কখনও ঝরাবে অশ্রু, কখনও আগুন

এই তো হৃৎপদ্ম আমাদের বারবার
দুলে ওঠে সুর হয়ে, দুলে ওঠে লালন সাঁইয়ের অনুপম
গান হয়ে। নিশ্চিত জেনেছি ছেউড়িয়া
নয় শুধু রুক্ষ জমি কোনও, নয় একটি ভরাট নদী ধুধু,
বৃক্ষহারা করুণ বিবর্ণ মরু নয়।
ছেউড়িয়া লালনের আপন হৃদয়,
ছেউড়িয়া অগণিত বাউলের পূণ্য ধ্যানভূমি। ছেউড়িয়া
আমাদের সবার অন্তরে ফোটা অনন্য গোলাপ।

ভয়ঙ্কর তরিকার মুখ দেখি প্রশান্তির নির্মল আসরে,
বাউল-তাড়ানো সন্ত্রাসের জন্ম হয়
ভাড়াটে লেঠেল আর অস্ত্রবাজদের অতিশয় ন্যাংটো, ক্রূর
হামলায়; লালনের গান আর একতারা করে আর্তনাদ।

আমাদের গোলাপের বুক থেকে রক্ত ঝরে কোদালের ঘায়ে,
প্রবীণ বৃক্ষেরা ভূলুণ্ঠিত। লালনের স্মৃতিসৌধ অচিরেই
ভিন্ন উঁচু দালানের গ্রীবা জিরাফের মতো শেষে
ফেলবে কদর্য ছায়া। লালন সাঁইয়ের একতারা
এতকাল পরে ফের প্রকৃত বাজবে নিদারুণ
অপমানে, ক্ষোভে, শোকে; বেদনার সুর
প্রকৃতিকে বড় বেশি করবে করুণ। এক, দুই, তিন, চার,
হাজার হাজার প্রতিবাদী একতারা
এবং দোতারা ভোরবেলা, বিষণ্ন দুপুরে, রাতে
কখনও ঝরাবে আশ্রু কখনও আগুন।
৯.১১.২০০০০