এসে হাজির হবেনই।

কী হে বিমল। বাজার থেকে কখন ফিরলে?

এই তো একটু আগে।

এ রবিবার ঘুম থেকে উঠেই বাজার যাওয়া সত্যি ঝামেলার ব্যাপার তাই না?

হ্যাঁ, দাদা, ঠিকই বলেছ কিন্তু না গিয়ে তো উপায় নেই; অন্য কোনদিন তো বাজারে যাবার সুযোগ নেই।

উইক ডে’জ-এ তত তোমাকে বড্ড সকাল সকাল বেরুতে হয়।

হ্যাঁ, দাদা।

বিমলবাবু না থেমেই বলেন, সপ্তাহে পাঁচদিনই তো আমাকে মেয়েদের মর্নিং সেকশনে দুটো ক্লাস নিতে হয় সওয়া আটটায় আর ন’টায়। বহু অনুরোধ উপরোধ করেও এই ক্লাস দুটো ছাড়তে পারছি না।

কলেজ থেকে ফিরতেও তো তোমার বেশ দেরি হয়।

সপ্তাহে একদিন শুধু আড়াইটেতে ক্লাস শেষ হয়; শুধু সেদিনই বাড়ি ফিরে খেতে পারি।

ঠিক সেই সময় অনুপমা দু’কাপ কফি নিয়ে ঘরে ঢোকে। এক কাপ অপূর্ববাবুর দিকে এগিয়ে ধরে বলেন, দাদা, এই নিন।

অন্য একটা স্বামীর সামনে ধরে বলেন, তুমি ধরো।

কফির কাপে একবার চুমুক দিয়েই অপূর্ববাবু বলেন, সিস্টার, কী রান্না করছ?

অনুপমা একগাল হেসে বলেন, মনিকা তো সকালেই বলেছে এই সপ্তাহে তিন দিন ইলিশ খাওয়াবে, তাই শুধু তেতোর ডাল করছি।

তাই নাকি?

হ্যাঁ, দাদা।

আমাকে এক বাটি পাঠিও তো।

অনুপমা আবার হাসতে হাসতে বলেন, আপনি না বললেও ঠিকই পাঠাতাম।

জানো সিস্টার, তোমার হাতের নিরামিষ রান্না-খেলেই মায়ের রান্নার কথা মনে হয়। তোমার নিরামিষ রান্না এক কথায় পূর্ব।

আপনি আমাকে ছোট বোনের মতো স্নেহ করেন বলেই আমার রান্না আপনার এত ভাল লাগে।

হ্যাঁ, তা বলতে পারো।

অপূর্ববাবু একটু হেসে বলেন, সিস্টার, আসল কথা হচ্ছে, প্রিয়জন ভালবেসে যা দেয়, তা পাবার আনন্দই আলাদা।

হ্যাঁ, দাদা, ঠিক বলেছেন।

আসল কথা হচ্ছে, এই যে আমি তোমাকে ছোটবোনের মতো স্নেহ করি, ভালবাসি, তুমি যে আমাকে বড় ভাইয়ের মতো শ্রদ্ধা করো, ভালবাসো, বা ঘটনাচক্রে আমরা দুটো পরিবার এত ঘনিষ্ঠ হয়েছি, আজকাল এই ধরনের সম্পর্ক দুর্লভ হয়েছে। এ যুগের মানুষ বড় বেশি আত্মকেন্দ্রিক হয়েছে।

একদম ঠিক কথা বলেছেন। বিমলবাবু বলেন, দাদা, তুমি খুব ভাল করেই জানো, আগে কলকাতায় পাড়াকেন্দ্রিক একটা সম্পর্ক ছিল। আগে পাড়ার মধ্যেই আমাদের ঠাকুমা, বড় জ্যেঠিমা, ছোট জ্যেঠিমা, ভাল কাকা, নতুন কাকা, বড়দি, মেজদি, রাঙাদি ইত্যাদিকে নিয়ে আমরা কি আনন্দেই থেকেছি; আজকাল তা কল্পনাও করা যায় না।

অপূর্ববাবু সঙ্গে সঙ্গে বলেন, হ্যাঁ ভাই, ঠিক বলেছ। আগে আমাদের বাগবাজার পাড়ায় রোজ সন্ধেবেলায় একদল বয়স্ক মানুষ তাস আর পাশা খেলায় মেতে উঠতেন। আমার বাবা প্রতিদিন সন্ধের পর তাসের আড্ডায় না গেলে শান্তি পেতেন না।

উনি মুহূর্তের জন্য থেমেই বলেন, আমার মা আবার নাটক দেখতে খুব ভালবাসতেন; তিনি চিরকাল নাটক দেখতে গিয়েছেন পাড়ার রাঙা ঠাকুরপো আর তার স্ত্রী বা বৌদির সঙ্গে।

