ঋগ্বেদ ০৬।৫০

ঋগ্বেদ ০৬। ৫০
ঋগ্বেদ সংহিতা । ৬ষ্ঠ মণ্ডল । সূক্ত ৫০
নানা দেবতা। ঋজিশ্বা ঋষি।

(১) হে দেবগণ! আমি সুখের নিমিত্ত স্তোত্রসহকারে অদিতি, বরুণ, মিত্র, অগ্নি, শত্রুনিধনকারী ও সেবনীয় অর্য্যমা, সবিতা, ভগ এবং সমুদয় রক্ষাকারী দেবগণকে আহ্বান করিতেছি।

২। হে দীপ্তিসম্পন্ন সূর্য্য! তুমি দক্ষ হইতে সন্থ ত শোভনদীপ্তিশালী দেবগণকে আমাদিগেম প্রতি অনুকূল করিও। দি জন্ম। (অর্থাং উভয় স্বর্গ ও পৃথিবীতে প্রাদুর্ভূত) দেবগণ যাগপ্রিয়, সত্যবাদী, ধনসম্পন্ন, যাগার্হ ও অগ্নিজিহ্ব।

৩। হে স্বর্গ ও পৃথিবী! তোমরা সমধিক বল প্রদান কর। হে স্বর্গ ও পুথিবী! তোমরা আমাদিগের স্বচ্ছন্দ তার জন্য বিশালগৃহ প্রদান কর। যাচাতে আমাদিগের অতুল ঐশ্বর্য্য হয় তাহার উপায় বিধান কর। হে সদয় দেবদ্বয়! তোমরা আমাদিগের গৃহ হইতে পাপ বিদূরিত কর।

৪। গৃহপ্রদাতা অজেয় রুদ্রপুত্ৰগণ সম্প্রতি আহূত হইয়া যেন আমাদিগের নিকট আগমন করেন, কারণ তাঁহার মহৎ ও ক্ষুদ্র ক্লেশের সময় আমাদিগের সাহায্য করিবেন বলিয়া আমরা দেব মরুৎগণকে আহ্বান করি।

৫। যে মরুৎগণের সহিত দীপ্তিমান স্বর্গ ও পৃথিবী সংশ্লিষ্ট; ধনদ্বারা তো ইবগের সমৃদ্ধ বিধানকারী পূৰা যে মরুৎগণের সেবা করেন; হে মরুৎগণ! ঈদৃশ তোমরা যৎকালে আমাদিগের আহ্বান শ্রবণ করিয়া আগমন কর, তখন তোমাদিগের বিভিন্ন পথস্থিত প্রাণিবর্গ কম্পিত হইতে থাকে।

৬। হে স্তবকারী! তুমি অভিনব স্তোত্রদ্বারা স্তুতিভাজন বীর ইন্দ্রের স্তব কর। এইরূপে স্তম্ভমান সেই ইন্দ্ৰ যেন আমাদিগের আহ্বান শ্রবণ করেন ও আমাদিগের নিকট প্রভূত অন্ন প্রেরণ করেন।

৭। হে বারিরাশি! তোমরা মানবহিতসাধক, তোমরা আমাদিগের পুত্র ও পৌত্ৰগণের নিমিত্ত অনিষ্টনাশক রক্ষণশীল অন্ন প্রদান কর। তোমরা উপদ্রব সকল শান্ত ও বিদূরিত কর, কারণ তোমরা মাতৃগণ অপেক্ষ শ্রেষ্ঠ চিকিৎসক; তোমরা স্থাবর জঙ্গমাত্মক জগতের উৎপাদক।

৮। যিনি উধামুখের ন্যায় যজমানের নিকট অভিলষিত ধন প্রকাশ করেন, সেই রক্ষণকারী হিরণ্যপাণি পূজনীয় সবিতা যেন আমাদিগের নিকট আগমন করেন।

৯। হে শক্তিপুত্র অগ্নি! তুমি অদ্য আমাদিগের এই যজ্ঞে দেবগণকে আনয়ন কর। আমি যেন সৰ্ব্বদা ত্বদীয় বদান্তত অস্তুভব করি। হে দেব! ত্বদীয় রক্ষাবশতঃ আমি যেন শোভন পুত্রপৌত্ৰাদি সম্পন্ন হই।

১০। হে প্রাজ্ঞ নাসত্যদ্বয়! তোমরা সত্বর পরিচর্য্যা সমম্বিত মদীয় স্তোত্র সমীপে আগমন কর। তোমরা অন্ধকার হইতে অত্ৰি ঋষিকে যেরূপ মুক্ত করিয়াছিলে, তদ্রূপ আমাদিগকে মুক্ত কর। হে নেতৃদ্বয়! তোমরা আমাদিগকে সংগ্রামদুঃখ হইতে পরিত্রণ কর।

১১। চে দেবগণ! তোমরা আমাদিগকে দীপ্তিসম্পন্ন, বলবিধায়ক, পুত্ৰাদিসম্পন্ন ও স্বপ্রসিদ্ধ ধন প্রদান কর। হে স্বৰ্গীয় আদিত্যগণ, পার্থিব বহুগণ, গোজাত অর্থাং পৃশ্নির পুত্র মরুৎগণ, অপজাত রুদ্রগণ তোমরা অস্মদীয় মনোরথ পূর্ণ করিয়া আমাদিগকে সুখী কর।

১২। রুদ্র ও সরস্বতী, বিষ্ণু ও বার, ঋভুক্ষ, বাজ ও দেব বিধাতা যেন তুল্যরূপ প্রসর হইয়া আমাদিগকে সুখী করেন। পর্জন্ত ও বায়ু ধেন আমাদিগের অল্প বৰ্দ্ধিত করেন।

১৩। প্রসিদ্ধ দেব সবিতা ও ভগ এবং বারিরাশির পৌত্রস্থানীয় দানশীল অগ্নি যেন আমাদিগঞ্চে রক্ষা করেন। দেবগণ ও দেবপত্নীগণের সাঁই? তুল্যরূপে প্রসন্ন স্ব স্থা, দেবগণের সহিত তুল্য প্রতি স্বর্গ এবং সমুদ্রগণের সহিত সমান প্রীতি পথিবী যেন আমাদিগকে রক্ষা করেন।

১৪। অহির্বুধ্ন্য, অজ-একপাদ, পৃথিবী ও সমুদ্র আমাদিগের স্তোত্র শ্রবণ করুন। যজ্ঞের সমৃদ্ধি বিধায়ক, আমাদিগকর্তৃক আহুত ও স্তুত, মন্ত্রপ্রতিপাদ্য ও মেধাবী ঋষিগণকর্তৃক স্তয়মান বিশ্বদেবগণ আমাদিগকে রক্ষা করুন।

১৫। ভরদ্বাজগোত্রজ মদীয় পুত্ৰগণ এই রূপে পূজা সাধন স্তোত্রদ্বারা দেবগণের স্তব করিতেছে। হে যজ্ঞাহু দেবগণ! তোমরা হধ্যদ্বারা ভূত, গুপ্ত প্রদাতা ও অজেয়, তোমরা সকলে দেবপত্নীগণের সহিত নিলত পুজিত হও।