০৪. নগর ও নগরের সংস্থান

নগর ও নগরের সংস্থান

বাঙলাদেশের কৃষিপ্রধান প্রাচীন সভ্যতা ও সংস্কৃতি যেমন বহুলাংশে সুপ্রাচীন অস্ট্রিক-ভাষাভাষী আদিবাসীদের দানের উপর গড়িয়া উঠিয়াছে, নাগরিক সভ্যতা, মনে হয়, তেমনই পরিমাণে ঋণী দ্রাবিড়-ভাষাভাষী লোকেদের নিকট। এ-সম্বন্ধে নরতাত্ত্বিক গবষেণালব্ধ কিছু কিছু তথ্যের ঐতিহাসিক ইঙ্গিত দ্বিতীয় অধ্যায়ে ধরিতে চেষ্টা করিয়াছি। প্রাচীন বাঙলার অনেক ব্যক্তি ও স্থান নাম সম্বন্ধে যে সুদীর্ঘ শব্দতাত্ত্বিক গবেষণা হইয়াছে, তাহাও এই ইঙ্গিতের সমর্থক।

 

বাঙলাদেশ প্রধানত গ্রামপ্রধান। কিন্তু নগরও এদেশে একেবারে কম ছিল নাম এবং নাগরিক সভ্যতাও একেবারে নিম্নস্তরের ছিল না। এ-কথা অবশ্য স্বীকার্য, উত্তর-ভারতের পাটলীপুত্র-শ্রাবন্তি-অযোধ্যা-সাকেত-ইন্দ্ৰপ্ৰস্থ-শাকলপুরী-পুরুষপুর-ভৃগুকচ্ছ-কপিলবাস্তু প্রভৃতি নগরের সঙ্গে প্রাচীন বাঙলার নগরগুলি তুলনা হয়তো চলে না, কিন্তু তৎসত্ত্বেও পুণ্ড্র-মহাস্থান, কোটীবর্ষ-দেবকেট, তাম্রলিপ্তি প্রভৃতি অন্তত কয়েকটি নগর-নগরী সর্বভারতীয় খ্যাতি ও মর্যাদা লাভ করিয়াছিল, এ-তথ্যও অস্বীকার করা যায় না। সমসাময়িক লিপিমালায় এবং সাহিত্যে বাঙলার অনেকগুলি নগর-নগরীর উল্লেখ ও বিবরণ জানা যায়; তাহা ছাড়া প্রাচীন ধ্বংসাবশেষের খননকার্য, আবিষ্কার ইত্যাদি যেটুকু হইয়াছো-বাঙলাদেশে খুব অল্পই। হইয়াছে।–তাহার ফলেও কোনও কোনও নগরের সংস্থান ও বিন্যাস সম্বন্ধে মোটামুটি কিছু ধারণা করা চলে। গ্রাম ও নগরের পার্থক্য প্রাচীন ও মধ্যযুগে পৃথিবীর সর্বত্র যেমন, বাঙলা দেশেও তাঁহাই। প্রথম ও প্রধান পার্থক্য, গ্রামগুলি প্রধানত ভূমি ও কৃষি নির্ভর, কিন্তু নগর নানা প্রয়োজনে গড়িয়া উঠে এবং কৃষি কতক পরিমাণে তাহার অর্থনৈতিক নির্ভর হইলেও শিল্প-ব্যাবসা- বাণিজ্যলব্ধ অর্থসম্পদই নগর-সমৃদ্ধির প্রধান নির্ভর। যে-ক্ষেত্রে তাহা নয়, সেখানে গ্রাম ও নগরের পার্থক্যও কম।

প্রাচীন বাঙলায়ও নগরগুলি গড়িয়া উঠিয়াছিল নানা প্রয়োজনে; কোথাও একটি মাত্র প্রয়োজনের তাড়নায়, কোথাও একাধিক প্রয়োজনে। পুণ্ড্র-পুণ্ড্রবর্ধনের মত নগর একটি মাত্র প্রয়োজনে গড়িয়া উঠে নাই; বিভিন্ন সাক্ষ্যে প্রমাণিত হয় যে করতোয়া তীরবর্তী এই নগর প্রখ্যাত একটি তীর্থ ছিল। দ্বিতীয়ত, শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরিয়া এই নগর বৃহৎ এক রাজ্য ও জনপদ-বিভাগের রাজধানী ও প্রধান শাসনকেন্দ্র ছিল। তৃতীয়ত, এই নগর সর্বভারতীয় এবং আন্তর্দেশিক বাণিজ্যের একটি প্রধান কেন্দ্র ছিল; একাধিক স্থলপথ এবং প্রশস্ত করতোয়ার জলপথ। এই কেন্দ্ৰে মিলিত হইত। তাম্রলিপ্তির মতন নগরও একটি মাত্র প্রয়োজনে গড়িয়া উঠে নাই। প্রথমত, তাম্রলিপ্তি ভারতের অন্যতম সুপ্ৰসিদ্ধ সামুদ্রিক বন্দর; একদিকে সমুদ্রপথ এবং অন্যদিকে ভাগীরথীর জলপথের এবং অন্যদিকে আন্তর্ভারতীয় ও আন্তর্দেশিক স্থলপথের কেন্দ্ৰ এই নগর। এই কারণেই তাম্রলিপ্তি শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরিয়া বাণিজ্যের এত বড় কেন্দ্র রূপে ভারতে ও আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে স্থান লাভ করিতে পারিয়াছিল ৷ লক্ষণীয়। এই যে, এই নগরে রাষ্ট্রীয় শাসনকেন্দ্র ছিল, দণ্ডীর ‘দশকুমার-চরিতের একটি গল্প ছাড়া আর কোথাও তেমন ইঙ্গিতও কিছু নাই। তাম্রলিপ্তির খ্যাতি ও প্রতিষ্ঠার অন্যতম কারণ, এই নগর বৌদ্ধধর্ম, শিক্ষা ও সংস্কৃতির অন্যতম প্রধানকেন্দ্র। কোটীবর্ষ প্রধানত এবং প্রথমত আন্তর্দেশিক রাজ্যবিভাগের বড় একটা শাসনকেন্দ্র ছিল বহু শতাব্দী ব্যাপিয়া। দ্বিতীয়ত, সামরিক প্রয়োজনের দিক হইতেও খুব সম্ভবত কোটীবর্ষের ভৌগোলিক অবস্থিতির একটা গুরুত্ব ছিল। অভিধান-চিন্তামণির গ্রন্থকার হেমচন্দ্র এবং ত্রিকাণ্ডশেষের গ্রন্থকার পুরুষোত্তমদেব দুইজনেই কোটীবর্ষ নগরের যে-সব ভিন্ন ভিন্ন নাম সবিস্তারে উল্লেখ করিয়াছেন তাহাতে শুধু শাসনকেন্দ্র হিসাবেই যে ইহার মর্যাদা, তাহা মনে হয় না। ইহারা দুইজনই দেবীকেট (মধ্যযুগের মুসলমান ঐতিহাসিকদের দীবকোট, দেবীকোট, দীওকোট ইত্যাদি), উমাবন, বাণপুর, এবং শোণিতপুর কোটীবর্ষের বিভিন্ন নাম বলিয়া উল্লেখ করিয়াছেন। পুনর্ভবা নদীর তীরবর্তী এই নগরের সামরিক গুরুত্ব এবং তীর্থমহিমা থাকাও কিছু অসম্ভব নয়। বিক্রমপুর শুধু শাসনকেন্দ্র হিসাবেই গুরুত্ব অর্জন করে নাই, ইহার সামরিক গুরুত্বও অনস্বীকার্য; তাহা না হইলে একাধিক সেন রাজার আমলে এখানে জয়স্কন্ধাবার প্রতিষ্ঠিত থাকিতে পারিত না। লক্ষ্মণসেনের পরাজয় এবং তুর্কীদের দ্বারা নবদ্বীপ অধিকারের পর সে-গুরুত্ব আরও বাড়িয়াই গিয়াছিল। তাহা ছাড়া, প্রাচীনকালে নদনদীবহুল নৌযাতায়াত পথের হৃদয়দেশে অবস্থিত থাকায় ইহার বাণিজ্যিক গুরুত্বও ছিল বলিয়া মনে হয়। অধিকন্তু, আনুমানিক নবম-দশম শতক হইতে বৌদ্ধ-ব্ৰাহ্মণ্য শিক্ষা ও সংস্কৃতিরও একটা বড় কেন্দ্র ছিল বিক্রমপুরে। শুধুমাত্র রাষ্ট্ৰীয় বা সামরিক প্রয়োজনে, কিংবা শুধু ধর্মকেন্দ্র হিসাবে কোনও নগর প্রাচীন বাঙলায় গড়িয়া উঠে নাই, তাহাও নয়। পঞ্চনগরী বিষয়ের শাসনাধিষ্ঠান, পুষ্করণ, ক্ৰীপুর, পাল ও সেন রাজাদের প্রতিষ্ঠিত রামপাল, রামাবতী ও লক্ষ্মণাবতী, শশাঙ্ক ও জয়নাগের রাজধানী কর্ণসুবর্ণ প্রভৃতি নগর প্রধানত রাষ্ট্ৰীয় ও সামরিক প্রয়োজনে গড়িয়া উঠিয়াছিল, এরূপ অনুমান অযৌক্তিক নয়। সোমপুর (বর্তমান পাহাড়পুর), ত্ৰিবেণী প্রভৃতি নগর গড়িয়া উঠিয়াছিল ধর্ম ও সংস্কৃতির কেন্দ্র হিসাবেই। কিন্তু সমসাময়িক সাক্ষ্যে দেখা যায়, যে প্রয়োজনেই নগরগুলি গড়িয়া উঠুক না কেন, কমবেশি ব্যাবসা-বাণিজ্যের প্রেরণা সর্বত্রই ছিল বলিয়া মনে হয়। বস্তুত, প্রাচীন বাঙলার নগরগুলির ভৌগোলিক অবস্থিতি বিশ্লেষণ করিলে দেখা যায়, প্রায় প্রত্যেকটি নগরই প্রশস্ত ও প্রচলিত স্থল ও জলপথের উপর বা সংযোগকেন্দ্রে অবস্থিত ছিল। ইহা একেবারে অকারণ বা আকস্মিক বলিয়া মনে হয় না। ফরিদপুরের কোটালিপাড়ায় প্রাপ্ত ষষ্ঠ শতকের একটি লিপিতে চন্দ্ৰবৰ্মণকোট বলিয়া একটি দুর্গের উল্লেখ আছে। সামরিক প্রয়োজনে এই দুর্গ-নগর গড়িয়া উঠিয়াছিল, সন্দেহ নাই। কিন্তু এই লিপিতে এবং এই স্থানে প্রাপ্ত সমসাময়িক অন্যান্য লিপিতে স্থানটি যে নৌবাণিজ্যপ্রধান ছিল তাহারও ইঙ্গিত পাওয়া যায়। এই কোট হইতেই বর্তমান কোটালিপাড়া নামের উদ্ভব, এরূপ অনুমান একেবারে অযৌক্তিক নয়।

নগরের বাসিন্দা কাহারা ছিলেন তাহা সহজেই অনুমান করা যাইতে পারে। সে-সব নগর প্রধানত রাষ্ট্ৰীয় এবং সামরিক প্রয়োজনে গড়িয়া উঠিয়াছিল, শাসনাধিষ্ঠান ছিল যে-সব নগরে, সেখানে রাষ্ট্রীয় ও সামরিক কর্মচারীরা তো বাস করিতেনই-ইহারা সকলেই চাকুরিজীবী, ধনোৎপাদক কেহই নহেন। রাজা, মহারাজা, সামন্তরাও নগরবাসীই ছিলেন। তীৰ্থমহিমার জন্য বা শিক্ষাকেন্দ্র হিসাবে যে-সব নগর গড়িয়া উঠিত সেখানে বিভিন্ন ধর্ম ও শিক্ষার গুরু, আচার্য, পুরোহিত প্রভৃতি বৃত্তিধারী লোকেরা, তাহাদের শিষ্য, ছাত্র প্রভৃতিরাও বাস করিতেন। অন্যান্য নগরবাসীদের ধর্মাচরণ ও অনুষ্ঠানের জন্যও প্রত্যেক নগরেই ব্ৰাহ্মণ আচার্য, পুরোহিতের একটা সংখ্যা থাকিতই। ইহারা তো অনেক রাজপাদোপজীবীর বৃত্তিও গ্রহণ করিয়াছিলেন। তীৰ্থচরণোদেশে এই সব নগরে লোক যাতায়াত ছিল; যাঁহারা আসিতেন। অর্থ ব্যয় করিতেই আসিতেন। কাজেই এই সব তীর্থনগরে নানাপ্রকার শিল্পদ্রব্যের ক্ৰয়-বিক্রয়ের কেন্দ্ৰও সহজেই গড়িয়া উঠিত। কিন্তু শুধু তীর্থ-প্রয়োজনেই নয়, অধিকাংশ নগরে ব্যাবসা-বাণিজ্যের একটা প্রেরণাও ছিল একথা আগে বলিয়াছি। এই ব্যাবসা-বাণিজ্য আশ্রয় করিয়া বহুসংখ্যক শ্রেষ্ঠী, সাৰ্থবাহ, কুলিক নগরেই বাস করিতেন, অষ্টম শতকপূর্ব লিপিগুলিতে এমন প্রমাণ প্রচুর পাওয়া যাইতেছে। রাজকর্মচারী রাষ্ট্রপ্রতিনিধিদের সঙ্গে সঙ্গে ইহারাই নগরের প্রধান বাসিন্দা। ইহাদের নিগমকেন্দ্রগুলিও নগরে। তাহা ছাড়া, শিল্প-ব্যাবসা-বাণিজ্য নিয়ন্ত্রণ সংক্রান্ত কয়েকটি রাজপদের উল্লেখও লিপিগুলিতে দেখা যায়; এই পদগুলি এবং নগর-শাসন সংক্রান্ত কয়েকটি রাজকীয় পদ (যেমন পুরপাল, পুরপালোিপরিক) রাজধানী, ভুক্তি অথবা বিষয়ের রাষ্ট্রযন্ত্রের সঙ্গে সম্পৃক্ত। ইহারা সকলেই যে নগরবাসী, এসম্বন্ধে কোনও সংশয়ই থাকিতে পারে না। দেওপাড়া লিপির “বরেন্দ্রকশিল্পীগোষ্ঠীচুড়ামণি” রাণিক শূলপাণিও নাগরিক। বৃহদ্ধর্ম ও ব্রহ্মবৈবর্তপুরাণে যে-সব শিল্পী-বণিক-ব্যবসায়ী সম্প্রদায়ের তালিকা আছে তাহাদের মধ্যে কর্মকার, কংসকার, শাঙ্খিক-শঙ্খকার, মালাকার, তক্ষণ-সূত্ৰধার, শৌণ্ডিক, তন্তুবায়-কুবিন্দক প্রভৃতি সম্প্রদায়ের অনেকেই নগরে বাস করিতেন, সন্দেহ নাই। স্বর্ণকার, সুবর্ণবণিক, গন্ধবণিক, অট্টালিকাকার, কোটক, অন্যান্য ছোট বড় শিল্পী ও বণিকেরা তো একান্তই নগরবাসী ছিলেন। ইহাদের ছাড়া, অথচ ইহাদের সেবার জন্য রাজক, নাপিত, গোপ প্রভৃতির কিছু সমাজ-সেবকও নগরে বাস করিতেন বলিয়া অনুমান করা যাইতে পারে। ম্লেচ্ছ ও অন্ত্যজ পর্যায়ের কিছু কিছু সমাজ-শ্রমিকদেরও নগরে বাস করিতে হইত, যেমন ডোম, চণ্ডাল, ডোলাবাহী, চর্মকার, মাংসচ্ছেদ ইত্যাদি। কিন্তু ইহারা সাধারণত বাস করিতেন নগরের বাহিরে; চর্যাগীতে স্পষ্টতই বলা হইয়াছে ‘ডোম্বীর কুঁড়িয়া’ নগরের বাহিরে। এইসব সমাজ-সেবক ও সমাজ-শ্রমিকেরা নগরবাসী বটে, কিন্তু যথার্থত নাগরিক ইহারা নহেন; নাগরিক বলা যায় প্রধানত শ্রেষ্ঠী, শিল্পী, বণিকদের, নগরবাসী রাজ ও সম্প্রদায়ের, রাষ্ট্রপ্রধানদের এবং বিত্তবান ব্ৰাহ্মণদের।

এই নাগরিকেরাই সামাজিক ধনের প্রধান বণ্টনকর্তা, এবং যেহেতু নগরগুলিই ছিল সামাজিক ধন্যবণ্টনের প্রধান কেন্দ্র, সেইহেতু নগরগুলিতেই সামাজিক ধন কেন্দ্রীকৃত হইবার দিকে ঝোক স্বাভাবিক। সপ্তম-অষ্টম শতক পর্যন্ত বাঙলার সামাজিক ধন যতদিন প্রধানত শিল্প-ব্যাবসা-বাণিজ্য নির্ভর ছিল ততদিন তো নগরগুলি সামাজিক ধনলব্ধ ঐশ্বৰ্য-বিলাসাড়ম্বরের কেন্দ্র ছিলই, এবং তোহা স্বাভাবিকও; কিন্তু লক্ষণীয় এই যে, অষ্টম হইতে ত্ৰয়োদশ শতক পর্যন্ত সামাজিক ধনের উৎপাদন যখন প্রধানত গ্রাম্য কৃষি ও গৃহশিল্প হইতে, তখনও নগরগুলিই সামাজিক ধনের কেন্দ্র, এবং সেই হেতু ঐশ্বৰ্যবিলাসাড়ম্বরেরও। বস্তুত, রামচরিত, পবনদূত প্রভৃতি কাব্য, সদুক্তিকর্ণামৃত ধূত বিচ্ছিন্ন শ্লোকাবলী, এবং সমসাময়িক লিপিগুলি বিশ্লেষণ করিলে দেখা যায়, গ্রাম ও নগরের প্রধান পার্থক্যই এই ধনৈশ্বর্যের তারতম্যদ্বারা চিহ্নিত। তৃতীয়-চতুর্থ শতকে বাৎস্যায়ন হইতে আরম্ভ করিয়া একাদশ-দ্বাদশ শতকের কাব্য ও প্রশস্তিগুলিতেই সর্বত্রই নগরে নগরে দেখিতেছি শ্রেণীবদ্ধ প্রাসাদাবলী, নরনারীর প্রসাধন ও অলংকার প্রাচুর্য, বারাঙ্গনাদের কটাক্ষবিস্তার, নানাপ্রকার বিলাসের উপকরণ এবং অত্যুগ্র ঐশ্বর্যের লীলা, আর, সঙ্গে সঙ্গে পাশে পাশে দেখিতেছি গ্রামবাসীদের সারল্যময় সহজ দৈনন্দিন জীবনযাত্রা, এবং কখনো কখনো দারিদ্র্যের নিষ্করুণ চিত্র। অথচ, এই সব চিত্র যে-যুগের সেই যুগে গ্রামের কৃষি এবং গৃহশিল্পলব্ধ ধনই একমাত্র না হউক, প্রধান সামাজিক ধন।