১৪. আধুনিক সেরা ইসলামী মিথ্যাচার

অধ্যায়-১৪
আধুনিক সেরা ইসলামী মিথ্যাচার
লেখক: তানভীর কামি

ইসলাম জন্ম নিয়েছে তার অনুসারী ও অবিশ্বাসীদের মাঝে মিথ্যার জাল বুনে। এখন বিশেষ করে আধুনিক প্রযুক্তির সহায়তায় ইসলাম ক্রমবর্ধমান হারে চুলচেরা বিশ্লেষণের সম্মুখীন হচ্ছে। ইসলামের ওইসব সমালোচনার মোকাবিলায় ইসলামপন্থীরাও নিত্যনূতন মিথ্যা উদ্ভাবন করে চলেছে। আধুনিক ইসলামী মিথ্যার একটি তালিকা এই রচনায় সন্নিবেশিত হল।

অনেক মুসলমান প্রায়ই গর্ব করে বলে যে ইসলাম তাদের সত্য বলতে শিখিয়েছে। যদিও ইসলামপন্থীরা মুসলমানদের মগজধোলাই করা এবং পশ্চিমা কাফেরদেরকে (অমুসলিম) বোকা বানানোর জন্য সবসময় বিভিন্ন ইস্যুতে মিথ্যা ও ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে আসছে। ইসলামে বিশ্বাসের কারণে মুসলমানরা ইসলামপন্থীদের এসব প্রচারকে কখনো চ্যালেঞ্জ করে না। সাধারণ মুসলমানরা এই মিথ্যাচার নিয়ে নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে এবং মিথ্যাগুলোকে সত্য বলে ধরে নেয়। ‘কাফের’ বিল গেটস কম্পিউটারে উইনডোজ অপারেটিং পদ্ধতি প্রবর্তন করার পর বিশ্ব পাল্টে গেছে তাৎপর্যপূর্ণভাবে। তার পর থেকে ইন্টারনেট দৈনন্দিন জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে উঠেছে। ইহুদী কাফেররা (ইসলামের নিকৃষ্টতম শত্রু) ফেসবুক প্রতিষ্ঠা করেছে। এটা এখন বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় ওয়েবপেজ।

কম্পিউটার যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে ইসলামপন্থীদের মিথ্যার পদ্ধতিও পাল্টে গেছে। অনেক ইসলামপন্থী এখন প্রযুক্তিতে দক্ষ। তারা ওয়েবসাইট চালায়, ইসলামী ই-মেইল পাঠায় মুসলমানদের কাছে, এবং ফেসবুকে ইসলামিক পেজ খুলে। সবচেয়ে মজার ব্যাপার হচ্ছে এই ইসলামপন্থীরা এবং কতিপয় ধর্মান্ধ মুসলমান ইন্টারনেট এবং ইহুদীদের ফেসবুকে কাফেরদের বিরুদ্ধে বিশেষ করে ইহুদীদের বিরুদ্ধে বিদ্বেষ ছড়ায়। এটা কৌতুকের ব্যাপার নয় কি? এটাকে হাস্যকর বললেও কম বলা হয়!

মিথ্যা সবসময় ইসলামী কথাবার্তা ও প্রচারণার অংশ। পাশ্চাত্যে মুসলমানদের অভিবাসন এবং ইন্টারনেটের আধুনিক যুগের কারণে এসব মিথ্যার কৌশলের আধুনিকায়ন ঘটেছে। ইসলামের জন্মলগ্ন থেকে সাধারণ মুসলমান ও কাফেরদের কাছে সবসময় প্রচলিত মিথ্যার বেসাতি সরবরাহ করা হচ্ছে। নীচে বহুল প্রচলিত আধুনিক মিথ্যার তালিকা দেওয়া হল। এগুলোর সঙ্গে অধিকাংশ মুসলমান এবং কাফের ইতিমধ্যে পরিচিত।

১. আধুনিক বিজ্ঞান এসেছে কুরআন থেকেঃ বিজ্ঞানীরা (অবশ্যই যাদের বেশীরভাগ হচ্ছেন সাচ্চা কাফের) নিবিড় গবেষণায় জীবন কাটান এবং শেষ পর্যন্ত নূতন কিছু আবিষ্কারে সক্ষম হন (ইসলামপন্থীরা দাবী করে যে আধুনিক বিজ্ঞানের সূত্রগুলো মূলত কুরআনে বর্ণিত আছে।) কিন্তু কুরআনের কোথায় এসব সূত্রের অস্তিত্ব দেখা যায়? যদি কুরআন বিজ্ঞানের বই হয়ে থাকে তবে মাদ্রাসার ছাত্ররা কেন বিজ্ঞানী বা আবিষ্কারক হচ্ছে না? তারা কি সাধারণ মুসলমান এবং কাফেরদের চেয়ে আরো ভালোভাবে কুরআন চর্চা করে না? কিন্তু বিজ্ঞানী হওয়ার পরিবর্তে মাদ্রাসার অনেক ছাত্র কেন সন্ত্রাসী ও চরমপন্থী হচ্ছে?

২. কুরআন এ পর্যন্ত লেখা সর্বোত্তম গ্রন্থঃ আসলেই? কোন্‌ ভিত্তিতে? ক’জন মুসলমান কুরআন পড়ে এবং এর সকল আয়াতের অর্থ বুঝে? এমনকি আরবের বহু মুসলমান নিছক বিশ্বাসের কারণে কুরআন পড়ে; কিন্তু কুরআনের আয়াতের প্রকৃত অর্থ বিশ্লেষণ করে না। দাবী করা হয় কুরআন হচ্ছে আল্লাহর বাণী এবং মানুষের পক্ষে এ ধরনের বই লেখা সম্ভব নয়। কিন্তু ৯০ শতাংশের বেশী মানুষ বইটি পড়ে নাই (মুসলমানরাও ভালভাবে পড়ে নাই) এবং এমনকি এটা সম্পর্কে কিছুই জানে না।

কুরআনের কোন্‌ অংশ অন্যান্য পুস্তকের চেয়ে উন্নত? মানব জাতি কীভাবে এ গ্রন্থ দ্বারা উপকৃত যা অন্য কোন বই পড়ে সম্ভব নয়? বাস্তবে কুরআনে কোন ধারাবাহিকতা নাই; এতে রয়েছে গাণিতিক, বৈজ্ঞানিক ভ্রান্তি। উপরন্তু কুরআন মুসলমানদেরকে কাফেরদের ঘৃণা করতে, হত্যা করতে শিখায়, বৌ পিটাতে বলে, ইসলামের সমালোচকদের এবং ইসলামত্যাগী মুসলমানদের হত্যার আহবান জানায়, চোরদের হাত কেটে ফেলার নির্দেশ দেয়। এরকম আরো বহু কিছু আছে। অভিন্ন গ্রন্থ কুরআনের প্রতি বিশ্বাস থাকা সত্ত্বেও সুন্নী ও শিয়া মুসলমানরা প্রতি সপ্তাহে পরস্পরকে খুন করে চলেছে। হ্যাঁ, তারপরেও বলতে হবে কুরআন দুনিয়ার বুকে এক মহান গ্রন্থ!

৩.  ৯/১১-এর পরিকল্পনা করেছিল বুশ ও ইহুদীরাঃ উত্তর আমেরিকায় বসবাসকারী অনেক মুসলমান এখনো বিশ্বাস করে মুসলমানরা কখনই ৯/১১-এর ঘটনায় জড়িত ছিল না। তারা প্রায়ই বিষয়টি নিয়ে নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে। ধরে নেওয়া যাক মুসলমানদের এই দাবী সঠিক যে ইহুদীরা এবং বুশ ৯/১১-এর হামলার পরিকল্পনা করেছিল। তাহলে মাত্র কয়েক ঘন্টার মধ্যে ৩০০০-এর বেশী মানুষ নিহত হওয়ার এসব ঘটনায় সাচ্চা মুসলমানরা (আরবের মুসলমান) এত খুশী কেন? কেন ফিলিস্তিনী মহিলারা হামলাকারীদের প্রশংসা করে উল্লাসে নৃত্য করেছিল? ইহুদী এবং বুশের ষড়যন্ত্রের সঙ্গে তাদের আনন্দের সম্পর্ক কী? ওইসব সাচ্চা ও আধাসাচ্চা আরবীয় মুসলমান কি ইহুদী এবং আমেরিকাকে ঘৃণা করে না? ৯/১১ ইহুদী এবং বুশের ষড়যন্ত্র হয়ে থাকলে তারা এবং অন্যান্য মুসলমান যে এত খুশী হল তার হেতু কী?

৪. সৌদী আরব, ইরান আর সাবেক তালেবানী আফগানিস্তান প্রকৃত ইসলাম রাষ্ট্র নয়ঃ তাহলে কোন্‌ মুসলিম রাষ্ট্রে অন্তত পূর্ণাঙ্গভাবে ইসলাম চর্চার চেষ্টা করা হয়? এই মিথ্যা দাবীর মূল কারণ হচ্ছে এসব দেশে হাত কেটে ফেলা, মস্তক ছেদন, পাথর ছুঁড়ে মেরে ফেলা এবং পিটানো হয়। এ ধরনের আচরণ অমানবিক হিসাবে বিবেচিত এবং আধুনিক মধ্যপন্থী মুসলমানরা এসব ইসলামী আচরণে লজ্জা পায়। এসব তথাকথিত মুসলমান সৌদী আরবে গিয়ে সৌদীদের শেখাতে এবং দেখাতে পারে যে দেশটি আল্লাহর কিতাব এবং সুন্নত অনুসরণ করছে না।

৫. পশ্চিমা দেশগুলো ইসলামের মূল্যবোধ চুরি করেছেঃ আধুনিক ইসলামপন্থীরা বলে, ‘‘মুসলিম দেশগুলোর কোথাও আল্লাহ ও মুহাম্মদের নির্দেশ অনুসারে ইসলামের পূর্ণাঙ্গ চর্চা হয় না। এ কারণে ইসলামী রাষ্ট্রগুলোর এই দুর্দশা।’’ একই সঙ্গে এই ইসলামপন্থীরা মুসলমান ও কাফেরদের একথা বলে মগজ ধোলাই করতে চায় যে, পশ্চিমা দেশগুলো ইসলামী মূল্যবোধসমূহ বেশী মাত্রায় অনুসরণ করে, যা অধিকতর স্বাধীনতা ও সম-অধিকার নিশ্চিত করেছে। এটা কি আসলেই সত্য? পশ্চিমা দেশগুলোর মূল্যবোধের ভিত্তি হচ্ছে খ্রীষ্ট ধর্ম, ইহুদী ধর্ম এবং মানবতাবাদ। সে কারণে গোটা বিশ্বের মানুষ স্বাধীনভাবে সমঅধিকার নিয়ে বাস করার জন্য পাশ্চাত্যকে (বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডাকে) পছন্দ করে।

ইসলামপন্থীরা দ্রুতই আবিষ্কার করে ফেলেছে যে, পশ্চিমা কাফেররা পাশ্চাত্যের মূল্যবোধ গড়ে তোলার জন্য ইসলামী ভাবধারা চুরি করেছে। পশ্চিমা কাফেররা ইসলামের একটা শব্দও জানে না অথচ ইসলামের মূল্যবোধ চুরি করে ফেলল! কী মজার ব্যাপার; তাই না? সৌদী আরব এবং অন্যান্য ইসলামী দেশের মুসলমানদের বেলায় কী ঘটেছে? তারা কি ইসলাম এবং ইসলামী মূল্যবোধ বোঝে না? তাহলে তারা নিজেদের দেশে পশ্চিমাদের মত সকলের জন্য সমঅধিকার নিশ্চিত করে না কেন?

৬. পশ্চিমারা দ্রুতবেগে ইসলামে ধর্মান্তরিত হচ্ছেঃ পশ্চিমা কাফেররা প্রতিদিন বিপুল সংখ্যায় ইসলামে ধর্মান্তরিত হচ্ছে একথা সত্য হলে পশ্চিমা দেশগুলো কি শিগগিরই ইসলামী রাষ্ট্র হয়ে যাবে না? তার কোন লক্ষণ কি দেখা যাচ্ছে? নব্য ধর্মান্তরিত পশ্চিমা মুসলমানরা কোথায়? মসজিদে অথবা অন্যকোন ইসলাম ধর্মীয় কর্মসূচীতে তাদের তো দেখা যায় না! অধিকাংশ ধর্মান্তরিত মুসলমান হচ্ছে কৃষ্ণাঙ্গ। তাদের মধ্যে কিছু শ্বেতাঙ্গ বাউণ্ডুলেও আছে। সমাজে তারা মূল্যহীন। প্রায় সব ক্ষেত্রে তারা নিজেদের দেউলিয়া ঘোষণা করে এবং সরকারী টাকায় জীবন চালায়। ক’জন পুলিশ অফিসার, সরকারী কর্মকর্তা, জনপ্রিয় ব্যক্তিত্ব অথবা প্রফেসর ইসলাম গ্রহণ করেছে? এবং তারা কোথায়?

৭. ইসলাম নারীদের সমমর্যাদা এমনকি অনেক বেশী অধিকার দিয়েছেঃ এ দাবী একেবারে বোকার মত হয়ে গেল না? নারীরা ইসলামিক দেশগুলোতে দুনিয়ার অন্য যে কোন স্থানের চেয়ে অনেক বেশী অবদমিত এবং তাদের অধিকার একেবারেই সীমিত। তারা গাড়ী চালাতে পারে না, রাস্তায় একা চলাফেরা করতে পারে না, স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারে না, বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটাতে পারে না(স্বামী পাগল না হলে) এবং আরো অনেক কিছু করতে পারে না। সৌদী আরবের মত দেশে যেখানে পূর্ণাঙ্গ ইসলাম চর্চা হয় সেখানে এ পরিস্থিতি স্পষ্টভাবে লক্ষ্য করা যায়। ইসলাম যদি নারীদের পূর্ণ অধিকার দিয়ে থাকে তবে কেন শুধু ইসলামী দেশগুলোতে নারীরা এমন অধিকারহীন?

৮. ইহুদীরা মিডিয়াকে নিয়ন্ত্রণ করে এবং মার্কিন/কানাডীয় ও বিশ্ব রাজনীতিকে প্রভাবিত করেঃ আধুনিক ইসলামপন্থীরা এবং সাধারণভাবে মুসলমানরা বলে থাকে যে, ইহুদীরা মিথ্যা কথা বলে এবং মুসলিম সন্ত্রাসবাদীদের হামলা অতিরঞ্জিত করে দেখায়। তারা ইহুদীদের অপরাধের খবর কখনো পরিবেশন করে না। মুসলমানদের অপরাধের জন্য কি এই মুসলমানরা ইহুদীদের দায়ী করতে চায়? আজকের দিনে ৯৯.৯% সন্ত্রাসী হামলা মুসলমানরা ঘটিয়ে থাকে। কেউ কি তা অস্বীকার করতে পারবে? বাস্তবে ইহুদীরা মুসলমান, হিন্দু বা অন্য যে কোন কাফেরের তুলনায় অত্যন্ত কম অপরাধ করে থাকে। কেউ কি ইহুদীদের এমন বিরাট তালিকা দেখাতে পারবে যারা অন্য ধর্মাবলম্বী অথবা জাতিসত্তার লোকদের মত নিয়মিতভাবে নারী ধর্ষণ, নরহত্যা এবং মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত?

ইসরাইলে এবং ফিলিস্তিনে কোন হামলা হলে একই ধরনের খবর বিবিসি, সিএনএন, ইসলামী আল-জাজিরা এবং অন্যান্য মিডিয়ায় দেখা যায়। যদি ইহুদীরা মার্কিন/কানাডীয় রাজনীতিতে গভীরভাবে অংশ নিয়ে থাকে তবে দোষের কী হয়েছে? মুসলমানরাও স্বচ্ছন্দে এতে অংশ নিতে পারে। কিন্তু তারা সেটি করবে না; কারণ পশ্চিমা রাজনীতি ইসলামের শত্রু কাফেরদের দ্বারা প্রণীত।

ধরে নেওয়া যাক (মুসলমানদের কথা অনুসারে) সকল গুরুত্বপূর্ণ সরকারী খাত এককভাবে ইহুদীরা নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। সেক্ষেত্রে মুসলমানরা কি ইসলামী রাষ্ট্রগুলোর ভীতিকর পরিবেশের তুলনায় ইহুদী নিয়ন্ত্রিত যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডায় অনেক ভালভাবে বসবাস করছে না? ইহুদীরা কি মুসলমানদের সমান অধিকার ও সমান সুযোগ-সুবিধা দিচ্ছে না? অভিবাসী মুসলমানরা কি এমন সমান অধিকার ও সমান সুযোগ সুবিধা কোন ইসলামী দেশে পেয়ে থাকে? এই ইহুদীরা কি গরীব দেশগুলোকে অব্যাহতভাবে সাহায্য করছে না; যে কোন প্রাকৃতিক দুর্যোগের পর খাদ্য সাহায্য নিয়ে ছুটে যায় না? কোন ইসলামী দেশ কি এসব করে? তাহলে কারা ভাল, ইহুদীরা নাকি মুসলমানরা?

৯. উপবাস থাকলে মানুষের আহারে ভারসাম্য আসেঃ একদিন বাংলাদেশের এক টিভি চ্যানেলে ইসলাম বিষয়ক এক আলোচনায় একজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক উপবাস থাকা (রোজা রাখা) যে মানুষের জীবনের জন্য কত গুরুত্বপূর্ণ তা বর্ণনা করছিলেন। তিনি বলছিলেন, ‘‘রোজা রাখা হচ্ছে আমাদের দৈনিক খাদ্য গ্রহণের সময়ের নিছক পরিবর্তন মাত্র। এটা আমাদের শরীর পুনর্গঠনে সাহায্য করে। মানুষের জন্য বছরে একবার এ ধরনের পরিবর্তন দরকার। এভাবেই আল্লাহ আমাদের সৃষ্টি করেছেন।’’ রোজা সম্পর্কে বলার মূল বিষয় ছিল ইসলাম মানুষকে রোজা রাখতে বলে কী উপকার করেছে তা বোঝানো। অনেক মুসলিম দেশে সন্ধ্যা ৬ টার দিকে ইফতার করা হয়। রোজার সময় মুসলমানরা সকালের এবং দুপুরের খাবার খায় না। ইফতার রাতের খাবার আগে খেয়ে ফেলার কাজ দেয়। এসময় অনেক মুসলমান ঠিক ফজরের নামাজের আগে ভোর রাত প্রায় ৪টার দিকে সেহরী খায়। হতে পারে এ ধরনের সাময়িক পরিবর্তন শরীরের জন্য ভাল এবং ওই ডাক্তারের দাবী সঠিক। কিন্তু এটা কি শুধু ইসলামী রাষ্ট্রগুলোতে বসবাসকারী মানুষের জন্য সঠিক? বিশ্বের উত্তর ও দক্ষিণ প্রান্তের কাছাকাছি অঞ্চলে সময়ভেদে দিনের আলো অনেক দীর্ঘস্থায়ী হয়। সেখানকার লোকদের বেলায় কী হবে? এই লোকগুলি কি দৈনিক ২২ ঘন্টা বা আরও বেশী সময় না খেয়ে থাকতে পারবে? এটা কি স্বাস্থ্যকর? ইসলাম এ ব্যাপারে কী বলে? যদি রোজা রাখা আমাদের জন্য উপকারী হয় তবে গোটা মানবজাতির জন্য তা হওয়া উচিৎ। কুরআন এবং হাদীসে এর বিস্তারিত ব্যাখ্যা থাকা উচিৎ ছিল। সে ব্যাখ্যা কোথায়?

১০. ইসলাম সর্বোত্তম জীবন বিধান দিয়েছেঃ যদি এ দাবী সত্য হয় তবে মুসলমানদের মধ্যে এবং ইসলামী দেশগুলোতে আমরা কি সর্বোত্তম জীবন বিধান লক্ষ্য করি? কেন কাফেররা (প্রধানত পূর্ব এশীয় ও পশ্চিমা) গড়ে মুসলমানদের চেয়ে দীর্ঘজীবী ও সুস্বাস্থ্যের অধিকারী হয়?

১১. ইসলাম শান্তির ধর্মঃ আধুনিক মুসলমান এবং জাকির নায়েকের মত ইসলাম প্রচারকদের সবচেয়ে প্রিয় বুলি হচ্ছে এটা। ইসলাম যদি শান্তি এনে থাকে তবে মুসলমানদের মধ্যে এত বেশী সন্ত্রাসী কেন? কেন মুসলমানরা পরস্পরকে খুন করছে? কেন মুসলমানরা (কুরআন ও হাদীস দ্বারা প্রভাবিত হয়ে) সবসময় আক্রমণাত্মক থাকে? কেন সম্মান রক্ষার জন্য হত্যা করা মুসলমানদের মধ্যে ব্যাপকভাবে প্রচলিত?একটা গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নঃ কিছুদিন পরপর পাকিস্তান, ইরাক ও আফগানিস্তানে ডজন ডজন মানুষ আত্মঘাতী বোমা হামলায় প্রাণ হারাচ্ছে। অথচ মুসলমানদের মধ্যে (প্রধানত সুন্নী) এ ধরনের হামলা নিষিদ্ধ। যদি পাকিস্তানের সকল মুসলমান রাতারাতি ধর্মান্তরিত হয়ে খ্রীষ্টান, হিন্দু বা নাস্তিক বনে যায় তবে পরদিন থেকে সেদেশে কি একটাও আত্মঘাতী বোমা হামলার ঘটনা ঘটবে? পাকিস্তান কি তার নিরীহ লোকদের হারাতে থাকবে?

১২. মোল্লারা ইসলামের প্রকৃত পথ অনুসরণ করে নাঃ আধুনিক মুসলমানরা মোল্লাদের ঘৃণা করে। আর পাশ্চাত্যের নিরীহ কাফেরদের এই বলে মগজ ধোলাই করতে পেরেছে যে, মোল্লারা সুশিক্ষিত নয় এবং তারা ভালভাবে ইসলাম বুঝে না। একথা কি সত্য? এসব তথাকথিত আধুনিক মুসলমান কি কখনো কুরআন-হাদীস পড়েছে? যে মুসলমান ইসলাম কুরআন, হাদীস ও শরিয়া) নিয়ে পড়াশুনা করে জীবন কাটায় সে কি যেসব মুসলমান কুরআন-হাদীসের একটা শব্দেরও অর্থ বুঝে না তাদের চেয়ে ইসলাম সম্পর্কে ভাল জ্ঞান রাখে না? বস্তুত উপরোক্ত আধুনিক মিথ্যাগুলো অনেক মুসলমান ও ইসলামপন্থীর গলায় শুনা যায়। উপরোক্ত মিথ্যাগুলোকে চ্যালেঞ্জ না করা পর্যন্ত মুসলমানরা কখনো সত্য জানবে না। ইসলামপন্থীরা মুসলমান ও কাফেরদের কাছে মিথ্যা বলতেই থাকবে। মুসলমানরা এই মিথ্যাচার সম্পর্কে সচেতন হলে এবং এগুলো সর্ম্পকে মন্তব্য করার সুযোগ পেলে এসব মিথ্যা কথা বলা একদিন বন্ধ হবে। ইসলামপন্থীরা ইউটিউব এবং ফেসবুক পছন্দ করে না; কারণ সেখানে যে কেউ ইচ্ছামত মন্তব্য করতে পারে। ইসলামপন্থীরা ইসলাম এবং তাদের মিথ্যাচার সম্পর্কে কোন মন্তব্য শুনতে রাজি নয়। মুসলমানরা পাশ্চাত্যে অবাধে ইসলাম চর্চা ও প্রচারের সুযোগ পাচ্ছে। একই সঙ্গে তাদেরকে ইসলাম সম্পর্কে এবং তাদের দাবী সম্পর্কে সমালোচনামূলক মন্তব্য শুনবার জন্য তৈরী থাকতে হবে।

( Tanvir Kami -এরTop Modern Islamic Lies নামক নিবন্ধটি ওয়েব সাইট ইসলাম ওয়াচে ১৫ নভেম্বর ২০১০-এ প্রকাশিত হয়)

1 Comment
Collapse Comments

Vai apni apnr j nam dicn ta deke mny hoi u muslim ,ei nam er lekok acy aj janlam,jai hok ,Allha apnr sohai hok.eisob biddes mulok leka leiken na.

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *