পুরুষানুক্রমে

প্রায় পনের-ষোল বছর ধরে
সে দেখে আসছে নিজিশটাকে দেয়ালে টাঙানো।
গরিব ঘরের পুরানো অলংকার ভেবে
সে এতকাল ছুঁয়েও দেখে নি।
একদিন সে বস্তুটিকে নামিয়ে আনল মাটিতে।
ওর মনে হলো, মর্চে-পড়া
এক অস্ত্র তার মুঠোয়। ঘষে ঘষে
খসিয়ে ফেলল জং। চকচকে
হয়ে ওঠে সে কোন দূর পূর্বপুরুষের হাতিয়ার, যা হাতে নিয়ে
সে নাচে পূর্ণিমা-রাতে ঢাকের তালে তালে।
ওর দিন কাটে মাঠের কাজে। লাঙল ঠেলে
চিরে ফেলে মাটির বুক, বীজ বোনে,
সে, রৌদ্রর আঁচে ভাজা ভাজা,
নিড়ায় আগাছা আর দ্যাখে ওই আসছে আল বেয়ে
গামছা-বাঁধা ডাল-ভাত টুকটুকে লঙ্কা নুন নিয়ে নথ-পরা বউ।
ভাবে, কখন আসবে পূর্ণিমা রাত, যখন সে
নাচবে ঢাকের তালে তালে আর হস্তধৃত হাতিয়ারের
ফলা ক্ষণে ক্ষণে ঝলসাবে বন্য প্রাণীর চোখের মতো?