ঋগ্বেদ ০৬।১৯

ঋগ্বেদ ০৬।১৯
ঋগ্বেদ সংহিতা । ৬ষ্ঠ মণ্ডল । সূক্ত ১৯
ইন্দ্র দেবতা । ভরদ্বাজ ঋষি ।

১। রাজার ন্যায় জনগণের অভীষ্টপূরক, প্রভূত বলশালী ইন্দ্র এস্থানে আগমন করুন। স্বর্গ ও মর্ত্য উভয় লোকের উপর বিস্তৃতপরাক্ৰম এবং শক্ৰ বলদ্বারা অপ্রতিহত প্রভাব ইন্দ্র যেন আমাদিগের নিকট বীরত্ব প্রকাশের জন্য বৃদ্ধি লাভ করেন। তিনি বিপুলদেহ ও প্রখ্যাতগুণ, ধজমানগণ যেন তাঁহার সমুচিত পরিচর্য্যা করেন।
২ । মহান, দ্রুতগামী, অক্ষয়, নিত্যতরুণ, অজেয়, বলে বলবান্‌ ও দ্রুতবৰ্দ্ধনশীল ইন্দ্রকে আমাদিগের স্তোত্র দানার্থ উত্তেজিত করে।
৩। হে ইন্দ্ৰ ! তুমি অন্নদানার্থ আমাদিগের অভিমুখে তোমার বিস্তীর্ণ, কৰ্ম্মক্ষম ও দানশীল করদ্বয় প্রসারিত কর। হে জিতেন্দ্রিয় ! পশু পালক যেরূপ পশু যূথকে সঞ্চারিত করে, তদ্রুপ তুমি সংগ্রামে আমাদিগকে সঞ্চারিত করিও।
৪ । আমরা অন্নাভিলাষী হইয়া এই যজ্ঞে বলবান্‌ সহায় মরুৎগণের সহিত শক্রনিহন্তা, প্রসিদ্ধ ইন্দ্রের স্তব করিতেছি । হে ইন্দ্ৰ ! ত্বদীয় প্রাচীন স্তোতৃবর্গের ন্যায় আমরাও যেন অনিন্দ্য, পাপরহিত ও অহিংসিত হই।
৫ । নদী সকল যেরূপ প্রবাহিত হইয়া সমুদ্রে পতিত হয়, তদ্রুপ তাবৎ হিতকর, ধনব্রত, রক্ষক, ধনদাত, সোমরসপ্রবৃদ্ধ, বাঞ্ছিত ধনের অধিপতি ও অন্নদাতা সেই ইন্দ্রে সমবেত হয়।
৬ । হে পরাক্রমশালী ইন্দ্র ! তুমি আমাদিগকে প্রকৃষ্টতম বল প্রদান কর । হে শত্রুবিজয়ী ! আমাদিগকে দুঃসহ ও ওজস্বিতম দীপ্তি প্রদান কর। ছে অশ্বাধিপতি ! তুমি আমাদিগের সুখ বিধানার্থ মনুষ্যগণের ভোগের উপযোগী সমুজ্জল ও বলকারক তাবৎ ধন আমাদিগকে অর্পণ কর।
৭ । হে ইন্দ্ৰ ! তুমি আমাদিগকে শত্রুসৈন্তবিজয়ী ও অনিবার্য্য সেই উল্লাস প্রদান কর । তোমাকর্তৃক রক্ষিত হইয়া আমরা বিজয় লাভ করিয়া সেই উল্লাস বশতঃ পুত্রপৌত্রলাভার্থ তোমার স্তব করিতে পারিব।
৮ । হে ইন্দ্ৰ ! তুমি আমাদিগকে অর্থোৎপাদক, শক্তিবিধায়ক, প্রভূত বল প্রদান কর । তোমাকর্তৃক রক্ষিত হইয়া আমরা সংগ্রামে কি আত্মীয়, কি অপরিচিত, সমস্ত শক্রকে সেই বলদ্বারা সংহার করিতে সমর্থ হইব ।
৯। হে ইন্দ্র ! তেজোবিধায়ী ত্বদীয় বল পশ্চিম, উত্তর, দক্ষিণ ও পূৰ্ব্বভাগ হইতে যেন আমাদিগের অভিমুখে আগমন করে । ইহা যেন প্রতিদিক হইতে আমাদিগের নিকট আগমন করে । তুমি আমাদিগকে সৰ্ব্বপ্রকার সুখের সহিত ধন প্রদান কর ।
১০ । হে ইন্দ্র ! আমরা ত্বদীয় রক্ষাদ্বারা পরিচালিত হইয়া পরিচারকবৃন্দ ও কীৰ্ত্তি সহকারে অভিলধিত ধন উপভোগ করিতেছি। হে ইন্দ্র ! তুমি স্বগীয় ও পার্থিব উভয় ধমের অধিপতিস্বরূপ বিরাজ করিতেছ, অতএব তুমি আমাদিগকে মহৎ, অসীম এবং মহামূল্য রত্ন প্রদান কর।
১১। আমরা অভিনব রক্ষার নিমিত্ত এই যজ্ঞে সেই ইন্দ্রের আহবান করিতেছি । তিনি মরুৎগণ সমবেত, অভীষ্টবৰ্ষী, সমৃদ্ধ, শক্রদ্বারা অকদৰ্থিত, দীপ্তিমান, শাসনকারী, সৰ্ব্বাভিভাবী, প্রচণ্ড ও বলপ্রদ।
১২ । হে বজ্রধৱ ! আমি যে শ্রেণীভুক্ত সেই শ্রেণীর লোক অপেক্ষ যে ব্যক্তি আপনাকে মহৎ বলিয়া বোধ করে, তাহাঁকে খৰ্ব্ব কর । সম্প্রতি আমরা তোমাকে যুদ্ধকালে এৰং পুত্র, পশু ও উদক লাভের নিমিত্ত আহ্বান করি।
১৩। হে বহুলোকের বন্দনীয় ইন্দ্র । আমরা যেন এই সমস্ত বন্ধু কাৰ্য্যদ্বারা তোমার সহিত সমুদয় শক্ৰ সংহার পূর্বক তাহাদিগের অপেক্ষ প্রবল হই । হে বীর । আমরা যেন তোমা কর্তৃক রক্ষিত হইয়া অতুল ঐশ্বৰ্য্যদ্বারা সুখী হই ।