• Skip to main content
  • Skip to header right navigation
  • Skip to site footer

Bangla Library

Read Bengali Books Online (বাংলা বই পড়ুন)

  • লেখক
  • My Account
  • লেখক
  • My Account
  • বাংলা ডিকশনারি
  • বাংলা কৌতুক
  • বাংলা লিরিক
  • বাংলা রেসিপি
  • হেলথ টিপস এন্ড নিউজ

বাংলা PDF ডাউনলোড

বাংলা নতুন/পুরাতন বইয়ের পিডিএফ ডাউনলোড/সন্ধান করতে আমাদের বাংলা পিফিএফ সাইটে ক্লিক করুন।

Bangla PDF

০৫. শ্যামলাল মল্লিক জখম হননি বটে

লাইব্রেরি » সত্যজিৎ রায় » ফেলুদা সমগ্র - সত্যজিত রায় » গোসাঁইপুর সরগরম (উপন্যাস) (১৯৭৬) » ০৫. শ্যামলাল মল্লিক জখম হননি বটে

শ্যামলাল মল্লিক জখম হননি বটে, কিন্তু তাঁকে যেভাবে দুঘণ্টা বাঁধা অবস্থায় পড়ে থাকতে হয়েছিল তাতে তিনি বেশ, টসকে গেছেন। ফ্যালফ্যাল করে সামনের দিকে চেয়ে বসে আছেন ফরাসের উপর, কেবল একবার মাত্র বিড়বিড় করে বলতে শুনলাম, বাঁধলি যদি তো মেরে ফেললি না কেন? এদিকে তাঁর সিন্দুক যে ফাঁক সেটা কি তিনি খেয়াল করেছেন?

ফেলুদা প্ৰথমে শ্যামলালবাবুর ঘরটা তন্ন তন্ন করে দেখল। শুধু সিন্দুকটাই খোলা হয়েছে, আর যার যেমন তেমনিই আছে। চাবি থাকত নাকি ভদ্রলোকের বালিশের নীচে। ভোলানাথবাবু দোতলাতেই শোন, তাঁকে ঘুমের মধ্যে অ্যাটাক করে হাত-পা চোখ-মুখ বেঁধে ফেলেছে ডাকাত। ওঁর ধারণা যে অন্তত দুজন লোক ছিল। চাকর নবীন নাকি সারারাত নাকে তেল দিয়ে ঘুমিয়েছে। দুজন পাইকের মধ্যে একজন চলে গিয়েছিল সেগুনহাটি যাত্রা দেখতে, আর একজন তার ডিউটি ঠিকই করছিল, দুঃখের বিষয় ডাকাত মাথায় লাঠি মেরে বেশ কয়েক ঘণ্টার জন্য তাকে অকেজো করে দিয়েছিল। সামনের দরজা বন্ধই ছিল, কাজেই মনে হয় খিড়কির পাঁচিল টপকে পিছনের বারান্দা দিয়ে ঢুকেছিল। ঠাকুমাকে কিছু জিজ্ঞেস করে লাভ নেই, কারণ তিনি থাকেন বারান্দার উত্তর প্রান্তে তিনটে অকেজো ঘরের পরে শেষ ঘরে।

পনেরো মিনিট হল এসেছি, কিন্তু এখনও জীবনবাবুর দেখা নেই। ভোলানাথবাবু আমাদের সঙ্গেই ছিলেন, ফেলুদা তাঁকে বলল, জীবনবাবু কি আমাদের সঙ্গে কথা না বলেই পুলিশে খবর দিতে গেলেন নাকি?

ভোলানাথবাবু আমতা আমতা করে মাথা নেড়ে বললেন, আজ্ঞে আমাকে বলেই তিনি বাইরে বেরিয়ে ছিলেন বটে, কিন্তু তার পরে তো…

ফেলুদা এবার ছুটিল সিঁড়ির দিকে, পিছনে আমি আর লালমোহনবাবু। উঠোন পেরিয়ে সোজা খিড়কি দিয়ে বাইরে বাগানে হাজির হলাম। এখনও ভাল করে সূর্য ওঠেনি। অল্প কুয়াশাও যেন রয়েছে, কিংবা জমে থাকা উনুনের ধোঁয়া। গাছের পাতাগুলো শিশিরে ভেজা, পায়ের নীচে ঘাস ভেজা। পাখি ডাকছে-কাক, শালিক, আর আরেকটার নাম জানি না।

আমরা বাগানের মধ্যে দিয়ে এগিয়ে গিয়ে থমকে থেমে গোলাম।

দশ হাত দূরে একটা কাঁঠাল গাছের গুড়ির ধারে নীল পাঞ্জাবি আর পায়জামা পরা একজন লোক পড়ে আছে। ওই পোশাক আমি চিনি; ওই চটিটাও চিনি।

ফেলুদা এগিয়ে গিয়ে কাছ থেকে দেখেই একটা আতঙ্ক আর আক্ষেপ মেশানো শব্দ করে পিছিয়ে এল।

ও মশাই।

লালমোহনবাবু আঙুল দিয়ে কিছু দূরে মাটিতে একটা জায়গায় পয়েন্ট করে কথাটা বললেন।

জানি। দেখেছি, বলল ফেলুদা, ওটা ছোবেন না। ওটা দিয়েই জীবনবাবুকে খুন করা হয়েছে। ঝোপের ধারে পড়ে রয়েছে। কোণে পাথর বাঁধা একটা গামছা।

ভোলানাথবাবুও বেরিয়ে এসেছেন, আর দেখেই বুঝছেন কী হয়েছে। ‘সর্বনাশ’ বলে মাথায় হাত দিয়ে প্রায় যেন ভিরমি লাগার ভাব করে তিন হাত পেছিয়ে গেলেন ভদ্রলোক।

এখন বিচলিত হলে চলবে না ভোলানাথবাবু, আপনি চলে যান ভদ্রলোকের সঙ্গে। এখানে পুলিশের ঘাঁটিতে গিয়ে খবর দিন। দরকার হলে শহর থেকে দারোগা আসবে। কেউ যেন লাশ বা গামছা না ধরে। কিছুক্ষণ আগেই এ কীর্তিটা হয়েছে। সে লোক হয়তো এখনও এ তল্লাটেই আছে। আর—ভাল কথা—মল্লিকমশাই যেন খুনের কথাটা না জানেন।

ফেলুদা দৌড় দিল পশ্চিম দিকের পাঁচিল লক্ষ্য করে, সঙ্গে সঙ্গে আমিও।

এ দিকের পাঁচিলের একটা জায়গা ধসে গিয়ে দিব্যি বাইরে যাবার পথ হয়ে গেছে। আমরা দুজনে টপকে বাইরে গিয়ে পড়লাম। ফেলুদার চোখ চারিদিকে ঘুরছে, এমনকী জমির দিকেও। আমরা এগিয়ে গেলাম। একশো গজের মধ্যে অন্য কোনও বাড়ি নেই, কারণ এটা সেই শর্টকাটের বাঁশবন। কিন্তু ওটা কী? একটা ভাঙা মন্দির। নিশ্চয় সেই বাদুড়ে কালী মন্দির।

মন্দিরের পাশে একজন লোক, আমাদের দিকেই এগিয়ে আসছেন। কবিরাজ রসিক চক্রবর্তী।কী ব্যাপার? এত সকালে? ভদ্রলোক জিজ্ঞেস করলেন।

আপনি খবর পাননি বোধহয়?

কী খবর?

মল্লিকমশাই—

অ্যাঁ! কবিরাজের চোখ কপালে উঠে গেছে।

আপনি যা ভয় পাচ্ছেন তা নয়। মল্লিকমশাই সুস্থই আছেন, তবে তাঁর বাড়িতে ডাকাত পড়েছে। আর জীবনবাবু খুন হয়েছেন—তবে এ খবরটা আর মল্লিকমশাইকে দেবেন না।

রসিকবাবু ব্যস্তভাবে এগিয়ে গেলেন। আমরাও ফেরার রাস্তা ধরলাম; খুনি পালিয়ে গেছে।

পাঁচিল টপকে বাগানে ঢুকে এগিয়ে যেতেই তিন নম্বর বিস্ফোরণ। আমার মাথা ভোঁ ভোঁ করছে। একি স্বপ্ন না। সত্যি? কাঁঠাল গাছের নীচটা এখন খালি।

জীবনবাবুর লাশ উধাও।

ঝোপের পাশ থেকে ঠগীর ফাঁসটাও উধাও।

লালমোহনবাবু একটা গোলঞ্চ গাছের পাশে দাঁড়িয়ে ঠক ঠক করে কাঁপছেন। কোনওরকমে ভদ্রলোক মুখ খুললেন।

ভোলানাথবাবু পুপ্ৰ—পুলিশে খবর দিতে গেলেন, আমি আপনাদের খুঁজতে এসে দেখি…

এসে দেখলেন লাশ নেই? ফেলুদা চেঁচিয়ে জিজ্ঞেস করল। না!

ফেলুদা আবার দৌড় দিল। এবার পশ্চিমে নয়, পুবে।

পুবের দেয়ালে ফাঁক নেই, কিন্তু উত্তরে আছে। কালকের সেই গর্ত—আজ দেখলাম সেটা একটা আম গাছের নীচ—আর পিছনেই ফাঁক। বড় ফাঁক, প্ৰায় একটা ফটক বললেই চলে। আমি আর ফেলুদা বাইরে বেরেলাম।

দশ হাতের মধ্যেই একটা পুকুর, জলে টুইটম্বর। এই পুকুরেই যে ফেলা হয়েছে লাশ তাতে সন্দেহ নেই।

আমরা ফিরে গিয়ে পিছনের সিঁড়ি দিয়ে সোজা উঠলাম দোতলায়।

ও জীবন, ও বাবা জীবন!—ঠাকুমা চেঁচাচ্ছেন—এই যেন দেখলাম জীবনকে, গোল কোথায় ছেলেটা?

গাল তোবড়ানো, চুল ছোট করে ছাঁটা, থান পরা আশি বছরের বুড়ি, ঘোলাটে চশমা পরে নিজের ঘর ছেড়ে বারান্দার এদিকে চলে এসেছেন। অ্যাদ্দিন গলা শুনেছি, আজ প্রথম দেখলাম ঠাকুমাকে। ফেলুদা এগিয়ে গেল।জীবনবাবু একটু বেরিয়েছেন। আমার নাম প্ৰদোষ মিত্র। আপনার কী দরকার আমাকে বলতে পারেন।

তুমি কে বাবা?

আমি জীবনবাবুর বন্ধু।

তোমাকে তো দেখিনি।

আমি দুদিন আগে এসেছি কলকাতা থেকে।

তুমিও কলকাতায় থাকো?

আজ্ঞে হ্যাঁ। কিছু বলার ছিল আপনার?

বুড়ি হঠাৎ যেন খেই হারিয়ে ফেললেন। ঘাড় উঁচু করে কিছুক্ষণ এদিক ওদিক চেয়ে বললেন, কী বলার ছিল সে আর মনে নেই বাবা, আমার বড্ড ভোলা মন যে!

আমরা ঠাকুমাকে আর সময় দিলাম না। তিনজনে গিয়ে ঢুকলাম শ্যামলালবাবুর ঘরে।

রসিকবাবু ইতিমধ্যে এসে হাজির হয়েছেন; তিনি শ্যামলালবাবুর নাড়ি ধরে বসে আছেন।

জীবন কোথায় গেল? এখনও কেমন জানি অসহায় ভাব করে কথা বলছেন ভদ্রলোক। বুঝলাম রসিকবাবু জীবনবাবুর মৃত্যু সংবাদটা শ্যামলালবাবুকে দেননি।

আপনি তো চাইছিলেন তিনি কলকাতায় ফিরে যান, বলল ফেলুদা।

ও চলে গেল! কীসে গেল? পালকিতে?

পালকিতে তো আর সবটুকু যাওয়া যায় না। কাটায়া থেকে ট্রেন ছাড়া গতি নেই। গোরুর গাড়ি বা ডাক গাড়িতে যাওয়া আজকের দিনে যে সম্ভব নয় সেটা নিশ্চয়ই বোঝেন।

তুমি আমাকে বিদ্যুপ করছ? শ্যামলালবাবুর গলায় যেন একটু অভিমানের সুর।

শুধু আমি কেন? ফেলুদা বলল, গ্রামের সবাই করে। আপনি যা করছেন তাতে আপনার তো নয়ই, কারুরই লাভ বা মঙ্গল হচ্ছে না। আপনার নিজের কী হল সেটা তো দেখলেন। সড়কির বদলে বন্দুকধারী একজন ভাল পাহারাদার থাকলে আর এ কাণ্ডটা হত। না। বৈদ্যুতিক শক-এর চেয়ে এ শকটা কি কিছু কম হল? যে-যুগ চলে গেছে তাকে আর ফিরিয়ে আনা যায় না মল্লিকমশাই।

আশ্চর্য, আমি ভেবেছিলাম ভদ্রলোক তেলেবেগুনে জ্বলে উঠবেন, কিন্তু সেটা হল না।

ফেলুদার কথার উত্তরে একটি কথাও বললেন না। তিনি, কেবল একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে চুপ করে রইলেন।

Category: গোসাঁইপুর সরগরম (উপন্যাস) (১৯৭৬)
পূর্ববর্তী:
« ০৪. গ্রামটা ঘুরে দেখে
পরবর্তী:
০৬. মুখের চেহারা কী হয়েছে »

Reader Interactions

Leave a Reply Cancel reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

বাংলা লাইব্রেরি : উল্লেখযোগ্য বিভাগসমূহ

লেখক ও রচনা

অনুবাদ সাহিত্য

সেবা প্রকাশনী

ডিকশনারি

কৌতু্ক / জোকস

লিরিক

রেসিপি

কোরআন

হাদিস

ত্রিপিটক

মহাভারত

রামায়ণ

পুরাণ

গীতা

বাইবেল

বিবিধ রচনা

বাংলা ওসিআর

Download Bangla PDF

হেলথ

লাইব্রেরি – ফেসবুক – PDF

top↑