১২. পরিবার (ব্রাহ্মণ)

পরিবার (ব্রাহ্মণ)

পিতৃতান্ত্রিক বা পরিবর্ধিত পরিবার ছিল সমাজে ন্যূনতম একক, সেইসঙ্গে নিবিড় সুখবোধের ভিত্তিভূমিও। জন্মদাতা রূপে পিতা সম্মানিত হতেন; পুত্রসন্তান যে চিরআকাঙ্খিত, তার অনেক প্রমাণ ব্ৰাহ্মণ-সাহিত্যে রয়েছে। পুত্রকে সমুদ্র উত্তীর্ণ হওয়ার উপায়ের সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে। ঐতরেয় ব্রাহ্মণের একটি উক্তি বেশ কৌতুহলপ্ৰদ : ‘পত্নী সহগামিনী, কন্যা দুঃখ, পুত্র ঊর্ধ্বতম স্বর্গের আলো, পুত্ৰহীন ব্যক্তি কখনো স্বৰ্গলাভ করে না’ [ ৬ : ৩ : ৭ : ১৩ ]। বিবাহকে প্রশংসা করা হয়েছে, কারণ অবিবাহিত পুরুষ যজ্ঞ করতে কিংবা সন্তানের জন্ম দিতে পারে না। পত্নী স্বামীর আদেশের অনুগতা হয়ে থাকে। এই প্রসঙ্গে স্মরণ করা যায় যে, যজ্ঞমূলক ধর্মে গৃহস্থ যজমানের প্রয়োজন রয়েছে; তাই, এই ধর্মে এমন মূল্যবোধের ন্যায্যতা প্রমাণ এমন কি জনগণের উপর তা আরোপ করাও বাধ্যতামূলক যা সন্ন্যাসকে নিন্দা করে, বিবাহিত জীবনকে শুধু উৎসােহই দেয় না, আবশ্যিকও করে তোলে। জীবনের চারটি পর্যায়ের মধ্যে অন্তত দুটি-প্রথম ও শেষ (ব্ৰহ্মচর্য ও সন্ন্যাস) ভিক্ষাদানের উপরই নির্ভরশীল : স্পষ্টত এবং একমাত্র গৃহস্থের পক্ষেই ভিক্ষা দান সম্ভব। গোপথ ব্ৰাহ্মণ পূর্বভাগে [ ২ : ৭ ] তাই এই বিধি রয়েছে : ‘প্রতিদিন ব্ৰহ্মচারীকে ভিক্ষা দান করা গৃহস্থের কর্তব্য, নতুবা তাদের অকল্যাণ নিশ্চিত।’ ঐতরেয় ব্রাহ্মণে [ ৫ : ৫ : ৫ : ৩০৭ ] বলা হয়েছে : ‘সন্ধ্যায় আগত অতিথিকে প্রত্যাখ্যান করা উচিত নয়।’