1 of 2

চিলেকোঠার সেপাই – ৪১

চিলেকোঠার সেপাই – ৪১

রাস্তায় যখন নামে খিজিরের সঙ্গে ছিলো মোটে কয়েকজন, গওসল আজম সু ফ্যাক্টরি’র কর্মীরা। এই কয়েকজনের শ্লোগানের আওয়াজ প্রতিধ্বনি তোলে মহল্লার সবগুলো গলি উপগলি জুড়ে। এখন এ-গলি ও-গলি থেকে মানুষ আসতে শুরু করেছে। নবদ্বীপ বসাক লেনের পেছনদিকের বস্তি দিয়ে টুটাফাটা কাঁথা, বেঢপ কোট ও রঙ-জুলাজামা গায়ে বেরিয়ে আসে ১০/১২ জন মানুষের ১টি দল। পাঁচভাইঘাট লেনের শামসুদ্দীনের রুটির কারখানার লোকজন বেরিয়ে এসেছে তন্দুরের ওম ছেড়ে। হৃষিকেশ দাস রোডের গ্যারেজ থেকে আসছে রিকশাওয়ালার দল। ঠাকুরদাস লেনের ৫/৬ জনের ১টি নীরব মিছিল সরব হয়ে ওঠে কলুটোলার মানুষের মিছিলের সঙ্গে যুক্ত হয়ে। মানুষের সংখ্যা অনুমান করা মুশকিল। দরকারই বা কি? আকাশে চাঁদ নাই, নির্মেঘ আকাশে তারা আছে বটে, তবে তার আলো নামে কুয়াশা ছুঁয়ে। এর সঙ্গে মেশে ল্যাম্পোস্টগুলোর হলুদ আলো। কালচে হলুদ আলোর নিচে মানুষের সারি ক্রমে দীর্ঘ হয়, খিজিরের গা একেকবার ছমছম করে ওঠে, সে নিশ্চিত যে মহল্লার বহুকালের পুরনো বাসিন্দারা তাদের সঙ্গে যোগ দিয়েছে। কিন্তু তার ভয় করে না, জীন বলে মাহাক্কাল বলো-আজ সবাই মানুষের সঙ্গে একাকার হয়ে গেছে। দ্যাখো, রহমতউল্লার চায়ের দোকানের মেসিয়াররা পর্যন্ত এসেছে, ঐ যে তার গ্যারেজের তোতামিয়া। তাদের সামনে উসকুখুসকু চুলওয়ালা ঐ লোকটা কে? আরে এ যে বজলু। শালার পেটে কি ১/২টো পাইট পড়েছে যে মাথাটা ঘুরে গেছে? নাঃ কারফ্যুর মধ্যে কাম নাই, রুজি রোজাগার সব বন্ধ, শালার মাল টানার পথ কৈ? আর একটু এগিয়ে গেলে দ্যাখা যায় শ্যামাচরণ চৌধুরী লেনের মানুষ। ঈশ্বরদাস লেনের মানুষ আসে বাণী ভবনের কলেজছাত্রদের সঙ্গে। মিউনিসিপ্যালিটি অফিসের পাশের মুচিপাড়ার এতো ছেলে এসেছে। গলিউপগলি শাখা-গলি থেকে এই যে ছলকে ছলকে মানুষ আসছে, এর ফলে সামনে পেছনে মিছিল কেবল বেড়েই চলে। এতে খিজির পড়ে মিছিলের মাঝামাঝি। সামনে যাওয়া দরকার। উত্তর থেকে গোলাগুলির শব্দ আসছে। ঐদিকে যাওয়া চাই। কারফ্যু ভেঙে শালার টুকরা টুকরা করে ফেলো কালো আকাশ। হঠাৎ ১মুহুর্তের জন্য চোখে পড়ে জুম্মনকে। হাত উঁচু করে জুম্মন শ্লোগান দিচ্ছে, তার পাশে আরো কয়েকটা পিচ্চি। সবগুলোই বস্তি এলাকার ছ্যামরা। এর মধ্যেও জুম্মনের হাতে কু-ড্রাইভার দেখে খিজিরের হাসি পায়। কিন্তু ওর সঙ্গে কথা বলার সময় নাই। হাওয়ায় শোনা যায় মালীবাগ, কমলাপুর, শাজাহানপুর থেকে, নাখালপাড়া মনিপুরীপাড়া থেকে হাজার হাজার মানুষ কারফ্যু ভেঙে ছুটে যাচ্ছে ক্যান্টনমেন্টের দিকে। ক্যান্টনমেন্টের চারদিকের দেওয়াল ভেঙে ফেলা হবে আজ রাতে, বিশাল সমাবেশের সমবেত আঘাতে চূৰ্ণবিচূর্ণ হয়ে যাবে মিলিটারির গুদাম গুদাম হাতিয়ার। কিংবা হাতিয়ার সব চলে আসবে মানুষের হাতে। খিজিরের হাত তো আজ খালি, তার ক্ষুড্রাইভার ও প্লায়ার সে দিয়ে এসেছে জুম্মনের হাতে, ২/৪টা হাতিয়ার নিতে খিজিরের আজ কোনো ঝামেলা হবে না। চুতমারানি মিলিটারিকে আজ ভাসিয়ে দেবে পেচ্ছাবের ফেনার মতো।
খিজিরদের মিছিল এখন ভিক্টোরিয়া পার্কের সামনে। পার্কের গাছপালা তাদের শ্লোগানের জবাবে জোরে জোরে মাথা নাড়ে। পামগাছের মাথা থেকে গলার ফাস খুলে খুলে নেমে আসছে কবেকার কোন সেপাইয়ের দল। মিছিলের সঙ্গে তারাও এখন মোড় নেবে ডানদিকে। এমন সময় নর্থব্রুক হল রোড থেকে বেরিয়ে আসে সশব্দ মিছিল। মিছিলের সামনে পাতলা খান লেনের স্কুটার গ্যারেজের ড্রাইভাররা। তাদের প্রত্যেকের হাতে একেকটি টিন, গ্যারেজের ছাদ খুলে নিয়ে এসেছে। টিনের ঢালওয়ালাদের সামনে রাখার জন্য খিজিরদের মিছিল ঘুরে যায় বাঁদিকে।
খিজির থাকতে চায় টিনের ঢালওয়ালাদের পাশে, যতোটা পারে তাড়াতাড়ি হাঁটছে। তার পায়ে যেন নতুন প্যাডেল ফিট করা, মনে হচ্ছে নতুন টায়ার-টিউব লাগানো বডি নিয়ে সে চলছে। মিছিলের লোকদের ওভারটেক করার জন্য ওকে হাটতে হয় এর পাশ দিয়ে, ওর পাশ দিয়ে। ওকে সাইড না দিয়ে কারো উপায় আছে? কিন্তু একেবারে সামনে এসে পৌঁছবার আগেই শাখারি বাজারের দিক থেকে চিত্তরঞ্জন এ্যাঁভেনু দিয়ে ১টা ট্রাক এসে দাঁড়ালো পুরনো স্টেট ব্যাঙ্ক বিল্ডিঙের গেটে। পেছনে আর ১টি ট্রাক। ২টোই মিলিটারি লরি। কালচে হলদে আলোয় মিলিটারিদের মুখ দ্যাখা যায় না, ঘন জলপাই রঙের হেলমেট তাদের মাথার ওপরকার অন্ধকারকে গাঢ় করে তুলেছে। মিছিল তখন শতগুণ জোরে ভরা গলায় প্রতিবাদ জানায়, মানি না। মানি না। এই আওয়াজ অন্ধকারকে ছিঁড়ে টুকরা টুকরা করতে না করতে ট্রাক থেকে ছুটে আসে টরটরটরটর গুলিবর্ষণের শব্দ। টিনের ঢালে ঢালে শিলাবৃষ্টি বাজে, আগুনের শিলাবৃষ্টি: টং টং টংটঙটংটংটং সঙ্গে সঙ্গে এর সঙ্গে যুক্ত হয় বাবা গো মা গো আল্লাগো বাঁচাও পানি প্রভৃতি আর্তনাদ। গুলিবর্ষণ, মিছিলের প্রান্তের ‘মানি না! মানি না!’ স্লোগান ও এইসব আরতনাদের সমবেত কোরাসে পিচের রাস্তা, কংক্রিটের ফুটপাথ এবং এই দুইয়ের মাঝখানে নালা একসঙ্গে কাঁপতে শুরু করে। পায়ের নিচে সব কাপে। খিজির জানে, এই সময় স্পিড কমাতে নাই। স্পিড কমালেই অনিবার্য পতন। ট্র্যাফিক সিগন্যালের পরোয়া করলেই এখন বিপদ! সিগন্যালের লাল তর্জনী এখন অবয়ব বদলে গুলির শব্দে পরিণত হয়ে তাকে রীতিমতো শাসায়। টকটকটকটকটক এখন কে শোনে কার কথা? খিজিরের সামনে ২জন লোক গুলিবিদ্ধ হয়ে গেছে, রাস্তার ঠিক মাঝখানে। খিজির এগিয়েই যাচ্ছে, ডানদিকের রাস্তা ধরে, ফুটপাথ ঘেঁষে। ভিড় এখানে এখন পাতলা, তাড়াতাড়ি চলতে কোনো বাধা নাই। কিন্তু আরো এক ঝাক টকটকটিকটক ধ্বনির সঙ্গে চোখের সামনেকার কালচে হলুদ আলোর ভাগ মিলিয়ে যায়, অন্ধকার গাঢ়তর হয়। ব্যাপারটা কি হলো? কোন শালা খানকির বাচ্চ ট্রাক এসে ধাক্কা দিলো তার বুকে, বুকের ব্যদিকে ও পেটের ঠিক ওপরভাগে। শরীরের এই ২জায়গায় সলিড আগুন এসে বিধে গেলো, সামনে এখন কিছু দ্যাখা যাচ্ছে না। শালা ট্রাক-ড্রাইভারকেও দ্যাখা যায় না, খিজির গালাগালি করার জন্য মুখ হা করে, এই হালার চুতমারানি ডেরাইভার, তার মায়রে বাপ, তরে লাইসেন দিলো ক্যাঠায়? চোখ দুইখান খুইলা গাড়ি চালাইবার পারস না?-কিন্তু মুখ দিয়ে ধ্বনি বেরোয় না, সটান সে পড়ে গেছে ফুটপাথ ঘেঁষে। অন্ধকার গাঢ়তর হয়, সারা মহল্লায় কি কারেন্ট চলে গেছে? কিন্তু যতোই কারেন্ট যাক, এখন কি তার এমনি শুয়ে থাকবার সময়ঃ হায়রে, সবাই বুঝি পৌঁছে গেছে ক্যান্টনমেন্টের গেটে, আর সে হালায় খোমাখান ভ্যাটকাইয়া পইড়া থাকে ভিক্টোরিয়া পার্কের সামনে। কি হলো? তার বডির চেসিস কি ভেঙে গেলো? তার টায়ারে কি হাওয়া নাই? নতুন টায়ার কি ফেসে গেলো নাকি? আবার দাখো, ঘাড়ে, বুকে ও পেট পানি গড়িয়ে পড়ছে! পানি ভি আরম্ভ হইলো। ম্যাঘ নাই, বাদলা নাই, পানি হয় ক্যামনে? মাথাটা তার পড়ে রয়েছে ড্রেনের মধ্যে, তাই কি উঠতে পাচ্ছে না? মাথাটা যদি কেউ একটু উঁচু করে দিতো? খিজির তো আর টের পাচ্ছে না যে কেবল আরেকটি বুলেট দিয়েই তার মাথাটা উঁচু করে রাখা সম্ভব।— থাক, তার আর দরকার হয় না। একটু কাত করতেই মাথা তার পাতা হয় ফুটপাথের ওপর, কিন্তু এই কাত হওয়ার ধকলটুকুতেই খিজির বড়ো ক্লান্ত হয়ে পড়েছে। চোখের সামনে উল্টোদিকের সাদা দেওয়ালে লেখা লাল শ্লোগান ল্যাম্পোস্টের হলুদ আলোতে একটু একটু দোলে। ঐ দেওয়াল ঘেঁষে ফুটপাথে টিয়াপাখি দিয়ে মানুষের ভাগ্য গণনা করে ১ঝুড়ো, সেই লোকটি ১টি ছায়া হয়ে ১বার ওপরে ওঠে, ১বারে নামে। দেওয়ালের ভেতর কৃঞ্চচূড়া ডালের কাঁকড়া মাথায় শুয়েছিলো ল্যাম্পোস্টের আলো। দেখতে দেখতে তাও নিভে গেলো। এবার ঝাপশা আলো জ্বলে চোখের ভেতরকার কালো মণিতে। সেই আলোতে দোলে রোকনপুর, লক্ষ্মীবাজার, শ্যামবাজার, বাঙলাবাজার, সদরঘাট, সূত্রপুর, ফরাশগঞ্জ, এমনকি গ্যাণ্ডারিয়া ফরিদাবাদ পর্যন্ত। দোলানো ঘোরানো সেইসব মহল্লার রাস্তায় রাস্তায়, গলিতে গলিতে, উপগলিশাখাগলিতে খিজির প্যাডেল ঘোরায়। তার সামনে হেঁটে যাচ্ছে জুম্মনের মা। কিছুতেই তার নাগাল পাওয়া যায় না, ওভারটেক করা তো দূরের কথা খাড়া না মাগী!—দ্যাখে তো পুরুষ্ট্র পেটটা নিয়ে এভাবে ছোটার কোন মানে আছে?-অমুন লোড় পাড়স, একখান উষ্টা খাইলে দুইটা জান খতম হইয়া যাইবো-হেই খবর রাখস? –কে শোনে কার কথা? একেকটা গলির ভেতর ঢোকে,-ডাস্টবিনে স্তুপের ওপর শুয়ে থাকে বিড়ালের মড়া-পোয়াতি মানুষের এইসব দেখতে হয়না। ঐদিকে যাইস না। ঐ গলিতে গভীর রাতে বড়ো গ্যারেজে বসে বোতল টানতে টানতে জুয়া খেলে মহাজনদের পেয়ারের ড্রাইভারেরা। ঐদিকে যাইস না।-ঐ দিকে রহমতউল্লার গ্যারেজ, নয়া কিসিমের রিকশা ঠাহর কইরা মাহাজনে তরে হান্দাইয়া দিবো গ্যারেজের মইদ্যে!-কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে এভাবে এতো ঘোরার পর খিজির ফের গুলির আওয়াজ শুনতে পায়। এবার নিজের গতরটাকে বোধ করতে পারে সাঙ্ঘাতিক ব্যথায়। বুঝতে পারে তার গোটা শরীর ভেসে যাচ্ছে রক্তে,-এতো রক্ত কোথেকে এলো? বন্ধ ও ক্লান্ত চোখের কম্পমান মণিতে গাঁথা হয় একটি সিঁড়ি, সিঁড়ির নিচে রক্তের ঢেউয়ে দোল খায় উলঙ্গ নারীদেহ। কার গতরখান বে? কোন খানকি আইয়া তার বগলে ঘুমায়? কাঠায়?-রক্তের মধ্যে দোলে তার মায়ের কালোকিষ্টি গতরখান। মাগো ও মা। সিনাটার মইদ্যে বহুত বিষ! কি কইলি? বেলা বহুত হইয়া গেছে, গাড়ি জমা দেওনের টাইম পার হইয়া গেছে? মাহাজনে চেতবো? আউজকা গাড়ি জমা দিমু ক্যালায়?-আউজকা ক্যান্টনমেন্ট যাইতে হইবো, জমা উমা নাইক্কা!—কিন্তু চাকা তো আর চলে না। গাড়ির চেসিস ভেঙে ফেলেছে, এই গাড়িতে সে প্যাডেল ঘোরায় কিভাবে?