• Skip to main content
  • Skip to header right navigation
  • Skip to site footer

Bangla Library

Read Bengali Books Online (বাংলা বই পড়ুন)

  • নতুন সব বই
  • লেখক
  • সিরিজ
  • বইয়ের ধরণ
  • পুরানো সব ক্যাটাগরি
  • My Account →
  • নতুন সব বই
  • লেখক
  • সিরিজ
  • বইয়ের ধরণ
  • পুরানো সব ক্যাটাগরি
  • My Account →
  • বাংলা ডিকশনারি
  • বাংলা কৌতুক
  • বাংলা লিরিক
  • বাংলা রেসিপি
  • হেলথ টিপস এন্ড নিউজ

বাংলা নতুন/পুরাতন বইয়ের পিডিএফ ডাউনলোড/সন্ধান করতে আমাদের বাংলা পিফিএফ সাইটে ক্লিক করুন।

Bangla PDF

২০. রবীন্দ্ৰনাথ কি বেঁচে আছেন?

লাইব্রেরি » গোলাম মুরশিদ » নারী ধর্ম ইত্যাদি » ২০. রবীন্দ্ৰনাথ কি বেঁচে আছেন?

রবীন্দ্ৰনাথ কি বেঁচে আছেন?

রবীন্দ্রনাথ মারা যান পয়ষট্টি বছর আগে–পাঠ্যবই-এর কল্যাণে সে তো শিশুরাও জানে! কাজেই আমার প্রশ্ন সেটা নয়, আমার জানতে ইচ্ছে হয়: মরেছেন, কিন্তু মরে তিনি ভূত অর্থাৎ পুরোপুরি বিগত হয়েছেন। কিনা। সমকালীন সমাজে এবং, তার থেকেও জরুরী, আমাদের ব্যক্তিগত জীবনে তিনি বেঁচে আছেন। কিনা। সত্য বটে, বেশির ভাগ লোক মরেই হারিয়ে যান, কিন্তু তিনি তো বেশির ভাগ লোকের মতোন ছিলেন না! রবির আলো কি এখনো আমাদের মননকে, আমাদের প্রাত্যহিক জীবনের নানা দিককে আলোকিত করে?

মেধাবর্জিত অতি সাধারণ শিক্ষার্থী ছিলাম বলে, রবীন্দ্রনাথ কতো বড়ো ছিলেন–সেটা বিশ্ববিদ্যালয়ের একেবারে উপরের দিকে না-ওঠা পর্যন্ত আদৌ উপলব্ধি করতে পারিনি। তারও কয়েক বছর পরে রবিরশ্মিতে যখন মনপ্ৰাণনয়ন ধাঁধিয়ে গেলো, তখন মনে হয়েছিলো রবীন্দ্রনাথ অমর। বিশেষ করে তখনকার পূর্ব বাংলায় যে-রাজনৈতিক এবং সাংস্কৃতিক আন্দোলন চলছিলো এবং তাতে তিনি যেঅন্তহীন অনুপ্রেরণা জুগিয়েছেন, তার পরিপ্রেক্ষিতে মনে হয়েছিলো আমরা তাকে নতুন করে আবিষ্কার করেছি। পাঠ্যপুস্তকের শুকনো পাতা থেকে তাকে উঠিয়ে এনে নতুন করে তাঁর মধ্যে প্ৰাণ প্রতিষ্ঠা করেছি। তিনি শুধু ছবি নয়, অন্তরের মাঝখানে ঠাই নিয়েছেন তিনি। আমাদের চলার পথের নিত্যসঙ্গী তিনি।

