দুর্ভাবনার রাত

অকস্মাৎ কোনও কোনও দিন, বলা কওয়া নেই, মন
এ রকম বেয়াড়া, বিষিয়ে ওঠে, ইচ্ছে হয় ছেড়ে
ছুড়ে দূরে, বহুদূরে চলে যাই, যেখানে কখনও চেনা মুখ
চোখে পড়বে না, তাকে দেখে কেঠো হাসি
অধরে ঝুলিয়ে রেখে ঝরাতে হবে না কিছু ফালতু কথার
চুন, বালি! অকাম্য অতিথি এলে বিরক্তির কিছু মশা, মাছি
বসবে না মনে আর কোনও কোনও আত্মবিজ্ঞাপিত
কুটুম্বের অযাচিত নসিহত্‌ হবে না শুনতে।

অথচ কোথাও যাওয়া হয় না আখেরে। এই বড় চেনা গলি,
বিনীত, মাঝারি বাড়ি, ছোট ঘর, সবচেয়ে বেশি
প্রত্যহ গোচরে-আসা ছোট পরিবার
ফেলে রেখে মরুরূপ ভবিষ্যতে। পা উঠেও
ওঠে না কিছুতে; যে-মুহূর্তে চোখে পড়ে
তাদের ঘনিষ্ঠ প্রিয় মুখ, হৃদয়ে ধ্বনিত হয় বেহাগের সুর।

কখনও কখনও দিন-দুপুরে অথবা মধ্যরাতে আচমকা
ঘুমের ঘুড়িটি কেটে গেলে তাদের পতিণতির কুহেলিকা
ভেবে ভেবে কেঁপে ওঠে; আমার ভেতর থেকে একজন বোবা
কী যেন বলতে গিয়ে বড় বেশি ব্যর্থতায় ডোবে
এবং তখন আমি বালিশে উত্তপ্ত মাথা রেখে, হায়, স্রেফ
বিফল প্রয়াসে মজি। ঝাঁঝাঁ, ভারী মাথা নিয়ে শয্যা ত্যাগ করি।

এমন তো প্রয়শই ঘটে, কখনও পায় না কিছু টের কেউ,
কখনও সখনও শয্যাসঙ্গিনী হঠাৎ, জেগে উঠে
তিনি প্রশ্নাকুল হ’লে ‘হয়নি কিছুই’ ব’লে ব্যাকুল উৎকণ্ঠা
সহজে তাড়াই আর ঘোর অমাবস্যা বিদ্রূপের হাসি হাসে।
০৫-১১-২০০২