০৭. তরফদাররা গেলেন

৭ ॥

তরফদাররা গেলেন পৌনে দশটায়, তারপর ঠিক পাঁচ মিনিট বাদেই ফেলুদার একটা ফোন এল যেটা যাকে বলে একেবারে অপ্রত্যাশিত। কথা-টথা বলে সোফায় বসে শ্রীনাথের সদ্য আনা চায়ে একটা চুমুক দিয়ে ফেলুদা বলল, ‘কাল ডিরেক্টরি খুলে দেখেছি, এই নামে শুধু দুটো ফোন আছে।’

‘এইসব সামান্য ব্যাপারে আপনার সাসপেন্স তৈরি করার প্রবণতাটা আমার মোটেই ভালো লাগে না, মশাই,’ বললেন জটায়ু। ‘কার ফোন সেটা হেঁয়ালি না করে বলবেন?’

‘হিঙ্গোয়ানি।’

‘যার কথা কাগজে বেরিয়েছে?’

‘ইয়েস স্যার। তেওয়ারির পার্টনার।’

‘এই ব্যক্তির কী দরকার আপনার সঙ্গে?’

‘সেটা ওঁর ওখানে গেলে বোঝা যাবে। ভদ্রলোক বললেন কর্নেল দালালের কাছে আমার প্রশংসা শুনেছেন।’

‘ও, গতবছরের সেই জালিয়াতির মামলাটা?’

‘হ্যাঁ।’

‘অ্যাপয়েন্টমেন্ট হয়েছে?’

‘সেটা আমার কথা থেকেই আপনার বোঝা উচিত ছিল; আপনি মনোযোগ দেননি।’

আমি কিন্তু বুঝেছিলাম ফেলুদার অ্যাপয়েন্টমেন্ট হয়েছে আজ বিকেল পাঁচটায়। সেটা লালমোহনবাবুকে বলতে উনি বেশ রেগে গিয়ে বললেন, ‘কানের কাছে অন্যে টেলিফোন করলে আমি অন প্রিন্‌সিপ্‌ল তার কথা শুনি না। কোথায় থাকেন ভদ্রলোক?’

‘আলিপুর পার্ক রোড।’

‘বনেদি পাড়া।—আমরাও যাচ্ছি ত আপনার সঙ্গে?’

‘সেটা কবে যাননি বলতে পারেন?’

‘ঠিক কথা। ইয়ে—“আনি” দিয়ে পদবী শেষ হলে ত সিন্ধি বোঝায়, তাই না?’

‘তা ত বটেই। দেখুন না—দু আনি ছ আনি কেরানি কাঁপানি হাঁপানি চাকরানি মেথরানি…’

‘রক্ষে করুন, রক্ষে করুন!’ দু হাত তুলে বললেন জটায়ু। ‘বাপ্‌রে!—এ হচ্ছে আপনার সজারু-মজারু মুড। আমার খুব চেনা। কিছু জিজ্ঞেস করলেই টিট্‌কিরির খোঁচা। যাই হোক্‌—যেটা বলতে চাইছিলাম —ভাবছি আজ দ্বিপ্রহরের আহারটা এখানেই সারব। খিচুড়ির আইডিয়াটা কেমন লাগে? বেশ ঠাণ্ডা-ঠাণ্ডা পড়েছে ত?’

‘উত্তম প্রস্তাব’, বলল ফেলুদা।

দুপুরে খাবার পর ফেলুদা দু’ঘণ্টা ধরে জটায়ুকে স্ক্র্যাব্‌ল খেলা শেখালো। ভদ্রলোক কোনোদিন ক্রসওয়ার্ডই করেননি। তাই ওঁকে—সিন্ধি নামের ঢং-এই বলি—বেশ নাকানি—চোবানি খেতে হল। ফেলুদা শব্দের খেলাতে একেবারে মাস্টার, যেমন হেঁয়ালির জট ছাড়াতেও মাস্টার—যার অনেক উদাহরণ এর আগে দিয়েছি।

আলিপুর পার্ক রোড অবশ্যই হরিপদবাবুর চেনা। পাঁচটা বাজতে পাঁচ মিনিটে আমাদের গাড়ি সাঁইত্রিশ নম্বরের গেট দিয়ে ঢুকে পোর্টিকোর নীচে এসে থামল। সামনেই ডাইনে গ্যারেজ, তার বাইরে একটা লম্বা সাদা গাড়ি দাঁড়িয়ে আছে। ‘বিদেশী বলে মনে হচ্ছে?’ লালমোহনবাবু মন্তব্য করলেন।

ফেলুদা সদর দরজার দিকে এগিয়ে গিয়ে বলল, ‘না। ওটার নাম কনটেসা। এখানেই তৈরি।’

সদর দরজায় দারোয়ান দাঁড়িয়ে, ফেলুদা তাকে বলল, ‘আমাদের অ্যাপয়েন্টমেন্ট আছে।’

ইতিমধ্যে বোধহয় গাড়ির শব্দ পেয়েই একটি বেয়ারা এসে হাজির হয়েছে; সে লালমোহনবাবুর দিকে চেয়ে বলল, ‘মিত্তর সা’ব?’ ‘হাম নেহী—ইনি’, ফেলুদার দিকে দেখিয়ে বললেন জটায়ু।

‘আইয়ে আপ লোগ।’

বেয়ারার পিছন পিছন আমরা একটা ড্রইং রুমে গিয়ে হাজির হলাম।

‘বৈঠিয়ে।’

আমি আর জটায়ু একটা সোফায় বসলাম। ফেলুদা তৎক্ষণাৎ না বসে একটু এদিক ওদিক ঘুরে দেখে একটা বুক সেলফের সামনে গিয়ে দাঁড়াল। দেয়ালে আর টেবিলে শোভা পাচ্ছে এমন খুঁটিনাটির মধ্যে অনেক নেপালী জিনিস রয়েছে। লালমোহনবাবুও দেখেছেন, কারণ বিড়বিড় করে বলতে শুনলাম, ‘দার্জিলিং’।

‘কেন, দার্জিলিং কেন?’ ফিরে এসে আরেকটা সোফায় বসে বলল ফেলুদা। ‘নেপালি জিনিস কি নেপালে পাওয়া যায় না?’

‘আরে সে তো নিউ মার্কেটেই পাওয়া যায়।’

বাইরে ল্যান্ডিং-এ দাঁড়ানো গ্র্যান্ডফাদার ক্লক দেখেছি, এবার তাতে গম্ভীর অথচ মোলায়েম শব্দে ঢং ঢং করে পাঁচটা বাজতে শুনলাম। আর প্রায় সঙ্গে সঙ্গে খয়েরি রঙের সুট পরা একজন রোগা, ফরসা, প্রৌঢ় ভদ্রলোক ঘরে এসে ঢুকলেন। কেন জানি মনে হল ভদ্রলোকের স্বাস্থ্যটা খুব ভালো যাচ্ছে না—বোধহয় চোখের তলায় কালির জন্য।

আমরা তিনজনেই নমস্কার করতে উঠে দাঁড়িয়েছিলাম। ভদ্রলোক ব্যস্ত হয়ে বললেন, ‘বসুন বসুন—প্লীজ সিট ডাউন।’

ভদ্রলোকের ঘড়ির ব্যান্ডটা বোধহয় ঢিলে হয়ে গেছে, কারণ নমস্কার করে হাত নামাবার সঙ্গে সঙ্গে ঘড়িটা সড়াৎ করে নীচে নেমে এল। ডান হাত দিয়ে ঠেলে সেটাকে যথাস্থানে এনে ভদ্রলোক ফেলুদার উল্টোদিকের সোফায় বসলেন। বাংলা ইংরিজি হিন্দি মিশিয়ে কথা বললেন হিঙ্গোয়ানি।

ফেলুদা নিজের এবং আমাদের দুজনের পরিচয় করিয়ে দেবার পর ভদ্রলোক বললেন, ‘আমার আপিসের যে খবর কাগজে বেরিয়েছে সে কি আপনি পড়েছেন?’

‘পড়েছি’, বলল ফেলুদা।

‘আমি গ্রহ-নক্ষত্রের প্রভাবে বিশ্বাস করি। আমাকে যে ভাবে হ্যারাস করা হচ্ছে তাকে গ্রহের ফের ছাড়া আর কিছুই বলা যায় না। আমার পার্টনারের ভীমরতি ধরেছে; কোনো সুস্থ মস্তিষ্ক লোক কখনো এমন করতে পারে না।’

‘আমরা কিন্তু আপনার পার্টনারকে চিনি।’

‘হাউ?’ অবাক হয়ে প্রশ্ন করলেন হিঙ্গোরানি।

ফেলুদা সংক্ষেপে তরফদার আর জ্যোতিষ্কের ব্যাপারটা বলে বলল, ‘এই ছেলের ব্যাপারেই তেওয়ারি ফোনে অ্যাপয়েন্টমেন্ট করে তরফদারের বাড়ি এসেছিলেন। আমরা তখন সেখানে উপস্থিত ছিলাম। ভদ্রলোক বললেন তাঁর সিন্দুকের কম্বিনেশনটা ভুলে গেছেন। ছেলেটিকে জিজ্ঞেস করাতে সে বলে দেয়, আর সেই সঙ্গে এটাও বলে যে সিন্দুকে আর একটি পাই-পয়সাও নেই।’

‘আই সী…’

‘আপনি ফোনে বললেন আপনাকে খুব বিব্রত হতে হচ্ছে?’

‘তা ত বটেই। প্রথমত, বছর খানেক থেকেই আমাদের মধ্যে বনিবনা হচ্ছে না, যদিও এককালে আমরা বন্ধু ছিলাম। আমরা একসঙ্গে এক ক্লাসে সেন্ট জেভিয়ার্সে পড়তাম। কলেজ ছাড়ার বছর খানেকের মধ্যেই আমরা আলাদা আলাদা ভাবে ব্যবসা শুরু করি। তারপর ১৯৭৩-এ আমরা এক জোটে টি. এইচ. সিন্ডিকেটের পত্তন করি। বেশ ভালো চলছিল কিন্তু ওই যে বললাম—কিছুদিন থেকে দুজনের সম্পর্কে চিড় ধরেছিল।’

‘সেটার কারণ কী?’

‘প্রধান কারণ হচ্ছে—তেওয়ারির স্মরণশক্তি প্রায় লোপ পেতে বসেছিল। সামান্য জিনিসও মনে রাখতে পারে না। ওকে নিয়ে মিটিং করা এক দুরূহ ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছিল। গত বছর একদিন আমি তেওয়ারিকে বলি—“ডাঃ শৰ্মা বলে একজন অত্যন্ত বিচক্ষণ মস্তিষ্ক চিকিৎসক আছেন। তাঁকে আমি খুব ভালো করে চিনি। আমি চাই তুমি একবার তাঁর কাছে যাও।”—তাতে তেওয়ারি ভয়ানক অফেন্স নেয়। সেই থেকেই আমাদের সম্পর্কে চিড় ধরে। অথচ আমি হাল না ধরলে সিন্ডিকেট ডুবে যাবে শুধু এই কথা ভেবেই আমি রয়ে গিয়েছিলাম। না হলে আইনসম্মত ভাবে পার্টনারশিপ চুকিয়ে দিয়ে চলে আসতাম। কিন্তু যে ব্যাপারে আমি সবচেয়ে বড় ধাক্কা খেলাম সেটা এই যে, তেওয়ারি যেই জানতে পারল যে ওর সিন্দুক খালি, ও সটান আমার কাছে এসে বলল, “গিভ মি ব্যাক মাই মানি—দিস মিনিট।’”

‘উনি যে ক্লেম করেন যে এককালে আপনাকে কম্বিনেশনটা বলেছিলেন সেটা কি সত্যি?’

‘সর্বৈব মিথ্যা। ওটা ছিল ওর পার্সোনাল সিন্দুক। তার কম্বিনেশন ও পাঁচজনকে বলে বেড়াবে? ননসেন্স। তাছাড়া ওর ধারণা যে ও যখন ডেনটিস্টের কাছে যায় তখনই আমি ওর সিন্দুক খুলে টাকা চুরি করি। অথচ আমার অকাট্য প্রমাণ রয়েছে যে সেই সময়টা আমি ছিলাম আপিস থেকে অন্তত চার মাইল দূরে। আমার এক খুড়তুতো ভাইয়ের হার্ট অ্যাটাক হয়েছে খবর পেয়ে আমি এগারটার সময় বেলভিউ ক্লিনিকে চলে যাই, ফিরি সাড়ে তিনটেয়।’

‘তাও মিঃ তেওয়ারি আপনার পিছনে লেগে আছেন?’

‘শুধু পিছনে লেগেছেন নয় মিস্টার মিটার, তিনি আমাকে শাসিয়েছেন যে অবিলম্বে টাকা ফেরত না দিলে তিনি আমার সর্বনাশ করবেন। তেওয়ারি যে স্বার্থসিদ্ধির জন্য কতদূর যেতে পারে তার বেশ কিছু নমুনা আমি গত সতের বছরে পেয়েছি। গুণ্ডা লাগিয়ে কী করা সম্ভব-অসম্ভব সে আর আমি আপনাকে কী বলব?’

‘আপনি বলতে চান তেওয়ারি এতই প্রতিহিংসাপরায়ণ যে গুণ্ডা লাগিয়ে আপনাকে খুন করানোতেও সে পেছপা হবে না?’

‘সিন্দুকে কিছু নেই জানার পরমুহূর্তে সে যেভাবে আমার ঘরে এসে আমার উপর দোষারোপ করে, তাতে আমি পরিষ্কার বুঝি যে তার কাণ্ডজ্ঞান সম্পূর্ণ লোপ পেয়েছে। এ অবস্থায় টাকা ফেরত না পেলে আমার উপর চরম প্রতিশোধ নেওয়াটা কিছুই আশ্চর্য নয়।’

‘এই চুরি সম্বন্ধে আপনার নিজের কোনো থিওরি আছে?’

‘প্রথমত, চুরি যে গেছে সেটাই আমি বিশ্বাস করি না। তেওয়ারি হয় সেটা সরিয়েছে, না হয় কিছুতে খরচ করেছে, না হয় কাউকে দিয়েছে। তোমরা বাঙলায় যে বল না—ব্যোম ভোলানাথ?—তেওয়ারি হল সেই ভোলানাথ। না হলে বাইশ বছরের পুরোন ব্যক্তিগত সিন্দুকের কম্বিনেশন কেউ ভোলে?’

‘বুঝলাম’, বলল ফেলুদা। ‘এবার তাহলে আসল কথায় আসা যাক।’

‘কেন আমি আপনাকে ডেকেছি সেটা জানতে চাইছেন ত?’

‘আজ্ঞে হ্যাঁ।’

‘দেখুন মিঃ মিটার—আমি চাই প্রোটেকশন। তেওয়ারি নিজে ভোলানাথ হতে পারে, কিন্তু ভাড়াটে গুণ্ডাদের কেউই ভোলানাথ নয়। তারা অত্যন্ত সেয়ানা, ধূর্ত, বেপরোয়া। এই জাতীয় প্রোটেকশনের কাজ ত আপনাদের প্রাইভেট ডিটেকটিভদের মধ্যে পড়ে। তাই না?’

‘তা পড়ে। কিন্তু মুশকিল হচ্ছে কি, আমি সামনে প্রায় পাঁচ সপ্তাহের জন্য থাকছি না। ফলে আমার কাজ শুরু করতে ত অনেক দেরি হয়ে যাবে। তাতে আপনার চলবে কি?’

‘আপনি কোথায় যাচ্ছেন?’

‘দক্ষিণ ভারত। প্রথমে ম্যাড্রাস। সেখানে দশদিন, তারপর অন্যত্র।’

হিঙ্গোরানির চোখ জ্বলজ্বল করে উঠল।

‘এক্সেলেন্ট!’ হাঁটুতে চাপড় মেরে বললেন ভদ্রলোক। ‘আপনাকে একটা কথা এখনও বলা হয়নি—আমি দুদিন থেকে আর আপিসে যাচ্ছি না। যা ঘটেছে তার পরে আর কোনোমতেই ওখানে থাকা যায় না। আইনত যা করার তা আমি যথাসময়ে করব—যখন মাথা ঠাণ্ডা হবে। অথচ রোজগার ত করতেই হবে। ম্যাড্রাসে একটা কাজের সম্ভাবনা আছে। সে খবর আমি পেয়েছি। আমি এমনিতেই যেতাম। আপনারা গেলে এক সঙ্গেই বেরিয়ে পড়ব। আপনি প্লেনে যাচ্ছেন?’

‘না, ট্রেনে। এখানেও একজনকে প্রোটেক্ট করার ব্যাপার আছে। তরফদারের ম্যাজিক শোয়ের ওই বালক। তারও জীবন বিপন্ন। অন্তত তিনজন ব্যক্তির লোলুপ দৃষ্টি পড়েছে ওর উপর। বুঝতেই ত পারছেন, এমন আশ্চর্য ক্ষমতাকে অসদুদ্দেশ্যে কাজে লাগানোর অজস্র উপায় আছে।’

‘বেশ ত,’ বললেন হিঙ্গোয়ানি, ‘আপনি এক ঢিলে দুই পাখি মারুন। আপনি ত এই যাদুকরের জন্য প্রোফেশনালি কাজ করছেন?’

‘হ্যাঁ।’

‘সেটা আমার বেলাতেও করুন, আমিও আপনাকে পারিশ্রমিক দেবো।’

ফেলুদা অফারটা নিয়ে নিল। তবে বলল, ‘এটা জেনে রাখবেন যে শুধু আমার প্রোটেকশনে হবে না। আপনাকেও খুব সাবধানে চলতে হবে। আর সন্দেহজনক কিছু হলেই আমাকে জানাবেন।’

‘নিশ্চয়ই। আপনি কোথায় থাকবেন?’

‘হোটেল করোমন্ডল। আমরা একুশে পৌঁছচ্ছি।’

‘বেশ। ম্যাড্রাসেই দেখা হবে।’

বাড়ি ফেরার পথে আমি বললাম, ‘আচ্ছা ফেলুদা, ড্রইং রুমের দুদিকের দেয়ালে দুটো বেশ বড় বড় রেক্ট্যাঙ্গুলার ছাপ দেখলাম—অনেক দিনের টাঙানো ছবি তুলে ফেললে যেমন হয়।’

‘গুড অবজারভেশন’, বলল ফেলুদা। ‘বোঝাই যাচ্ছে ও জায়গায় দুটো বাঁধানো ছবি ছিল—সম্ভবত অয়েল পেন্টিং।’

‘সেগুলো যে আর নেই,’ বললেন জটায়ু, ‘সেটার কোনো সিগ্‌নিফিক্যান্স আছে কি?’

‘বোঝাই যাচ্ছে ভদ্রলোক ছবিগুলো পাচার করে দিয়েছেন।’

‘তার সিগ্‌নিফিক্যান্স?’

‘সাতশো ছেষট্টি রকম সিগ্‌নিফিক্যান্স। সব শোনার সময় আছে কি আপনার?’

‘আবার সজারু! —আমার মনে হয় ব্যাপারটাকে আপনি বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছেন না।’

‘সেটার সময় এখনো আসেনি, লালমোহনবাবু। তথ্যটা আমার মস্তিষ্কের কম্পিউটারের মেমারিতে পুরে দিয়েছি। প্রয়োজনে বোতাম টিপলেই ফিরে পাব।’

‘আপনি যে এই হিঙের কচুরির কেসটাও নিলেন—দুদিক সামলাতে পারবেন ত?’

ফেলুদা কোনো উত্তর না দিয়ে ভাসা-ভাসা চোখে চলন্ত গাড়ির জানলা দিয়ে বাইরে চেয়ে থেকে মৃদুস্বরে বলল ‘খট্‌কা… খট্‌কা… খট্‌কা…’

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *