১০. সামবেদীয় পুত্ৰমূৰ্দ্ধাভিঘ্রাণ কর্ম

১০. সামবেদীয় পুত্ৰমূৰ্দ্ধাভিঘ্রাণ কৰ্ম্ম

অনুবাদ–চিরপ্রবাস হইতে আগত পিতা পবিত্রভাবে পূৰ্বাভিখমু হইয়া হস্তদ্বয় দ্বারা জ্যেষ্ঠপুত্ৰাদিক্ৰমে মস্তক ধারণ পূর্বক “প্রজাপতির্‌ঋষিরনুষ্টুপছন্দঃ প্রজাপতিৰ্দেবতা পুত্রস্য মূদ্ধানমুপ, সংগৃহ জপে বিনিয়োগঃ। ওঁ অঙ্গাদঙ্গাৎ সংশ্রবসি হৃদয়াদধি জায়সে। প্রাণং তে প্রাণেন সন্দধামি জীবসে যাবদায়ুষং।” ইত্যাদি তিনটী মন্ত্র জপ করিবে অর্থাৎ “হে পুত্র! তুমি আমার মস্তক গ্রীবা প্রভৃতি অঙ্গ হইতে সংশ্রুত হইয়াছ; তুমি আমার হৃদয় হইতে উৎপন্ন হইয়াছ। আমি প্রাণ দ্বারা তোমার প্রাণনায় কে সতত অবিচ্ছিন্ন করিতেছি, তুমি শত বর্ষ পর্যন্ত জীবিত থাক। ১।” “হে পুত্র! তুমি আমার গ্রীবাদি সমস্ত অঙ্গ হইতে উৎপন্ন হইয়াছ, তুমি আমার হৃদয় হইতে জন্ম গ্রহণ করিয়াছ, তুমি বেদস্বরূপ, তুমিই পুত্ৰনামা, তুমি শতবর্ষজীবী হও। ২।” “হে পুত্র! তুমি পাষাণস্বরূপ দৃঢ় অর্থাৎ নির্ব্যাধি হও, তুমি কুঠারবৎ ছেদক হও অর্থাৎ কাহারও ছেদ্য হইও না, তুমি বিশুদ্ধ স্বর্ণস্বরূপ হও, তুমি আমার আত্মস্বরূপ, যেন তোমার মৃত্যু হয় না, তুমি শতবর্ষ যাবৎ জীবন ধারণ কর। ৩।” এই তিনটী মন্ত্র জপ করিবে। অনন্তর পিতা “হে পুত্র! আমি পশুবৎ হুঙ্কার দ্বারা অর্থাৎ ধেনু প্রভৃতি পশুরা বন হইতে আগত হইয়া যেরূপ স্বীয় বৎসগণের অভিমুখে গমন পূৰ্ব্বক তাহাদিগকে আঘ্রাণ করে, সেইরূপ তোমাকেও আম্রাণ করিতেছি।” এই মন্ত্র পাঠ করিয়া পুত্রের মস্তক আম্রাণ করিবে। ৪। মূল মন্ত্রমধ্যে যে “অসৌ” পদ আছে, তথায় সম্বোধনন্ত পুত্ৰনাম প্রয়োগ করিতে হয়। অনন্তর বামদেবগানান্তে অচ্ছিদ্রাবধারণ করিবে। যদি পিতা প্রবাসে না থাকেন, গৃহেই অবস্থান করেন এবং পুত্রও “আমার পিতা ইনি” এইরূপ অবগত থাকে, তথাপি এই কৰ্ম্ম করিবে। যথাকালে না হইলে উপনয়নানন্তর এই কৰ্ম্ম। সম্পাদন করিতে হয়।

ইতি পুত্ৰমূৰ্দ্ধাভিম্ৰাণকৰ্ম্ম সমাপ্ত।

————

* পুত্ৰমূৰ্দাভিফঘ্রাণকৰ্ম্ম আর কিছুই নহে, পুত্রের প্রতি আন্তরিক স্নেহাধিক্য প্রকাশ মাত্র। পিতা প্রবাস হইতে আসিয়া কিরূপ স্নেহ ও আশীৰ্বাদ প্রয়োগ করেন, তাহাই ইহা দ্বারা প্রকাশিত হইতেছে।