আরও একটা কারণে রবীন্দ্রনাথকে তখনকার পূর্ব বাংলার সমাজে খুব জীবন্ত মনে হতো। সে হলো: বাঙালি মুসলমান সমাজ তাঁকে কখনো নিজেদের লোক” বলে গ্রাহ্য করেনি। তাদের শতকরা নকবুই জন অথবা তার চেয়েও বেশি সেকালে বাস করতেন গ্রামে। তাদের মধ্যে শিক্ষার হার ছিলো খুবই কম। ইংরেজ আমলে শিক্ষার যে-সুযোগ এসেছিলো, চাকরি-বাকরির সিঁড়ি বেয়ে ওপরে ওঠার যে-পথ খুলে গিয়েছিলো, বর্ণহিন্দুরাই সেই ভোজের শরিক হয়েছিলেন। মুসলমান এবং নিম্নবর্ণের হিন্দুদের সেখানে পাত পড়েনি। রবীন্দ্ৰনাথ নোবেল পুরস্কার পাওয়ার পর যখন গর্বে বাঙালিদের বুক ফুলে ওঠে, তখনও গ্রামের মুসলমানদের কাছে সে খবর পৌঁছেনি। আর যে-শিক্ষিত মুসলমানরা এ সম্পর্কে জানতে পান, তারাও তখন অবিমিশ্র ঔদাসীন্য দেখান। এর জন্যে দায়ী ছিলো তাদের আর্থ-সামাজিক অবস্থা এবং হীনম্মন্যতা। এক ধরনের সাম্প্রদায়িক সংকীর্ণতা। আরও মুশকিল। ছিলো: তাদের মধ্যে কোনো খ্যাতিমান সাহিত্যিক ছিলেন না, যাকে নিয়ে তারা বড়াই করতে পারেন। কিন্তু সে অভাব অনেকটা পূরণ হয়েছিলো ১৯২০-এর দশকে–যখন বিদ্রোহের ঝাণ্ডা উঁচিয়ে হৈ হৈ করে নজরুল মাঠে নামলেন। মুসলমানদের মানসিক দৈন্য আংশিক পূরণ করে তিনি পরিণত হলেন মুসলমান রবীন্দ্রনাথে। যে-নজরুল জীবন ও সাহিত্যে ষোলো আনা অসাম্প্রদায়িক; যে-নজরুল তারস্বরে অসাম্প্রদায়িকতার শিঙ্গার হুঙ্কার বাজিয়েছিলেন, মুসলমানরা সেই নজরুলকেই ব্যবহার করলেন রবীন্দ্রনাথকে ঘিরে তাঁদের সাম্প্রদায়িকতার হাতিয়ার হিশেবে।

এতে রবীন্দ্রনাথের যে কোনো অবদান ছিলো না, তা নয়। মুসলিম সমাজ সম্পর্কে তার অজ্ঞতার কোনো কৈফিয়ৎ নেই। তিনি গ্রাম বাংলায় বাস করেছিলেন বহু বছর। তাঁর প্রজাদের বেশির ভাগই ছিলেন মুসলমান। কিন্তু তা সত্ত্বেও তিনি সেই মুসলমানদের সম্পর্কে এতোটা জানেননি, যাতে তাঁদের নিয়ে তিনি সাহিত্য সৃষ্টি করতে পারেন। বুড়ো বয়সে দুঃখ করে বলেছেন, মাঝে মাঝে তিনি ওদের প্রাঙ্গণের ধারে গেছেন, কিন্তু ভেতরে প্রবেশ করার সাধ্য ছিলো না। কেন সাধ্য ছিলো না, বিশ্বাসযোগ্যভাবে সে কথা বলতে পারেননি। শিক্ষা, বিত্ত এবং সামাজিক অবস্থানের দিক থেকে এগিয়ে থাকা হিন্দু সমাজের একাংশ এখন মুসলমানদের সঙ্গে একত্রে পান-ভোজন করলে জাত যাবে বলে মনে করেন না বটে, কিন্তু মুসলমানদের সম্পর্কে এখনো তারা উদাসীন। জানতে অনাগ্রহী। এমন কি, একটা মুসলিম নাম উচ্চারণ বা সঠিক বানান করতে গেলে গলদঘর্ম হন। উনিশ এবং বিশ শতকের নেতৃস্থানীয় তাবৎ বাঙালি সম্পর্কেই এই মন্তব্য কমবেশি প্রযোজ্য। রবীন্দ্রনাথ সম্পর্কেও। কিন্তু অসীম কৌতূহলী মনের অধিকারী, অজানাকে জানার জন্যে পরম উৎসাহী হয়েও, বাকি সব বাঙালিদের মতো আচরণ তিনি করবেন কেন? বাড়ির পাশের একটা বড়ো সম্প্রদায়ের ইতিহাস-ঐতিহ্য-সংস্কৃতি সম্পর্কে জানা কি অতোই শক্ত। বিশেষ করে তাঁর মতো পাঠকের জন্যে? গ্রামে গিয়ে তাঁর গোরা প্রথম বারের মতো বৃহত্তর বাঙালি সমাজকে প্রত্যক্ষ করেছিলো। গোরার স্রষ্টা হিশেবে দৃষ্টিকে আর-একটু প্রসারিত করে তিনি কেন সেই বৃহত্তর সমাজের কেবল বাইরের দিকটা দেখলেন, সমাজের ব্যক্তিগুলোর দিকে নজর দিলেন না? সহানুভূতির সঙ্গে কেন জানতে চাইলেন না তাদের ছোটোছোটো সুখদুঃখের কাহিনী? কেন তিনি নিজেকে বন্দী করে রাখলেন একটি গণ্ডীর মধ্যে? নাকি, এটাকেই বলে ব্যক্তির সীমানা?

অভিমান ভেঙে মুসলমানরা সেই রবীন্দ্রনাথকে আবিষ্কার করেন তাঁর মৃত্যুর দু দশক পরে— ১৯৬০-এর দশকে। এই অভিমানের মেঘ দূর হবার পেছনে অবশ্য তাঁর সাক্ষাৎ কোনো ভূমিকা ছিলো না। কারণগুলো নিহিত ছিলো অন্যত্র। দেশবিভাগের পর থেকে পূর্ব বাংলার মুসলমানদের মধ্যে একটা শিক্ষিত মধ্যবিত্ত শ্ৰেণী গড়ে ওঠে। নিজেদের পরিচয় সম্পর্কে তাদের সচেতন হতে হয়েছিলোআর্থ-সামাজিক কারণে, প্রতিকূল শাসন এবং দুৰ্বহ শোষণের মুখে। তার সঙ্গে যুক্ত হয়েছিলো ভাষা আন্দোলন। এই আন্দোলনকে কেন্দ্র করে যে-বাঙালিয়ানার হাওয়া বইতে শুরু করে, তাই রবীন্দ্রনাথকে তাদের মধ্যে প্রতিষ্ঠিত করে। তাঁরা তাঁকে আপনজন বলে গ্ৰহণ করেন। তাঁকে নিয়ে গর্ব করতে আরম্ভ করেন। আর, রবীন্দ্রনাথও সে পর্যায়ে তাঁর রচনা দিয়ে, বিশেষ করে তাঁর গান দিয়ে, পূর্ব বাংলার বাঙালিদের অনুপ্রাণিত করেন।

বলতে পারি, রবীন্দ্রনাথকে পূর্ব বাংলার মুসলমানরা পড়ে পাননি, অর্জন করেছিলেন। এবং, সে জন্যেই সেই অর্জিত সম্পদকে রক্ষা করার ব্যাপারে তারা অতিরিক্ত যত্ন দেখান। অচেনা রবীন্দ্রনাথ জ্যান্ত হয়ে ওঠেন এই পরিবেশেই। তখনকার পূর্ব বাংলায় যখন, ধরা যাক, রবীন্দ্রজয়ন্তী হতো, রবীন্দ্ৰমৃত্যুবার্ষিকী হতো, ঋতু-উৎসব হতো, পয়লা বৈশাখ হতো তখন তার মধ্যে একটা আন্তরিকতা থাকতো, প্যাশন থাকতো। সারা জীবনে যে রবীন্দ্রনাথ পড়েনি অথবা পড়লেও বুঝতে পারেনি, অথবা বুঝতে পারলেও তাঁর বাণী স্বীকরণ করেনি, সেও হাজির হতো। এসব অনুষ্ঠানে। মাঠের মধ্যে হাজার হাজার লোক আসতো ছায়ানটের আহবানে। সে মোটেই সাহিত্যের টানে নয়। তার ভেতরে থাকতো। রবীন্দ্ৰনাথ নামটির প্রতি খাটি ভালোবাসা, বাধ-ভাঙা উৎসাহ, রবীন্দ্রনাথ নামটিকে নিয়ে মাথা উঁচু করে দাঁড়ানোর আগ্রহ আর বাঙালিয়ানা-বিরোধী মনোভাবের প্রতি প্ৰচণ্ড প্ৰতিবাদ। সে আমলে যখন ফৌজী শাসনের খড়গ নেমে আসতো সাংস্কৃতিক কর্মীদের ওপর তখন গোটা ছায়ানট গাইতে: ওদের বাঁধন যতো শক্ত হবে মোদের বাঁধন টুটবে। ফাহমিদা খাতুন তখন “সার্থক জনম আমার জন্মেছি। এই দেশে’ বলে সুর ধরলে শ্রোতারা ভাবাবেগে বাষ্পাকুল হতেন। রবীন্দ্রসঙ্গীত নিষিদ্ধ ঘোষিত হলে রাজপথে বিক্ষোভ মিছিল হতো। একটা জাতির পরিচয়কে জাগিয়ে তুলতে, সেই পরিচয়ের পতাকাকে উর্ধে তুলে ধরতে–বন্দুক নয়–গান আর কবিতার পঙক্তি যে অব্যৰ্থ শক্তিশেলের মতো কাজ করতে পারে, সেটা তখনকার প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতা ছাড়া বিশ্বাস করা সম্ভব নয়।

তাই বলে ষাটের দশকে রবীন্দ্রচর্চা আজকের মতো ব্যাপক হয়নি পূর্ব বাংলায়। রবীন্দ্রনাথের গান শোনার সুযোগ ছিলো খুবই সীমিত। ঢাকা বেতারে গান গাইতেন কলিম শরাফী, সনজীদা খাতুন, ফাহমিদা খাতুন, বিলকিস নাসিরউদ্দীন, জাহেদুর রহীম-সহ হাতে গোনা মাত্র কয়েকজন। তখন পর্যন্ত একটি মাত্র রবীন্দ্রসঙ্গীতআমি তোমার সঙ্গে বেঁধেছি আমার প্রাণ— ব্যবহৃত হয়েছিলো পূর্ব বাংলার চলচ্চিত্রে। প্রকাশিত হয়েছিলো ফাহমিদা খাতুনের গাওয়া ঐ একটি মাত্র গানের রেকর্ড। ঢাকা বেতারে রবীন্দ্রসঙ্গীতের অনুষ্ঠানও থাকতো খুব কম। এমন কি, একাধিকবার রবীন্দ্রসঙ্গীত বাজানোর ওপর সরকার পুরো নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিলো। কলকাতা থেকে প্রকাশিত গ্রামোফোন রেকর্ডও ঢাকায় ছিলো দুর্লভ বস্তু–ক্যাসেট আর সিডির দেখাই মেলেনি। তখন। তারই মধ্যে কলকাতা থেকে আসতো বেতার জগৎ। সেই বেতার জগৎ দেখে সকাল আর সন্ধ্যায় রবীন্দ্রসঙ্গীতের অনুষ্ঠান শুনতে হতো। এই পরিবেশে কণিকা বন্দ্যোপাধ্যায়, সুচিত্রা মিত্র, দেবব্রত বিশ্বাস, পঙ্কজ মল্লিক, হেমন্ত মুখোপাধ্যায়–এঁরা ছিলেন আমাদের চোখে এক-একজন জাগ্ৰত দেবদেবীর মতোন।

এক কালের অবহেলিত রবীন্দ্ৰনাথ সে পরিবেশে কতোটা ভালোবাসা এবং আন্তরিকতার সঙ্গে গৃহীত হয়েছিলেন, তার একটা প্রমাণ— আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালোবাসি’। এ গান বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত হিশেবে স্বীকৃতি লাভ করে ধীরে ধীরে জনগণের হাতে, যুদ্ধের সময়ে। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর জাতীয় সংসদ তাকে কেবল আইনী অনুমোদন দান করে। মুক্তিযুদ্ধ শুরু হয়েছিলো ২৫শে মার্চ। কিন্তু আমার সোনার বাংলা” গেয়ে সাধারণ মানুষ অনুপ্রাণিত হচ্ছিলেন, ভাবী স্বাধীন বাংলার প্রতি তাদের ভালোবাসা প্ৰকাশ করছিলেন তার অনেক আগে থেকেই।

স্বাধীনতা লাভের পর তিন দশক চলে গেছে। ইতিমধ্যে অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশের আদর্শ ধুয়েমুছে বঙ্গোপসাগরে ভেসে গেছে। কিন্তু রবীন্দ্রনাথকে নিয়ে যে-উৎসাহ ষাটের দশকে দেখা দিয়েছিলো, সমাজের একাংশে তা এখনো জোরালোভাবেই বহাল রয়েছে। পাঠ্যপুস্তকে নয়, রবীন্দ্রনাথ এখনো এঁদের মধ্যে সক্রিয়ভাবেই বেঁচে আছেন বলে মনে হয়। অপর পক্ষে, সমাজের আর-এক অংশে আছেন ধর্মািন্ধ সাম্প্রদায়িক শক্তি, যাদের আর-এক পরিচয় ভারতবিরোধী বলে। এঁদের মধ্যেও রবীন্দ্রনাথ জ্যান্ত একটা সত্তা। এঁরা মৃত রবীন্দ্রনাথকে খুব ভয় করেন। এঁরা যেভাবে রবীন্দ্রবিরোধিতা করেন, ষাট বছর আগে মরো-যাওয়া কোনো ব্যক্তির প্রতি সাধারণত এতো বিরোধিতা কারো থাকে না। কেউ রবীন্দ্রচর্চা করছেন শুনলেই এঁরা তার মধ্যে ভারতের দালালির গন্ধ পান। অর্থাৎ রবীন্দ্রনাথ মরেও এঁদের চেতনায় রীতিমতো জীবিত। সে অর্থে বাংলাদেশে রবীন্দ্রনাথের অ্যাকাডেমিক চর্চা সীমিত হলেও রবীন্দ্ৰ-সমর্থক এবং রবীন্দ্ৰ-বিরোধী–উভয় গোষ্ঠীর মধ্যেই তিনি বেঁচে আছেন।

কিন্তু পশ্চিমবঙ্গে?

কালিদাস, ভ্যর্জিল প্ৰমুখের সঙ্গে তুলনা করে মাইকেল মধুসূদন বলেছিলেন এঁরা মানুষ, কিন্তু মিল্টন ডিভাইন। আমার চোখে রবীন্দ্রনাথও ছিলেন ডিভাইন। কিন্তু সেই ভাবে রূঢ় আঘাত লেগেছিলো ৭১-এর পঁচিশে বৈশাখ এবং কোথায়? না, যেখানে রবীন্দ্রনাথের জন্ম এবং বাস–সেই খোদ কলকাতায়। পার্ক স্যার্কাসে বাংলাদেশ মিশনের সামনে রবীন্দ্রজয়ন্তীতে শিল্পীরা যোগ দিয়েছিলেন স্বতঃস্ফৰ্তভাবে কণিকা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর দেবব্রত বিশ্বাস আসতে পারেননি ব্যক্তিগত কারণে। কিন্তু নামীদামী অন্য শিল্পীরা এসেছিলেন। দেখলাম রাস্তায় বসে থাকা, রাস্তার ধারে দাঁড়িয়ে থাকা অসংখ্য শ্রোতা সুচিত্রা মিত্রের মতো শিল্পীর গানও শুনছেন না। গল্প করছেন নিজেদের মধ্যে। বিস্মিত হলাম বললে কিছুই বলা হয় না–দারুণ দুঃখিত হলাম। বুঝলাম, রবীন্দ্রনাথ এঁদের কাছে আনুষ্ঠানিকতা মাত্র। আর-পাঁচটা ঠাকুর-দেবতার পুজোর মতো অথবা জামাই ষষ্ঠী কি ভ্রাতৃদ্বতীয়ার মতো ঐও একটা বাৎসরিক অনুষ্ঠান। বেল পাতা নয়, তবে এর জন্যে নির্দিষ্ট কয়েকটা উপকরণ লাগে। যেমন, সভাপতি, বক্তা, গায়ক, হারমোনিয়াম, তবলা, মাইক, ইত্যাদি। সেগুলো সরবরাহ করার ব্যবস্থাও থাকে। ভাড়া করা যায়। পুজো দেখার মতো এ অনুষ্ঠানেও ধুতিপাঞ্জাবী পরে যেতে হয়। গেলে সংস্কৃতিবান বলে পরিচিত হওয়া যায়।

এখন সাড়ে তিন দশক পরে রবীন্দ্রনাথের এই পতনের প্রক্রিয়াটা বুঝতে পারি। এর সঙ্গে বাংলাদেশের কোনো কোনো অনুষ্ঠানের সাদৃশ্যও দেখতে পাই। সবচেয়ে প্রাসঙ্গিক দৃষ্টান্ত হলো একুশে ফেব্রুয়ারি–শহীদ দিবস। এক-একটি শহীদ দিবস প্রচণ্ড ঢেউয়ের মতো এসে পূর্ব বাংলাকে পাকিস্তান থেকে ক্রমাগত দূরে সরিয়ে দিচ্ছিলো। ফলে দ্বিখণ্ডিত পাকিস্তান পুরোপুরি এগিয়ে যাচ্ছিলো ভেঙে যাওয়ার দিকে। এ দিনের উদযাপনে কারো উদ্যোগ নিতে হয়নি। এ ছিলো স্বতঃস্ফুর্ত। পূর্ব বাংলার শিক্ষিত সমাজের সঙ্গে এর ছিলো নাড়ীর বন্ধন। এই দিনের উদযাপন তাদের উজীবিত করতো, শোকের মধ্য দিয়ে শক্তি সঞ্চার করার অনুপ্রেরণা জোগাতো, বাঙালি হওয়ার, স্বাধীন হওয়ার উৎসাহ দিতো। ৭১ সাল পর্যন্ত এ দিনের গুরুত্ব এবং তাৎপর্য ছিলো অন্তহীন। কিন্তু ৭২ সাল থেকে এ দিনের রূপান্তর ঘটলো–এ দিন পরিণত হলো আনন্দ-উৎসবে। ধীরে ধীরে এর উদ্দেশ্য এবং তাৎপৰ্য–দু-ই লোপ পেলো। এ হলো এখন বাঙালির পঞ্জিকায় আরও একটি ছুটির দিন, আরও একটি পার্বণ। এ দিনে এখনও প্রভাত ফেরী বের হয়, হাজার হাজার লোক শহীদ মিনারে যান। কিন্তু অনেকে, বিশেষ করে তরুণদের অনেকে, জানেনও না কেন যান। এ দিন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয়। সে অনুষ্ঠানের জন্যে সরকারী তহবিল থেকে নির্দিষ্ট অঙ্কের টাকা বরাদ্দ থাকে। ঠিকাদার রাস্তায় আল্পনা আকে, সামিয়ানা খাটায়। শিল্পীরা গান গাইবার জন্যে সম্মানী পান। দর-দস্তুর হয়। এক অনুষ্ঠানের গান শেষ করে তাদের অন্য অনুষ্ঠানে ছুটতে হয়।

৭১-এর কলকাতায় এই একই ধরনের প্রাণহীন আনুষ্ঠানিকতা দেখেছিলাম। আমার ধারণা, এখন তিনি সম্ভবত আরও প্রাণহীন আনুষ্ঠানিকতায় পরিণত হয়েছেন। কিন্তু পরিহাসের বিষয় হলো: অন্যদিকে–কলেজ স্ত্রীটে আর কলেজ পাড়ায়–তিনি আবার যৌবন ফিরে পেয়েছেন। হ্যাঁ, রবীন্দ্র-বাণিজ্য এবং রবীন্দ্র-শিল্পের খুব প্রসার ঘটেছে, অনেক শ্ৰীবৃদ্ধি হয়েছে। তা ছাড়া, বাংলার অধ্যাপক একের পর এক রবীন্দ্রসাহিত্য বিষয়ক নোট বই লিখে বাড়ি বানাচ্ছেন। রবীন্দ্রনাথের নামে প্ৰবন্ধ লিখে কলামিস্ট পচিশে বৈশাখ আর বাইশে শ্রাবণ যৎকিঞ্চিৎ কামাই করছেন। কেউ বা চাকরিতে উন্নতি করার জন্যে রবীন্দ্রনাথের ওপর সম্ভাব্য (এমনকি অসম্ভব) সব বিষয় নিয়ে ডাক্তারি পাশ করছেন। (রবীন্দ্রনাথ হোমিওপ্যাথিতে কতোটা পাণ্ডিত্য অর্জন করেছিলেন, তা নিয়েও বোধ হয়। এতো দিনে পিএইচডি অভিসন্দৰ্ভ লেখা হয়েছে। আমার অজ্ঞতা মাফ করবেন–আমি ঠিক নিশ্চিত নই এ বিষয়ে লেখা হয়েছে কিনা। কিন্তু হাস্যরসিক রবীন্দ্রনাথ, ভোজনরসিক রবীন্দ্রনাথ, কৃষিবিশারদ রবীন্দ্রনাথ, জমিদার রবীন্দ্রনাথ–এসব বিষয় নিশ্চয় এখন আর বাদ নেই!)

রবীন্দ্রনাথ নিজেই বলেছিলেন যে, তার গান আর ছোটোগল্প টিকে থাকবে। অন্তত এখনো আছে। গল্পটা তেমন নয়, কিন্তু তার গান ছাড়া আধুনিক শৌচাগার উদ্বোধনও কল্পনাতীত। এ বছরের (২০০৬)। ২৫শে জানুয়ারি মাইকেল মধুসূদনের সমাধিতে গিয়েছিলাম। সেখানে কিভাবে তাকে বাঙালিরা স্মরণ করেন, তা দেখার ঔৎসুক্য মেটাতে। দেখলাম রাজনৈতিক টাউটরা এসেছেন এবং তরুণ-তরুণীরা এসেছেন জোড়ে। টেলিভিশনের ক্র্যরাও। সভাপতি মশাই ছাড়া বাকি সবাই বোধ হয় কবিতা আবৃত্তি করলেন। হ্যাঁ, মাইকেলের কবিতা। আমি যখন ভাবছি— কী অন্যায়, বাংলার মাটিতে রবীন্দ্রনাথ অনুপস্থিত!— ঠিক তখনই এক তরুণী আবেগে গলা কাঁপিয়ে পড়লেন রবীন্দ্রনাথের একটি কবিতা। রবীন্দ্রনাথের কবিতা ছাড়া মাইকেলের জন্মদিনও উদযাপিত হয় না! আর তাঁর গান তো বাঙালি জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এ গান বোঝার জন্যে উচ্চাঙ্গসংগীতের জ্ঞান লাগে না। তা ছাড়া, কথাগুলো খুব আকর্ষণীয়। প্রচুর ‘তুমি” এবং প্রচুর ভালোবাসার কথা থাকে। সেগুলো সহজে বোঝা যায়। সবচেয়ে বড়ো কথা, তার গানের কথাগুলো কানের ভিতর দিয়া একেবারে মরমে প্ৰবেশ করে। সে জন্যে কবিতা অথবা ছোটোগল্পের চেয়েও তাঁর গানের চাহিদা ঢের বেশি। চাহিদা আর সরবরাহের নিয়মে তার গান নিয়ে তাই রীতিমতো বাণিজ্য হচ্ছে। (বৈদেশিক মুদ্রার কথা ভেবে সরকারী ভুর্ভুকী দিলে কেমন হয়?)

বাণিজ্য করতে গেলে বিবেকের, বিবেচনার কথা ভাবা যায় না। রবীন্দ্ৰবাণিজ্যেও এই প্রবণতা ক্রমবর্ধমান মাত্রায় লক্ষ্য করা যাচ্ছে। যেমন, একটা সময় পর্যন্ত দেখা যেতো যে, একজন বড়ো শিল্পী একটা গান রেকর্ড করলে অন্য শিল্পী আর সে গানের রেকর্ড করতেন না। ফলে নতুন রেকর্ডের জন্যে যেসব গান বড়ো একটা গাওয়া হতো। না, তেমন গান খুঁজে বের করতে হতো। এভাবে অনেক অপ্রচলিত গান সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছে যেতো। কিন্তু এখন আর সেই চক্ষুলজ্জা নেই। যে-কোনো শিল্পী যে-গান খুশি গাইতে পারেন। আগের শিল্পীর তুলনায় ভালো করলে তার যুক্তি থাকতো। এমন কি, আগের শিল্পী গানের যে-ইন্টারপ্রেটেশন দিয়েছেন, তার থেকে ভিন্ন ইন্টারপ্রেটেশন দিলে অথবা নিজস্ব ভঙ্গিতে গান পরিবশেন করলেও অযৌক্তিক হতো না। কিন্তু এখন ক্যাসেটের যুগে স্বরলিপি ধরে হারমোনিয়াম বাজিয়ে যিনি গান করতে পারেন, তারই গান বাজারে ছাড়া হয়। কারণ, এর জন্যে কম্পোনিকে টাকা খরচ করতে হয় না, যাঁর ক্যাসেট তিনি নিজেই টাকাপয়সা দিয়ে কম্পানির কর্মকর্তাদের অনুরোধ-উপরোধ করে ক্যাসেট প্রকাশের ব্যবস্থা করেন। আর্থিক অবস্থা আর-একটু ভালো হলে একই কৌশলে সিডিও প্রকাশ করা যায়। কম্পোনির কোনো আর্থিক লোকসান নেই তাতে–কারণ ক্যাসেট বিক্রি না-হলেও কিছু যায়আসে না, গায়ক-গায়িকাই টাকা দিয়ে পুষিয়ে দেন।

রেকর্ড কম্পোনিগুলোর আর-একটা আয় হলো: একজন বিখ্যাত শিল্পী ধরা যাক যদি চল্লিশটা গান গেয়ে থাকেন, তা হলে নানা রকমের পামিউটেশন-কম্বিনেশন করে। সেই গানগুলো দিয়েই চার-পাঁচটা সিডি করে ফেলেন। একজন ভালো শিল্পীর সঙ্গে আরও দুজন মাঝারি শিল্পীর গান মিশিয়ে সংকলন প্রকাশ করেন। যার টাকা আছে, তিনিই ক্যাসেট অথবা সিডি প্ৰকাশ করতে পারার আর-একটা কারণ: এখন আর বিশ্বভারতীর সঙ্গীত পর্ষদের অনুমোদন লাগে না। গলায় সুর না-থাকলে অথবা বেসুরো গাইলে কোনো ক্ষতি নেই। এই অরাজকতার যুগে রবীন্দ্রসঙ্গীতের রবারবা ব্যবসা চলছে।

রবীন্দ্ৰব্যবসার আর-একটা এলাকা দখল করেছেন প্ৰকাশকরা। রবীন্দ্ৰনাথ তার গ্রন্থস্বত্ব দিয়ে গিয়েছিলেন বিশ্বভারতীকে। বিশ্বভারতীই ষাট বছর সেই গ্রন্থস্বত্ব ভোগ করেছিলো। কিন্তু এখন সেই একচেটিয়া স্বত্ব লোপ পাওয়ার পর নানা প্রকাশক এগিয়ে এসেছেন রবীন্দ্রনাথকে নিয়ে ব্যবসা করার জন্যে। একই রবীন্দ্ররচনাবলী এখন ছাপছেন নানাজন। কেউ কেউ চক্ষুলজ্জায় একটু ভিন্ন রকমে রচনাগুলো সাজাচ্ছেন। আর কেউ কেউ অতো ঝামেলা না-করে ৬১ সালের সংস্করণই হুবহু ছাপিয়ে দিচ্ছেন। সাধু যার ইচ্ছা ঈশ্বর তার সহায়। এ ক্ষেত্রে প্রকাশকদের সহায় হয়েছে আধুনিক প্রযুক্তি। কম্পোজ করার ঝামেলা নেই। অফসেট ছাপা হচ্ছে। সুতরাং চৌর্যবৃত্তির জন্যে চোরদেরও যেসব কৌশল আয়ত্ত করতে হয় সাধনা করে, প্রকাশকের তাও দরকার হয় না। খালি লেটার প্রেসকে একটু উন্নত করে অফসেট প্রিন্টের ব্যবস্থা করতে হয়। রবীন্দ্রনাথের রচনা প্ৰকাশ করার প্রতিযোগিতায় এগিয়ে যাওয়ার জন্যে প্রকাশদের মধ্যে যে-লড়াই ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে এবং ভবিষ্যতে আরও প্রবল হবে, তাতে কাজ করবে। আর-পাঁচটা ব্যবসায় যেসব জিনিশ–মার্কেট ফোর্স–কাজ করে, সেগুলোই। অর্থাৎ কতো কম দামে ছেপে কতো বেশি লাভ করা যায়। কতো চকচকে মলাট দিয়ে ক্রেতাদের আকৃষ্ট করা যায় (হায়রে বিশ্বভারতীয় মলাট!), কতো আকর্ষণীয় বিজ্ঞাপন দেওয়া যায়, উপন্যাস হলে মলাটে নায়িকার অর্ধনগ্ন ছবি ইত্যাদি। এর পরে এর সঙ্গে আরও যুক্ত হবে বাংলার অধ্যাপকদের নাম। ভূমিকা-সংবলিত অমুকের সম্পাদিত রবীন্দ্ররচনাবলী।

দেখেশুনে মনে হতেই পারে যে, রবীন্দ্রনাথ আবার অশরীরে আবির্ভূত হয়েছেন। আমাদের কাছাকাছি চলে এসেছেন। কেউ বেড়াতে এলে নিদেন পক্ষে বসার ঘরে বুড়ো রবীন্দ্রনাথের একটা ছবি টাঙানো দেখবেন এবং রবীন্দ্রসঙ্গীত শুনতে পাবেন। তা ছাড়া, কাঁদের আলমারিতে একেবারে আনকোরা নতুন রবীন্দ্ররচনাবলীও দেখতে পাবেন (ঘর সাজানোর উপকরণ–কেউ কোনোদিন খুলে দেখেনি)। এর পরে আর সংস্কৃতিবান বলে অন্য কারো সার্টিফিকেটের প্রয়ােজন হবে না। যে দেবতা সর্বগৃহে সংস্কৃতিরূপে সংস্থিত, তিনি রবীন্দ্রনাথ। (রামকৃষ্ণ পর্যন্ত হয়েছিলেন। বেচারা রবীন্দ্রনাথ একটু দেরিত্বে জন্মেছেন, তা না-হলে তাঁকে দ্বাদশ অবতার বলে চালিয়ে দেওয়া যেতো!)

ভাগ্যের পরিহাস, রবীন্দ্রশিল্প ও বাণিজ্যের যখন এতোই শ্ৰীবৃদ্ধি হচ্ছে, এমন কি, তাঁর গান এবং রচনাবলী ঘরে ঘরে শোভা পাচ্ছে, সেই সুসময়ে আসল রবীন্দ্রনাথ ক্রমাগত হারিয়ে যাচ্ছেন। রবীন্দ্রনাথ প্ৰায় ভবিষ্যদ্ৰষ্টা ছিলেন। নিজেই তাঁর এই অবস্থা হবে কল্পনা করে রূপকের মধ্য দিয়ে লিখেছিলেন: নদী যখন হারিয়ে যায়, তখন দেখতে পাই গর্ত এবং বালি। (সরিয়াসলি নেবেন না। দয়া করে!) রবীন্দ্রনাথ অর্থাৎ তাঁর আদর্শ যখন প্রায় পুরোপুরি লোপ পেতে বসেছে, অথবা লোপ পেয়েছে, সেই সময়েই রবীন্দ্রনাথের সুন্দর রঙিন ছবি, গানের রেকর্ড আর রচনাবলী গুনগুনিয়ে আমাদের ঘরে এলো। রবীন্দ্রনাথ আমার চোখে মানবতার প্রতীক। মহত্ত্বের প্রতীক। ঔদার্যের প্রতীক। আন্তর্জাতিকতার প্রতীক। আনুষ্ঠানিকতার বদলে তিনি শেষে বিশ্বাস স্থাপন করেছিলেন মানুষের ধর্মে। ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান নয়, তার কাছে ধর্ম ছিলো সত্য, সুন্দর এবং মঙ্গল। জীবন এবং সমাজ থেকে সেই রবীন্দ্রনাথকে বিসর্জন দিয়ে আজ যে-রবীন্দ্রনাথকে পুজো করা হচ্ছে, তিনি রবীন্দ্রনাথ নন। সে রবীন্দ্রনাথ কবে মরে ভূত হয়ে গেছেন!

(দৈনিক স্টেটসম্যান, রবীন্দ্রজয়ন্তী, ২০০৬)

Category: নারী ধর্ম ইত্যাদি
পূর্ববর্তী:
« ১৯. কেন রবীন্দ্রনাথ?
পরবর্তী:
২১. শ্ৰেষ্ঠ বাঙালি : রবীন্দ্রনাথ বনাম শেখ মুজিব »

Reader Interactions

Leave a Reply Cancel reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

বাংলা লাইব্রেরি : উল্লেখযোগ্য বিভাগসমূহ

লেখক ও রচনা

অনুবাদ সাহিত্য

সেবা প্রকাশনী

ডিকশনারি

কৌতু্ক / জোকস

লিরিক

রেসিপি

কোরআন

হাদিস

ত্রিপিটক

মহাভারত

রামায়ণ

পুরাণ

গীতা

বাইবেল

বিবিধ রচনা

বাংলা ওসিআর

Download Bangla PDF

হেলথ

লাইব্রেরি – ফেসবুক – PDF

top↑