• Skip to main content
  • Skip to header right navigation
  • Skip to site footer

Bangla Library

Read Bengali Books Online (বাংলা বই পড়ুন)

  • লেখক
  • My Account
  • লেখক
  • My Account
  • বাংলা ডিকশনারি
  • বাংলা কৌতুক
  • বাংলা লিরিক
  • বাংলা রেসিপি
  • হেলথ টিপস এন্ড নিউজ

বাংলা PDF ডাউনলোড

বাংলা নতুন/পুরাতন বইয়ের পিডিএফ ডাউনলোড/সন্ধান করতে আমাদের বাংলা পিফিএফ সাইটে ক্লিক করুন।

Bangla PDF

০৪. ওল্ড কোর্ট হাউস স্ট্রীট

লাইব্রেরি » নীহাররঞ্জন গুপ্ত » কিরীটী অমনিবাস (কিরীটী রায়) » রত্নমঞ্জিল » ০৪. ওল্ড কোর্ট হাউস স্ট্রীট

ওল্ড কোর্ট হাউস স্ট্রীট তখন অসংখ্য প্রাইভেট গাড়ি ও মানুষের ভিড়ে সরগরম।

একটা পান-সিগারেটের দোকানের সামনে লম্বা ঢাঙা মত একজন লোক মুখে একটা সিগারেট, আড়চোখে পুলিসের জীপগাড়ির দিকে তাকিয়ে ছিল। যতীন দত্তকে গাড়ীতে উঠে চলে যেতে দেখে সেও চট্‌  করে একটা ট্যাক্সিতে উঠে ড্রাইভারকে বললে অগ্রবর্তী জীপগাড়িটা দেখিয়ে সেটাকে অনুসরণ করতে।

এদিকে দত্ত অ্যাণ্ড সাহা অ্যাটর্নির ফার্ম থেকে বের হয়ে রতনলাল সোজা নেমে এসে রাস্তায় অপেক্ষামান তার নিউ মডেলের ঝকঝকে সন্টুডিবেকার গড়িটার সামনে দাঁড়াল। ড্রাইভার কিষেণ হাত বাড়িয়ে গাড়ির দরজা খুলে দিল।

গড়ির মধ্যে অত্যন্ত ঢ্যাঙ ও রোগা একটি লোক, পরিধানে পায়জামা ও পাঞ্জাবি, তার উপরে সার্জের সেরওয়ানী, মাথায় একটা সালের টুপি, হাতে ধরা মাকোভিচের একটা টিন, নিঃশব্দে বসে ধূমপান করছিল।

রতনলালকে গাড়ির মধ্যে উঠে বসতেই সেই ঢাঙা লোকটি প্রশ্ন করলে, তোমার অ্যাটনি কেন ডেকেছিল হে?

প্রশ্নকারীর জবাব কোন কিছু না বলে রতনলাল ড্রাইভার কিষেণের দিকে তাকিয়ে বলল, অফিস চল। জোরে চালাও।

গাড়ি চলতে শুরু করে।

কোর্ট ভেঙেছে, এই সময়—ঐ রাস্তায় বেজায় ভিড়, তা সত্ত্বেও কিষেণ দক্ষ চালনায় অনায়াসেই ভিড়ের মধ্যে দিয়ে বাঁচিয়ে গাড়ি বেশ জোরেই চালিয়ে নিয়ে যায়।

রতনলাল গাড়ির নরম গদিতে বেশ আরাম করে হেলান দিয়ে বসে জামার পকেট থেকে সুদৃশ্য একটা রূপার কোটা বের করে, কোটা হতে দু-আঙুলের সাহায্যে খানিকটা সুগন্ধি মিষ্টি সুপারি বের করে মুখগহ্বরে ফেলে কৌটোটা আবার যথাস্থানে রেখে দিল।

আরাম করে সুপুরি চিবুতে চিবুতে এতক্ষণে রতনলাল কথা বললে, পিয়ারীলাল, আজ রাত্রেই তুমি একবার বামনদেব অধিকারীর সঙ্গে দেখা কেরবে। তোমার হাতে হামি কিছু নগদ টাকা দেবে—চেষ্টা কোরবে যাতে কোরে রত্নমঞ্জিলের বিক্রয়-কোবালাটা দু’তিনদিনের মধ্যেই রেজিষ্ট্রি করিয়ে নেওয়া যায়। দরকার। যেমন বুঝবে-পঞ্চান্ন হাজার টাকা ছাড়াও দু-চার হাজার যদি বেশীও দিতে হয়, কবুল করে আসবে। মোট কথা মনে রাখবে, রেজিস্ট্রিটা দু-তিন দিনের মধ্যেই করিয়ে নিতে চাই।

পঞ্চান্ন হাজার টাকার উপরেও আরো দু-চার হাজার!

হ্যাঁ, দরকার হলে আরো দশ-বিশ হাজার—

কিন্তু ব্যাপারটা কি শেঠ?

ও বাড়ির আরো খরিদ্দার জুটেছে। বল কি শেঠ।

হ্যাঁ—

কিন্তু অধিকারীকে তো আগাম দশ হাজার টাকা বায়না দেওয়া হয়ে গিয়েছে, এখন অন্য পার্টির কথা আসে কোথা থেকে?

সে যদি এখন খেসারত দিয়ে বায়না ফিরিয়ে দেয়, বলে বিক্রি করব না—আটকাবে কি কোরে? তাই ভেবেছি চাদির জুতি দিয়ে বেটার মুখ বন্ধ করব। আমিও রতনলাল রাণা। একবার যখন হাত বাড়িয়েছি, এত সহজে হাত গুটিবো না।

কিন্তু শেঠ, তুমি কি সত্যিই মনে কর সেই বেটা মালীর কথা সত্যি?

কিন্তু সোনার মোহরটা তো সত্যি! একেবারে খাঁটি বাদশাহী মোহর!

পিয়ারীলাল বললে, বহরমপুর এককালে নবাবদের লীলানিকেতন ছিল! সেখানকার মাটিতে এক-আধটা বাদশাহী মোহর কুড়িয়ে পাওয়া এমন কোন আশ্চর্য ব্যাপার নয়। স্রেফ একটি দুটি সোনার মোহর পাওয়ার ওপরে এতগুলো টাকা নিয়ে এমনি বাজি খেলাটা কি যুক্তিসঙ্গত হবে শেঠ?

আরে জীবনটাই তো একটা বাজি খেলা! বাজি খেলায় হারজিত আছেই—জীবনে বহু বাজিতে জিতেছি, না হয় এ বাজিতে হারলামই। রতনলাল তার জন্য পরোয়া করে না!

সত্যি স্রেফ একটা বাজি খেলাই বটে।

রতনলাল রাণা বাজি খেলতেই নেমেছে!

 

মাস দেড়েক আগেকার কথা।

ব্যাপারটা প্রথম হতেই একটা দৈবাৎ ঘটনাচক্ৰ বলেই মনে হয়।

মাসখানেকের ছুটি নিয়ে হরিহর গিয়েছিল তার দেশে বহরমপুরে। অনেকদিনের বিশ্বাসী এবং প্রিয় ভৃত্য হরিহর রতনলালের। বহরমপুরে বামদেব অধিকারীর পূর্বপুরুষদের বাড়ী রত্নমঞ্জিল এমনি খালিই বহুদিন হতে পড়ে আছে। হরিহরের এক ভাই মনোহর রত্নমঞ্জিল থাকে কেয়ার টেকার’ হিসাবে।

খাওয়া-পরা ছাড়া নগদ ত্রিশটি করে টাকা মাসান্তে বামদেব পাঠিয়ে দিতেন নিয়মিত মনোহরকে।,

প্রকাণ্ড দোমহলা বাড়ি রত্নমঞ্জিল, প্রসাদ বললেও অত্যুক্তি হয় না। বাড়ির সামনে ও পশ্চাতে এখন অবিশ্যি দুর্ভেদ্য জঙ্গল। সেখানে বিষধরদের সর্পিল আনাগোনায় মধ্যে মধ্যে হঠাৎ কম্পন জাগে?

মনোহরের বয়স চল্লিশের মধ্যে। একা মানুষ, বিয়ে-থা করেনি। কালো কুচকুচে কষ্টিপাথরের মত গাত্রবর্ণ এবং বেঁটে গীটাগোটা চেহারা। প্রথম বয়সে মনোহর এক রাজপুত দারোয়ানের সঙ্গে দোক্তি পাতিয়ে লাঠি খেলা শিক্ষা করেছিল। এখনো তার সে রোগ যায়নি। রত্নমঞ্জিলের পশ্চাৎভাগে খানিকটা জঙ্গল পরিষ্কার করে নিয়ে পাড়ার কয়েকটি উৎসাহী ছেলেকে যোগাড় করে লাঠি খেলা শেখায় ও কসরৎ করে প্রতিদিন বিকেলের দিকে। নিচের মহালের একটা ঘর পরিষ্কার করে নিয়ে সেখানেই থাকে।

নিজের হাতে দু’বেলা রান্নাবান্না করে আর পাঁচ হাত লম্বা তৈলমসৃণ লাঠিটা রাত্রে শিয়রের কাছে রেখে নিশ্চিন্তে নাক ডাকায়।

সপ্তাহের মধ্যে এক-আধাদিন ওপরের ও নীচের মহলের ঘরগুলি ঝাড়পোছ করে। নিচের মহলের খান দুই ঘর ও ওপরের মহলের দক্ষিণ দিকের একটা ঘরে তালা দেওয়া। পুরাতন আমলের ভারী লোহার তালা প্রায় সৌর দেড়েক ওজনের হবে। কতকাল যে তালাগুলো খোলা হয় না—জং ধরে আছে। ঐ তিনটি বন্ধ ঘর ছাড়া অন্যান্য ঘরগুলোর তালার চাবি মনোহরের কাছেই থাকে।

গত ষোল-সতের বছর ধরে বামদেব অধিকারী রত্নমঞ্জিলে পা দেননি। মনোহরই এ বাড়ির একমাত্র বাসিন্দা। মনোহর প্রায় বছর আঠারো-উনিশ হয়ে গেল এ বাড়িতে ‘কেয়ার টেকার’ হয়ে আছে। মনোহরের জানিত কালে বার তিনেকের জন্য মাত্র বামদেব অধিকারী রত্নমঞ্জিলে এসেছিলেন। একবার দুদিন, তার পরের বার আটদিন ও শেষবার দিনচারক থেকে গিয়েছিলেন এবং সে সময়েও ঐ তালাবন্ধ ঘর তিনিটি খোলা হয়নি, কারণ বামদেবের কাছেও ঐ তালার চাবি ছিল না।

বহুকালের পুরাতন বাড়ি। নিচের তলার ঘরের মেঝেতে ফাটল ধরেছে। আচমকা একদিন মনোহর যে ঘরে বাস করত নিচের তলায় তারই মেঝের ফাটলপথে দেখা দেয় এক বিষধর কালকেউটে। সন্ত্রস্ত মনোহর কেউটের বাসা ধ্বংস করতে গিয়ে ঘরের মেঝের খানিকটা খুঁড়ে ফেলে এবং মাটি খুঁড়তে গিয়ে পায় দুটি বাদশাহী মোহর!

সোনার মোহর দুটি মনোহর সযত্নে তার প্যাটরার মধ্যেই রেখে দিয়েছিল, কারণ তার যথার্থ মূল্য সম্পর্কে মনোহর যথেষ্ট ওয়াকিবহাল ছিল তো না ই—এবং সে কোনদিন খুব বেশী অর্থ সম্পর্কে সচেতনও ছিল না বলেই আকস্মিকভাবে মাটি খুঁড়তে গিয়ে পাওয়া সোনার মোহর দুটি সম্পর্কেও বিশেষ কোন উত্তেজনা বোধ করেনি। কেবল যত্নের সঙ্গে প্যাটরার মধ্যে রেখে দিয়েছিল জামাকাপড়ের তলায় একফালি ন্যাকড়ায় বেঁধে।

ভুলেও গিয়েছিল বাদশাহী মোহর দুটোর কথা। তবে ইচ্ছা ছিল এবারে বাড়ির কর্তা এলে তার হাতে মোহর দুটি তুলে দেবে।

এমন সময় এলো কলকাতা হতে হরিহর! হরিহরেরও সংসারে এক মা-মরা বয়স্থ কন্যা ছাড়া কেউ ছিল না। তার বিয়েটা দিতে পারলেই সে নিশ্চিন্ত। প্ৰভু রতনলালকেও সে কথা বলেছিল। রতনলাল তার মেয়ের বিবাহে সাধ্যমত সাহায্যদানের প্রতিশ্রুতিও দিয়েছিল।

হরিহরের এবারে ছুটি নিয়ে আসবার আরো একটা উদ্দেশ্য ছিল মেয়েটিকে দেখেশুনে পাত্ৰস্থ করা। পাত্র একটি দেখা হল, কিন্তু টাকার খাঁকতি তার বড় বেশী। একদিন কথায় কথায় সেকথা মনোহরকে বলতে মনোহর তাকে আশ্বাস দিল তার হাতে জমানো যা আছে সে সব দেবে। এবং কথায় কথায় হঠাৎ সোনার মোহর দুটির কথা মনে পড়ায় সে দুটি প্যাটরা হতে বের করে হরিহরের হাতে দিয়ে বলে, মাটির তলায় মোহর দুটি সে পেয়েছে, সে ভেবেছিল বাড়ির মালিককেই মোহর দুটি দেবে—তা ঐ দুটোতে হরিহরের যদি কোন সাহায্য হয় তো সে নিতে পারে।

কলকাতায় শেঠের বাড়িতে চাকরি করে হরিহর, মোহর দুটি দেখেই সে বুঝেছিল তার মূল্য আছে এবং তার প্রভু শেঠকে মোহর দুটি দিলে বিনিময়ে সে বেশ মোটামত কিছু পাবে। সেই আশাতেই মোহর দুটি এনে সে মনিবের হাতে তুলে দেয়।

জহুরী রতনলাল মোহর দুটি পেয়ে সবিস্ময়ে প্রশ্ন করে হরিহরকে, কোথায় পেলি?

হরিহর মোহরের বৃত্তান্ত সব খুলে বলে।

হরিহরের মুখ থেকে মোহরের বৃত্তান্ত শুনে রতনলাল ব্যাপারটা গভীর ভাবে চিন্তা করে। পুরনো বাড়ির মেঝে খুঁড়ে মোহর পাওয়া গিয়েছে। ব্যাপারটার মধ্যে বিস্ময়কর কিছু নেই। আগেকার দিনে অমন অনেকেই তাদের ধনরত্ন ঘরের মেঝেতে—মাটির নীচে সংগোপনে লুকিয়ে রাখত, হয়তো ঐ রত্নমঞ্জিলের মাটির নীচেও তেমনি আছে!

সঙ্গে সঙ্গে একটা লোভের আগুন জ্বলে উঠে রতনলালের মনের মধ্যে।

রতনলাল হরিহর কে প্রশ্ন করে, এ মোহর দিয়ে তুই কি করবি?

কি করব আর বাবু—বিক্ৰী করে দেবো।

রতনলাল মোহর দুটি রেখে তখন হরিহরকে নগদ একশত টাকা দেয় হরিহর তাতেই খুশী।

দিন দুই বাদে কথা প্রসঙ্গে রাণী রতনলাল তার এক বাঙালী বন্ধুকে মোহরের কথা ঘলায় কৌতূহলী বন্ধু মোহর দুটো দেখতে চান।

Category: রত্নমঞ্জিল
পূর্ববর্তী:
« ০৩. কিরীটী বাড়ি ফিরছিল
পরবর্তী:
০৫. মোহর প্রাপ্তির কাহিনী »

Reader Interactions

Leave a Reply Cancel reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

বাংলা লাইব্রেরি : উল্লেখযোগ্য বিভাগসমূহ

লেখক ও রচনা

অনুবাদ সাহিত্য

সেবা প্রকাশনী

ডিকশনারি

কৌতু্ক / জোকস

লিরিক

রেসিপি

কোরআন

হাদিস

ত্রিপিটক

মহাভারত

রামায়ণ

পুরাণ

গীতা

বাইবেল

বিবিধ রচনা

বাংলা ওসিআর

Download Bangla PDF

হেলথ

লাইব্রেরি – ফেসবুক – PDF

top↑