সাংখ্য দর্শন । প্রথম অধ্যায় । প্রথম সূত্র
আভাস :—পুত্রাদি-বিয়োগজন্য শোক বা জন্মজন্মানরীয় পাপক্ষয় হেতু বৈরাগ্যবান পুরুষের মোক্ষশাস্ত্রে প্রবৃত্তি হয়। মোক্ষশাস্ত্রে জ্ঞানবান পুরুষই বস্তু ও অবস্তু বিচার দ্বারা যথার্থ জ্ঞানলাভ পূর্ব্বক পরম বৈরাগ্য বশতঃ মোক্ষলাভের অধিকারী হইয়া থাকেন। সেই জন্যই পরম কারুণিক মহামুনি ভগবান শ্রীকপিলদেব জগতের উদ্ধার-মানসে মোক্ষশাস্ত্র আরম্ভ করিয়া মুক্তির স্বরূপ বর্ণনা করিতেছেন :—
অনুবাদঃ—অথ শব্দ মঙ্গলবাচক, এই জন্যই গ্রন্থের প্রারম্ভে অথ শব্দ প্রযুক্ত হয়। ত্রিবিধ দুঃখের যে অত্যন্ত-নিবৃত্তি, তাহাই অত্যন্ত অর্থাৎ পরমপুরুষার্থ নামে অভিহিত হইয়া থাকে।১
তাৎপর্য্যার্থঃ—আত্মাকে অর্থাৎ শরীর ও মনকে অধিকার করিয়া যে রোগ-শোকাদিরূপ দুঃখ উপস্থিত হয়, তাহার নাম আধ্যাত্মিক দুঃখ। মনুষ্য, পশু, পক্ষী ও সর্পাদি প্রাণিসমূহকে অধিকার করিয়া অর্থাৎ তাহাদের কর্ত্তৃক যে দুঃখ উপস্থিত হয় তাহার নাম আধিভৌতিক। শনৈশ্চরাদি-গ্রহ ও ভূতাদি অপদেবতাগণকে অধিকার করিয়া অর্থাৎ তাহাদের কর্ত্তৃক যে দুঃখ উপস্থিত হয়, তাহার নাম আধিদৈবিক। এই ত্রিবিধ দুঃখের অত্যন্তনিবৃত্তি অর্থাৎ অনন্তকালের জন্য উপশম, অর্থাৎ আর কখনও আত্মাকে কোনরূপ দুঃখের অনুভূতি না হওয়া ফল কথা সমস্ত জড়সম্বন্ধরহিত হইয়া কেবল আত্মস্বরূপে অবস্থান করার নাম মুক্তি।১