বিমলবাবু বলেন, দাদা, তুমি বোধহয় স্বীকার করবে পাড়াভিত্তিক এই কালচার, এই সম্পর্ক নষ্ট হল প্রথমে পার্টিশন আর অপর নকশাল আন্দোলনের জন্য। এই নকশাল আন্দোলনই আমাদের মধ্যে এমন সন্দেহ আর অবিশ্বাসের বীজ পুঁতে দিল যে পাড়ার অতি পরিচিতজনও আমাদের অপরিচিত মনে হতে শুরু হল।

হ্যাঁ ভাই, তুমি ঠিকই বলেছ।

অনুপমা বলেন, দাদা, এই পাড়াতে আমরা অনেকেরই মুখ চিনি কিন্তু আমাদের মধ্যে কোন সম্পর্কই গড়ে ওঠেনি।

জানো সিস্টার, আমি তোমার দিদিকে কী বলি?

কী বলেন?

বলি, পুরীতে তোমাদের সঙ্গে আলাপ পরিচয় ঘনিষ্ঠতা না হলে তোমার ঊরুর হাড় ভাঙার পর তিন-চার মাস তোমার ছেলেকে কে দেখত?

অনুপমা একটু হেসে বলেন, দাদা, ভুলে যাবেন না জগন্নাথদেবই আমাদের মিলিয়ে দিয়েছেন।

হ্যাঁ সিস্টার, ঠিকই বলেছ।

অপূর্ববাবু সঙ্গে সঙ্গে একটু হেসে বলেন, আমাদের ছেলে-মেয়ে দুটোর কপাল দেখো। মৌ ছাড়া আমাদের ছেলের কোন বন্ধু নেই। আবার আমাদের ছেলে ছাড়া মৌ-য়ের কোন বন্ধু নেই অথচ এই পাড়ায় কী কম ছেলেমেয়ে আছে?

হ্যাঁ দাদা, সত্যিই তাই।

হঠাৎ মনিকা দেবী এসে হাজির। উনি ঘরে ঢুকেই স্বামীকে বলেন, বাড়িতে ফিরে যে খাওয়া-দাওয়া করতে হবে তা কী ভুলে গিয়েছ?

কী আশ্চর্য! এত বকবক না করে মাছের ঝোলের পাত্রটা হাতে করে আনলেই তো এখানেই তেতোর ডাল আর মাছের ঝোল দিয়ে দু’মুঠো ভাত খেতে পারতাম।

অনুপমা সঙ্গে সঙ্গে নেচে ওঠেন। উনি মনিকা দেবীকে বলেন, তুই প্লিজ মালতাঁকে বলে দে…

তুই তো আচ্ছা পাগলামী শুরু করলি!

অপূর্ববাবু হাসতে হালতে বলেন, তোমাদের কাউকে কিছু করতে হবে না। আমি আর মালতী সব নিয়ে আসছি।

হ্যাঁ, হ্যাঁ নিয়ে এসো।

.

এইভাবেই মিলেমিশে দুটি পরিবারের দিনের পর দিন, মাসের পর মাস তো দূরের কথা, চলে যায় বছরের পর বছর।

প্রতিদিনের মতো সেদিনও দুপুরের খাওয়া-দাওয়ার পর মনিকা আর অনুপমা গল্পগুজব করছেন।

জানিস মনিকা, এখন মাঝে মাঝে মনে হয়, এই তো সেদিন পুরী বেড়াতে গিয়ে তোদের সঙ্গে আলাপ। বাবা জগন্নাথদেবের কৃপায় তোর মতো বন্ধু আর দাদার মতো বড় ভাই পেলাম। আমরা নিজেরা তিন বোন, কোন ভাই নেই। তাইতো দাদাকে পেয়ে আমার যে কি আনন্দ। কি তৃপ্তি পেয়েছি, তা বলতে পারব না।

তুই তো দাদার কথা বলছিস; আর তোর দাদা বলেন, জানো মনিকা, আমার স্থির বিশ্বাস অনু গতজন্মে আমার ছোট বোন ছিল। তা না হলে অমন পাগলের মতো কী আমাকে এত শ্রদ্ধা করতে বা ভালবাসতে পারে?

হ্যাঁ, তা হতে পারে। তবে এটা আমিও বিশ্বাস করি, আমার সঙ্গে দাদার কোন না কোন একটা বিশেষ যোগাযোগ, বিশেষ সম্পর্ক ছিল।

অনুপমা না থেমেই বলে, আমার যখন টাইফয়েড হল, তখন দাদা যা করেছেন, তা কোন পাতানো দাদা করতে পারে না। আর ওই হতভাগা ছেলেটা আমার কষ্ট দেখে কি কান্নাই কাদত!

তুই ভুলে যাস কেন, শান্ত তো তোরও ছেলে।

একশ’ বার ও আমার ছেলে।

মনিকা একটু হেসে বলেন, দেখতে দেখতে ছেলেমেয়ে দুটো কত বড় হয়ে গেল!

হ্যাঁ, ঠিক বলেছিস। আর শান্ত যত বড় হচ্ছে তত হ্যান্ডসাম হচ্ছে। তোর পেটের মেয়েটাকে কি চোখে পড়ে না?

মনিকা না থেমেই বলেন, মৌ-য়ের মতো সুন্দরী মেয়ে তো খুবই কম চোখে পড়ে। ওর চোখ-মুখের কোন তুলনা হয় না। তাছাড়া ওর চোখ দুটো

এমন যে মনে হয় সবসময় হাসছে।

বাবা! ওকে তোর এত সুন্দরী মনে হয়?

তুই যেন গাছ থেকে পড়লি?

তুই বোধহয় মনে করিস, মৌ-এর মতো সুন্দরী মেয়ে ভূ-ভারতে নেই।

আমি মোটেও তা ভাবি না; তবে মৌ যে অত্যন্ত সুন্দরী, সে বিষয়ে কোন সন্দেহ নেই।

একটু চুপ করে থাকার পর অনুপমা একটু হেসে বলেন, তবে ছেলেমেয়ে দুটোকে দেখে মনে হয়, ভবিষ্যতে ওরা আমাদের সম্পর্কটা বজায় রাখবে।

মনিকাও একটু হেসে বলেন, হ্যাঁ, তা রাখবে বলেই তো মনে হয়।

.

০৪.

শান্ত মৌ-কে নিয়ে বাড়ির বাইরে আসতেই ড্রাইভার বিদ্যুৎবেগে নিজের সিট ছেড়ে বেরিয়ে এসে পিছন দিকের দরজা খুলে দাঁড়ায়।

বিমলবাবু বলেন, হারে শান্ত, তুই ক’দিন কলকাতায় থাকবি?

ভাল কাকা, সেটা কাল বুঝতে পারব, তবে তিন-চারদিন নিশ্চয়ই থাকতে হবে।

অনুপমা দেবী বলেন, তুই আমার কাছে কবে খাবি?

শান্ত হাসতে হাসতে বলে, আমার ভাল মাতৃদেবী হুকুম,করলেই আমি তার প্রসাদ গ্রহণ করব।

ওর কথা শুনে ওরা স্বামী-স্ত্রী না হেসে পারেন না।

গাড়িতে ওঠার আগেই শান্ত বলে, ভাল মা, মৌ-এর জন্য চিন্তা করো না; ওকে বোধহয় রাত্রে খাইয়ে-দাইয়েই দিয়ে যাব।

তোর সঙ্গে যাচ্ছে, চিন্তার কী আছে? তবে দশটা-সাড়ে দশটার, বেশি রাত করিস না; আজকাল বেশি রাত পর্যন্ত জাগতে পারি না। এ99)

না, না, অত রাত হবে না।

গাড়ি স্টার্ট করতেই শান্ত ড্রাইভারকে বলে, হোটেল চলিয়ে।

ড্রাইভার মাথা নেড়ে সম্মতি জানায়।

শান্ত বাঁ হাত দিয়ে মৌ-য়ের ডান হাতটা চেপে ধরতেই দু’জনে দু’জনের দিকে তাকিয়ে শুধু হাসে। সে হাসিতে দু’জনেরই খুশি ঝরে পড়ে; কারুর মুখেই কোন কথা নেই কিন্তু মনে মনে দুজনেই কত কথা বলে।

বেশ কিছুক্ষণ পরে মৌ বলে, আর্মি নাইন থেকে টেনে উঠতে না উঠতেই তুমি কলকাতা থেকে চলে গেলে।

আমি চলে যাবার আগের দিনের কথা তোর মনে আছে?

সেদিনের কথা সারাজীবনেও ভুলতে পারব না।

মৌ মুহূর্তের জন্য থেমেই বলে, সেদিন তুমি কী কাণ্ডটাই করেছিলে; আমি লজ্জায় কুঁকড়ে গিয়েছিলাম।

শান্ত একটু হেসে বলে, সেদিন কী করেছিলাম?

কী করো নি?

মৌ হাসতে হাসতেই বলে, সেদিন তুমি চুমু খেতে খেতেই ব্লাউজের বোতাম খুলে আমার বুকে পর্যন্ত হাত দিয়েছিলে। সেদিন যেমন লজ্জা, তেমনই ভয় করছিল।

আর কিছু না?

মজাও লেগেছিল।

তুই বরাবরই সুন্দরী। তারপর তুই যত বড় হয়েছিস, তত বেশী সুন্দরী হয়েছিস। চোদ্দ-পনের বছর বয়সেই পদ্মের পাপড়ির মতোই তোর শরীরে যৌবন ফুটে উঠেছে। তাইতো যাবার আগের দিন তোকে একটু ভাল করে আদর না করে পারিনি।

আই. আই. এম, এ পড়ার সময় তোমাদের ব্যাচ-এ নিশ্চয়ই অনেক মেয়ে ছিল।

হ্যাঁ, প্রায় অর্ধেকই মেয়ে ছিল।

তাদের মধ্যে ক’জনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা হয়?

সকাল ন’টা থেকে সাড়ে পাঁচটা-ছ’টা পর্যন্ত আমাদের এমনভাবে কাটাতে হতো যে সব ছেলেমেয়ের মধ্যেই যথেষ্ট ঘনিষ্ঠতা গড়ে ওঠে।

তার মানে তোমার হাত থেকে অন্তত কয়েকটি মেয়ে নিষ্কৃতি পায়নি। তাইতো?

শান্ত হো হো করে হেসে ওঠে।

.

গাড়ি তাজ বেঙ্গলে পৌঁছায়।

এ ঘরে ঢুকে দরজা বন্ধ করেই শান্ত দুহঁত দিয়ে বুকের মধ্যে টেনে নিয়ে ওর মাথার উপর মুখখানা রেখে বলে, আ! কি শান্তি!

মৌ-ও দু’হাত দিয়ে ওকে জড়িয়ে ধরে।

মৌ, তুই আগের মতোই আমাকে ভালবাসিস তো?

আগের থেকে এখন তোমাকে অনেক বেশি ভালবাসি।

সত্যি?

হ্যাঁ, সত্যি।

কিন্তু কেন এখন বেশি ভালবাসিস?

আগে যখন তোমাকে কাছে পেয়েছি, তখন তোমাকে সত্যি ভাল লাগত; মনের মানুষকে ভালবাসার স্বাদ-আহ্লাদ বা আনন্দের গুরুত্ব তখন ঠিক বুঝতে পারতাম না।

এখন?

মৌ একটু হেসে বলে, এখন দেহ-মন আগের চাইতে অনেক পরিণত হয়েছে; তাইতো মনের মানুষকে ভালবাসতে আদর করতে খুব ইচ্ছা করে। খুব ইচ্ছা করে আদর পেতে, ভালবাসা পেতে।

শান্ত দু’হাত দিয়ে ওর মুখখানা ধরে বলে, প্লীজ আমাকে একটু আদর কর।

সত্যি আদর করব?

হ্যাঁ, প্লীজ।

মৌ দু’হাত দিয়ে ওর মুখখানা ধরে মনের সুখে চুমু খায়। তারপর জিজ্ঞেস করে, তোমার ভাল লেগেছে? খুশি হয়েছ?

শান্ত একটু হেসে বলে, হ্যাঁ ভাল লেগেছে কিন্তু আরেকবার চুমু খেলে খুব খুশি হব।

মৌ আবার ওকে খুব ভাল করে চুমু খায়।

কী খুশি হয়েছ তো?

হ্যাঁ, খুশি হয়েছি তবে মাঝে মাঝে চুমু না খেলে খুশি ভাব চলে যাবে।

মৌ আলতো করে ওকে একটা থাপ্পর মেরে হাসতে হাসতে বলে, আমার সঙ্গে মজা হচ্ছে, তাই না?

শান্ত হঠাৎ কোলে তুলে নিয়ে বিছানায় শুইয়ে দিয়ে ওর উপর হুমড়ি খেয়ে পড়ে হাসতে হাসতে বলে, এবার তোমাকে আমি আদর করব।

মৌ কিছু বলার আগেই ও ওকে চুমু খেতে খেতেই ব্লাউজ খুলে বুকে হাত দিতে শুরু করে। না, শান্ত ওখানেই থামে না…

আঃ! কী করছ?

শান্ত তখন ওকে প্রাণভরে পাবার জন্য পাগল হয়ে উঠেছে; মৌ-ও তখন আত্মহারা হয়ে উঠেছে। পরিপূর্ণভাবে পাবার নেশায় দু’জনেই জ্বলে উঠেছে।

আগুন নিভতেই শান্ত ওর বুকের উপর লুটিয়ে পড়ে; মৌ চোখ বুজেই দু’হাত দিয়ে ওকে জড়িয়ে ধরে। পনের-কুড়ি মিনিট দু’জনেই প্রায় বেহুঁস হয়ে ওইভাবে থাকে।

তারপর শান্ত বলে, মৌ!

জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে মৌ ওর দিকে তাকায়।

রাগ করেছ?

মৌ আলতো করে মাথা নেড়ে বলে, না।

খুশি হয়েছ? ভাল লেগেছে?

শান্তদা, আমিও রক্তমাংসের মানুষ; খিদে-তৃষ্ণার মতো আমারও কামনা-বাসনা আছে। প্রিয় মানুষের কাছে এই আদর ভালবাসা আর আনন্দ পাবার স্বপ্ন দেখে সব মেয়েরা।

তাহলে তোমার ভাল লেগেছে, কী বল?

হ্যাঁ, নিশ্চয়ই ভাল লেগেছে কিন্তু আমরা ঠিক করলাম কী?

মৌ, আমরা ছোটবেলা থেকেই দুজনে দুজনকে ভালবাসি। তারপর আস্তে আস্তে যত বড় হয়েছি, দু’জনে দু’জনকে তত বেশি কাছে চেয়েছি। আজ আমরা দু’জনেই যথেষ্ট বড় হয়েছি বলেই তো…

শান্ত কথাটা শেষ করে না।

আমি কী তোমাকে সত্যি আনন্দ দিতে পেরেছি?

হ্যাঁ, মৌ, সত্যি তুমি আমাকে আনন্দ দিয়েছ।

যাক অন্তত একটা সান্ত্বনা পেলাম আমি তোমাকে আনন্দ দিতে পেরেছি।

আচ্ছা মৌ, আমি কী তোমাকে আনন্দ দিতে পেরেছি?

আমি কী করে অস্বীকার করব, তুমি আমাকে আনন্দ দাওনি?

মৌ আলতো করে ওকে চুমু খেয়ে বলে, সত্যি তুমি দারুণ আনন্দ দিয়েছ।

দুপুরে খাওয়া-দাওয়ার পর দুজনে দু’জনের গলা জড়িয়ে শুয়ে থাকে। দু’জনের মুখেই হাসি; কারুর মুখেই কোন কথা নেই।

কী হল হাসছ কেন?

হাসছি এই কথা ভেবে যে ছেলের নাম শান্ত, সে কত অশান্ত হয়ে পাগলামী করতে পারে, তাই ভেবে হাসছি।

তুমি কী কম পাগলামী করেছ?

আমি আবার কখন পাগলামী করলাম?

না, না, তুমি পাগলামী করো নি; তুমি ধীরস্থির ধ্যানমগ্ন ছিলে।

মৌ হাসতে হাসতে বলে, আমি যদি পাগলামী করে থাকি, তার জন্য তুমি দায়ী।

হ্যাঁ, আমি সানন্দে স্বীকার করব আমি দায়ী।

শান্ত একটু পরেই বলে, তুমি ঘুমোবে না?

আজ জীবনে প্রথম তোমাকে এভাবে জড়িয়ে শুয়েছি; ঘুমিয়ে সময়টা নষ্ট করব কেন?

ওর কথা শুনে শান্ত না হেসে পারে না।

তোমার ঘুম পাচ্ছে?

শান্ত একটু হেসে বলে, তোমার মতো আগ্নেয়গিরির পাশে শুয়ে কোন পুরুষের ঘুম আসতে পারে?

অসভ্য কোথাকার! আমি আগ্নেয়গিরি?

তোমার মধ্যে যে আগুন দেখেছি সে আর কী বলব?

আঃ! তুমি চুপ করো।

শান্ত হাতের ঘড়ি দেখে বলে, সাড়ে চারটে বাজে, চা-কফি খাবে?

আড়াইটের সময় খেয়ে উঠেছি। এখন আর চা-কফি খাব না।

একটু কেনাকাটা করতে হবে; এখন বেরুবে?

হ্যাঁ, বেরুতে পারি।

তাহলে উঠে পড়ো।

হ্যাঁ, উঠছি।

.

গড়িয়াহাটের দোকানে ঢুকেই শান্ত বলে, আমার স্ত্রীর জন্য বেশ ভাল দুতিনটে সিল্কের শাড়ি দেখান তো।

মৌ ওর দিকে তাকাতেই শান্ত দৃষ্টি ঘুরিয়ে নেয়।

সেলসম্যান বেশ কিছু ভাল ভাল শাড়ি শো-কেসের উপর ছড়িয়ে দিয়ে বলেন, স্যার, দেখুন তো পছন্দ হয় কিনা।

শান্ত দু’চারটে শাড়ি দেখেই বলে, বা! বেশ ভাল তো। ও এবার পাশ ফিরে বলে, মৌ, দেখ তো কোনটা কোনটা তোমার পছন্দ।

সব শাড়িগুলোই আমার পছন্দ; সবগুলোই কিনে দাও।

ওর কথায় শুধু শান্ত না, সেলসম্যানও হেসে ওঠেন।

এবার মৌ বলে, আমার তো শাড়ির দরকার নেই; যাইহোক আমি একটা শাড়ি নিচ্ছি।

কোনটা তোমার পছন্দ!

এইটা।

গুড।

সেলসম্যান শাড়িটি আলাদা করে রাখতেই শান্ত বলে, মৌ প্লীজ আর একটা শাড়ি নাও।

দোকানে যেসব শাড়ি ঝোলানো ছিল, তার মধ্যে একটা শাড়ি দেখিয়ে মৌ বলে, এরকম শাড়ি দেখান তো।

সেলসম্যান ওইরকম শাড়ির বাণ্ডিল বের করেন, মৌ ওই বাণ্ডিলের একটা শাড়ি পছন্দ করে।

শান্ত বলে, সত্যি ভারী সুন্দর শাড়ি।

এবার শান্ত বলে, আমার মায়ের জন্য একটা ভাল সিল্কের শাড়ি চাই; সাদা খোলের ভাল বর্ডার দেওয়া শাড়ি।

হ্যাঁ, বুঝেছি।

মায়ের জন্য সিল্কের শাড়ি পছন্দ করার পর শান্ত বলে, এবার মায়ের জন্য একজোড়া ভাল তাঁতের শাড়ি চাই।

হ্যাঁ, মায়ের জন্য তাঁতের শাড়ি পছন্দ করার পর শান্ত বলে, এবার এক জোড়া ভাল ধুতি চাই।

হ্যাঁ, তাও হল।

স্যার, আর কিছু চাই?

না।

শান্ত সঙ্গে সঙ্গে পার্স থেকে একটা ডেবিট কার্ড বের করে সেলসম্যানের হাতে দেয়।

যাইহোক সই-টই করে ডেবিট কার্ড ফেরত নেবার পর শান্ত কাপড়ের প্যাকেটগুলো হাতে নিয়ে বেরিয়ে আসে।

মৌ ওর দিকে তাকিয়ে একটু হেসে বলে, এবার কি কিনতে হবে?

তুমি যা বলবে।

এত কাপড়-চোপড় কেনার দরকার ছিল?

এতদিন পর কলকাতা এলাম, ভাল মা-ভাল কাকাকে কি কিছু দিতে ইচ্ছে করে না আমার? ওরা কি আমার কেউ না?

কথাটা বলতে বলতে শান্তর গলা ধরে আসে; দুটো চোখ ছলছল করে।

মৌ ওর একটা হাত চেপে ধরে বলে, সরি শান্তদা, কথাটা বলা আমার ঠিক হয়নি।

মৌ, আমি দেবতা না; নিছক রক্ত-মাংসের মানুষ। তবে অমানুষ না। আমি আমার মা-বাবাকে হারিয়েছি, এখন এই পৃথিবীতে তোমরা তিনজন ছাড়া আমার আর কোন আপনজন নেই।

হ্যাঁ, তা আমি জানি।

এই যে ভাল কাকা টানাটানির কথা বললেন; কথাটা শুনে আমার খুব কষ্ট হয়েছে। বারবার মনে হচ্ছে, আমি এত টাকা মাইনে পাই কিন্তু কেন এতকাল ভাল মা-ভাল কাকাকে প্রত্যেক মাসে দু পাঁচ হাজার টাকা। পাঠাইনি? ওরা তো আমাকে সন্তান জ্ঞানেই চিরকাল স্নেহ করেছেন।

তুমি সত্যি বড় ভাল। তোমার কথাগুলো শুনে আমার যে কি গর্ব হচ্ছে তা ভাবতে পারবে না।

আমাকে নিয়ে গর্ব করতে হবে না; তুই শুধু দেখবি আমি মনুষ্যত্ব বিসর্জন দিয়ে অমানুষ না হই।

তোমার বিবেক আছে। তাইতো তুমি কোনদিনই অমানুষ হতে পারবে না।

.

হোটেলে ফিরে আসার পর কফি খেতে খেতে ওরা কথা বলে।

শান্ত একটু হেসে বলে, তুই ভাবতে পারবি না, মাঝে মাঝে কিছু মানুষ আমাকে কি ডেঞ্জারাস প্রলোভনের ফাঁদে ফেলতে চায়।

ওরা প্রলোভন দেখায় কেন।

ব্যবসার স্বার্থে, অনেক টাকা লাভ করার লোভে।

তোমার সঙ্গে ব্যবসার কী সম্পর্ক?

কফির কাপে লম্বা চুমুক দিয়ে শান্ত বলে, আসল কথা হচ্ছে আমাদের জনসন অ্যান্ড হ্যারিসন কোম্পানীর তৈরি কোন না কোন জিনিষ ভারতবর্ষের অন্তত আশি ভাগ মানুষ ব্যবহার করে।

হ্যাঁ, তা বলতে পারো।

সারা বছরে আমরা আশি হাজার কোটি টাকার জিনিষ বিক্রি করি; এই মাল বিক্রি করার দায়িত্ব আমাদের চারজনের। আমার দায়িত্ব আঠারো হাজার কোটি টাকার মাল বিক্রি করার।

মৌ একটু হেসে বলে, বাবা! শুনেই তো আমার মাথা ঘুরে যাচ্ছে।

না, না, মাথা ঘুরে যাবার মতো ব্যাপার না। আমাদের কোম্পানীর এত ভাল সুনাম যে আমাদের তৈরি কোন কিছু সম্পর্কেই মানুষের কোন অভিযোগ নেই।

তা ঠিক।

এখন আসল সমস্যার কথা বলি। ধরো উত্তরবঙ্গ আর সিকিমে চার হাজার কোটি টাকার জিনিষ বিক্রির টার্গেট। বেশ কিছু ব্যবসাদার চার হাজার কোটি টাকার র্জিনিষ বিক্রির এজেন্সী নিতে চায়।

একজন ব্যবসাদারই সব জিনিষ বিক্রির এজেন্সী চায়?

হ্যাঁ।

কিন্তু কেন?

যাতে চার শ’ কোটি টাকা লাভ করতে পারে।

মাই গড!

শান্ত একগাল হেসে বলে, ওহে সুন্দরী, এই এজেন্সী পাবার জন্য ব্যবসাদাররা আমাকে কত রকমের প্রলোভন দেখায়, তা তুই ভাবতে পারবি না।

মৌ-ও একটু হেসে বলে, শুনি, কী ধরনের প্রলোভন দেখায়।

কোন ব্যবসাদার দু’এককোটি টাকা ব্রিফকেসে ভর্তি করে পাঠায়, কেউ দিতে চায় দিল্লী, বোম্বে বা ব্যাঙ্গালোরে বিলাসবহুল ফ্ল্যাট। বিদেশে বেড়াবার সব খরচ, ছেলে-মেয়ের বিয়ের খরচ বা বিদেশে পড়াশুনা করার সব খরচ ও আরো কত কি।

আর কী দেবে?

হ্যাঁ, আরো দেবার আছে। শুনবি, আরো কী দিতে চায়?

হ্যাঁ, শুনতে চাই।

শান্ত হাসতে হাসতে বলে, এমন অনেক ব্যবসাদার আছে যারা তাদের সুন্দরী যুবতী স্ত্রী বা মেয়েকেও পাঠায় আমার সঙ্গে কয়েকদিন ঘুরে আসার জন্য।

এ রাম! কী বলছ তুমি?

হ্যাঁ, মৌ, সত্যি কথাই বলছি।

বউ বা মেয়েকে পাঠালে তুমি কী করো?

কখনো তাদের বকুনি দিয়ে ফেরত পাঠাই, আবার কখনো বলি তোমাদের চাইতে আমার স্ত্রী অনেক সুন্দরী, অনেক ভাল, সে আমাকে যে আনন্দ দেয়, তা তোমরা কল্পনা করতে পারবে না।

সত্যি তাই বল?

হ্যাঁ, মৌ, সত্যি তাই বলি।

শান্ত মুহূর্তের জন্য থেমে বলে, যেসব ব্যবসাদাররা মেয়ে-বউ পাঠায় তাদের আমি সোজা জানিয়ে দিই, আমি তোমাদের দু’এক কোটি টাকার ব্যবসা করারও সুযোগ দেব না।

ওই কথা শুনে ওরা চলে যায়? সবাই হাত-পা ধরে ক্ষমা চায়; তাছাড়া অনেকেই কান্নাকাটি করে। তারপর ওদের ব্যবসা দাও? ওই বছর কখনই দিই না; কাউকে কাউকে দু’এক বছর পরে দিই।

মৌ ওকে দু’হাত দিয়ে জড়িয়ে ধরে বুকের উপর মাথা রেখে বলে, শান্তদা, তুমি কোনদিন ব্যবসাদারদের প্রলোভনের ফঁদে পা দিও না। আমি কিন্তু চিন্তায় থাকলাম।

আমি কথা দিচ্ছি, আমি যদি একদিনের জন্যও কোন মেয়ের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ি, তাহলে আমি আর তোকে স্পর্শ করব না।

তুমি তো জানো, মেয়েরা সব দুঃখকষ্ট সহ্য করতে পারে কিন্তু মনের মানুষের উপর অন্য কোন মেয়ের অধিকার কিছুতেই সহ্য করতে পারে না।

শান্ত আলতো করে ওকে চুম্বন দিয়ে বলে, আমি চিরকাল শুধু তোরই থাকব; আমি কোনদিনই অন্য কাউকে মুহূর্তের জন্যও ভালবাসতে পারব না। আমাকে নিয়ে দুশ্চিন্তা করতে হবে না। এবার অন্য কথা বলি।

অন্য কী কথা?

আমরা এখানে না খেয়ে এখান থেকে চারজনের খাবার নিয়ে গিয়ে সবাই মিলে একসঙ্গে খাওয়া যাবে।

মৌ একগাল হেসে বলে, হ্যাঁ, হ্যাঁ সেই ভাল।

.

বিমলবাবু দরজা খুলে দিতেই শান্ত চিৎকার করে, ভাল মা, কোথায় গেলে? শিগগির এদিকে এসো।

অনুপমা দেবী ঘর থেকে বেরিয়ে এসে বলেন, অমন চিৎকার করছিস কেন? ভাল মা কী হারিয়ে গেছে?

তা হারিয়ে যেতে পারো।

আমি কোন দুঃখে হারিয়ে যাব?

হয়তো একটা সত্যিকারের ভাল ছেলে পাবার জন্য এখান থেকে চলে গেলে।

আমার যে ছেলে আছে, সেই যথেষ্ট।

ভাল মা, আগে এগুলো ধরো।

কী আছে এতে?

আমাদের চারজনের খাবার।

তুই আবার আমাদেরও খাবার এনেছিস?

ইয়েস মাম্মী।

আবার মাম্মী বলেছিস? মাম্মী বললেই থাপ্পড় খেতে হয়, তা কী ভুলে গেছিস?

মৌ হাতের প্যাকেটগুলো নিয়ে মা-বাবার ঘরে গিয়েই গলা চড়িয়ে বলে, মা, খাবারের প্যাকেটগুলো ডাইনিং টেবিলে রেখে তাড়াতাড়ি এদিকে এসো।

হ্যাঁ, মা আসছি।

.

সবাই ওই ঘরে আসতেই মৌ পরপর দুটো প্যাকেট খুলে একটু হেসে বলে, মা, শান্তবাবু এই দুটো আমাকে দিয়েছেন।

বিমলবাবু আর অনুপমা দেবী হাসতে হাসতে বলেন, দুটোই তো-দারুণ ভাল শাড়ি।

দুটোই দারুণ ভাল শাড়ি, দুটোই দারুণ দামী শাড়ি কিন্তু শান্তবাবুকে বারবার বারণ করা সত্ত্বেও তিনি আমার কথা শুনিলেন না।

শান্ত সঙ্গে সঙ্গে বলে, আমি যা ইচ্ছে তাই তোকে দেব; তাই তোকে নিতে হবে। ব্যবহারও করতে হবে।

এবার মৌ আরেকটা প্যাকেট খুলে দুটো ধুতি বের করে বলে, বাবা, তোমার ধুতি।

ধুতি দুটো হাতে নিয়ে বিমলবাবু খুশির হাসি হেসে বলেন, বাঃ! খুব সুন্দর।

মৌ এবার অন্য প্যাকেট থেকে একটা শাড়ি বের করে বলে, ভাল ছেলে তার ভাল মা-কে এই দুটো শাড়ি দিয়েছে।

শাড়ির উপর হাত রেখেই অনুপমা দেবী একটু হেসে বলেন, বুঝলি মৌ, এবার এই শাড়ি পরে বুক ফুলিয়ে সবাইকে বলতে পারব, আমার ভাল ছেলে এই সব শাড়ি দিয়েছে।

শান্ত অনুপমা দেবীকে জড়িয়ে ধরে বলে, মাতৃদেবী, বড্ড খিদে লেগেছে; প্লিজ এবার খেতে দাও।

হ্যাঁ, হ্যাঁ, চল।

খাওয়া শুরু করেই বিমলবাবু বলেন, শান্ত, রিয়েলী ভেরি গুড ফুড; তোের পছন্দ আছে।

অনুপমা দেবী স্বামীর দিকে তাকিয়ে বলেন, ভুলে যেও না, তাজ বেঙ্গলের খাবার। ওখানকার খাবার কখনো খারাপ হতে পারে?

খাওয়া-দাওয়ার পর হোটেলে ফিরে যাবার আগে শান্ত বলে, ওহে মৌ দেবী, কাল কী আমার সঙ্গে একটু ঘুরাঘুরি করতে পারবেন? আপনি থাকলে আমার একটু উপকারই হবে।

আপনার উপকার করিতে আমি সর্বদাই প্রস্তুত।

ভাল কাকা-ভাল মাকে প্রণাম করে শান্ত গাড়িতে ওঠে।

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *