• Skip to main content
  • Skip to header right navigation
  • Skip to site footer

Bangla Library

Read Bengali Books Online (বাংলা বই পড়ুন)

  • লেখক
  • My Account
  • লেখক
  • My Account
  • বাংলা ডিকশনারি
  • বাংলা কৌতুক
  • বাংলা লিরিক
  • বাংলা রেসিপি
  • হেলথ টিপস এন্ড নিউজ

বাংলা PDF ডাউনলোড

বাংলা নতুন/পুরাতন বইয়ের পিডিএফ ডাউনলোড/সন্ধান করতে আমাদের বাংলা পিফিএফ সাইটে ক্লিক করুন।

Bangla PDF

০৮. বৈকালে আবার বাহিরের ঘরে

লাইব্রেরি » শরদিন্দু বন্দ্যোপাধ্যায় » ব্যোমকেশ সমগ্র (ব্যোমকেশ বক্সী) » ১৩. চিড়িয়াখানা - ব্যোমকেশ বক্সী - শরদিন্দু বন্দ্যোপাধ্যায় » ০৮. বৈকালে আবার বাহিরের ঘরে

বৈকালে আবার বাহিরের ঘরে সমবেত হইলাম। দময়ন্তী দেবী চায়ের বদলে শীতল ঘোলের সরবৎ পরিবেশন করিয়া গেলেন। নিশানাথ বলিলেন,–’রোদ একটু পডুক‌, তারপর বেরুবেন। সাড়ে পাঁচটার সময় মুস্কিল গাড়ি নিয়ে স্টেশনে যায়‌, সেই গাড়িতে গেলেই হবে। সঙ্গে সঙ্গে ট্রেন পাবেন।’

সরবৎ পান করিতে করিতে আর এক দফা কলোনীর অধিবাসিবৃন্দের সহিত দেখা হইয়া গেল। প্রথমে আসিলেন প্রফেসর নেপাল গুপ্ত্‌্‌, সঙ্গে কন্যা মুকুল। মুকুল অন্দরের দিকে চলিয়া যাইতেছিল‌, নিশানাথ জিজ্ঞাসা করিলেন,–’এবেলা তোমার মাথা কেমন?

মুকুল ক্ষণেকের জন্য দাঁড়াইয়া বলিল,–’সেরে গেছে।-বলিয়া যেন একান্ত সন্ত্রস্তভাবে ভিতরে ঢুকিয়া পড়িল। তাহার গলার স্বর ভাঙা-ভঙা‌, একটু খসখসে; সর্দি-কাশিতে স্বর্যযন্ত্র বিপন্ন হইলে যেমন আওয়াজ বাহির হয়। অনেকটা সেই রকম।

এবেলা তাহাকে ভাল করিয়া দেখিবার সুযোগ পাইলাম। সে যদি এত বেশি প্রসাধন না করিত তাহা হইলে বোধহয় তাহাকে আরও ভাল দেখাইত। কিন্তু মুখে পাউডার ও ঠোঁটে রক্তের মত লাল রঙ লাগাইয়া সে যেন তাহার সহজ লাবণ্যকে ঢাকা দিয়াছে। তার উপর চোখের দৃষ্টিতে একটা শুষ্ক কঠিনতা। অল্প বয়সে বারবার আঘাত পাইয়া যাহারা বাড়িয়া উঠিয়াছে তাহাদের চোখেমুখে এইরূপ অকাল কঠিনতা বোধহয় স্বাভাবিক।

এদিকে নেপালবাবুও যেন জাপানী মুখোশ দিয়া মুখের অর্ধেকটা ঢাকিয়া রাখিয়াছেন। ব্যোমকেশকে দেখিয়া তাঁহার চোখে কুটিল কৌতুক নৃত্য করিয়া উঠিল। তিনি বলিলেন,–’কী‌, এবেলা আর এক দান হবে নাকি?’

ব্যোমকেশ বলিল,–’মাফ করবেন।’

নেপালবাবু অট্টহাস্য করিয়া বলিলেন,–’ভয় কি? না হয় আবার মাত হবেন। ভাল খেলোয়াড়ের সঙ্গে খেললে খেলা শিখতে পারবেন। কথায় বলে‌, লিখতে লিখতে সরে‌, আর—‘

ভাগ্যক্রমে প্রবাদবাক্য শেষ হইতে পাইল না‌, বৈষ্ণব ব্ৰজদাসকে প্ৰবেশ করিতে দেখিয়া নেপালবাবু তাঁহার দিকে ফিরিলেন–’কি হে ব্ৰজদাস‌, তুমি নাকি গরুকে ওষুধ খাওয়াতে আরম্ভ করেছ? গো-চিকিৎসার কী জান তুমি?’

ব্ৰজদাস মাথা চুলকাইয়া বলিলেন,–’আজ্ঞে—’

‘বোষ্টম হয়ে গো-হত্যা করতে চাও! নিশানাথ‌, তোমারই বা কেমন আক্কেল? হাজার বার বলেছি। একটা গো-বদ্যি যোগাড় কর‌, তা নয়‌, দুটো হেতুড়ের হাতে গরগুলোকে ছেড়ে দিয়েছ।’

নিশানাথবাবু বিরক্ত হইয়াছেন বুঝিলাম‌, কিন্তু তিনি নীরব রহিলেন।

নেপালীবাবু বলিলেন,–’যার কর্ম তারে সাজে। আমার হাতে ছেড়ে দাও‌, দেখবে দুদিনে গরুগুলোর চেহারা ফিরিয়ে দেব। আমি শুধু কেমিস্ট নই‌, বায়ো-কেমিস্ট‌, বুঝলে? চল বোষ্টম‌, তোমার গরু দেখি।’

ব্ৰজদাস কাতর চক্ষে নিশানাথের পানে চাহিলেন। নিশানাথ এবার একটু কড়া সুরে বলিলেন,–’নেপাল‌, গরু যত ইচ্ছে দেখ‌, কিন্তু ওষুধ খাওয়াতে যেও না।’

নেপালবাবু অধীর উপেক্ষাভরে বলিলেন,–’তুমি কিছু বোঝে না‌, কেবল সদরি কর। আমি গরুর চিকিৎসা করব। দেখিয়ে দেব–’

ছুরির মত তীক্ষ্ণ কণ্ঠে নিশানাথ বলিলেন,–’নেপাল‌, আমার হুকুম ডিঙিয়ে যদি এ কাজ কর‌, তোমাকে কলোনী ছাড়তে হবে।’

নেপালবাবু ফিরিয়া দাঁড়াইলেন‌, তাঁহার হাঁসের ডিমের মত চোখ হইতে রক্ত ফাটিয়া পড়িবার উপক্ৰম করিল। তিনি বিকৃত কষ্ঠে চীৎকার করিয়া উঠিলেন,–’আমাকে অপমান করছ তুমি-আমাকে? এত বড় সাহস! ভেবেছ আমি কিছু জানি না?-ভাঙিব নাকি হাটে হাঁড়ি।’

নিশানাথ শক্ত হইয়া উঠিয়া দাঁড়াইলেন। দেখিলাম তাঁহার রগের শিরা ফুলিয়া দপ দপ করিতেছে। তিনি রুদ্ধস্বরে বলিলেন,–’নেপাল‌, তুমি যাও—এই দণ্ডে এখান থেকে বিদেয় হও—‘

নেপালবাবু হিংস্ৰ মুখবিকৃতি করিয়া আবার গর্জন করিতে যাইতেছিলেন‌, এমন সময় ভিতর দিক হইতে মুকুল ছুটিয়া আসিয়া তাঁহার মুখ চাপিয়া ধরিল। ‘বাবা! কি করছ তুমি! চল‌, এক্ষুনি চলী-বলিয়া নেপালবাবুকে টানিয়া ঘর হইতে বাহির হইয়া গেল। মুকুলের ধমক খাইয়া নেপালবাবু নির্বিবাদে তাহার সঙ্গে গেলেন।

পরিণতবয়স্ক দুই ভদ্রলোকের মধ্যে সামান্য সূত্রে এই উগ্ৰ কলহ‌, আমরা যেন হতভম্ব হইয়া গিয়াছিলাম। এতক্ষণে লক্ষ্য করিলাম। ব্ৰজদাস বেগতিক দেখিয়া নিঃসাড়ে সরিয়া পড়িয়াছেন এবং ডাক্তার ভুজঙ্গধর কখন নিঃশব্দে আসিয়া দ্বারের কাছে দাঁড়াইয়া আছেন। নিশানাথবাবু শিথিল দেহে বসিয়া পড়িলে তিনি সশব্দে একটি নিশ্বাস ত্যাগ করিয়া দুঃখিতভাবে মাথাটি নাড়িতে নাড়িতে আসিয়া নিশানাথের পাশের চেয়ারে বসিলেন। বলিলেন,–’বেশি উত্তেজনা আপনার শরীরের পক্ষে ভাল নয় মিঃ সেন। যদি মাথার একটা ছোট্ট শিরা’জখম হয় তাহলে গুপ্তর কোন ক্ষতি নেই-কিন্তু–দেখি আপনার নাড়ি।’

নিশানাথ বলিলেন,–’দরকার নেই‌, আমি ঠিক আছি।’

ডাক্তার আর একটি নিশ্বাস ফেলিয়া আমাদের দিকে ফিরিলেন‌, একে একে আমাদের নিরীক্ষণ করিয়া বলিলেন,–’এদের সকালে দেখেছি‌, কিন্তু পরিচয় পাইনি।’

নিশানাথ বলিলেন,–’এঁরা বাগান দেখতে এসেছেন।’

ডাক্তার মুখের একপেশে বাঁকা হাসিলেন,–’তা মোটর রহস্যের কোনও কিনারা হল?’

আমরা চমকিয়া চাহিলাম। নিশানাথ ভ্রূকুটি করিয়া বলিলেন,–’ওঁরা কি জন্যে এসেছেন তুমি জানো?’

‘জানি না। কিন্তু আন্দাজ করা কি এতাই শক্ত? এই কাঠ-ফাটা গরমে কেউ বাগান দেখতে আসে না। তবে অন্য কী উদ্দেশ্যে আসতে পারে? কিলোনীতে সম্প্রতি একটা রহস্যময় ব্যাপার ঘটছে। অতএব দুই আর দুয়ে চার।’ বলিয়া ব্যোমকেশের দিকে সহাস্য দৃষ্টি ফিরাইলেন,–’আপনি ব্যোমকেশবাবু। কেমন‌, ঠিক ধরেছি। কিনা?’

ব্যোমকেশ অলস কণ্ঠে বলিল,–’ঠিকই ধরেছেন। এখন আপনাকে যদি দু-একটা প্রশ্ন করি উত্তর দেবেন কি?’

‘নিশ্চয় দেব। কিন্তু আমার কেচ্ছা আপনি বোধহয় সবই শুনেছেন।’

‘সব শুনিনি।’

‘বেশ‌, প্রশ্ন করুন।’

ব্যোমকেশ সরবতের গেলাসে ছোট একটি চুমুক দিয়া বলিল,–’আপনি বিবাহিত?’

ডাক্তার প্রশ্নের জন্য প্ৰস্তুত ছিলেন না‌, তিনি অবাক হইয়া চাহিলেন। তারপর ঘাড় নাড়িয়া বলিলেন,–‘হ্যাঁ‌, বিবাহিত।’

‘আপনার স্ত্রী কোথায়?’

‘বিলোতে।’

‘বিলোতে?’

ডাক্তার তাঁহার দাম্পত্য-জীবনের ইতিহাস হাসিমুখে প্রকাশ করিলেন,–’ডাক্তারি পড়া উপলক্ষে তিন বছর বিলেতে ছিলাম‌, একটি শ্বেতাঙ্গিনীকে বিবাহ করেছিলাম। কিন্তু তিনি বেশি দিন কালা আদমিকে সহ্য করতে পারলেন না‌, একদিন আমাকে ত্যাগ করে চলে গেলেন। আমিও দেশের ছেলে দেশে ফিরে এলাম। তারপর থেকে দেখাসাক্ষাৎ হয়নি।’

টেবিলের উপর হইতে সিগারেটের টিন লইয়া তিনি নির্বিকার মুখে সিগারেট ধরাইলেন। তাঁহার কথার ভাব-ভঙ্গীতে একটা মার্জিত নিলার্জত আছে‌, যাহা একসঙ্গে আকর্ষণ এবং বিকর্ষণ করে। ব্যোমকেশ বলিল,–’আর একটা প্রশ্ন করব।–যে অপরাধের জন্যে আপনার ডাক্তারির লাইসেন্স খারিজ করা হয়েছিল। সে অপরাধটা কি?’

ডাক্তার স্মিতমুখে ধোঁয়ার একটি সুদর্শনচক্ৰ ছাড়িয়া বলিলেন,–’একটি কুমারীকে লোকলজ্জার হাত থেকে বাঁচবার চেষ্টা করছিলাম। কিন্তু ধরা পড়ে গেলাম। শ্রেয়াংসি বহুবিঘ্নানি।’

Category: ১৩. চিড়িয়াখানা - ব্যোমকেশ বক্সী - শরদিন্দু বন্দ্যোপাধ্যায়
পূর্ববর্তী:
« ০৭. রক্তদানের কথা
পরবর্তী:
০৯. মুস্কিল মিঞার ভ্যানে »

Reader Interactions

Leave a Reply Cancel reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

বাংলা লাইব্রেরি : উল্লেখযোগ্য বিভাগসমূহ

লেখক ও রচনা

অনুবাদ সাহিত্য

সেবা প্রকাশনী

ডিকশনারি

কৌতু্ক / জোকস

লিরিক

রেসিপি

কোরআন

হাদিস

ত্রিপিটক

মহাভারত

রামায়ণ

পুরাণ

গীতা

বাইবেল

বিবিধ রচনা

বাংলা ওসিআর

Download Bangla PDF

হেলথ

লাইব্রেরি – ফেসবুক – PDF

top↑