• Skip to main content
  • Skip to header right navigation
  • Skip to site footer

Bangla Library

Read Bengali Books Online (বাংলা বই পড়ুন)

  • নতুন সব বই
  • লেখক
  • সিরিজ
  • বইয়ের ধরণ
  • পুরানো সব ক্যাটাগরি
  • My Account →
  • নতুন সব বই
  • লেখক
  • সিরিজ
  • বইয়ের ধরণ
  • পুরানো সব ক্যাটাগরি
  • My Account →
  • বাংলা ডিকশনারি
  • বাংলা কৌতুক
  • বাংলা লিরিক
  • বাংলা রেসিপি
  • হেলথ টিপস এন্ড নিউজ

বাংলা নতুন/পুরাতন বইয়ের পিডিএফ ডাউনলোড/সন্ধান করতে আমাদের বাংলা পিফিএফ সাইটে ক্লিক করুন।

Bangla PDF

৩৪. মৃত্যুর পর শান্তি আছে?

লাইব্রেরি » গোলাম মুরশিদ » নারী ধর্ম ইত্যাদি » ৩৪. মৃত্যুর পর শান্তি আছে?

মৃত্যুর পর শান্তি আছে?

মরে শান্তি আছে কিনা, আমার পক্ষে বলা শক্ত। কারণ, আমি এখনো পুরোপুরি মরে যাইনি। স্বচক্ষে মৃত্যু-পরবর্তী অবস্থাটা দেখার অভিজ্ঞতা তাই হয়নি। কিন্তু প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতা দিয়ে একটা কথা হলপ করে বলতে পারি–শান্তিতে মরার উপায় নেই। আজ হাঁটতে বেরিয়ে কথাটা মনে হলো। দেখি উল্টো দিক থেকে পোল্লায় দুটো ঘোড়ায় টানা একটা গাড়ি আসছে। ঘোড়া দুটো যমজ কিনা, খবর নিয়ে দেখিনি। কিন্তু দেখতে হুবহু একই রকম। দুটি বিশাল এবং খুব-সুরাত কালো ঘোড়া। ঘোড়া দুটো পারতো পক্ষে জোরেই দৌড়াচ্ছে। কিন্তু গাড়িগুলো আটকা পড়েছে তাদের পেছনে। ভাবলাম, গাড়িওয়ালারা ঘোড়া দুটো আর ঘোড়ার গাড়ির চালককে অভিশাপ দিতে দিতে যাচ্ছেন নিশ্চয়। ঘোড়ার গাড়ি কাছাকাছি এসে গেলো। দেখলাম অনেক যাত্রী যাচ্ছেন না। তাতে চড়ে, যাচ্ছেন একজন মাত্র যাত্রী। আর, অভিশাপ দিলেও তাঁর পক্ষে শোনার উপায়। নেই। আসলে, ভদ্রলোক অথবা ভদ্রমহিলা শেষ যাত্রা করছেন শান-শওকতের সঙ্গে। আর তো গাড়িতে চড়া হবে না।!–তাই মনের সুখে গাড়িতে চড়ে নিচ্ছেন।

কিন্তু এই সুখটুকু পাওয়ার জন্যে এই যাত্রীকে হয়তো কয়েক বছর ধরে অন্তেষ্ট্যিক্রিয়ার খরচ বাবদ অনেক টাকা সঞ্চয় করতে হয়েছে। মরাটা এই মড়ার দেশে সত্যি সত্যি খরচসাপেক্ষ এবং কঠিন ব্যাপার। সে জন্যে এ দেশে দুটো ব্যবস্থা আছে। প্রথমত বেশির ভাগ লোকই সহজে মরতে চান না। তারা বেশ দেরি করে মরেন–বয়স যখন প্ৰায় আশি হয়, তখন। (বাংলাদেশের মতো কোনো উন্নয়নশীল দেশ হলে আগেই মরে হাড় জুড়াতে পারতেন।) সব সময়ে এই ব্যবস্থাটা অবশ্য নিজের ওপর নির্ভর করে না। আর দ্বিতীয় ব্যবস্থা হলো, অন্তেষ্ট্যিক্রিয়ার জন্যে বীমা গ্রহণ করা। পেনশানের টাকা আর বীমার অর্থ দিয়ে শেষে ঘোড়ায় চড়ার সুখটুকু পেতে কোনো অসুবিধে নেই। তা ছাড়া, আপনার শেষযাত্রার আয়োজন করার জন্যে প্রত্যেকটা এলাকায় অন্তত একটা করে সমাধিস্থ করার দোকানও আছে। তাদের ব্যবসা ভালোই চলে! আর রোজ রোজ এই কাজের প্রশিক্ষণ নেওয়ায় তারা সুচারুভাবে কাজটা সম্পন্নও করেন। আপনি চাইলে আপনাকে বৈদ্যুতিক চুলোয় কয়েক মিনিটের মধ্যে ছাই করে দেবে। সেই ছাইয়ের ওপর আত্মীয় এবং বন্ধুরা ফুলও দেবে দরাজ হাতে। ছাই হতে না-চাইলে আপনি মাটির তলায় গিয়ে কৃমির খাদ্যও হতে পারেন। মোট কথা, আপনার শেষটা নিয়ে আপনাকে ভাবতে হবে না। কয়েক বছর আগে আমার এক ভাইপো আর তার স্ত্রীর সামনে আলাপ হচ্ছিলো। রান্নাঘরটাকে কিভাবে আরও সাজানো যায়, তা নিয়ে। গিন্নি বললেন, তিনি তিন হাজার পর্যন্ত ব্যয় করতে রাজি আছেন। ভেবে পেলাম না, তিনি অতো টাকা পাবেন কোথায়। কারণ সারাজীবন চাকরি করেও আমি ব্যাংকে তিন হাজার পাউন্ড সঞ্চয় করতে পারিনি। তা-ও সবকিছু ধুয়ে-মুছে যদি তিন হাজার পাউন্ড জোগাড়ও হয়, সেটা রান্নাঘরের পেছনে (অথবা সামনে) ব্যয় করা কি ঠিক হবে? এর থেকেও জরুরী কিছু ঘটলে তখন কী হবে? কিছুকাল আগে আমার হৃদয়ের ওপর একটা হামলা হয়ে গেছে। কাজেই চিন্তাটা আমার মাথায় ঘুর-ঘুর করছিলো সারাক্ষণ। তাই বললাম, মরলে কবর দেওয়ার টাকা হবে কিনা, তার ঠিক নেই, তুমি আছো রান্নাঘরের জন্যে তিন হাজার টাকা খরচের পরিকল্পনায়! না, আমার জীবন অথবা মরণের চেয়ে রান্নাঘরের প্রতি তাঁর বেশি অগ্রাধিকার রয়েছে, কসম করে বলতে পারি, সেটা ঠিক নয়। তবে রান্নাঘরটা একটু ভদ্রস্থ করার চিন্তাটা তার মাথায় অনেক দিন থেকেই আছে।

পোড়ালে খরচ কম হবে কিনা, সেটা অনেকবার ভেবে দেখেছি। কিন্তু বন্ধুবর (ডক্টর) শফিউল্লাহ আর প্রখ্যাত বেতারপ্রচারক নুরুল ইসলাম তাদের পোড়ানোর আসিয়ত করে গিয়েছিলেন বলে, তাদের বেশ সামাজিক নিন্দা হয়েছিলো। (সান্তুনা এই যে, তারা সেটা শুনে যেতে পারেননি।) সুতরাং ভেবেচিন্তে ঐ বিকল্পটা মনে মনে বাদই দিতে হয়।

আমি অত্যন্ত অসামাজিক জীব। বন্ধু-বান্ধব বলতে গেলে নেই–চৌধুরী দম্পতি ছাড়া। খরচ কোথা থেকে আসবে–এ ছাড়াও একটা দুশ্চিন্তা চৌধুরী সাহেবকে বিব্রত করে। যেহেতু আমাকে কোনো ধর্মীয় অনুষ্ঠানে হাজির থাকতে দেখা যায়নি, সুতরাং তাঁর আশঙ্কা আমাকে সমাধিস্থ করার জন্যে কেউ আসবে না। ধর্মীয় আচারঅনুষ্ঠানও করা সম্ভব হবে না। অতএব টাকা থাকলেই সমস্যার সুরাহা হচ্ছে না। কিন্তু কথাটা তিনি হাস্যরস সৃষ্টি করার জন্যে বলেননি। বলেছেন, সিরিয়াসলি। আমি তাঁর কথা শুনে সিরিয়াসলি হেসেছি। কারণ, আমি মরলে আমি টের পাবো বলে আপাতত আমার মনে হচ্ছে না। আমি মরে গেলে, সেটা চৌধুরী সাহেব-সহ আর যারই সমস্যা হোক না কেন, আমার সমস্যা অন্তত নয়–আমি গ্যারান্টি দিয়ে বলতে পারি।

মরে যাওয়ার আগের দিন মাইকেল মধুসূদনকে এসে দুজন পাদ্রী বলেছিলেন, ভায়া, তুমি তো মরেই খালাস! কিন্তু আমাদের সমস্যার কথাটা ভেবে দেখেছে কি? ধৰ্ম্মকৰ্ম্ম কিছুই করলে না, আমাদের আশঙ্কা হচ্ছে, তোমাকে সমাহিত করার বিষয়টা নিয়ে ঝামেলা হতে পারে। আসন্ন মৃত্যুর কথা ভেবে মাইকেল ভয় পেয়েছিলেন। কিনা, তা কোথাও লেখা নেই। কিন্তু তিনি অকাতরে যে-কথাটা বলেছিলেন, তা লেখা আছে। তিনি বলেন, দেখা ভাই, আমি মরার পর তোমরা আমাকে গোরস্থানে কবর দেবে, নাকি তোমাদের বাড়ির সামনে, তাতে আমার কিছু আসে যায় না। কেবল দেখো আমার হাড়গুলোর শান্তি যেন বিনষ্ট না-হয়। এর পর মাইকেল আর বেশি কথা বলতে পারেননি। পরের দিনই সমস্যার বোঝা বন্ধুদের কাঁধে দিয়ে তিনি নিশ্চিন্তে বিদায় নেন।

সত্যি সত্যি ঝামেলা হলো, তাকে সমাধিস্থ করার ব্যাপার নিয়ে। দেশের সবচেয়ে বড়ো কবি, কয়েকজন মাত্র বাঙালি ব্যারিস্টারের মধ্যে একজন। রীতিমতো বিশিষ্ট লোক। কিন্তু তাকে কবর দেওয়ার অনুমতি দিলেন না। কলকাতার বিশপ। একটা ইংরেজি পত্রিকাও তাঁর মৃত্যুর খবরটা ছাপলে না। অথচ আঠারো বছর বয়সে হিন্দু কলেজের একজন সাধারণ ছাত্র হিশেবে তিনি যখন খৃস্টান হয়েছিলেন, তখন ছোটো লাট তাঁকে দুর্গে রেখে খৃস্টান হওয়ার সুযোগ করে দিয়েছিলেন। বড়ো সবগুলো কাগজে খবরও ছাপা হয়েছিলো ফলাও করে। নেই বলেই ধারণা হয়, কিন্তু সত্যি যদি পরকাল থাকে, তা হলে মাইকেল নিশ্চয় মহা বিরক্ত হয়ে ভেবেছিলেন: এ কি এ ঝামেলা এই পরকালে এসে! দেখতে পাচ্ছি, মরেও শান্তি নেই!

মাইকেল পর্যন্ত যেতে হবে না। বাড়ির কাছেই আহমেদ শরীফ মারা গেলেন। মরার সময়েও মানুষের উপকার করার সদিচ্ছাটা তিনি ছাড়তে পারেননি। তাই নিজের দেহটা মাটি চাপা দিয়ে একেবারে মাটি করতে রাজি ছিলেন না। দান করে গেছেন ছাত্ররা যাতে কেটেকুটে দেহের অলিগলির জ্ঞান লাভ করতে পারেন, তার জন্যে। কিন্তু তাঁর সেই প্রাণহীন দেহটাকে নিয়ে বিতর্ক কম হয়নি। সারা জীবন তিনি অনেক বিতর্ক করেছিলেন। ইচ্ছা থাকলেও তিনি অবশ্য এই বিতর্কে যোগ দিতে পারলেন না। বোধ হয় শান্তিতে থাকতে চেয়েছিলেন। আবু সয়ীদ আইয়ুব ভাগ্যবান। তার দেহটা নিয়ে কোনো বিতর্ক হয়নি। তিনি শান্তিতেই দেহদান করতে পেরেছিলেন। অতি সম্প্রতি শান্তি ভঙ্গ না-করার নজির রেখে গেছেন হুমায়ুন আজাদ। ইসলামী সন্ত্রাসীরা তাঁর গলা কেটেও তাঁকে মেরে ফেলতে পারেনি। কিন্তু তিনি যখন দূরদেশে গিয়ে কিছুক্ষণ ফুর্তি করে চিরশান্তিতে থাকবেন বলে সিদ্ধান্ত নিলেন, তখন ধর্মান্ধরা তাকে সমাধিস্থ করার ব্যাপারে ঝামেলা পাকাবে বলে হুমকি দিয়েছিলো। এই কাপুরুষদের আজাদ কখনো পরোয়া করেননি। পরকাল থাকলে সেখান থেকেও হয়তো এক হাত দেখে নিতেন। কিন্তু শাহাদাত বরণ করার পর তিনি আর শান্তি ভঙ্গ করতে চাননি। জীবনে শান্তি চেয়েও পাননি, কিন্তু মৃত্যুর পরে শান্তি চেয়েছিলেন। তার নীরবতা থেকে মনে হয়, পেয়েও ছিলেন।

Category: নারী ধর্ম ইত্যাদি
পূর্ববর্তী:
« ৩৩. কতো টাকা চাই?
পরবর্তী:
৩৫. যে ঐ দেশেতে মরি »

Reader Interactions

Leave a Reply Cancel reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

বাংলা লাইব্রেরি : উল্লেখযোগ্য বিভাগসমূহ

লেখক ও রচনা

অনুবাদ সাহিত্য

সেবা প্রকাশনী

ডিকশনারি

কৌতু্ক / জোকস

লিরিক

রেসিপি

কোরআন

হাদিস

ত্রিপিটক

মহাভারত

রামায়ণ

পুরাণ

গীতা

বাইবেল

বিবিধ রচনা

বাংলা ওসিআর

Download Bangla PDF

হেলথ

লাইব্রেরি – ফেসবুক – PDF

top↑