“যে মহাকাব্য ট্রাডিশানের অংশীভূত তার সম্বন্ধে নতুন আলোকে বিচার করায় কিছু ভুল বোঝাবুঝির অবকাশ থেকে যায়। যে কোনও রচনা বা সৃষ্টি কোনও এক কালে, কোনও এক সমাজে সৃষ্ট হয়েছিল-সে যে ইতিহাসের বাইরে নয়, কালাতীত নয় এ সহজ সত্যটা গতানুগতিকায় আবদ্ধ মন সহজে মেনে নিতে পারে না। না পারলেও কিন্তু ঘটনাট সত্য। মানুষের ইতিহাসের বাইরে, সমাজবদ্ধ মানুষের সমাজের গণ্ডীমুক্ত অবস্থায় মানুষের কোনও সৃষ্টিই হতে পারে না। তাই রামায়ণ বা মহাভারত আমাদের ঐতিহ্যের একান্ত এবং আত্মস্থ হলেও, তাদের কালিক এবং সামাজিক পটভূমিকা আছে। এ সব মহাকাব্যের মধ্য দিয়ে, তাদের রূপকগুলোর অন্তরালে তৎকালীন সমাজের সমাজবদ্ধ মানুষের সম্বন্ধে যে সব তথ্য লুকিয়ে আছে তাদের ধরতে পারা যায় বিশ্লেষণী মননশীল দৃষ্টি দিয়ে। তাতে মিথ্যা সংস্কারে আঘাত লাগলেও সত্যের হানি হয় না। তবে ট্রাডিশান যে গ্রন্থকে এক বিশেষ কালাতীত আসনে বসিয়ে পুস্তকের অন্তস্থ চরিত্রগুলিকে কালের বাইরে নিয়ে গেছে—তাতে কালিক সত্য নির্ধারণ করতে গেলে দরকার সাহসের দরকার সুস্থ মুক্ত মনের।…রূপক আশ্রিত রামায়ণের মধ্যে বিশ্লেষণের মাধ্যমে লেখক যে ঐতিহাসিক তথ্যের সন্ধান এবং পরিবেশন করেছেন তা আমাদের ঐতিহাসিক ভাবনা চিন্তাকে নতুন ধারায় বাহিত করবে।”
‘রামায়ণের উৎস কৃষি‘ বইটির ভূমিকায় লিখেছিলেন বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য শংকরী প্রসাদ বন্দ্যোপাধ্যায়। বইটি আমাদের ইবুক সেকশনে পিডিএফ আকারে আগেই দেয়া হয়েছিল। এবার পুরো ইউনিকোড বাংলায় দেয়া হলো আমাদের লাইব্রেরি সেকশনে।
Leave a Reply