-মহাজনের ওপর রাগ করে সে শ্যামবাজারে মাল তুলেছিলো অনেক বেশি করে!-মায়ে যে কি কয়—নিজেই ইচ্ছা করে নারিন্দার পুলে ঠেলে তোলার সময় ভরা গাড়ির চেসিস ভেঙে ফেলেছে?—না মা! তাই কি হয়?–নাঃ মা মাগীও কোথায় সরে যায়। চেসিস ভাঙা বডি আর ঠেলা যায় না-হঠাৎ খুব বমির বেগ আসে খিজিরের। মুখ দিয়ে ছলকে ছলকে রক্ত পড়ছে। রাস্তায় গলানো পিচ ঢালার মতো রক্ত পড়ে নাকের ওপর, রক্ত পড়ে ঠোঁটের কেশ বেয়ে, চিবুক বেয়ে। চোখজোড়া নিজে নিজেই খুলে যায়। ওপরে সবই কালো রঙে আঁকা। ল্যাম্পোস্ট থেকে বিদ্যুৎ বহন করে ছুটে চলে তারের বাক, সেগুলো সব এখন অদৃশ্য। অথচ চোখজোড়া তার হাট করে খোলা, পোড়োবাড়ির ভাঙা দরজার মতো সেগুলো বন্ধ করা যায় না। রক্ত ও বারুদের গন্ধে সে আপ্লুত হয়, তবে পলকের জন্যে মাত্র। রক্তের মধ্যে হাবুডুবু খেতে খেতে সব রঙ, সব গন্ধ এমনকি বাতাস পর্যন্ত তার আয়ত্তের বাইরে। খিজিরের মুখে অন্ধকার হয়ে পড়েছে পার্কের ভেতরকার রেলিঙ ঘেঁষে দাঁড়ানো গোলাচি গাছের প্রসারিত রোগা ডালের ছায়া। খিজিরের বা হাত ছড়ানো ফুটপাথের ওপর। সেই হাতের নিচে ও ওপরে পাম গাছের ছায়া। কাছ থেকে ও দূরে থেকে আসা গুলিবর্ষণ, শ্লোগান ও আর্তনাদ তার কানের পর্দায় মিছেমিছি ধাক্কা দেয়। তার খুব ঘুম পায়, ভাঙা চেসিসওয়ালা বডিটার প্যাডেল ঘুরিয়ে কোনোমতে যদি গ্যারেজ পর্যন্ত পৌছা যেতো! কিন্তু ড্রেনের ময়লা পানিতে পড়ে থাকা পায়ে কোনো বল পাওয়া যায় না। পায়ের বুড়ো আঙুল একটুখানি কেঁপে স্থির হয়ে থাকে।
ভোর হতে না হতে ৩টে বড়ো মাছি খিজিরের হা করা মুখের ওপর ভো ভো করে ওড়ে। কিছুক্ষণ পর তাদের নীল পাখায় গোলাপী আভা পড়ে তেরছা হয়ে।-এই দৃশ্য দেখেছিলো জুম্মন। ভিক্টোরিয়া পার্কের ভেতরে রেলিঙ ও মস্ত স্মৃতি-স্তম্ভের মাঝামাঝি জায়গায় পাতাবাহারের ১টি ঝোপের আড়ালে সে লুকিয়েছিলো। আশেপাশে কেউ ছিল না, খিজিরকে পাহারা দেওয়া দরকার। কিন্তু ভালো করে রোদ ওঠার আগেই মিলিটারির গাড়ি এসে দেখতে দেখতে সব লাশ তুলে নেয়। শেষ লাশটি ছিলো খিজিরের। জুম্মন কি করবে? তার হাতের স্কু-ড্রাইভার ও প্লায়ার পড়ে গিয়েছিলো স্মৃতিস্তম্ভের সিঁড়ির নিচে। সেগুলো খুঁজে পেতে পেতে মিলিটারির লাশওয়ালা গাড়ি আজাদ সিনেমা পার হয়ে গেছে।

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *