নাকি শুধু হিমযুগ

তাকে কি নিশুতি রাত ডেকেছিল? নাকি সমুদ্রের
তরঙ্গের ধ্বনি তার কানে ঢেলেছিল
জলকন্যাদের কোনও মোহময় গান?
নইলে কেন শহুরে বাড়ির সুসজ্জিত বড় ঘরে
কাউকে কিছু না বলে মধ্যরাতে কেমন নিশ্চুপ
নিঃসাড় শীতল হয়ে গেলেন হঠাৎ?

আঙুলের ফাঁকে ছিল আধপোড়া, নেভা সিগারেট,
টিপয়ে ফতুর গ্লাশ, ঈষৎ কুঞ্চিত নিরুপায়,
রাতের পোশাক গায়ে। নানান হুইস্কি ওয়াইন,
ভদকা, বীয়ার ইত্যাদির সারি সারি
সাজানো বোতল ছিল মাথার ওপারে-
পারেনি বাড়াতে ওরা সাহায্যের হাত তার দিকে,
এরকমই নৈর্ব্যক্তিক সহচর তারা।
বাড়ির বাশিন্দা যারা তারাও নিদ্রা
সাগরে ছিলেন ডুবে, কিছুতেই পাননি টের তার
প্রস্থানের নিঝুম প্রহর।

বিবাহিত সেই পুরুষের পুত্রেরাও বিবাহিত, কেউ কেউ
সন্তানের পিতা আর উপার্জনক্ষম।
নিশ্চুপ গেলেন যিনি গভীর নিশীথে,
সমর্থ শরীরে তার মিশেছিল গৃহিণী ছাড়াও
ভিন্ন নারীদের স্বেদকণা দিব্যি রমণের কালে। প্রকৃতই
সংসারে ছিলেন সুখী, নাকি
ভীষণ অসুখী-
বোঝা ছিল দায়। তার ঠোঁটে অনেকেই
দেখেছে হাসির রেখা খেলে যেতে বহুবার আর
প্রিয় বন্ধুমহলে আমুদে লোক বলে ছিল খ্যাতি।

যখন গেলেন তিনি অকস্মাৎ, তখন দু’চোখে তার কোন্‌
দৃশা উঠেছিল ভেসে? ভেসে উঠেছিল,
গৃহিণীর মুখ? কোনও সন্তানের মুখ?
তাকে কি অন্তিম ক্ষণে খুব আলোড়িত
করেছিল কোনও বান্ধবীর চুম্বনের স্মৃতি? নাকি
এসব কিছুই নয়, শুধু হিমযুগ এসেছিল নেমে চোখে?
৩.১.২০০০