০৯. গোয়েন্দাগিরি ছেড়ে দেব

‘গোয়েন্দাগিরি ছেড়ে দেব রে।’

ফেলুদা এ ধরনের কথা আগে কোনওদিন বলেনি, কিন্তু এবার যে অবস্থায় পড়েছে, তাতে এটা বলা বোধহয় খুব অস্বাভাবিক নয়।

আজ সপ্তমী। সোমবার। এখন সকাল। শশীবাবু খুন হয়েছেন দুদিন আগে। আমরা সকালে চা রুটি ডিম খাওয়া সেরে আমাদের হোটেলের ঘরে যে যার খাটে বসে আছি। একটুক্ষণ আগে তেওয়ারি ফোন করে জানিয়েছেন যে শশীবাবুর ছোট ছেলে নিতাইকে নাকি অ্যারেস্ট করা হয়েছে। নিতাই খারাপ ছেলে এটা আগেই শুনেছি। তার সঙ্গে নাকি বাপের অনবরত খিটিমিটি লাগত। শশীবাবু নাকি প্রায়ই ওকে পুলিশে ধরিয়ে দেবার ভয় দেখাতেন। তাই ছেলের পক্ষে শেষ পর্যন্ত বাপকে খুন করাটা অস্বাভাবিক নয়। নিতাই কিন্তু খুন স্বীকার করেনি। সে নাকি সেদিন সন্ধেবেলা চৈতগঞ্জের একটা সিনেমায় হিন্দি ছবি দেখছিল। তার শার্টের পকেটে টিকিটের আধখানা পাওয়া গেছে। যে ছুরি দিয়ে শশীবাবুকে খুন করা হয়েছিল সেটা নাকি পাওয়া যায়নি।

মৃত্যুর দিন সন্ধ্যা ছটার মধ্যে শশীবাবু চক্ষুদানের কাজ শেষ করে দেন। বিকাশবাবু পুলিশকে বলেছেন যে কাজটা শেষ করেই শশীবাবু বিকাশবাবুর কাছে যান হোমিওপ্যাথিক ওষুধ চাইতে, কারণ তার নাকি আবার নতুন করে জ্বর এসেছিল। বিকাশবাবু ওষুধ দেন, শশীবাবু তখনই ওষুধ খেয়ে বাড়ি যাবার জন্য বেরিয়ে যান। পথেই তাকে খুন করা হয়।

‘মাঝে মাঝে বোধহয় এ ধরনের একটা ধাক্কা খাওয়া ভাল।’—ফেলুদা আবার কথা বলছে। আমি জানি কথাটা ঠিক আমাদের উদ্দেশ করে বলা হচ্ছে না। ফেলুদা যেটা করছে তাকে ইংরেজিতে বলে থিংকিং অ্যালাউড। —‘বেশ লাগছে নিজেকে একটা সাধারণ স্তরের মানুষ বলে মনে করতে। —লালমোহনবাবু, আজ কাবুলিওয়ালা দেখতে যাবেন তো? এরা শুনেছি বেশ ভাল অভিনয় করে।’

‘হ্যাঁ তা আপনি গেলে, মানে আপনি যদি…’

‘আর কাল যাব টারজান। পরশু জঞ্জীর; তরশু রফু চক্কর। আর দুর্গাবাড়িটাও একবার দেখিয়ে আনব আপনাদের। দেখবেন ওখানকার বাঁদরগুলো ফেলু মিত্তিরের চেয়ে অনেক বেশি বুদ্ধিমান।’

সত্যি সন্ধ্যাবেলা আমরা কাবুলিওয়ালা দেখতে বেঙ্গলি ক্লাবে হাজির হলাম, আর সত্যিই দেখলাম ওরা বেশ ভাল অ্যাকটিং করে।

পরদিন মহাষ্টমী। সকালে ঠাকুর দেখতে বেরোনো হল। ঘোষালবাড়ি ছাড়াও আরও অন্য বাড়িতে পুজো হয়। গোটা পাঁচেক ঠাকুর দেখে আমরা দুর্গাবাড়িতে গেলাম। লালমোহনবাবু মন্দিরের বাইরে রইলেন, কারণ বাঁদর জিনিসটা নাকি ওঁর খাঁচার বাইরে ভাল লাগে না। বললেন, ‘ব্যাসদেব, থুড়ি—বাল্মীকিদেব যে কেন জানোয়ারটাকে জাতে তুলেছেন তা আজ পর্যন্ত বুঝতে পারলাম না। যারা লাঠির খোঁচা না খেলে নাচতে পারে না তারা করবে সেতুবন্ধন? ছোঃ!—আর আমার গপ্‌পোকে বলা হয় গাঁজাখুরি!’

দুপুরে মিস্টার ঘোষাল ওঁদের বাড়িতে খেতে বলেছিলেন : ফেলুদা হোটেল থেকে ফোন করে বিকাশবাবুকে অ্যাপলজি জানিয়ে দিল। আমরা হোটেলেই খেলাম। ফেলুদা দু বেলাই হাতের রুটি খায়। আজ হঠাৎ একগাদা ভাত খেয়ে বিছানায় শুয়ে এক ঘুমে সাড়ে চারটে বাজিয়ে দিল। পরে বুঝেছিলাম যে ঝড়ের আগে প্রকৃতির যে একটা ম্যাদামারা ভাব হয়, এ হল তাই; কিন্তু ফেলুদাকে কক্ষনও এরকম অকেজো আর ঝিমধরা অবস্থায় দেখিনি বলে মনটা ভীষণ খারাপ লাগছিল।

লালমোহনবাবু অবিশ্যি ঠিক অকেজো ছিলেন না; তাঁর খাতায় তিনি একটা গল্পের খসড়া আরম্ভ করে দিয়েছেন গতকাল থেকে। দু লাইন লিখছেন আর সিলিং-এর দিকে চাইছেন। খালি একবার আমার দিকে ফিরে বললেন, ‘মুমূর্ষুতে কী অর্ডারে হ্রস্ব-উ দীর্ঘ-ঊ আসছে বলবে কাইন্ডলি?’

শেষ পর্যন্ত টারজান দি এপ ম্যানও যাওয়া হল, কিন্তু ফেলুদার আর পুরো ছবিটা দেখা হল না। পুরো কেন বলছি—মেট্রো-গোল্ডউইন মেয়ারের নামের পর ছবির নামটা সবে পর্দায় পড়েছে, এমন সময় ফেলুদা দেখি সিট ছেড়ে উঠে পড়েছে।

‘তোপ্‌সে, তোরা থাক। আমার একটু কাজ আছে।’

কিছু বলার আগেই ফেলুদা হাওয়া।

আমার মনের অবস্থা অদ্ভুত। ছবিটাও ভাল লাগছে, ফেলুদার মধ্যে হঠাৎ কেন জানি উৎসাহ জেগে উঠেছে, সেটাও ভাল লাগছে, অথচ ও যে কীসের জন্য চলে গেল সেটা ভেবে পাচ্ছি না।

আটটার সময় ছবি শেষ হল; রিকশা নিয়ে হোটেলে ফিরলাম সোয়া আটটায়। ঘরে এসে দেখি ফেলুদা খাটে বসে খাতা খুলে ভীষণ মনোযোগ দিয়ে কী সব যেন হিসাব করছে। আমাদের দেখে বলল, ‘তোরা খেয়ে নিস। আমার জন্য এক পেয়ালা কফি পাঠিয়ে দিতে বলেছি।’

‘তুমি খাবেই না?’

‘পেট ভরা। তা ছাড়া তেওয়ারির কাছ থেকে একটা জরুরি টেলিফোন আসছে।’

আজ অষ্টমী বলে হোটেলে লুচি মাংস ছিল, রান্নাও ভাল হয়েছিল, কিন্তু পাছে তেওয়ারির ফোন আসার আগে খাওয়া শেষ না হয় তাই সব কিছু গোগ্রাসে গিলতে হল।

ফোনটা এল আমাদের খাওয়া শেষ হওয়ার প্রায় আধ ঘণ্টা পরে। এবার আমি ফেলুদার কাছে না থেকে পারলাম না। ফেলুদা যা বলল তা হচ্ছে এই—

‘বলুন মিস্টার তেওয়ারি…হ্যাঁ…ভেরি গুড…না না, এখন কিছু করবেন না, একদম শেষ মুহূর্তে…হ্যাঁ, সেই জন্যেই তো গোড়ায় এত গণ্ডগোল লেগেছিল…হ্যাঁ—আর ইয়ে—ওই বাড়িটার খোঁজ করেছিলেন?…ভেরি গুড…ঠিক আছে, কাল দেখা হবে..গুড নাইট।’

লালমোহনবাবু আমার সঙ্গে নীচে যাননি। সিনেমা থেকে ফেরার পথেই আমাকে বলছিলেন, ‘তোমার দাদার আজকের তিড়িংবাজির ঠেলায় আমার প্লটের খেই হারিয়ে গেছে; আবার নতুন করে সব সাজাতে হবে।’ ঘরে ফিরে এসে দেখি তিনি খাতা খুলে মুখ বেজার করে বসে আছেন। ফেলুদা ফিরে এসে একটা সিগারেট ধরিয়ে ঘরের মধ্যেই পায়চারি শুরু করে দিল।

লালমোহনবাবু খাতা বন্ধ করে বললেন, ‘খুব খারাপ হচ্ছে এটা, জানেন তো? না পারছি আমার গল্প এগোতে, না পারছি আপনার কেসের সঙ্গে পাল্লা দিতে। এদিকেও একটু ছিটেফোঁটা ছাড়ুন। আমাদেরও তো ব্রেন বলে একটা জিনিস আছে। একটু খাটাবার সুযোগ দিন!’

‘কোনও আপত্তি নেই’, ফেলুদা একটা ধোঁয়ার রিং ছেড়ে বলল, ‘আপনাকে পাঁচটা সুতো দিচ্ছি, তা দিয়ে আপনি যত খুশি জাল বুনুন।’

‘সুতো?’

‘আফ্রিকার রাজা, শশীবাবুর সিং, হাঙরের মুখ, এক থেকে দশ, আর মগনলালের বজরা।’

লালমোহনবাবু কিছুক্ষণ ফেলুদার দিকে চেয়ে থেকে একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে বললেন, ‘তার চেয়ে বললেই পারতেন চন্দ্রবিন্দুর চ, বেড়ালের তালব্য শ, আর রুমালের মা। সে বরং ঢের সহজ হত।’

‘কিন্তু একটা কথা আমাদের দিতে হবে আপনাদের’—ফেলুদা হঠাৎ সিরিয়াস—‘কাল থেকে আর কোনও ব্যাপারে কোনও প্রশ্ন করতে পারবেন না।’

‘একটা করেই যা জবাব পেলুম—আবার প্রশ্ন?’

ফেলুদা লালমোহনবাবুর রসিকতা অগ্রাহ্য করে বলে চলল, ‘কাল থেকে আমাকে হয়তো মাঝে মাঝে বেরোতে হতে পারে, তবে আপনাদের সঙ্গে না। আপনারা দুজনে যেখানে খুশি যেতে পারেন; আমার মনে হয় না তাতে কোনও রিস্ক আছে। যদি তেমন বুঝি তা হলে আগে থেকেই বাইরে যেতে বারণ করব। …আর লালমোহনবাবু সাঁতার জানেন তো?’

‘সাঁত—?’

‘জলে নেমে ভেসে থাকতে পারেন তো?’

‘হ্যাঁ হ্যাঁ—ফর্টি-ফোরে হেদোতে—’

‘ওতেই হবে। —অবিশ্যি সাঁতারের যে প্রয়োজন হবেই তা বলছি না।’

পরের দিন নবমী। সকালে চা খেয়ে আমি আর লালমোহনবাবু বেরিয়ে পড়লাম। ফেলুদা বলল ও হোটেলেই থাকবে, কারণ ফোন আসতে পারে। লালমোহনবাবুর এক্কা চড়ার শখ—এদিকে কাশীতে আজকাল ঘোড়ার গাড়ি মানে বেশির ভাগ টাঙ্গা। অনেক খুঁজে শেষে একটা এক্কা পাওয়া গেল। সোনারপুরা রোড দিয়ে হিন্দু ইউনিভার্সিটি পর্যন্ত গিয়ে দুর্গাকুণ্ড রোড দিয়ে ফেরার পথে মন্দির মসজিদ প্রাসাদ যা কিছু পড়ে সব দেখে সাড়ে এগারোটার সময় আমরা হোটেলে ফিরে এসে দেখি ফেলুদা বালিশ বুকের তলায় রেখে খাটের ওপর শুয়ে খুব মন দিয়ে তার তোলা কয়েকটা ছবির কোয়ার্টার সাইজ এনলার্জমেন্ট দেখছে। পরশু বেঙ্গলি ক্লাবে যাবার পথে ও ক্রাউন ফোটো স্টোর্সে ওর ফিল্মটা দিয়ে গিয়েছিল।

বিকেলের দিকে তেওয়ারির টেলিফোন এল; ফেলুদা মিনিট দুয়েকের মধ্যেই কথা শেষ করে উপরে চলে এল। বাড়িতে বসে থাকতে ভাল লাগছিল না, তাই আমি আর লালমোহনবাবু মণিকর্ণিকার শ্মশান দেখে এলাম। লালমোহনবাবু যাবার ও ফেরার পথে বার তিনেক বললেন, ‘আজ আর কেউ ফলো করছে বলে মনে হচ্ছে না।’

ফিরে এসে শুনলাম ফেলুদা হোটেলেই ছিল। শংকরী নিবাস থেকে বিকাশবাবু ফোন করেছিলেন; মিস্টার ঘোষাল জানতে চেয়েছেন ফেলুদা হাল ছেড়ে দিয়েছে কি না।

‘তুমি কী বললে?’ আমি জিজ্ঞেস করলাম।

উত্তর এল, ‘না।’

পরদিন ভোর ছটায় উঠে দেখি ফেলুদা নেই। বিছানা পরিপাটি করে চাদর দিয়ে ঢাকা, তার উপর ছাই ফেলার সেই পাথরের বাটি, আর তার তলায় এক টুকরো কাগজ। তাতে লেখা—‘ফোন করব।’

তার মানে আমাদের হোটেলেই অপেক্ষা করতে হবে। তাতে আপত্তি নেই, কেবল ফেলুদা যেন নিরাপদে থাকে, খুব বেশি রকম বেপরোয়া কিছু করে না বসে। ফেলুদা যদিও এ বিষয়ে কিছু বলেনি, কিন্তু আমার বিশ্বাস শশীবাবুকে মগনলালের লোক খুন করেছে। শশীবাবু নিশ্চয়ই ফেলুদার চেয়ে বড় শত্রু নয় মগনলালের। তা হলে ফেলুদাকেই বা—

আর ভাবব না। যা থাকে কপালে। কেবল মনে সাহস রাখতে হবে।

চা খাবার সময় লালমোহনবাবু বললেন, ‘মগনলাল সেদিন গণেশের কথা যা বললেন, সেটা তোমার দাদা বিশ্বাস করে হাত-পা গুটিয়ে নিলেই পারতেন।’

আমি বললাম, ‘গুটিয়ে তো নিয়েই ছিল; হঠাৎ সেদিন সিনেমা দেখতে গিয়ে কী যে হল।’

‘শেষটায় টারজান যে এরকম সর্বনাশ করবে তা কে জানত বলো।’

দুপুর পর্যন্ত ফেলুদার কোনও ফোন এল না। খাবার পরে লালমোহনবাবু আর কিছু করার না পেয়ে শেষটায় গণেশ চুরি সম্পর্কে ওর নিজের কী ধারণা সেটা আমায় বললেন।

‘বুঝলে তপেশ, গণেশটা আসলে চুরিই যায়নি। ওটা অম্বিকাবাবু আফিং-এর ঝোঁকে সিন্দুক থেকে বার করেছেন, আর তারপর নেশা কেটে যাবার পর ওটার কথা বেমালুম ভুলে গেছেন।’

আমি বললাম, ‘কিন্তু তা হলে এখন সেটা আছে কোথায়?’

‘ওঁর তালতলার চটিটা দেখেছ? ওঁর পায়ের চেয়ে চটি জোড়া কতখানি বড় সেটা লক্ষ করেছ? একজন বুড়োমানুষ চটি পায়ে দিয়ে বসে থাকলে কে আর চটি খুলে তার ভেতরে সার্চ করতে যাবে বলো?’

আমার একটু সন্দেহ হল। বললাম, ‘আপনার নতুন গল্পে এরকম একটা ব্যাপার থাকছে বুঝি?’

লালমোহনবাবু মুচকি হেসে বললেন, ‘ঠিক ধরেছ। তবে আমার গল্পে গণেশের বদলে একটা দু হাজার ক্যারেটের হিরে।’

‘দু হাজার!’—আমার চক্ষু চড়কগাছ। —‘পৃথিবীর সব চেয়ে বড় হিরে স্টার অফ আফ্রিকা, কত ক্যারেট জানেন?’

‘কত?’

‘পাঁচশো। আর কোহিনূর হল মাত্র একশো দশ।’

লালমোহনবাবু গম্ভীরভাবে মাথা নেড়ে বললেন, ‘দু হাজার না হলে গল্প জমবে না।’

বিকেলে সাড়ে চারটার সময় হরকিষণ এসে বলল আমার টেলিফোন এসেছে। ঝড়ের মতো ছুটে নীচে গিয়ে নিরঞ্জনবাবুর অ্যাসিসট্যান্টের হাত থেকে ফোনটা প্রায় ছিনিয়ে নিলাম।

‘কে, ফেলুদা?’

‘শোন’, —গম্ভীর চাপা গলা—‘খুব মন দিয়ে শোন। দশাশ্বমেধের দক্ষিণে ওর ঠিক পরের ঘাট হল মুনশী ঘাট, আর তার পরে হল রাজা ঘাট। শুনছিস?’

‘হ্যাঁ হ্যাঁ।’

‘মুনশী আর রাজার মাঝামাঝি একটা নিরিবিলি জায়গা আছে। একটা ঘাটের ধাপ শেষ হয়ে আরেকটার ধাপ যেখানে শুরু হচ্ছে তার মাঝামাঝি।’

‘বুঝেছি।’

‘দেখবি বৈদ্যনাথ সালসার একটা বিজ্ঞাপন আছে হিন্দিতে লেখা, পাথরের দেওয়ালের গায়ে। আর তার নীচেই একটা মস্ত বড় চৌকো খুপরি।’

‘বুঝেছি।’

‘তোরা দুজন ওখানে গিয়ে পৌঁছবি ঠিক সাড়ে পাঁচটায়। খুপরিটার সামনে অপেক্ষা করবি। আমি ছটা নাগাত পৌঁছব।’

‘বুঝেছি।’

‘আমি ছদ্মবেশে থাকব।’

কথাটা শুনে আমার বুকটা এমন ধড়াস করে উঠল যে আমি কিছু বলতেই পারলাম না। ফেলুদার ছদ্মবেশ মানে নাটকের ক্লাইম্যাক্স।

‘শুনছিস?’

‘হ্যাঁ হ্যাঁ।’

‘আমি ছটা নাগাত তোদের মিট করব।’

‘ঠিক আছে।’

‘না আসা পর্যন্ত অপেক্ষা করবি।’

‘ঠিক আছে। তুমি ঠিক আছ তো?’

‘ছাড়ছি।’

খুট শব্দে ওদিকের টেলিফোনটা রাখার সঙ্গে সঙ্গে ফেলুদা যেন আবার কুয়াশার মধ্যে অদৃশ্য হয়ে গেল।

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *