০০১. সূত ও নৈমিষারণ্যবাসী ঋষিগণের কথোপকথন, ঋষিগণের লিঙ্গপুরাণ শ্রবণেচ্ছা এবং সূতের তাহা বলিতে উদ্যোগ

পূর্ব্বভাগ । প্রথম অধ্যায়

ব্রহ্মা, বিষ্ণু ও আদিরূপে সৃষ্টি-স্থিতি-প্রলয়কারী প্রকৃতিপুরুষের নিয়ামক পরমাত্মা শিবকে প্রণাম করি। নারায়ণ, নর, নরোত্তম, দেবী সরস্বতী এবং বেদব্যাসকে নমস্কারপূর্ব্বক জয় অর্থাৎ অষ্টাদশ পুরাণাদি গ্রন্থ উচ্চারণ করিবে

শৈলেশ, সঙ্গমেশ্বর, স্বর্গস্থিত, হিরণ্যগর্ভ, বারাণসী, মহালয়, রৌদ্র, গোপেক্ষক, শ্রেষ্ঠ পাশুপত, বিঘ্নেশ্বর, কেদার, গোমায়ূকেশ্বর, হিরণ্যগর্ভ, চন্দ্রনাথ, ঈশান্য, ত্রিবিষ্টপ ও শুক্রেশ্বর প্রভৃতি তীর্থ স্থানে যথাবিধি শিবলিঙ্গ পূজা করিয়া মহর্ষি নারদ নৈমিষারণ্যে গমন করিলেন। ১-৩
তৎকালে নৈমিষারণ্যবাসী মুনিগণ নারদকে দেখিবামাত্র আনন্দিত মনে পূজা করিয়া যথাযোগ্য আসন প্রদান করিলেন। তিনিও মুনিবরকর্ত্তৃক পূজিত হইয়া হৃষ্টমনে তাঁহাদিগের প্রদত্ত উত্তমাসনে সুখে উপবেশন করিয়া শিবলিংগ মহাত্ম্যা-বিষয়কে মনোহর ভাবশালী উপাখ্যান বলিতে লাগিলেন। ইত্যবসরে তথায় সর্ব্বপুরাণবেত্তা বুদ্ধিমান সূত স্বয়ং মুনিদিগকে প্রণাম করিতে উপস্থিত হইলে, নৈমিষারণ্যবাসী মুনিগণ কৃষ্ণদ্বৈপায়ন-শিষ্যের অভ্যর্থনা জন্য যথাযোগ্য সবিনয় সম্ভাষণ ও পূজা বিধান করিলেন। ৪-৭
অনন্তর তাঁহাদিগের পুরাণশ্রবণে ইচ্ছা হইলে তপস্বী সকল অতি বিশ্বত্ব বিদ্বান রোমহর্ষণ সূতকে শিবলিংগ-মহাত্ম্যপূর্ণ পবিত্র পুরাণ-শাস্ত্র জিজ্ঞাসা করিলেন। ৮-৯
হে মহামতে সূত! আপনি পুরাণের জন্য মহর্ষি বেদব্যাসকে উপাসনা করিয়া তাঁহার নিকটে পুরাণ-শাস্ত্র অবগত হইয়াছেন। হে পৌরাণিকাগ্রগণ্য! সেই জন্য লিঙ্গ-মাহাত্ম্যপূর্ণ স্বর্গীয় পুরাণ-সংহিতা আপনাকে জিজ্ঞাসা করিতেছি। ব্রহ্মার পুত্র শ্রীমান মুনিবর নারদ দেবাদিদেব পরমাত্মা মহেশ্বরের তীর্থস্থানসকল পরিভ্রমণপূর্ব্বক লিঙ্গপূজা করিয়া এই স্থানে উপস্থিত আছেন। আপনি, আমরা ও মহর্ষি নারদ সকলেই শিবভক্ত; অতএব আপনি মহর্ষি নারদের নিকটে (?)। এইরূপে আপনি যাহা জানিয়াছেন, তাহা সকলই সফল হইতে পারিবে। পৌরাণিকাগ্রগণ্য পূণ্যাত্মা সূতকে এইরূপ বলিলে, তিনি অগ্রে ব্রহ্মার পুত্র নারদকে অনম্বর, নৈমিষবাসী মুনিগণকে অভিবাদন করিয়া পুরাণ বলিতে আরম্ভ করিলেন। ১০-১৬
আমি লিঙ্গপুরাণ বলিবার জন্য মহাদেবকে নমস্কার করিয়া ব্রহ্মা, বিষ্ণু ও মুনিবর বেদব্যাসকে স্মরণ করিতেছি। শব্দ-ব্রহ্ম যাহার শরীর, যিনি সাক্ষাৎ শব্দ-ব্রহ্মের প্রকাশক, বর্ণমালা যাহার অঙ্গ, তিনি অনেক রূপে স্থিতি করিলেও অব্যক্ত স্বরূপ, যিনি অকাব, উকাব ও মকাব স্বরূপ এবং যিনি সূক্ষ্ম, স্থূল, পরাৎপর, ওঙ্কারস্বরূপ, ঋগ যাহার মুখ, সামগান যাহার জিহ্বা, যজুর্ব্বেদ যাহার সুদীর্ঘ গ্রীবাদেশ, অথর্ব্ববেদ যাহার হৃদয়, যিনি প্রকৃতিপুরুষের অতীত, জন্ম-মৃত্যুবর্জ্জিত হইলেও তমোগুণযোগে কাল, রুদ্র, রজোগুণযোগে ব্রহ্ম, সত্ত্বগুণযোগে সর্ব্বময় বিষ্ণু নামে বিখ্যাত, যিনি নির্গুণ অবস্থায় পরম ব্রহ্ম মহেশ্বর, যিনি প্রকৃতি, পুরুষ, (?), অহঙ্কার, মন, দশেন্দ্রিয়, পঞ্চতন্মাত্র ও পঞ্চভূতরূপে বিরাজমান হইলেও স্বয়ং ইহাদিগের অতীত ষড়বিংশ স্বরূপ, সেই মায়ার কারণ সৃষ্টিস্থিতিপ্রলয়-লীলার জন্য লিঙ্গরূপধারী সর্ব্বময় মহেশ্বরকে প্রণাম করিয়া মঙ্গলময় লিঙ্গপুরাণ বলিতে আরম্ভ করিতেছি। ১৭-২৩

প্রথম অধ্যায় সমাপ্ত।।১।।

1 Comment
Sanjay Kumar Chakrabarty November 5, 2022 at 2:16 am

I interested

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *