অগ্নিবলয়ের পাখি

এখানে থাকার তার প্রয়োজন আছে। অনাবিল
রোদ্দুরে হাওয়ায়
এখনো সে থাকে যদি ভালো হয়, বড় ভালো হয়।
কাজ তাকে তরঙ্গে তরঙ্গে নিয়ে যায়-দিন নেই, রাত নেই,
কখনো সে হাঁটে শহরের পীচঢালা পথে,
কখনো বা নিঝুম গ্রামের
আলপথ বেয়ে।
আকাশে ওড়ায় কবুতর নিষাদের দৃষ্টি থেকে বহুদূরে।

নিজের বাড়ির সিঁড়ি থেকে আর রাজপথ থেকে
ঘষে ঘষে রক্ত তুলে নিতে হবে, অশ্রুজলে ধুয়ে
সেপথ, যে পথে শহীদের ক্ষত থেকে চুঁইয়ে চুঁইয়ে
পড়েছে অঢেল লহু। সমন্নুত পতাকার মতো
সে যাবে সম্ভ্রমে হেঁটে পুষ্প বর্ষণের
বিখ্যাত প্রহরে, চোখে তার খুশি, হরিণের লাফ।

সেদিন সভায় বলপেনে লেখা তার চিরকুট
আমার নিকটে আসে দোয়েলের মতো
শিস দিতে দিতে, তাতে আজ শ্রাবণ দুপুরে খেয়ে যেও
অথবা বিকেলে এসো চায়ে
লেখে নি সে; কতিপয় নিভৃত অক্ষরে
নক্ষত্রের মতো
জ্বল জ্বল করছিল দূর ভবিষৎ। আমি দ্রুত মনে মনে
অনুবাদ করে নিচ্ছিলাম পাঠান্তর।

আমার প্রেমিকা নয়, বান্ধবীও নয়; তবু চাই
থাকুক সে সভায় মিছিলে।
অগ্নিবলয়ের পাখি আগুনে পাখা না ঝাপটালে
কী করে চকিতে হবে কণ্ঠস্বর আগামীর, শাশ্বতের গান?
এখন থাকার তার প্রয়োজন রোদ্দুরে, হাওয়ায়,
তার কণ্ঠে বেজে উঠতে দাও অস্ত্র শানানোর ভাষা।